Breaking News

ঝরা ফুলের বাসর । পর্ব - ০৪



ঠাসসস! ছিই হৃদ ছিই এতোটা নিচে নেমে গেছিস তুই? আমার ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে যে তুই আমার ছেলে।তুই শেষ পর্যন্ত এমন কাজ করবি আমি কখনো ভাবতে পারি নি।

খালাম্মাকে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুনে আমি ঝটপট করে উঠে বসি।তারপর নিজের কাপড়টা ঠিক করে নিয়। খালাম্মা আমার দিকে তাকায়। আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।ভয়ে আমার হাত পা থরথর করে কাঁপছে। না জানি আমাকে আজ কি শাস্তি দেবে?
একি! খালাম্মা কাছে এসেই আমাকে জোড়িয়ে ধরেছে।আমার মুখে চুমু খাচ্ছে। আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। তাহলে কি আমাদের মধ্যের সব কথা শুনে নিলো খালাম্মা?
খালাম্মা কাঁদতে কাঁদতে আমার সামনে দু'হাত জোড় করে বলে, আমাকে ক্ষমা করে দিস ফুল আমি তোর প্রতি অনেক অন্যায় করে ফেলেছি।
আমি খালাম্মার হাতটা নিচে নামিয়ে দিই।তারপর বলি,
নাহ নাহ তুমি কেন ক্ষমা চাইছো? তোমারতো কোনো দোষ না।সব দোষ শুধুই হৃদের।
হৃদ বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকায়।
এগিয়ে এসে কিছু বলতে গেলে খালাম্মা হৃদকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে।
আর হৃদ আমার মুখের দিকে সেই একইভাবে চেয়ে থাকে।
কি হলো শুনতে পাস নি? এই মুহূর্তে এই বাড়ি থেকে তুই বের হয়ে যা হৃদ।
উচ্চ কন্ঠস্বরে খালাম্মা কথাটা বলে হৃদকে।

হৃদ কেঁপে উঠে একটু নরেচরে উত্তর দেয় ফুলকে আমি বিয়ে করেছি মা।
আমি গেলে ওকেও সাথে করে নিয়ে যাবো।
কথাটা বললে খালাম্মা ঠাসসসস! করে হৃদের গালে আরেকটা থাপ্পড় মারে।
তারপর হৃদকে হাত ধরে টেনে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে সব
জিনিসপত্র গুছিয়ে ওর হাতে লাগেজটা ধরিয়ে দেয়।
আর বলে, শেষবারের মতো তোকে বলছি এই বাড়ি থেকে তুই বেরিয়ে যা।
তোর জন্য আমার বোন আত্নহত্যা করেছে।তোর মতোন খুনীর আমার বাড়িতে কোনো জায়গা নেই।
হৃদ লাগেজটা নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বলে,
আমি গেলে ফুলকে সাথে করেই নিয়ে যাবো।
আমি আমার হাতটা হৃদের থেকে ছাড়াতে চেস্টা করি।
এমন সময় খালু এসে হৃদকে জিজ্ঞাসা করে এভাবে আমার হাত কেন ধরেছে? হৃদ বলে আমার গর্ভের সন্তানটা ওর আর ও আমাকে বিয়ে করেছে।
তাই ও যেখানেই যাবে আমাকে নিয়ে যাবে।

কথাটা শুনে খালু রেগে যায়। আর হৃদকে মারে।মারতে মারতে হৃদের অবস্থা কাহিল করে দেয়।
হৃদ আর উঠে দাড়াতেও পারে না।খালু সেখান থেকে রেগে মেগে চলে যায়।
আর হৃদ আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমার একটুও মায়া হয় না এই অবস্থায় ওকে দেখে।
ও মরে গেলেও আমার কস্ট হবে না।
খালাম্মা আমাকে ধরে আমার রুমে নিয়ে আসে আর বলে এখন থেকে বাড়ির কোনো কাজ না করতে।
আর সারাদিন রেস্ট নিতে।
খালাম্মা আমার যত্ন নেই।আমাকে এসে খাইয়ে দিয়ে যায়।
তখন হৃদকে খালু মারার পর সেই যে রুমে এসেছি আর বের হই নি।
দুপুরে রুম থেকে বের হয়ে ওইখানটাই আসি যেখানে হৃদ খালুর মাইর খেয়ে পরে ছিলো।
কিন্তু হৃদ সেখানে নেই।মনে মনে আমি খুব খুশি হলাম।আমি ভাবলাম সত্যি সত্যি হয়তো
হৃদ বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে গেছে।খুশীতে আমি সেই আগের মতোন সারা
বাড়িতে ঘুরঘুর করছি।এখন না আমার কোনো কাজ করতে হচ্ছে আর না
খালাম্মার দূঃব্যবহার সহ্য করতে হচ্ছে।
সত্যিটা জানার পর খালাম্মা ঠিক আগের মতোন আমাকে ভালোবাসছে।

সারাদিন পর আমি রাতে আমার রুমে আসলে রুমটা একদম অন্ধকার দেখতে পেলাম।
আমার একদম মনে আছে রুমের বাতি জ্বালিয়ে আমি বাইরে গিয়েছিলাম
তাহলে এতো অন্ধকার কিভাবে হলো? আমি অতোসতো না ভেবে রুমের ভেতরে গিয়ে
বাতিটা জ্বালাতে যাবো এমন সময় পেছনের থেকে দরজা বন্ধের শব্দ শুনতে পাই।
আমি ঘুরে দাঁড়াতেই কেউ এসে আমার মুখটা চেপে ধরে।আমি চিৎকারও করতে পারি না।
তারপর আমার চোখের সামনে ফোনের ফ্ল্যাস লাইটটা জ্বালিয়ে ধরলে মুখটা দেখতে পেলাম।
এ আর কেউ না হৃদ।তাহলে হৃদ এখনো বাড়ি থেকে যায় নি?

কি ভেবেছিলি ফুল তোকে ফেলে রেখে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো? কখনো না!
কোথায়ও গেলে তোকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবো।আর এবাড়িতে থাকলেও তোর সাথেই থাকবো।
অনেক রাত হয়েছে শুতে আয়!
আমি ধাক্কা দিয়ে হৃদকে দূরে সরিয়ে দিয়ে আলোটা জ্বালিয়ে বলি, কক্ষনো না।
আমি আর কখনো আপনার সাথে শুবো না।
কথাটা বলে চোখ তুলে চেয়ে দেখি হৃদের মুখে আর বুকে খালুর মাইরের দাগগুলো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
হৃদ ঘুরে পাশের টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি খাই।
তখন ওর পিঠের দাগগুলোও দেখা যায়।
কি চাস তুই ফুল? তোর জন্য আমি আজ বাবার কাছে এতোটা মাইর খেলাম।
মায়ের কাছেও পর হয়ে গেলাম।এরপরও আমাকে ঘৃণা করবি?

হ্যাঁ করবো।কারণ আপনি আজ আপনার নিজের দোষে খালুর কাছে মাইর খেয়েছেন।
খালাম্মার কাছে পর হয়েছেন।
এক্ষুনি আমার রুম থেকে আপনি বের হবেন নইতো আমি চিৎকার দিয়ে খালু, খালাম্মাকে ডাকবো।
হৃদ টেনে আমাকে বিছানায় ফেলে বলে, তোর যা ইচ্ছা তুই তাই কর।তবুও আমি কোথাও যাবো না।
তোর রুমেই ঘুমোবো।কারণ তোকে ছাড়া আমার ঘুম হয় না।
কথাটা বলে আমার হাতদুটো বিছানার সাথে চেপে ধরে।
আমি চিৎকার দিতে যাবো তার আগেই আমার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়।
আমার ঘৃণা হয় হৃদের স্পর্শে। আজ আমি না পেরে হৃদের ঠোঁটে জোড়ে কামড় বসিয়ে দিয়।
তারপর চিৎকার করে খালু, খালাম্মাকে ডাকি।তারা এসে দরজায় কড়া নাড়াতে আমি
ধাক্কা দিয়ে হৃদকে সরিয়ে উঠে পরে দরজাটা গিয়ে খুলে দিয়।
আর খালাম্মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদি।খালু রুমের ভেতরে গিয়ে দেখে হৃদ আমার রুমে।
যা দেখে রেগে গিয়ে খালু হৃদকে টেনে বাইরে নিয়ে আসে আর মারতে থাকে।
হৃদকে মারতে মারতে খালু বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com