আইসিটি স্যার যখন বর । পর্ব - ০৫

আমার ইয়া লম্বা লম্বা চুল এই বজ্জাতটার জন্য ছোট করে পেলতে হলো। বজ্জাত স্যার তোরে যদি সুযোগে পাই না,,তোর এমন অবস্থা করবো যে আমি নিজেই নিজেকে ভয় পেয়ে যাব এই ভেবে যে আমি তোর এই অবস্থা কি করে করলাম,,,তোকে তো এখন ইচ্ছা করতেছে চিবিয়ে খেয়ে পেলি,,,,দূর এই বজ্জাতটাকে শাকচুন্নিটা খেলে আমি নিজেও বজ্জাত হয়ে যাব,,,, তার থেকে না খাওয়াই ভালো,,, দূর ছাতার মাতা কি করবো কিছুই বুজতেছি না,,,,রুমে বসে বসে বজ্জাত স্যারের কথা ভাবছিলাম,,, হঠাৎ পেছন থেকে ভাউউউউউ

ফারহাঃ ওমাগো আম্মিনিইইই

তানহাঃ আরে আপু চেঁচাচ্ছিস কেন? আমি আমি,, মানে তোর বইন,, নাকি আজকাল আমাকে ভুলে গেছিস

ফারহাঃ বেয়াদব মাইয়া তুই? তুই কবে আসলি?আর রুমে ঢুকার সময় নক করে ঢুকবি না?আমি তো ভাবলাম,,,,,

তানহাঃ কি ভাবছিস? ভূত? হিহিহিহি,,, এখনি আসছি আব্বুর সাথে। আচ্ছা আপু তুই এত ভীতু কেন?

ফারহাঃ ভূত ভাবার কি আছে তুই তো আসলেই একটা ভুত। আমিও মোটেও ভীতু না কিন্তু তোরে দেখলে তো যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে,,, পেত্নী একটা

তানহাঃ কি বললি আমি পেত্নি? তুই নিজে কি! তুই নিজে তো একটা আস্ত চুন্নি,,,, এই ওয়েট এয়েট আপু তোর চুল গুলা এত ছোটো লাগতেছে কেন? তুই হেয়ার কাটিং দিয়েছিস?

ফারহাঃ চুল নড়াচড়া করতে করতে একটু ভাব নিয়ে বললাম,,,হুম,,, কালকে টিভিতে নায়িকা নাসরিনের এই হেয়ার কাটিং দেখে আমিও দিলাম,,, ভালো না?

তানহাঃ নায়িকা নাসরিন? হাহাহাহহা

ফারহাঃকত বড় বেয়াদপ মেয়ে দেখছেন?

কি ভাবে দাত বের করে হাসতেছে,,,,,

একে তো রুমে নক করে ঢুকলো না,,,, আবার ভয় আমায় দেখায়। এখন আবার আমার হেয়ার কাটিং নিয়ে হাসে,,,,তোকে আমি এমন শিক্ষা দিবো না সারা জীবন মনে থাকবে।

তানহাঃআপু তোকে পুরা বান্দরের মত লাগতেছে।

ফারহাঃ তুই নিজে কি? নিজেকে কখনো আয়নায় দেখেছিস? না দেখলে আমি বলে দি কেমন? তোর চেহারা দেখতে পুরাই পচা আলু,,,পচা ডিম,, লাল কুমির,,,সাদা কুকুর,,, কালো বিল্লি,,,নাগীনীর মতো দেখতে।

তানহাঃ উফফফফ,,,আপু প্লীজ তোর কেসেট টা একটু অফ কর না। আচ্ছা আমায় একটা কথা বল তো আপু,,,,

ফারহাঃ কি

তানহা;তোর জন্মের পর আম্মি তোর মুখে মধু দেয় নাই?।

ফারহাঃ কি জানি,,আমার তো মনে নাই,,,কেন বলতো?

তানহাঃ না মানে তোর মুখ থেকে কখনো ভালো কথা বের হয় না সব সময় তিতা তিতা কথা বের হয় তো,,তাই আর কি,,,

ফারহাঃ কি বললি,,,,আমি তিতা তিতা কথা বলি,,,, আমার মুখে ভালো কথা বের হয় না,,, তোকে তো আমি আজকে বলে যেই ধরতে যাব ওকে আর পায় কে দিল দৌড়,, তানহা দৌড়াচ্ছে পিছন পিছন আমিও দৌড়াচ্ছি ও আম্মি পিছেন গিয়ে লুকায়,,,, ওকে দরার জন্য আম্মির আগে পিছনে দৌড়াচ্ছি,,

আম্মিঃ আসতে না আসতেই দুইজনের ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো?

তানহাঃ আম্মি তোমার বড় মেয়ের মাথার তার একটা চিরা,,, তাড়াতাড়ি পাবনা পাঠাই দাও,,,আল্লাহ্‌ জানে কোনো দিন কি অঘটন ঘটায়,,,

ফারহাঃ আম্মি দেখছো কত বড় বেয়াদব,,,, বড় বোনকে সম্মান করতে জানে না।

তানহাঃ আম্মি জানো আপু কার থেকে দেখে হেয়ার কাটিং দিছে?

আম্মিঃ কার?

তানহাঃ নায়িকা নাসরিন

আম্মিঃ

ফারহাঃ

আচ্ছা হইছে আর ঝগড়া করতে হবে না,,,, দুইজনে ডিনার করতে আসো,,,তোমাদের বাবা তোমাদের জন্য ওয়েট করতেছে ডাইনিং টেবিলে। ডিনার করে যার যার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো অনেক রাত হয়েছে। তারপর সবাই মিলে ডিনার করে ঘুমিয়ে পরলাম।

পরের দিন কলেজে যাওয়ার সময় হিজাব পরে নিলাম কারণ আমার নিজেরি এই হেয়ার কাটিং টা ভালো লাগতেছে না,,,,বরাবরি আমার লব্বা চুল পছন্দ,,,তাই হিজাব পরে নিলাম,,,, জিহা আমাকে হিজাব পরা দেখেই বললো,,,,

জিহাঃ কি ব্যাপার আমাদের নায়িকা আজকে হুজুর হলো যে?

ফারহাঃ চুপ থাক,,,আমার ইচ্ছা হইছে আমি পরছি তোর সমস্যা? আর এমনিতেও হিজাব পরা ভালো,,,বুজচ্ছিস।

জিহাঃ আমি কখন বললাম খারাপ? এমনি জিজ্ঞাস করলাম আর কি?

ফারহাঃ আবার কথা বলিস,,,

জিহাঃ তোর মত খিটখিটে আমার জীবনে আর একটা দেখি নাই।

ফারহাঃ কি বললি শয়তানি,,, আমি খিটখিটে? আমি না তুই খিটখিটে তোর চৌদ্দ গুষ্টি খিটখিটে।

জিহাঃ উফফফ,,অসহ্য

জান্নাত,আনিশা,তন্নি মাঠে বসে আছে আমি আর জিহা গিয়ে ওদের সাথে যোগ দিলাম,,,সবাই মিলে গল্প করতেছি। এমন সময় সেখানে জাহিদ ভাইয়ার আগমন,,, এই জাহিদ ভাইয়াটাকে আমার একদম ভালো লাগে না,,,কেমন করে যেন তাকায়,,, দেখলেই ইচ্ছা করে দুইটা চর দিই,,,,লুইচ্ছা কনে কার।

জাহিদ ভাইয়াঃ হাই,,,,কেমন আছো সবাই?

সবাই একসাথেঃ হ্যালো ভাইয়া,,,ভালো, আপনি?

জাহিদ ভাইয়াঃ আমি আজকে অনেক ভালো,,

তন্নিঃকেন ভাইয়া? আজকে কোনো স্পেশাল কিছু আছে কি?

জাহিদ ভাইয়াঃ হুম,,,,,

আনিশাঃ তা কি সেই স্পেশাল কথা,,,আমরা কি শুনতে পারি?

জাহিদ ভাইয়াঃ অবশ্য,,,

আনিশাঃ বলুন বলুন,,,

জাহিদ ভাইয়াঃ আসলে আজকে আমি আমার মনের মানুষকে আমার মনের কথা গুলো বলবো,,,,,আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো।

সবাই এক্সাইটেড হয়ে আছে,,,,

জান্নাতঃ তাই নাকি তা কে সে আপনার মনের মানুষ?

জাহিদ ভাইয়াঃ একটু ওয়েট করো,,,,,কিছুক্ষণ পর জানতে পারবে।

তারপর জাহিদ ভাইয়া আমার সামনে এসে হাটু বটে বসে কত গুলো ফুল আমার দিকে এগিয়ে বললো,,,, ফারহা তুমি কি আমার রাতজাগা সেই স্বপ্ন হবে,,, যেটা দেখে আমি আমার সারাজীবন কাটাতে পারবো,,,,তুমি কি আমার সেই পাখি হবে যার সাথে উড়ে উড়ে আমি সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াব() I love you farha,,I really love you,,, জাহিদ ভাইয়ার কথা গুলো শুনে আমার মাথায় যে ভাজ পরলো তা কিন্তু না আমি আগেই আন্দাজ করে ছিলাম যে লুচুটা এমন কিছু একটা করবে,,, সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম,,,,,,,

ফারহাঃ ভাইয়া আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না,,,, কারণ আমি তো কখনো আপনাকে ওই চোখে দেখিও নাই। আমায় ক্ষমা করবেন ভাইয়া। এইসব বলে যেই চলে আসতে যাব ওমনি জাহিদ ভাইয়া আমার হাতটা ধরে পেলে,,,, রাগ আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না লাগিয়ে দিলাম জাহিদ ভাইয়াকে একটা থাপ্পড়,,,,, (জাহিদ ভাইয়াকে যে গালে চর দিয়েছি ওই গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,মুখের এক্সপ্রেশন দেখেই বুঝা যাচ্ছে তীব্র রেগে গেছে,,, কিন্তু তাতে আমার কি? আমিও তো রেগে আছি কোন সাহসে লুচুটা আমার হাত ধরলো)তারপর বললাম ,,,লুচুগিরি করার আর জায়গা পান না? আমার হাত ধরার সাহস আপনাকে কে দিয়েছে? নেক্সট টাইম এমন কাজ করলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না বুজেছেন?

জনপ্রিয় পোষ্ট সমূহঃ

সুখ পাখি ( সবগুলো পর্ব )

ভালোবাসি প্রিয় ( সবগুলো পর্ব )

আইসিটি স্যার যখন বর ( সবগুলো পর্ব )

সত্তিকারের ভালোবাসা ( সবগুলো পর্ব )

রাগি মেম ( সবগুলো পর্ব )

সেলিব্রেটি লাভার (সবগুলো পর্ব )

পরিবারের অবহেলা (সবগুলো )

জাহিদ ভাইয়াঃ তোর সাহস তো কম না তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস? তোর মত এইটুকুনি একটা মেয়ে আমার গায়ে হাত তুলেছে,,,, তোকে তো আজ আমি যেই থাপ্পড় তুললো আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে পেলি,,,অনেক্ষন সময় হয়ে গেলো কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে আস্তে আস্তে চোখ খুলে যা দেখলাম,,, তা দেখে আমি তো পুরাই

চলবে....