ঝরা ফুলের বাসর । পর্ব - ০৬
হৃদের কোনো কথার উত্তর না দিয়ে আমি ছুটে ওয়াশরুমে চলে এলাম।কি বলবো ওকে আমি? ও যা অন্যায় করেছে তার যে ক্ষমা হয় না।তাহলে আজ কেন ওর জন্য আমার এতো কস্ট হচ্ছে? আমি তো ওকে ভালোবাসি না।
আমি চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে ওয়াশরুমের দরজাটা খুলে দিলাম।হৃদ এসে আমাকে ধরে ঝাঁকিয়ে বলল, তুই কি সত্যিই চাস আমি চলে যায়?
আমি হৃদকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে বলি, হ্যাঁ চায়! কারণ আমি ঘৃণা করি আপনাকে।চলে যান আপনি এবাড়ি থেকে।
এমন সময়ে খালাম্মা আবার আসে। দরজার কাছে এসে বলে, ফুল তুই কি উঠে পড়েছিস? দরজাটা খোল না।ভাবছি আজ তোকে নিয়ে একটু হসপিটালে যাবো।
খালাম্মার কন্ঠ শুনে আমি হৃদের দিকে তাকায়। হৃদ তো আমার রুমে।এটা খালাম্মা জানলে তো হৃদকে আবার মারবে।খালাম্মা ডেকে যাচ্ছে আমাকে আর হৃদ সেখানেই দাড়িয়ে আছে।
আমি হৃদকে ঠেলে ওয়াশরুমের মধ্যে ঢুকিয়ে দিই।
আর বলি খালাম্মা না যাওয়া পর্যন্ত এখান থেকে বের হবেন না।
তারপর আমি ওয়াশরুমের দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে রুমের দরজাটা খুলে দিয়।
খালাম্মা রুমের ভেতরে আসে। আলমারি থেকে একটা কাপড় বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দেয়।
তারপর বলে, গোসল করে রেডি হয়ে নিতে।
হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে বাইরে লাঞ্চ করে তাই বাড়িতে ফিরবো আমরা।
খালাম্মা আমার রুমেই বসে থাকে।আর ওয়াশরুমে হৃদ।
আমি না চাইতেও ওয়াশরুমের ভেতরে যায়।
গিয়ে দরজাটা আটকিয়ে পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখি হৃদ দাড়ানো।
আমার কিছু বলার আগে হৃদ এগিয়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো।
বাইরে খালাম্মা আছে।আমাকে এখানেই চেঞ্জ করতে হবে।
আচ্ছা কর।গোসল করবি তো?
আমার হাত থেকে কাপড় ও তোয়ালেটা নিয়ে পাশে রাখলো।
তারপর আমায় নিয়ে পানির কাছে গিয়ে পানি ছেড়ে দিলো।
কি করছেন কি? আমাকে একদম ভিজিয়ে দিয়েছেন!
তো কি হয়েছে? মা তো তোকে গোসল করতেই বললো।
আমি এই শীতে গোসল করবো? আমি কাপড়টা চেঞ্জ করেই চলে যাবো।
কি? তুই গোসল করবি না।সারাদিন বাইরে থাকবি আর রাতে এসে সেই আমার সাথে ঘুমোবি।তোর গায়ের থেকে তো ঘামের গন্ধ বের হবে।আমি কি রাতে তোর ঘামের গন্ধ শুকবো?
আপনার সাথে ঘুমোবো মানে? আপনি আমরা বেরিয়ে যাবার পরপরই এবাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন।
নাহ!
হ্যাঁ।
না গেলে কি করবি? বাবা-মাকে বলবি আমি তোর কাছে আছি? ঠিক আছে যা।গিয়ে বল!
আমাকে ধাক্কা দিয়ে হৃদ ইশারা করে বাইরের দিকে।
নাহ! আমি সেটা বলতে পারবো না।আপনি নিজের থেকেই চলে যাবেন।
আমার কথাটা শুনে হৃদ খুশি হয়।হৃদ আমার কাছে এসে আমার মুখটা ধরে বলে, আমি কখনো তোকে ছেড়ে যাবো নারে।এবার যাতো গোসল করে নে মা বাইরে অপেক্ষা করছে।
আমি কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকি।সেটা দেখে হৃদ আমার পড়নের জামাটা টেনে বলে, এখোনো দাড়িয়ে আছিস কেন?
তো কি করবো? আপনার সামনে আমি..
আমি আর কিছু বলার আগেই হৃদ আমার জামার পিছনের চেইনটা খুলে ফেলে।আর বলে, নাটক বন্ধ কর।আমার সামনে অনেক খুলেছিস কাপড়।
***পরের পর্বগুলো সবার আগে পড়তে আইডিতে রিকোয়েস্ট দিয়ে পড়তে পারেন। ***
কথাটা বলে হৃদ আমার জামাটা খুলতে যায়। আমি হৃদের হাতদুটো ধরে বসি।আর বলি,প্লিজ এমন করবেন না।আমাকে নিজে করতে দিন।
আমি করলে তোর সমস্যা কোথায়?
না আপনি পারবেন না।
পারবো।
হৃদ জোড় করে আমার গলায়, মুখে আর পিঠে সাবান লাগিয়ে দেয়।
আমার খুব শীত করছে।
জামাটা খোল ফুল।
নাহ।জামা কেন খোলা লাগবে?
না খুললে তোর গায়ে ভালো ভাবে সাবান লাগানো যাবে না।
আপনার আর কিছু করা লাগবে না।আমি নিজেই করছি সরুন।বলে সাবানটা হৃদের কাছ থেকে টেনে নিয়ে নিলাম।আর হৃদকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিলাম।
তাকিয়ে দেখি হৃদের মুখটা কালো হয়ে গেছে। আমাকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে কিছুটা দূরে গিয়ে দাড়িয়ে আছে।
আর আমার খুব শীত করছে। না চাইতেও আজ হৃদের পাল্লায় পরে গোসল করতে হচ্ছে।
আমি জামাটা খুলে বুকের উপরে দিয়ে গায়ে সাবান লাগাচ্ছি আর কাঁপছি।বাইরে থেকে খালাম্মা ডেকে চলেছে।কি হলো ফুল এখনো হলো না?
হ্যাঁ, খালাম্মা।আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসছি।কথাটা বলে সাবানটা পাশে রাখতে যাবো আমার হাত থেকে পরে যায় সাবান।আমি উঠাতে গেলে শব্দ পেয়ে হৃদ পেছনের দিকে ঘুরে তাকায়।আর আমি সাবানটা না উঠিয়েই বুকের উপর থেকে নিজের জামাটা ঠিক করে দিতে থাকি।হৃদ এই অবস্থায় আমাকে দেখলে যে কি করবে তা আমি খুব ভালো করেই যানি।তাকিয়ে দেখি হৃদের চোখদুটো একদম আমার দিকে।ও আমাকে ভেজা শরীরে এভাবে দেখলে যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না।
ওদিক থেকে একপা দুপা করে আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে হৃদ।
আর এদিকে আমি ভয়ে চুপসে যায়।হৃদ একদম আমার কাছে চলে এসেছে।
ও আমার কাছে এসে আমাকে ছুতে যাবে অমনি আমি উল্টো দিকে ঘুরে যায়।
হৃদ আমার পিঠের উপর থেকে ভেজা চুলগুলো সড়িয়ে দেয়।
আর আমার পিঠে অসংখ্য চুমু খাই। তারপর আমাকে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
আমার গালটা শক্ত করে ধরে আর আমার ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটে বসিয়ে নেয়।
কিছুক্ষণ পর আমার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে ছরি বলে আমার থেকে দূরে সরে যায় হৃদ।
আমি জানতাম হৃদ এমন কিছুই করবে।
বাইরে খালাম্মা আছে ওকে কিছু বলতেও পারছি না।
আমি আস্তে করে কাপড়টা নিয়ে ভেজা শরীরে ওয়াশরুম থেকে বাইরে চলে আসি।
আর ওয়াশরুমের দরজাটা বাইরে থেকে লক করে দিই।
একি ফুল ভেজা শরীরে রুমে কেন আসলি? খালাম্মা বসা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে জানতে চায় আমার কাছে।
আমি কিছু একটা ভেবে বলি, ওয়াশরুমে অনেকগুলো ইঁদুর দেখেছি খালাম্মা।আর আমি ইঁদুরকে খুব ভয় পাই।তাই বাইরে চলে এসেছি।এখানেই চেঞ্জ করবো।
খালাম্মা বলে, ঠিক আছে তুই চেঞ্জ করে বাইরে আয়! তারপর আমরা বের হবো।
আর রাতে আসার সময় ইঁদুর মারা ওষুধও কিনে আনবো।
আমি মাথাটা ঝাকিয়ে ঠিক আছে বলি।
খালাম্মা বের হয়ে গেলে আমি রেডি হয়ে বাইরে আসি।খালু নিচে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে।
খালাম্মা গাড়ির পিছনের সিটে বসে আছে।আমি গিয়ে খালাম্মার পাশে বসি।
গাড়ি চলছে,,, আমি খালাম্মাকে জিজ্ঞাসা করি, আমরা হসপিটালে কেন যাচ্ছি? কারও কি কিছু হয়েছে?
খালাম্মা বলে, বাচ্চাটার জন্য যাচ্ছি। এতোদিন আমাকে দিয়ে বাড়িতে অনেক কাজ করিয়েছে।
এর জন্য বাচ্চার শারিরীক গঠনে যেন কোনো কমতি না থাকে।
বাচ্চাটা সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে যেন পৃথিবীতে আসে সেজন্য ডাক্তারে কাছ থেকে খাবারের লিস্ট তৈরি করে আনবে।কখন কি খাবার আমাকে খেতে দেয়া হবে সেটা।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com