প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি । পর্ব - ০৮
সকালে হ্যাপী ঘুম থেকে উঠে দেখে অয়নের বুকে শুয়ে আছে,,আর অয়ন জরিয়ে ধরে আছে,, তারাতাড়ি অয়নকে ছাড়িয়ে উঠে যায়,,,অয়নের ধাক্কা লাগায় অয়ন ও উঠে যায়,,
আ..পনি আ..আমার কাছে
আসলে কাল তোমার অনেক জ্বর এসেছেছিলো তোমার শরীরে দেওয়ার মতো কিছু পায়নি তারমধ্যে তুমি শীতে কাঁপছিলে তাই উপায় না পেয়ে এইভাবে শুয়ে ছিলাম,মাথা নিচু করে(আমি ভেবেছিলাম হ্যাপীর ঘুম ভাঙ্গার আগেই আমি উঠে যাবো,,,কিন্তু তা আর হলো এখন আমাকে কী ভাবছে)
দরজায় কারো আয়ওয়াজ পেলো,,বাহিরে থেকে কেউ ডাকছে,, তাই অয়ন গিয়ে দরজা খুলে দিলো,,
কিছুক্ষণপর ওরা বস্তি থেকে বের হয়ে গেলো,,,
আপনাকে আমার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে স্যার আর কষ্ট করতে হবে কাল রাতের ঘটনা একটা খারাপ স্বপ্ন ভেবে ভূলে যাবেন,,আমি এখান থেকে একা বাসায় যেতে পারবো
হ্যাপীর কথা গুলো অয়নের কলিজায় গিয়ে লাগলো,,
তুমি ভূলে যেও না তুমি এখন আমার বিবাহিত স্ত্রী,,,তাই তোমাকে একা ছাড়ার কোনো প্রশ্নই নেই
এই বিয়ে আমি মানি না,, আমি শুধু আপনাকে বাঁচাতে বিয়েতে রাজি হয়েছি
তুমি এই বিয়েটা মানো কী না মানো তাতে আমার কিছু আশে যায় না,,,এখন বাসায় চলো,,তেমার ভাইয়াকে কল দিয়েছি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, (অনেকটা রেগে)
হ্যাপী ভয়ে আর কিছু বলে নি,, অয়নের সাথে হাঁটতে শুরু করছে,,,
বাসয় কলিং বেল বাজতেই ভিতর থেকে ইমু দরজা খুলে দিলো,, হ্যাপী ঠিক আসিছতো,,সারা রাত তোর জন্য কতো চিন্তা করেছি জানিস,,,সকালে আব্বু আম্মু বিদেশে যাওয়ার পর আর লেট না করে চলে আসি,,
ভিতরে যেতে দিবে নাকী বাহিরেই দাড়িয়ে থাকবো(অয়ন)
না স্যার ভিতরে আসেন,,,তারপর দুজনেই ভিতরে এসে সোফায় বসেছে,,এর মধ্যে শাহীন আর ওর আম্মু ও এসেছে সবাই বসে আছে,,
আরে ভাইয়া আপনি,,(অয়ন)
আপনি এখানে,,,আমি হ্যাপীর বড় ভাই,,আপনি তাহলে আমার বোনকে বাঁচিয়েছন
আমাকে আপনি করে বলবেন না ভাইয়া তুমি করে বলবেন, প্লিজ
আচ্ছা ঠিক আছে এখন বলো কাল কী হয়েছিল?
কাল রাতে অনেক বড় ঘটনা ঘটে গেছে,, আমি সব বলতে চাই আপনাদের,, হ্যাপীর মুখে কোনো কথা নেই শুধু চোখের পানি ফেলছে,,
হা বলো,,কাল কী হয়েছে আমার বোনের কোনো ক্ষতি হয়নি তো,,(কিছুটা ভয়ে)
অয়ন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সব খুলে বলছে,,কারো মুখে কোনো কথা নেই,,,
আপনাদের যদি কোনো আপওি না করেন আমি হ্যাপীকে স্ব-সম্মানে আমার বউ করে আমাদের বাসায় নিতে চাই।
না আমি চাই না(হ্যাপী)
হ্যাপী যখন বড় রা কথা বলে ছোটরা চুপ করে থাকে তুমি জানো না,,(অয়ন)
অনেক্ষন চুপ থাকার পর হ্যাপীর আম্মু কথা বললো
আমরা রাজি তুমি তোমার বাবা-মাকে আসতে বলো
কিন্তু আম্মু (শাহীন)
আমি নিশ্চয়ই তোমাদের খারাপ চাইবো না,,
আর কেউ কোনো কথা বলতে পারলো না,,
আন্টি আমার আম্মু নেই বাবাকে কল দিয়েছি বাবা আসছে,,,
ইমু মা ওদের জন্য নাস্তা রেডি করবো চল আমার সাথে,,
আন্টি চলেন,,
সবাই চুপচাপ অল্প একটু নাস্তা করে নিলো,,এর মধ্যে অয়নের বাবা ও চলে আসলো
স্যার আসেন,,আসলে স্যার আমি জানতাম না এইসব,(শাহীন)
আমাকে সব বলেছে অয়ন,,আর স্যার বলছো কেনো এটা অফিস না বাসা,,এতক্ষণে কারো বুঝতে বাকি নেই যে শাহীন অয়নদের অফিসে কাজ করে
সবার কথার পর এটাই সিদ্ধান্ত হলো আজকেই বিয়ে দিয়ে নিয়ে যাবে,,অয়নের বাবা আর দেরি করতে চায় না,,অনুষ্ঠান করলে পরে করা যাবে(তিনি যানেন এই হ্যাপী ই সেই মেয়ে যাকে অয়ন ছয় বছর যাবৎ ভালোবাসে)
সন্ধ্যার মধ্যেই বিয়ের ছোটখাটো আয়োজন করা হয়েছে,,
হ্যাপী মনে হয় বোবা হয়ে গেছে মুখে কোনো কথা নেই ইমু একটা সারি নিয়ে হ্যাপীর রুমে গেলো
তারাতাড়ি সারিটা পড়ে নে বাহিরে সবাই অপেক্ষা করছে,, কিন্তু হ্যাপীর কোনো নাড়াচাড়া করছে না দেখে ইমু হ্যাপীর পাশে বসলো,,কী হয়েছে বল আমাকে,,তুই এই বিয়েতে রাজি না,,
হ্যাপী আর চুপ করে থাকতে পারলো না,,ইমুকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললো,,আমি অচেনা মানুষটাকে খুব ভালোবাসি ইমু,,আমি কী করে আমার প্রথম ভালোবাসাকে ভূলবো বল,,একটু একটু করে প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি গুলোকে সাজিয়েছি,,কীভাবে ভূলবো বল,,তাকে যে বলাই হলো না আমি তাকে অনেক ভালোবাসি,,,
ইমু এতক্ষণ আমার কথাগুলো শুনলো,
তুই আমাকে এইকথাগুলো আগে বলিসনি কেনো,,আর অচেনা মানুষ অচেনা হয়ে হারিয়ে গেছে কোথায় পাবি তুই সেই অচেনা মানুষকে,,তার নামটা পর্যন্ত জানিস না,,আর এখন এই কথা শুনলে আন্টির কী হবে ভাবতে পারছিস,,,এখন আর এইসব ভেবে লাভ নেই,,তুই প্রথম ভালোবাসা ভূলতে পারবি না তো,,, ভূলতে হবে না,,তোর মনের এক কোনায় সারাজীবন থেকে যাবে,,কিন্তু স্যার তোর স্বামী এটা ভূলে যাবি না,,,এখন আর লেট না করে রেডি হয়ে নে,,হ্যাপীর কিছু করার নেই তাই চুপচাপ রেডি হয়ে নিলো,,,ঘরোয়াভাবে আবার দুজনের বিয়ে হলো,,এবার বিদায়ের পালা,,,সবাই অনেক কান্না করছে,,
অবশেষে অয়নদের বাসায় এসেছে,, হ্যাপীকে একটা রুমে নিয়ে আসা হলো,,রুমটা পরো ফুল দিয়ে সাজানো,,আর সবচেয়ে বড় কথা পুরো রুম হ্যাপীর পছন্দের লাল, সাদা গেলাপ আর ডালিয়া ফুল দিয়ে সাজানো,কেউ বিস্বাস করবে না হঠাৎ করে বিয়ে হয়েছে,,একা বসে বসে এমন হাজার কথা ভাবছে এমন সময় রুমে কারো আসার শব্দ শুনলো,,এটা স্যার ছাড়া আর কেউ না,,
তুমি এখনো এভাবে বসে আছো আলমারিতে তোমার ড্রেস রাখা আছে নিয়ে ফ্রেস হয়ে আসো,,তেমার সাথে আমার কথা আছে,,,
হ্যাপী আবার অভাক হলো আলমারি খুলে সব ওর পছন্দের ড্রেস,,অনেক প্রশ্ন ওর মনে কিন্তু করার সাহস পাচ্ছে না তাই একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো,,,
ফ্রেস হয়ে এসে বিছানায় বসলো,,অয়ন ওর পাশে বসে হাতটা ধরতেই হাতটা ছাড়িয়ে নেই,,
স্যার এই বিয়েটা আমি মানতে পারবো না,,,আর কোনোদিন মানতে পারবো কী না তাও জানি না,,আমি অন্যজনকে ভালোবাসি(এক নিঃস্বাসে বলে দিল)
ভালোবাসি কথাটা অয়নের কানে বার বার বাজছে,,,(হ্যাপীকে হারানোর ভয় জেগে উঠেছে) ভালোবাসো মানে কাকে ভালোবাসো
অচেনা মানুষকে নাম জানি না,,তাকে কোনোদিন দেখিও নি তারপর তাকে অনেক ভালোবাসি,,, সে যে আমার প্রথম ভালোবাসা,,, আমি তাকে কোনোদিন ও ভূলতে পারবো না,,,আমি জানি আপনি আমাকে খারাপ ভাবছেন,,কিন্তু আমি একটা সম্পর্ক মিথ্যা দিয়ে শুরু করতে চাই না,,এবার আপনার যা ইচ্ছে করতে পারেন আমার কিছু বলার নেই,,,
অয়ন মনে মনে অনেক খুশি হলো,,,
আচ্ছা আমি তোমাকে জোর করবো না,, তুমি যতদিন আমাকে মানতে পারবে না ততোদিন আমি অপেক্ষা করবো,,কিন্তু তা ছাড়া আমার বাকি কথা তোমার শুনতে হবে,,তোমাকে তোমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে,,, আমি তোমাকে ভর্তির ব্যবস্থা করছি,,তুমি আবার পড়াশোনা শুরু করবে,, এখন শুয়ে পড়ো,,কাল থেকে ঠিকমতো ঘুমাতে পারো নি,,আমি সোফায় আছি,,,
হ্যাপী চুপচাপ শুয়ে পড়লো,। অয়ন ও সোফায় শুয়ে ভাবছে,,,
হ্যাপী তাকে ভালোবাসে,,আজ অয়ন আসলেই খুব খুশি
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com