Breaking News

গল্প: ত্যাগ । পর্ব- ০৪


আমি বলি কি বাবা, তুমি না মায়ের খোঁজ-খবর নেওয়া একে বারে বন্ধ করে দাও, তাকে পাত্তা কম দাও। দেখেনিও, একে বারে ঠান্ডা হ'য়ে যাবে। আমি ও ঠিক এটাই করি যখন প্রিয়ন্তি কন্ট্রোল করতে চায় কিংবা দু'চারটে বেফাঁস কথা বলে ফেলে আমাদের বড় মায়ের সম্পর্কে।

দেখ বাবা, মায়ের ইনসিকিউরিটি টা হয়তোবা আমি বুঝতে পারছি৷
কিন্তু প্রিয়ন্তির অন্তত কৃতজ্ঞ থাকা উচিত বড় মায়ের কাছে।
কারণ, আজ সে এ বাড়ির বউ হ'য়ে এসেছে শুধুমাএ বড় মায়ের ইচ্ছেতে।
বড় মা না চাইলে, তার এ বাড়র বউ হয়ে ওঠা হতো না।
কারণ মা বরাবরই স্রোতের বিপরীতে গা ভাসিয়েসে। তিনি কখনো বড় মা কে সমর্থন করেননি।
অথচ সে আজ নিজেও ভুলে গেছে শুধুমাত্র বড় মায়ের ইচ্ছে তেই এ বাড়ির বউ হ'য়ে এসেছে।"

- "তুমি কি বলতে চাইছ নাহিয়ান, আমি তোমার ওই বড় মায়ের করুণার পাত্রী?
তাহলে সন্তান জন্ম না দিলেই পারতাম,আগে জানলে পৃথিবীর বুকে জন্ম দিতাম না
তোমাদের মতো এক এক টা কুলাঙ্গার সন্তানদেরকে।" ইমান
ছেলের কথা মেনে নিলো, সে গত সাতদিন ধরে কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় হয়ে পরছে।
বাকি ফ্রী সময় টুকু
শুধুমাত্র আয়েশার।
আয়েশা ও এই সময় টুকু খুব ভালো ভাবেই কাজে লাগাচ্ছে।
ইমান স্টাডি রুমে বডে খবরের কাগজ পড়ছিল, সে খেয়াল করে দেখলো মিম
একটা ফোন পেয়ে রেডি হ'য়ে ছেলেকে নিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে?
ইমান ও তার পিছু পিছু বেড়িয়ে গেলো। মিম এক টা রিকশা নিয়ে বেড়িয়ে গেলো
তার নিজ গন্তব্যে'র উদ্দেশে। ইমান ও তার পেছন পেছন ফলো করতে চলে গেলো,
তবে সে খুব অবাক হলো মিমকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাণিজ্য মেলায়
যেতে দেখে ও মেলায় গিয়ে ছেলেকে
অনেকঅনেক খেলনা কিনে দিলো আর নিজের জন্য
কিছু রেশমী চুড়ি কিনে নিলো মেলা থেকে।

তারপর, তাকে গোলাপি সাদা ক্যান্ডি ফ্লস কিনে দিলো নিজে ঝাল ফুচকা খেলো মেলা থেকে।
এরপর সে সদরঘাট রোড, স্টার কাবাব এন্ড রেস্টুরেন্টে চলে এলো নিজের জন্য
এবং ছেলের জন্য খাবার অডার দিলো ওয়েটার কে।
মায়ান একটু একটু মায়ের সাথে দুষ্টুমি করতে লাগল
ইমান অধৈর্য্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ সে কারোর সাথে ধাক্কা খেলো বাপ ছেলে দু'জনেই
অবাক হ'য়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। ইমান চমকে গিয়ে বলে উঠলো,
- "নাহিয়ান তুমি এখানে?"
- "আসলে আমি ফলো কর ছিলাম মা কে।
কিন্তু, তার সাথে কাওকে দেখতে পেলাম না তবে মা মেলায় গিয়েছিল বাবা।

এই জিনিস টা আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে।"
ইমান ছেলের কথা শুনে মুচকি হাসলো৷ মিম খাবার খেয়ে ছেলেকে নিয়ে সন্ধ্যায়
ফিরে এলো বাড়িতে।"
সদর দরজা দিয়ে সে বাড়িতে ঢোকায় সময় ইমান
জিজ্ঞেস করলো,
- "তুমি মেলায় গিয়েছিলে কেন? কখনো দেখেছ এই বাড়ির অন্যান্য
বউদে'র মেলায় যেতে?" আয়েশা বললো,
- "তুই কি কখনো আমাদের ক্লাস টা বুঝবি না বোন?
না মানে, তুই কখনো'ই ওনার অবাধ্য ছিলি না এর আগে।"
- "ওকে ফাইন, তবে কাল থেকে ক্লাবে গিয়ে পার্টি করবো,
পরপুরুষের সাথে ঠিক আপনার মতো'ই গা ঢলাঢলি করব।
আশা করছি,তাহলে আমার ক্লাস টাও ঠিক আপনার সমমান হ'য়ে যাবে?"
- "বউ মা তুমি?"
- "আপনি একটু চুপ করুণ মা,আপনার এতো ভাষণ কেন আমায় শুনতে হবে?
দু'চারটে ভাষণ,এই মহিলা কেও দিলে পারেন,
না কি তার কেনা গোলাম করে রেখেছে আপনাকে?"
ইমান মেজাজ হারিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো,

- "তুমি এভাবে কেন বেয়াদবে'র মতোন কথা বলছ মায়ের সাথে?"
- "ভালো মানুষি অনেক করেছি। জনাব, আমার কি লাভ হলো তাতে?"
- "তুমি অনেক বেশি বলে ফেলছ না?"
- "নাহিয়ান, তোমাকে বড়দের কথার মাঝে ঢুকতে কে বলেছে?"
- "মা তুমি ভুল করছ।"
- "বাবা-ছেলে মিলে তবে ফলো কর ছিলে কেন আমাকে?"
দু'জনেই চুপ করে গেলো, মিম হাসতে হাসতে বললো,
- "কি আশ্চর্য?
খান বাড়ির বউ ও গিয়ে মেলায় ফলো কর ছিলো আমাকে।
কি উদ্দেশ্য কি আপনার মিসেস আয়েশা?
তা আমাকে ক্লাস শেখানো আপনার শেষ হয়েছে?"
ইমান চমকে আয়েশা’র দিকে তাকিয়ে রইলো, মিম ততক্ষণে ছেলেকে নিয়ে নিজের
ঘরে চলে এসেছে।
মহসীন সাহেব বাড়িতে ছিলেন না, তিনি আসতে না আসতেই রাবেয়া গিয়ে বিচার
দিলেন স্বামীর কাছে।
মহসীন সাহেব জামা-কাপড় ছেড়ে এসে মিম কে ডেকে পাঠালেন।
মিম যেতে'ই তিনি বেশ শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলেন,

- "মা তুমি আজ মেলায় ঘোরাতে নিয়ে গিয়ে ছিলে মায়ান দাদুভাইকে?
" মিম দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দিলো, - "জ্বি বাবা।"
- "আর কে কে গিয়ে ছিল তোমার সাথে?" মিম বেশ
শান্ত গলায় সবটা তার কাছে খুলে বললো, মহসীন সাহেব বড় নাতিকে বললো,
- "তুমি কি বেয়াদব নাহিয়ান দাদুভাই? এখুনি পা ধরে ক্ষমা চাও মায়ের কাছে।"
- "শোনো দাদুভাই, আমি তোমার এই কথাটা রাখতে পারবোনা।
জানো আমাদের সবার লজ্জা করে এই অভদ্র মহিলা
কে নিজের মা বলে লোকের কাছে পরিচয় দিতে।"
- "নাহিয়ান।" মিম হাসতে হাসতে বললো,
- "থাক বাবা, আমার মনে হ'য় না আপনার বকাবকি তে আমার প্রতি আমার ছেলে
এবং মেয়ের দৃষ্টিভঙ্গি কখনো চেঞ্জ হবে।"
- "আমাকে ক্ষমা দিয়ো মা।"
- "এভাবে বলবেন না বাবা।"
- "তুমি ঘরে যাও মা, নিশ্চয়ই,মায়ান দাদুভাই টা এত ক্ষণে ঘুম থেকে উঠে তোমাকে
দেখতে না পেয়ে কান্না কাঁটি জুড়ে দিয়েছে।" মিম ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো।
রাবেয়া বললেন,

- "তুমি কিছু বললে না ছোটো বউ মা কে?" মহসিন সাহেব চিৎকার করে বলে উঠলেন,
- "ঝি বাড়ির মেয়ে ছিলে তুমি, রাবেয়া। এতো সহজে ভুলে গেলে নিজের শেকড় টাকে?
তুমি নিজে কখনো মেলায় যাওনি? বিয়ের পরে আমি কখনো কি মেলায় ঘুরতে নিয়ে যাইনি তোমাকে?"
- "বাবা?"
- "বড় বউ মা তুমি কি মনে করো নিজেকে? তোমার এই অবস্থার জন্য তুমি নিজেই দায়ী,
তুমি কিন্তু দয়া করছ না আমার মা জননী কে আর ইমান ছোটো বউ মা কে ঘুরতে নিয়ে
যাওয়া তোমার দায়িত্ব ছিলো। তুমি দেখছি, গায়ে হাওয়া-বাতাস লাগিয়ে ঘুরছ এ বাড়িতে?
শোনো, বড় বউ মা একা তোমার বউ না।
ছোটো বউ মায়ের প্রতিও তোমার কিছু দায়িত্ব কর্তব্য আছে।
আর আমি জানি না, বড় বউ মা কি উদ্দেশ্য তোমার। তবে তুমি সন্দেহ করে ভুল করেছ
আমার ছোটো বউ মা কে। তুমি বরং বাড়িতে'ই থাকো, ব্যবসা বাণিজ্য আর করতে হবে না তোমাকে।
খুব উন্নতি হয়েছে তোমাদের,

তোমাদের কাজকর্মেই বাবা-মায়ের দেওয়া শিক্ষার প্রকাশ পাচ্ছে।"
ওনার কথা শুনে চুপ করে গেলো সকলে মহসীন সাহেব কড়া গলায় বললেন,
- "আমার মনে হয় না মা মেলায় ঘুরতে গিয়ে কোনো অপরাধ করেছে।
নিজের খুশির কারণ খুঁজে নেওয়া-
য় কোনো অপরাধ নেই সাথের মানুষ টা সঙ্গ না দিলে নিজের খুশির কারণ টা
নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে।"
মহসীন সাহেবের বলা প্রতিটি কথা ইমানে'র কানে বাজতে শুরু করলো।
ইমানের মধ্যে অপরাধ বোধ কাজ করছে, মহসীন সাহেব বললেন,
- "মা কে মেলায় ঘুরতে যাওয়ার অনুমতি আমি দিয়ে ছিলাম।"
এবার সকলেই হতভম্বের ন্যায় চেয়ে আছে।
মহসীন সাহেব উঠে নিজের ঘরে চলে গেলেন, মিমের এমন অবস্থানের জন্য সে নিজেকে দায়ী
করছে প্রিয় বন্ধু কে দেওয়া কথা টা তিনি রাখতে পারেননি।
বুক চিরে তার যেন সকল দীর্ঘ নিশ্বাস বেড়িয়ে আসতে চাইছে। মিম কিছুক্ষণ,
চোখের জল ফেলে শাওয়ার
নিতে লাগলো সে।

হঠাৎ মায়ান তাকে ডাকতে শুরু করলো, মিম গায়ে শাড়ি জড়িয়ে দ্রুত
বেড়িয়ে এলো বাথরুম থেকে।
ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিলো। মায়ান একটু অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে।
মিম আবারও কেঁদে ফেললো। সে ছেলে বললো,
- "জানো বাবা? তুমি ছাড়া এ বাড়িতে কেউ ভালো- বাসে না আমাকে।
তোমার বাবাও না।" ছোট্ট মায়ান যেন হঠাৎ খুব অস্থির হ'য়ে পরলো,
সে বারবার তার মায়ের গাল দু'হাতে আঁকড়ে ধরে গালে চুমু খাচ্ছে।
হয়তোবা মায়ের চোখে জল দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে তার
মিম নিজেকে সামলে নিলও মায়ান বারবার মায়ের
গালে,কপালে চুমু খাচ্ছে। মিম তাকে নিয়ে নিচে চলে এলো,
সে ছেলেকে কোলে নিয়েই তার জন্য খিচুড়ি রান্না করছে।
ইমান ছেলের জন্য নতুন নতুন অনেক খেলনা নিয়ে এলো,তবে নতুন খেলনা
দেখেও কোনো আগ্রহ দেখালো না সে। মিমের কোল থেকে সে ছেলে কে নিয়ে নিলো,
আমতা আমতা করে বললো,
- "পারলে ক্ষমা করে দিয়ো আমাকে, নাহিয়ান কে ।"
মিম কিছু বলার আগেই মায়ান কান্না-কাটি জুড়ে দিলো, সে সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকে কেড়ে
নিলো বাবার কোল থেকে। আয়েশা এসে বললো,
- "আমাকে একটু গরম পানি করে দিবি ছোটো?"
- "আপনার স্বামী কে বলুন,

তিনি এখানে দিব্যি সংয়ের মতোন দাঁড়িয়ে আছে।"
- "আমি আজ রাতে তোমার ঘরে থাকবো।"
- "আমার ঘরে এলে ঠ্যাং ভে*ঙে আজীবনের মতোন খোঁড়া করে বাড়িতে বসিয়ে রাখবো আপনাকে, মণি"
- "জ্বি, ছোটো ভাবি।"
- "আমার রাতের খাবার ঘরে দিয়ে আসো, এখুনি।"
আর কোনো কথা বের হচ্ছে না ইমানে'র মুখ থেকে।
মিম মায়ান কে নিয়ে ঘরে চলে এলো ছেলেকে খাইয়ে দিতে দিতে তাকে এক রাজা এবং তার দু'ই রানীর গল্প শোনাতে শুরু করলো সে।
মণি এসে রাতের খাবার রেখে চুপটি করে এক পাশে দাঁড়িয়ে রইলো,
মিমের তার দিকে নজর পরতেই সে বললো,
- "ছোটো ভাবি এতো অপমান আর কষ্ট সহ্য করে তুমি কেন এখনো পরে আছো এ বাড়িতে?
তোমার মর*ণ এলেও এদের কিছু যায় আসে না এরা কখনো
তোমার প্রয়োজনীয়তাটা বুঝবে না এ বাড়িতে।" মিম তার কথা শুনে হাসতে শুরু করলো, বললো,
- "আমার কিছু হলে তুমি একটু দেখে রেখো আমার মায়ান কে।" মণি আঁতকে উঠলো,
সে বলে উঠলো,
- "ও ছোটো ভাবি,
তোমার দু'টো পায়ে পরি তুমি কখনো এমন কথা এনো না নিজের মুখে এই নিষ্পাপ
বাচ্চাটার কি দোষ বলো?
ও শুধু তোমাকেই ভালোবাসে।"মণি যাওয়া পরে মিম খাবার খেয়ে নিলো, দরজা না লাগিয়েই
সে ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে গেছে। ইমান আয়েশার কাছে কিছুক্ষণ থেকে বিছানা ছেড়ে উঠে এলো,
সে এক হ্রাস অস্থির -তা নিয়ে মিমের ঘরের কাছে এসে দেখলো দরজা খোলা আছে।
ও সঙ্গে সঙ্গে রুমে চলে এলো, দরজা চাপাতে চাপাতে দেখলো মিম ছেলেকে ঘুম পারাতে
পারাতে নিজেই ঘুমিয়ে গেছে। ও চুপটি করে বউয়ের মাথার কাছে বসলো। হাতের কাছে
ফোন টা পেয়েই চেক করে দেখলো, লাস্ট কলটা মহসীন সাহেব তার পুরবধূকে করেছে।
তবুও ইমানের মনে খচখচ করতে
লাগলো, সে তার এক বন্ধুকে ফোন করে বললো,
- "দেখ সৌরভ আমার এই নম্বরের কল ডিটিয়েলস লাগবে আজ রাতের মধ্যে।"
সৌরভ ফোন নম্বর দেখে বললো,

- "পাগল হলি না কি তুই? না মানে, বুঝি না আমি।
নুতন ভাবি তোকে ডিভোর্স না দিয়ে এখনো কেন পরে আছে ও বাড়িতে?"
- "সৌরভ?"
- "চুপ কর তুই, আমার এরকম বউ হলে সারা জীবন মাথা করে রেখে দিতাম তাকে।
মেয়েট'র কপাল খারাপ যে তোর মতোন একটা আধ-পাগল লোকের সাথে ওর বিয়ে টা হয়েছে।
যাগগে সে সব কথা, তুই যখন বলছিস তখন আমি এই নম্বরের ডিটিয়েলস
টা বের করে দিচ্ছে তোকে।
তবে এর পর থেকে, তুই আমার কাছ থেকে আর কোনো সাহায্য পাবিনা।
কারণ, তোর মতোন একটা মাথা খারাপ লোকের জন্য আমি কখনো অসম্মান করতে
পারবোনা ওই মানুষ টা কে।" অতঃপর, খট করে কল টা কেটে গেলো ইমান এগিয়ে
গিয়ে আবার ও বসলো, বউয়ের মাথার কাছে।
তার মুখের ওপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিলো, বললো,

- "আজকাল কেন চাইলেও পারিনা তোমাকে হুটহাট নিজের বুকে জড়িয়ে নিতে?
দিন দিন এতো বদলে যাচ্ছো কেন তুমি? কেন প্রতিপদে পদে হেয় প্রতিপন্ন করছ
তুমি আমাকে?
সৌন্দর্যের খুব অহংকার না তোমার, তোমার এই রূপ যৌবন কি চির-জীবন থাকবে?"
হঠাৎ করে'ই মিম নিজের শরীরে ওপর ভারী কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করতে লাগলো।
ঘুম ঘুম চোখে সে তাকিয়ে দেখলো
শরীরের সমস্ত ভার ছেড়ে দিয়ে তার ছেলেমেয়ের বাবা তাকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে আছে।
মিম তাকে সরানো চেষ্টা করলো, ইমান ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করলো তার সাথে।
হঠাৎ করেই তার হাঁপানি শুরু হলো, মিম
তাড়াতাড়ি করে ইনহেলার এনে ইনহেলার থেকে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর পর ১
বার করে পাফ (দম) দিতে লাগলো তাকে।

প্রায় আধ ঘন্টা পর, ইমান স্বাভাবিক হলো। মিম তার গায়ে হাত বুলোতে বুলোতে জিজ্ঞেস করলো,
- "কষ্ট হচ্ছে না তো? ডক্টর কে আসতে বলবো?
আমি গিয়ে এখুনি ডেকে আনছি আপা কে।" ইমান
তাকে বাঁধা দিলো। সে আবারও জোরজবরদস্তি শুরু করলো বউয়ের সাথে।
মিম তাকে বুঝিয়ে বললো,
- "আপনার এই মুহুর্তে শান্ত থাকা উচিত,সোজা হয়ে বসুন।" ইমান ছেলের বলা কথা মনে করে
গ্রাহ্য করল না তাকে। আয়েশা হঠাৎ মাঝে রাতে ঘুম উঠে ইমান কে খুঁজতে
খুঁজতে মিমের ঘরে চলে এলো। চাপানো
দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দেখলো, তারা দু' জন অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আছে।
ও খুব দ্রুত ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। নাহিয়ান আয়েশা কে দেখে জিজ্ঞেস করলো,
- "বড় মা তোমার চোখে জল কেন? বাবা কোথায়? কি হয়েছে?" সে মেকি হেসে বললো,
- "ও তেমন কিছু না বাবা।
আমি ছোটো কে দেখতে এসে ছিলাম। তোমার বাবা ও, ও ঘরে ঘুমচ্ছে।"

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com