ঝরা ফুলের বাসর । পর্ব - ০১
আহ্ শরীরটা আর চলছে না।মাথাটা ঘুরছে।
এই বুঝি পরে যাবো।চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা লাগছে।ক্লান্ত শরীরে চলার শক্তিটুকুও নেই।সারাদিনে কিছু খাওয়া হয় নি তাই হয়তো এমন লাগছে।এমন সময় পরে যেতে নিলে কেউ একজন ধরে বসে।তারপর আর কিছু মনে নেই। যখন চোখ মেললাম সামনে চেয়ে হৃদ সাহেবকে দেখতে পেলাম।
আজ যদি তোকে আমি না ধরতাম তাহলে সিঁড়ি থেকে ধড়াম দিয়ে গড়িয়ে পরেতি।
একটু নিজের যত্ন নিতে শেখ ফুল নয়তো অমন শরীরে তৃপ্তি মিলবে না।.
কথাটা বলে একটা পৈচাশিক হাসি দেয় হৃদ সাহেব।
আমি উনার হাসির কারণটা বুঝতে পারি।
কোনো রকমে কথাটা বলে সেখান থেকে উঠে আসতে লাগি
এমন সময় খেয়াল করি পিছনের থেকে উনি আমার হাতটা ধরে বসেছে।
আমি আমার হাতটা উনার থেকে ছাড়াবার চেস্টা করি।আর উনি রেগে আমাকে বিছানায় ছুড়ে মারে।
তারপর বাজে ভাবে আমার শরীরে স্পর্শ করতে থাকে।
আমার অস্বস্তি লাগে।উনার ছোঁয়া প্রতিটা স্পর্শে আমার ঘৃণা হয়।
আমি উনাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে যায়। উনি এতে আরও বেশি রেগে যায়।
আর উঠে আমার গলা চেপে ধরে।দাঁত কটমট করে বলে,
খুব সখ না তোর বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে থাকার? তাই থাক।তোকে শুধু ব্যবহারই করা যায়।
এই হৃদ চৌধুরীর বউ হবার কোনো যোগ্যতাই তোর নেই।
কথাটা বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে উনি রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
হ্যাঁ যান যান।কে বলেছে আপনাকে আমায় বউ মানতে? আমার কোনো সখ নেই আপনার
মতো দুশ্চরিত্র পুরুষের বউ হবার।জোড় করে বিয়ে করেছেন আপনি আমায়।
শুধু এটা বোঝাতে যে বৈধ ভাবে ব্যবহার করছেন।ঘৃণা করি আপনাকে আমি।
আপনার প্রতিটা স্পর্শে আর আপনার ব্যবহারকে।কথাগুলো নিজে নিজে বলে কাঁদতে থাকি।
এমন সময় হৃদ সাহেবের মা এসে পিছনের থেকে আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে উঠালো।
তারপর আমাকে টানতে টানতে কিচেনে নিয়ে ধাক্কা মেরে এঁতো থালাবাসনের উপরে ফেলে দিলো।
এই ছোটলোকের বাচ্চা, মা'টাকে তো খেয়েছিস এবার আমাদের ঘাড়ে
চেপে না বসে একটু গদরটা খাটিয়ে খাঁ।
খালাম্মা!
চুপপপপ! একদম খালাম্মা বলবি না।ম্যাডাম বল! বল ম্যাডাম!
ম্যাডাম আমার চুলের মুঠি ধরে মুখটা এঁটো বাসনের ভেতরে নিয়ে চেপে ধরে।
বড় সাহেব মানে হৃদ সাহেবের বাবা কিচেনে শব্দ শুনে ছুটে আসে। আর আমাকে এমন অবস্থায় দেখে ম্যাডামের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনে।
কি করছো কি? মেয়েটাকে মারছো কেন?
মারছি কেন সেটা আবার জিজ্ঞাসা করছো? দেখছো না দুপুর হতে চললো এখনো বাড়ির এঁটো বাসনগুলো পরে আছে।আর এই ছোটলোকের বাচ্চা নিজের রুমে আরামচে বসে আছে।এগুলো কে করবে শুনি?
ওহহ এই ব্যাপার? তাহলে আমাকেই ডাকতে আমি করে দিতাম।
মানে? কি বলতে চাও তুমি?
এটাই যে মেয়েটার সাথে একটু ভালো ব্যবহার করো।তাছাড়া মেয়েটার তো যাওয়ার কোনো জায়গা নেয়।
ওকে আর শাস্তি দিও না বকুল।অনেক হয়েছে এবার ক্ষমা করো।
ক্ষমা করবো ওকে আমি? ওর জন্য আমি আমার বোনকে হারিয়েছি।
একটা নস্টা মেয়ে মানুষ কোথাকার।ওকে যে এবাড়িতে আস্রয় দিয়েছি সেটা শুধু তোমার কথায়।
না হলে ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এবাড়ি থেকে আমি বের করে দিতে পারলে শান্তি পেতাম।
কথাগুলো বলে ম্যাডাম চলে যায়।আর বড় সাহেব আমার মাথায় হাত রেখে বলে,
তোর খালাম্মার কথায় কিছু মনে করিস না ফুল।
ও তোর মাকে বড্ড ভালোবাসতো।যখন তোর বাবা গর্ভবতী অবস্থায় মেরে
তোর মাকে তারিয়ে দেয় তখন তোর খালাম্মাই তোর মাকে এবাড়িতে নিয়ে আসে।
খুব যত্ন করে আর তুই হবার পর তো তোকেও খুব যত্ন নিত।তোকে গোসল করিয়ে দেওয়া,
খাইয়ে দেওয়া সব তোর খালাম্মা করতো।
তোকে এতোটা ভালোবাসতো যে তুই যাতে এবাড়ি ছেড়ে না যেতে পারিস এজন্য তোর বিয়ে হৃদ...
এটুকু বলে বড় সাহেব থেমে যায়। আর কিছু বলে না।
আমার পাশ কেটে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে চলে যায়।আর আমি সেথায় দাড়িয়ে রই।
কি বলতে চাচ্ছিলো বড় সাহেব? ভাবতে ভাবতে এঁতো থালাবাসনগুলো উঠিয়ে বেসিনের উপরে
রাখি।আর ওমনি এঁটো বাসনে গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে।বমি বমি লাগে।
আর পারি না মুখ আটকে রাখতে।বমি করে দিই।
বমির শেষে বেসিনের উপরের আয়নায় চেয়ে দেখি পিছনে হৃদ সাহেব দাড়ানো।
উনি আমার কাছে এসে দাঁড়ালে আমার মনে পরে যায় মায়ের মৃত মুখটা।
আমার গর্ভের এই সন্তানটার কথা।যা মনে পরলে ঘৃণা হয় উনাকে আমার।
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com