একজন প্রবাসী ছেলের জীবনে গল্প । পর্ব - ০৫ এবং শেষ
মা ও এক চিৎকার দিয়ে বেহুশ হয় পড়ে,,কারণ নিলয় এর দেহটা এক দম সাদা হয়ে গিয়েছে সারা বিছানায় রক্ত লেগে আছে,, ছোট ভাই দেখে নিলয় নিশ্বাস নিচ্ছে না,,হয়তো বা অনেক আগে মারা গেছে নিলয় নিলয় এর ছোট ভাই যখন নিলয় কাছে যায় দেখে তার মাথার পাশে একটা চিরকুট ছোট ভাই চিরকুট হাতে নিলো তাতে লেখা আমার পরিবার এর মধ্যে মা ও ছোট বোন এর ঘেন ফেরানো হলো এই বার ছোট ভাই পড়তে শুরু করলো।
কি ভাবতেছো আত্মাহত্যা করছি না মা তুমি সেই রকম ছেলে জন্মেই দাও
নাই যে আত্মাহত্যা করবে আমার বেইন কেন্সার ছিলো আজ থেকে চার মাস আগে মেডিকেল
চেকাপ করতে গিয়ে জানতে পারি,, ডাক্তার বলেছিলো আমি আর চার মাস এই দুনিয়াতে থাকবো
কথা শুনে প্রচুর কষ্ট হয় ছিলো কতো সপ্ন ছিলো আমার পরিবারে সাথে আমি সুখে সান্তিতে
বসোবাস করবো কিন্তু তা আর হলো না তাই তোমাদের না জানিয়ে চলে আসি
ভেবে ছিলাম জীবনের শেষ চার মাস আমার পরিবারের সাথে হাসি খুশি কাটিয়ে দিবো।
কিন্তু বিশ্বাস করো মা আমি যদি জানতাম আমি দেশে আসাতে তোমার এতো অখুশি হবে কোনো
দিন দেশে আসতাম নাহ্ যদি জানতাম আমি আমার আপন জন মানুষদের কাছ থেকে এতো
অবহেলা পাবো আমি কখনো দেশে আসতাম নাহ্। তুমি তো আমায় গর্ভে ধারণ করে ছিলে মা
তাহলে কেনো আমাকে তুমি অবহেলা করলে মানুষ বলে মা
নাকি তার সন্তানের মুখ দেখে সব কিছু বুঝে ফেলে কই মা তুমি তো আমাকে বুঝতে পারলে না
একটা দিন ও আমার সাথে মন খুলে কথা বললে না। আমাকে জিজ্ঞেস করলে না আমি কেমন আছি
জানো মা তোমার হাতে খাবার খাওয়ার অনেক ইচ্ছে ছিলো কিন্তু তোমার এই তিন মাসে
এক দিন ও আমার সাথে বসে খাবার খাও নাই কতো দিন হলো তোমাদের সাথে বসে খাবার
খাই না তোমারা আমার খাবার ঘরে দিয়ে আসতে আমাকে একবার ও বললে না বাবা আয়
আজকে আমাদের সাথে বসে খাবার খা। জানো মা বাবা আমাকে মাসের শেষ দিকে কল
দিতো দিয়ে শুধু বলতো নিলয় এই মাসের টাকা সব টা পাঠিয়ে দিস সংসারে অনেক
টাকার প্রয়োজন অথচ বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করতো নাহ নিলয় তুমি কেমন আচ্ছিস।
আসলে মা তোমারা আমাকে ভুলে গিয়েছো তোমার মনে আছে মা আজ থেকে দশ
বছর আগে বাবার একটি পা এবং একটি হাত অচল হয়ে পড়ে
সেই সময় আমার বয়স ছিলো মাএ পনেরো বছর সেই থেকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে
মানুষের জমিতে কাজ করতাম মাটি কেটেছি। তুমি বলতে বাবা তুই এক দিন অনেক বড় হবি
দেখো মা তোমার সেই ছোট নিলয় আজ অনেক বড় হয়েছে আজ তাকে মৃত্যু নিতে এসেছে।
তবে মা আমি অনেক খুশি আজ আমাকে আর অবহেলা সহয করতে হবে নাহ্। জানো মা
সেই দৃর প্রবাসে একটা দিন সকালে সৃ্য্য আমার আগে ঘুম থেকে উঠতে পারে নাই প্রতি
সৃযের আগে কাজ যেতাম আবার রাতের বেলা রুমে আসতাম।
তোমার টাকা নেশায় আমাকে ভুলে গিয়েছো।
তুমি বলেছিলেনা তোমার জন্য জিনিস নিয়ে আসতে আমি নিয়ে আসছি মা আমার
মাথায় পাশে রাখা আছে অনেক ইচ্ছে ছিলো নিজ হাতে তোমাকে জিনিস গুলো
পড়িয়ে দিবো কিন্তু সব ইচ্ছে যে পৃরণ হয় না মা। বড় আপু তুই জিজ্ঞেস করেছিলনা
আমি কি করেছি তোদের জন্য। তোর তো ভুলে যাওয়া কথা না আপু।
দুলা ভাই যখন নতুন ব্যাবসা শুধু করবে তুই আমার কাছ থেকে পাচ লক্ষ
টাকা ধার হিসেবে নিয়ে ছিলি বলে ছিলি কিছু দিন পর দিয়ে দিবি কই আপু
আমি তো তোর কাছে সেই টাকা একবার চাইনি।
আপু আমি দুলা ভাই এর জন্য লেপটপ এনেছি আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম আমার পরিবারের
কাছে আমার মৃল্য কতোটুকু দুলা ভাই এর লেপটপ আমার আলমারিতে রাখা আছে
আমার দাফন শেষ করে নিয়ে যাস তোর ছোট ভাই এর পক্ষ থেকে শেষ উপহার।
ছোট ভাই তুই যখন বললি আমি তোদের জন্য কি করেছি আমি তখন বাবার দিকে
চেয়েছিলাম ভেবে ছিলাম বাবা হয়তো কিছু বলবে কিন্তু বলে নাই তুই জানত
চেয়েছিলি না আমি কি করছি তোদের জন্য তবে শুন
তোর বয়সে আমি মাটি কেটেছি মানুষের জমিতে কাজ করেছি শুধু তোদের মুখে ভাত তুলে
দিতে প্রবাসে একটা ভালো কাপড় পড়ি নাই যখন কিছু পছন্দ হতো ভাবতাম আমি
এখন এই গুলো দিয়ে কি করবো আমার ছোট ভাইয়ের জন্য টাকা পাঠিয়ে দেই আমি পড়ে কি নিবো।
তুই আমার কাছে আই ফোন চেয়েছিলি না ভাইয়া তোর জন্য আই ফোন এনেছি
আমার বালিশ এর নিচে রাখা আছে আমার লাশটা যখন বাহিরে নিয়ে যাবে তখন নিয়ে নিশ
প্রিয়,, বাবা প্রথমে আমার সালাম নিবেন আপনাকে আমার কিছু বলার নেই কি বলবো বলেন
আপনি তো সব জানতে আমাদের পরিবার আগে কেমন ছিলো আর এখন কেমন হয়েছে।
মনে আছে বাবা আমি আরো দুই বছর আগে দেশে আসতে চেয়েছিলাম তখন আপনি বলেছিলেন
আর দুই বছর পড়ে আসতে এখন তো দুই বছর পৃণ্য হয়েছিলো তবে কেন এমন
করলেন আমার সাথে। মা জিজ্ঞেস করছিলো আপনার জন্য কি নিয়ে আসছি কি।
আমি এনেছি বাবা আপনার পছন্দের সোনালি কালারের ঘরি।
আর আপনি বলেছিলেন মোন্তাহার বিয়ের জন্য
অনেক টাকা লাগবে অনেক টাকা তো আমার কাছে নেই আমার জমানো পাচ লক্ষ টাকা ছিলো
সেই টা আমার বালিশের নিচে আছে আশা করি এইটা দিয়ে মোন্তাহা কে বিয়ে দিতে পারবেন।
ওহ আর একটা কথা আমাদের তো অনেক লেনাদেনা মাপ করবেন আমি ওই গুলো
পরিশোধ করতি পারি নাই। আমার কাফনের কাপড়ের টাকা টা দয়া করে ধার করে এনে
দিয়েন বাবা আপনার কাছে আমার অনুরোধ দয়া করে আমার কাফনের
কাপড়ের টাকা টা আমার রোজঘার করা টাকা থেকে দিয়েন
ছোট বোন মোন্তাহা তর এই ভাইটা অনেক খারাপ একটা মানুষ ছিলোরে দয়া করে আমাকে ক্ষমা
করে দিস আমার ইচ্ছে ছিলো নিজে দাড়িয়ে থেকে তোকে বিয়ে দিবো সেই টা আর হলো
দেখ তোর সার্তপর ভাই তোকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে
জানো মা আজ আমি অনেক ক্লান্ত অনেক ঘুম পাচ্ছে আমার চললাম মা সেই চির নিদ্রায়
আমাকে তোমারা ক্ষমা করে দিও,,
সমাপ্ত
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com