Breaking News

পূর্নতায় তুমি । পর্ব - ০২



তুই আমার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী হয়ে তুই আমারি ক্রাশ কে পুরো ভার্সিটির সম্মুখে জড়িয়ে ধরলি!বাহ!বাহ!

তুইতো এটাও জানতি অনুরাগের মায়ায় পড়ে গেছি!
আরও তুই যদি অনুরাগে ভালোবাসি বা পছন্দ করতি তাহলে এতদিন বললি না কেন আমায়? আরও যাইহোক তোর জন্য এমন কিছু নেই যেটা আমি করতে পারবো না! এটা তুই ভালো করেই জানিস!
আশা,অবাক দৃষ্টিতে মিথির দিকে তাকিয়ে আছে আরও তার চোখে আর মুখের দুয়েরই ভাষা বোঝার চেষ্টা করছে! মিথির চোখে বেদনার ছাপ স্পষ্ট! আশার কলিজা ধকধক করছে! আজ তার প্রাণ প্রিয় বান্ধবীও তাকে ভুল বুঝলো! অবশ্য তার দোষ তো আছেই!জিবনে করা একটি ভুল তার পুরো জিবনের সুখ, শান্তি শুষে নিচ্ছে!
_ আশা উত্তর না পেয়ে মিথি আবারো বললো,তুই যদি অনুরাগে পছন্দ করতি বলা ভালোবাসতি তাহলে তুই কেন বললি না আমায় বল?

_ তোকে হয়তো কিছু কথা কখনো বলা হয়নি!তবে আজ বলছি! জানি আমার প্রতি তোর বিশ্বাসটা আর নেই! অনুরাগ ভাইয়া আমার নিজেরই ফুফাতো ভাই!
_ আশার কথা শুনে অবাকের শীর্ষে মিথি!
_ কিহহহ? এটা কি সত্যি?কিন্তু তুই তো আমায় এটা কোনোদিন বলিস নি!
_ হয়তো সে আমার ফুফাতো ভাই!কিন্তু তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা আর নেই!এর মধ্যে অনেক কিছু আছে যা বলবো কোনো একদিন! আজ উঠি!বাসায় যেতে হবে আমায়!বলেই আশা হন হন করে মিথির বেড রুম ছেড়ে বাসার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লো!
_ আর এইদিকে মিথি হাবলার মত করে বসে আছে!সে হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছেনা!
_ এদিকে আশা বাসায় গিয়ে একজনের ছবি হাতে নিয়ে ঘৃণা মেশানো চোখে জল নিয়ে তাকিয়ে আছে!আর মিন মিন করে বলছে!
আমার ভালোবাসা কি অপরাধ ছিলো?কেন আমার ভালোবাসা নিয়ে খেললে তুমি!আজ তোমার জন্য আমি একচুল ওকুল সবাই হারিয়েছি! নিজের পাপের শান্তি পাচ্ছি হারে হারে!তোমাকে ঘৃণা করি আমি প্রচন্ড ঘৃণা!
_ কিরে মিথি আশা এমন করে বের হয়ে গেলো কেন?আবার ঝগড়া করেছিস নাকি মেয়েটার সাথে? প্রশ্ন করলে মিথির মা!

_ না মা ওমন কিছুই না!বলেই ছাঁদের উদ্দেশ্য পা বাড়ালো!
১ সপ্তাহ পরে...
সব ঠিক ঠাক চলছে!সেদিনের পর আশাকে আমি এ বিষয়ে কিছুই বলিনি!তাদের পারিবারিক ব্যাপারে নাক না গলানোই ভালো!সেও এ-ই বিষয় কথা বলেনি!
একটা প্রকার এড়িয়ে চলেছি এ-ই বিষয়টা!তবে হ্যাঁ
অনুরাগের প্রতি নিজের অনুভূতি কমানোর চেষ্টা করছি!
এদিকে আজ অনুরাগ ৮ দিন ওর ভার্সিটিতে ঢুকলো!অনুরাগের পুরো নাম, অনুরাগ চৌধুরী!
তাকে ভার্সিটির গেটে অনেক মেয়ে তার দিকে হাতে করে চেয়ে আছে!কারণ ভার্সিটির ক্রাশ আর টপ স্টুডেন্ট সে! দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর! কোনো দিক দিয়ে তার কমতি নেই! রুপকথার রাজপুত্রের মতোন! আরও একটি পরিচয় আছে সেটা হলো এ-ই কলেজের প্রফেসর মিস্টার আফজাল হোসেন অনুরাগের বাবা!

_ মিথি আজ ভার্সিটি যেতে অনেক লেট করে ফেলেছে!
তারাহুরো করে রিকশা থেকে কোনো মতে ভাড়া মিটিয়ে দৌড়ে ক্লাস রুমের দিকে ছুটলো! দিক বেদিক ভুলে দৌড়ানোর ফলে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে ধাপাস করে কাঁদা জলে মুখ গুবরে পড়লো!
কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে থাকার পরে বুঝলো তার সাথে কি হয়েছে! রাগে দুঃখে চিল্লায়ে বলতে শুরু করলো _ কোন৷ উগান্ডার হনুমান রে চোখে দেখিস না!চোখের মাথা খেয়েছিস নাকি!অসভ্য!অভদ্র!আমার সবাই শেষ করে দিলো রে মান ইজ্জত প্লাস্টিক বানিয়ে দিল!আল্লাহ তুমি আমায় উঠায় নেও! এসব বলছে আর কাঁদা গুলো ঝাড়ছে!

কিন্তু এদিকে যে কেউ রাগি লাল টকটকে চোখ নিয়ে তার দিয়ে অগ্নি বর্ষণ করছে তার খেলায় নেই মিথির!
_ এ-ই ষ্টুপিড গার্ল তোমার কি কোনো সেন্স নেই!কি যা তা বলছো বেয়াদব মেয়ে!নিজে দিক বেদিক ভুলে দৌড়াচ্ছিলে তার খেয়াল ছিলো না? বলেই হাতে থাকা পানির বোতল খুলে পুরো বোতলের পানি মিথটির মাথায় ঢাললো অনুরাগ!
_ এবার চমকে অনুরাগের দিকে তাকাতেই অজান্তেই বুকটা ধক করে উঠলো!আর সাথে অনুরাগের ও!
কাজল টানা চোখে এখন কাজল লেপ্টে আছে!চুল গুলো এলোমেলো আর সাথে চুল দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে! থুতনিতে একটা তিল যা চকচক করছে!কপালে একদিকে হালকা কাদা লেগে আছে তাতে যেন হলুদ ফর্সা মুখটায় বেশ মানিয়েছে!
একটা মেয়ে এতটা মায়াবি কি করে হয় সেটাই ভাবছে অনুরাগ!দুজন দুজনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!
হঠাৎ নিহানের ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে দুজনের! দুজনেই বেশ ভড়কে যায়!
অনুরাগ আবার মিয়িকে একবার অবলোকন করে হঠাৎ ওর হাত ধরে হাটা ধরলো!মিথি শকড!সাথে নিহান ও!
_ কি করছেন ভাইয়া!হাত ছাড়ুন আমার!
_ চুপ একদম চুপ ষ্টুপিড গার্ল!

_ কি আমি ষ্টুপিড!আমি ষ্টুপিড না আপনি ষ্টুপিড আপনার বউ ষ্টুপিড!রাগের মাথায় বলে ফেললো মিথি!
_ রাগি চোখে আবার তাকালো মিথির দিকে! তা,দেখে মিথি চুপ!একদম চুপ!
_ ভার্সিটিতে মেয়েদের ওয়াশরুমের সামনে এনে দাঁড় করালো মিথিকে!
_ মিথি এবার বুঝলো ব্যাপারটা কি!
_ এখানেই দাঁড়াবে! ১০ মিনিটের মধ্যেই আসছি!বলে হন হন করে চলে গেলো অনুরাগ!
_ খাটাশ একটা!রাগী রাক্ষস কেমন করে তাকায়!মনে হয় চোখে তার অগুন আছে!আর সেই আগুন দিয়ে আমায় ভস্ম করে দিবে হুহ্! এখন দেখি ক্রাশ বাঁশ হয়ে যাচ্ছে!! রেগে বললো মিথি!
_ এদিকে তার ড্রেসের যে অবস্থা এতে সে কোনো মতেই বাইরে যেতে পারবেনা নতুন ড্রেস ছারা!মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো মিথি!
_ কি ঝামেলায় পড়লাম আল্লাহ! আপনি আমায় বাঁচান!এ-ই অবুঝ মাসুম বাচ্চাকে!
_ কিছুক্ষণ পরে অনুরাগ এসে হাজির!

_ এ-ই মেয়ে? বলে মিথির হাত ধরে টেনে তুলে হাতে একটি প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে বললো যাও!বলেই আবার অনুরাগ চলে গেলো! আবার বিস্মিত হলো মিথি!এ-ই একের পরে এক ঝটকা খেয়ে মিথি ভ্যাবলা হয়ে গেছে!
_ ক্লাস শেষে বেরিয়ে পড়লো মিথি!আজ আশা আসেনি! সেও আসতে চায়নি কিন্তু মায়ের বকবকানি কাছে না পেরে আসতে হলো! ভার্সিটির বটতলার গিয়ে একটু বসলো মিথি!আর সকালের ঘটনা গুলো ভাবতে লাগলো!
___ অপর দিকে,

অনুরাগ রুমে শুয়ে আপন মনে গিটার বাজাচ্ছে! আরও গাইছে তার প্রিয় গান!
_ তুমি আকাশের বুকে বিশাল তার উপমা!
_ তুমি আমার চোখেতে সরলতার উপমা!
_ আমি তোমাকে করি গড়ি ভেঙ্গে চু্ুড়ে শতবার!
_ রয়েছো তুমি বহুদূরে!!
__ আমাকে রেখে ছলনায়!
_ এ হৃদয় পুরে জানো কি তা লাগে না লাগে নাআআ
জোড়া! লাইন টুকু বলতে বলতেই তার চোখের মিথির সেই মায়াবি মুখটা ভেসে উঠলো!
হঠাৎ চোখ খুলে মাথার চুল দুহাতে মুঠোয় খামচে ধরে
ভাবতে লাগলো!

_ কেন এ-ই মেয়েকে দেখে আমার এমন হচ্ছে কেন!
আমি তো কোনো মেয়ের দিকে তাকাইও না!কিন্তু আজ কেন ওই মেয়েটাকে দেখে চোখ সরাতে পারছিলাম না!
অদ্ভুত কিছু একটা মস্তিষ্কে চলছিলো!
_ এসব মেয়েদের আমি ঘৃণা করি! ঘৃণা!এরা ছলনায়ী সার্থবাদী!বলেই সিগারেট ধরালো অনুরাগ!তবে মেয়েটার মুখে কেন জানি অসম্ভব মায়া ছিলো!ইনোসেন্ট লাগছিলো মেয়েটিকে! বাট মেয়েটা স্টুপিট!
কাকে কি বলা লাগে সেই সেন্স নেই তার!
_ মিথির ভাই মিহিরের সাথে মারামারি যুদ্ধ নেমে গেছে!বাসার সবাই তাদের যুদ্ধ দেখে অতিষ্ঠ!

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com