আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ০৩
আমি আর জিহা বের হয়ে রিক্সার জন্য ওয়েট করছিলাম এমনসময় জাহিদ ভাইয়্যা বাইক নিয়ে এসে আমাদের সামনে ধারায়।এই জাহিদা ভাইয়্যাটা হচ্ছে আমাদের বড় ভাই মানে অনার্সে পড়ে।
এক নম্বরের লুচু। মেয়ে দেখলেই গায়ে পরে কথা বলতে চলে আসে।
ফারহা & জিহাঃ বাই ভাইয়া
জাহিদ ভাইয়াঃ নাইছ জোকিং। তা তোমার এখানে দাঁড়িয়ে আছো যে?
ফারহাঃ আসলে ভাইয়া কিছুক্ষণ পরে এইখানে সার্কাস দেখাবে তো তাই আমরা দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছি।
জাহিদ ভাইয়াঃ মানে?
ফারহাঃ আরে ভাইয়া,,,,
জিহাঃ ওই তুই চুপ কর তো। খালি উল্টো পাল্টা বকবক করিস।
আসলে ভাইয়া আমরা রিকশা পাচ্ছি না তাই দাঁড়িয়ে আছি।জাহিদ ভাইয়াঃওহ এই ব্যাপার,,,,
তোমরা চাইলেই আমি তোমাদের হেল্প করতে পারি।
ফারহাঃ তার আর দরকার নেই ভাইয়া,,, ওই যে একটা রিকশা আসতেছে। আমরা তাহলে যাই ভাইয়া।
ফারহা & জিহাঃ বাই ভাইয়া
জাহিদঃ বাই
তারপর আমি আর জিহা একি রিকশা করে চলে আসি।
জিহাদের বাসা ও আমাদের বাসা একি রাস্তা দিয়ে হলেও আমাদের বাসা একটু দূরে।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে কালকের পড়ার চিন্তা করতে
করতে একটা লম্বা ঘুম দিলাম। আসলে আমার যখন পড়ার চিন্তা বেশি হয় তখন আমার
ঘুম ও বেশি আসেঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসলাম।
আইসিটি বই খুললে আমার মাথার উপর যেন বাঁশ পড়ে,,,,,,, কিছু মাথায় ডুকে না।
যে এই বইটা বের করছে তারে যদি পাইতাম বইয়ের সব
পৃষ্টা পানিতে চুবিয়ে সরবত গুলে খাওয়াতাম। ইতর,,
অভদ্র লোক এই রকম হার্ড বই কেউ বের করে নাকি?
এক ঘণ্টা ধরে পরতেছি আর প্রোগ্রাম গুলো লিখতেছি।
কিন্তু কিছু কচুপোড়া মাথার মধ্যে কিছুই ডুকতেছে।
দূর এত পড়ে কি হবে? তার থেকে আমি বরং খেয়ে দেয়ে ঘুমাই,,,, কালকের টা কালকে দেখা যাবে।
ডিনার করে শুয়ে আছি আর স্যারের কথা ভাবতেছি।
স্যারে কথা বলার ধরন,, হাসি,,চালচলন সব কিছুর উপর আমি ক্রাস।
ইস এখন স্যাররে হাসিটা খুব দেখতে ইচ্ছা করতেছে। কিন্তু তা তো সম্ভব না।
তাই মন খারাপ করে বসে আছি।
এমন সময় মনে পরল আরে ফেবুতে উনার নাম দিয়ে চার্চ দিয়ে একবার দেখলেই তো হয়।
যেই ভাবা সেই কাজ। উনার নাম লিখে চার্চ দিলাম।
আরেব্বাস,,,, সবার প্রথমে স্যারের আইডি আসছে।
আইডিতে ডুকে এক একটা পিক দেখে আমি পুরাই ফিদা,,,সব পিকের মধ্যেই হিরো লুক।
স্যারের আইডিতে ঘুরাঘুরি করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ি।
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রেড়ি হচ্ছি।
আম্মি নিচ থেকে ডাকতেছে নাস্তা করার জন্য আমি আর দেরি না করে নিচে চলে গেলাম ।
আব্বু আম্মি আর আমি এক সাথে নাস্তা করছি আর টুকটাক কথা বলতেছি।
আমি আব্বুকে জিজ্ঞাস করলাম আব্বু তানহাকে(আমার ছোটবোন।
স্কুল ছুটি চলছে তাই মামার বাসায় গেছে)কবে নিয়ে আসবে?
আম্মিঃ হুম তাই তো। আমার ছোট মেয়েটা বাসায় নেই,,,,, বাসাটা কেমন পাকা পাকা লাগতেছে।
আব্বুঃ তা ঠিক বলেছ
আমিঃ হুম জানি তো,,,ওতো তোমাদের আদরের মেয়ে। সবাই ওকে ভালোবাসো।
আমায় কেউ ভালোবাসে না।
আম্মিঃশুনো মেয়ের কথা,,পাগলী একটা।
আমিঃ আচ্ছা আম্মি & আব্বু আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে,,,,,আমি যাচ্ছি ।
আম্মি & আব্বুঃ সাবধানে যেও।
আমিঃ বাই
আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় জিহাকে কল করে বের হতে বললাম। আমি একটা রিকশা নিয়ে জিহাদের বাসার সামনে এসে জিহাকে নিয়ে দুইজন এক সাথে কলেজে গেলাম।যথাসময় ক্লাস শুরু হলো। বিপত্তি তো ঘটলো তখন যখন আইসিটি ক্লাস শুরু হলো। সবাই আজকে আইসিটি পড়া নিয়ে অনেক চিন্তায় আছে না জানি কার কপালে আজকে কি আছে। স্যার আসলেন সবার থেকে পড়া নিচ্ছেন। যারা পড়া পারতেছে না তাদের দাঁড় করিয়ে রাখতেছেন। অবশেষে আমাকে পালা আসলো। স্যার জিজ্ঞাস করে বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন এই সুযোগে আমি সামনে জনের বই থেকে দেখে দেখে বলা শুরু করলাম।
স্যারঃ ফারহা,,,,,,
ফারহাঃ স্যারের দিকে না তাকিয়ে,,,,,, বলতেছিত স্যার,,শুনতে পাচ্ছে না,,,,আবার বলা শুরু করলাম,,,
স্যারঃ ফারহা,,,,
ফারহাঃ আরে চিল্লাচ্ছেন কে,,,,, ওরে বাবা স্যার তো দেখি রাক্ষস রুপ ধারণ করছেন।
পড়া বলার সময় ভুল বলছি? কই না তো সবই তো ঠিকি বললাম।
তারমানে আমি যে অন্যজনের দেখে দেখে বলতেছি এইটা দেখে পেলছে।
আজকে আমার কপালে দুঃখ আছে। না জানার ভান করে,,,,, স্যার কি হয়েছে?
স্যারঃ কি হয়েছে তাই না? তুমি আমার দিকে না তাকিয়ে বইয়ের দিকে তাকিয়ে পড়া বলতেছ,, আবার জিজ্ঞাস করো যে কি হয়েছে?
এই সারছে কাম। এখন কি বলি
ফারহাঃ কই না তো আপনি মনে হয় ভুল দেখছেন।
স্যারঃ আমি ভুল দেখছি তাই না? আচ্ছা ঠিক আছে।বইটা নিয়ে নিলো,, তাহলে এখন আবার প্রথম থেকে বলো।
ফারহাঃ না ইয়ে মানে,,আসলে স্যার আমি না একবার পড়া বললে।
দ্বিতীয় বার আর বলতে পারি না ভুলে যাই।
স্যারঃতোমার তো সাহস কম না। এমনিতে পড়া শিখো নাই তার উপর চুরি করে পড়া
বলে এখন আবার মিথ্যা বলতেছ?আজকে যারা যারা পড়া শিখো নাই তারা সবাই দাঁড়িয়ে ক্লাস করবে।
আর ফারহা তুমি পড়া না শিখা,, পড়া চুরি করা আর মিথ্যা বলার কারণে
মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকবা।
ফারহাঃস্যার,,,,,
স্যারঃ যেটা বলছি ওইটাই করো।
ফারহাঃ।
মাঠে দাঁড়িয়ে আছি। ভালোই হলো ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ায় শয়তানটার ক্লাস
করার থেকে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা ভালো।তার মধ্যে শীতকাল।
শীতকালে এমনিতে রৌদে দাঁড়িয়ে থাকতে আরাম লাগে।
কিন্তু একা দাঁড়িয়ে থাকতে বোর হচ্ছিলাম তাই ক্লাসের সামনে গিয়ে,,,
ফারহাঃ আসতে পারি,,স্যার?
স্যারঃ তুমি? তোমাকে না বললাম মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে এখানে আসছো কেন?
ফারহাঃ আসলে স্যার একা একা বোর হচ্ছিলাম,, তাই আমার ব্যাগ থেকে চকলেট নিতে এলাম।
শীতকালে রৌদের মধ্যে দাঁড়িয়ে চকলেট খাওয়ার মজাই আলাদা।
( আমার কথা শুনে সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিলো,, আজব এইখানে হাসির কি আছে?)
স্যারঃ what,, এই মেয়ে তুমি কি দিয়ে তেরী আমাকে একটু বলবা?
ফারহাঃ স্যার,, মাটি দিয়ে।
স্যারঃ
ফারহাঃ স্যার আমার চকলেট গুলো নিয়ে যাই?
স্যারঃ তার আর দরকার হবে না। ক্লাসে ডুকে যাও।
ফারহাঃ সো সুইট,,,,থ্যাংকু স্যার।
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com