বেস্টফ্রেন্ডের অবহেলা । পর্ব - ০২
বাসার গেট এ আব্বা দাড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলো...
আব্বাঃকোথায় গিয়েছিলিস?
আমিঃকলেজে আব্বা।
আব্বাঃঠাস.... মিথ্যে বলতে তোর লজ্জা করে না। দিন দুপুরে অন্য মেয়ের সাথে ঢলাঢলি করতে তোর লজ্জা করে না।একটা বারও আমার কথা ভাবলি না।আমার সম্মানের কথা ভাবলি না?
আমিঃআব্বা আমি কি করছি?
আব্বাঃতুই কি করছিস জানিস না তাই না।কুলাঙ্গার কোথাকার।কি করছিস মনে নাই? দাড়া আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি।লিমা.........
আব্বা লিমা বলে ডাক দেওয়ার সাথে সাথে লিমা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসলো।দেখলাম ওর চোখে পানি।
আব্বাঃএই কুলাঙ্গার টা কি করছে ওর মনে নেই ওকে মনে করিয়ে দাও তা।
লিমা ওর ফোন বের করে একটা ভিডিও চালু করলো।ভিডিও তে আমাকে আর ওই মেয়েটাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমি মেয়েটাকে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছি।
আব্বাঃমনে পড়ছে এবার কি অপরাধ করছিস?তোর মতো কুলাঙ্গারের মুখটা দেখতেও ঘৃণা লাগছে।
আমিঃআব্বা আমার কথা টা আগে শুনো প্লিজ।
আব্বাঃকি শুনবো তোর কথা হুম।অপরাধ করেও তুই মুখে মুখে কথা বলছিস।আচ্ছা তুই কি সত্যি আমার সন্তান?
এই কথা শুনে মা কাদতে লাগলো।মায়ের কান্না দেখে আমারও চোখে পানি চলে আসছে।আজ আমার জন্য মায়ের সতিত্বের প্রশ্ন উঠেছে।আর একজন নারীর কাছে তার সতিত্বের দাম সবচেয়ে বেশি।
আমিঃআব্বা আমাকে যা বলার বলো মাকে কিচ্ছু বলবে না।
আব্বাঃআমার সাথে রেগে কথা বলিস? এতো বড় সাহস তোর? দাড়া তোর সাহস ছুটাচ্ছি।
এই বলে আব্বা একটা লাঠি এনে এলোপাতাড়ি পিটাতে লাগলো।আমি শুধু কাতরাচ্ছি আর বলছি আব্বা আমি কোনো খারাপ কাজ করি নাই।কিন্তু কে শোনে কার কথা।আব্বা মারতেই আছে।
অন্যদিকে সিমি আপু মাকে ধরে কাদতেছে আর বলছে..
সিমিঃমা আব্বাকে মারতে বাধা করো প্লিজ।এভাবে মারলে ভাইয়া মরে যাবে।ওমা তুমি তো মা।প্লিজ তুমি কিছু করো।
মা কিছুই বলছে না শুধু কাদছে।অন্যদিকে লিমা শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দর্শকের মতো দেখছে।সাথে বড় আপুও।
সিমি আপু কোনো উপায় না পেয়ে আব্বার পা জড়িয়ে ধরে বলছে..
সিমিঃআব্বা প্লিজ ভাইয়াকে ছেড়ে দাও।আর মেরো না।ভাইয়া মরে যাবে আব্বা।তুমি দয়া করো।
সিমি আপুর কথায় মনে হয় আব্বার কিছুটা দয়া হয়েছে।তাই আব্বা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন...
আব্বাঃআজ তোকে ছেড়ে দিলাম।কিন্তু তোর খাওয়া দাওয়া বন্ধ।তোর কলেজ যাওয়া বন্ধ। তোকে আর পড়তে হবে না।কেউ যদি ওকে খাবার দেয় তার জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।
এই বলে আব্বা চলে গেল।মাও কাদতে কাদতে চলে গেল।সাথে বড় আপুও।সিমি আপু দৌড়ে এসে আমার মাথা ওর কোলে নিয়ে কাদতে লাগলো।লিমা কে বললো..
সিমিঃএকটু সাহায্য করো তো প্লিজ।ভাইয়াকে রুমে নিয়ে যাই।
লিমাঃওকে ছুতেও আমার ঘৃণা হয়।আর সাহায্য তো দুরের কথা।
সিমিঃতোমরা না বেস্টফ্রেন্ড? তাহলে তুমি এই সব বলছো কেন?
লিমাঃবেস্টফ্রেন্ড? হাসালেন।ওর মতো চরিত্রহীন আমার বেস্টফ্রেন্ড।ও মরলেও আমার যায় আসে না।
সিমিঃচুপ।আর একটাও বাজে কথা বলবে না।আজকের জন্য অনেক পস্তাবে তুমি।এখন আমাদের বাসা থেকে বের হও।
লিমাঃযাচ্ছি।আপনাদের বাসায় থাকতে আসি নাই।চরিত্রহীনের বোনের আবার বড় কথা।
এই বলে লিমা চলে গেল।সিমি আপু আমাকে ধরে রুমে নিয়ে গেল আর বেন্ডেজ করে দিল।আমি আপুকে বললাম..
আমিঃসত্যি বলছি আপু আমি কিছু করি নাই।
সিমিঃআমার তোর উপর বিশ্বাস আছে।আচ্ছা দাড়া তোর জন্য খাবার নিয়ে আসি।
আমিঃথাক আপু খাবো না।একটু আদর করে দেও তো।আজ তোমার আদর খাওয়ার খুব ইচ্ছে করছে।
সিমিঃআচ্ছা আয়
আমি আপুর কোলে মাথা রাখলাম আর আপু আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগল।
এভাবে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভাবছি খাবার টেবিলে যাব কি না।একবার ভাবলাম যাব না।আবার ভাবলাম কাল হয়তো আব্বা রাগের মাথায় বলেছে।
সাত পাঁচ ভেবে চলে গেলাম খাবার টেবিলে।দেখলাম সবাই খাচ্ছে।আমি গিয়ে মা কে বললাম...
আমিঃআজকে আমাকে না ডেকেই খেতে শুরু করছো।খাবার দেও খুব খুদা লাগছে।
এরপর আব্বা যা করলো এর জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
আব্বাঃঠাস.....
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com