মেডামের বোরকাওয়ালি মেয়ে । পর্ব - ৭
কিছুক্ষণ পর মেম ফিরে এল,,
হাতে দেখি একটা বেত,,,,
আমার তো প্রান যায় যায় অবস্থা,,
আমার বুঝতে বাকী নেই যে,,মেম কালকের রাগ টা আজ তুলবে,,
মেম--এইখানে কেন আসিস,,,পরালেখার ধারে কাছে নেই,,বল এতক্ষণ কি পড়ালাম বল,,,
আমি মাথা নিচু করে আছি,,
মেম--কি হল বল,,(চিৎকার করে)
আমি তখন ও মাথা নিচু করে আছি,
আমার কোন রেসপন্স না পেয়ে,,
মেম উরাধুরা শুরু করে দিল,,
উপপ কি মাইর যে বাবা,,,
আমি--মেম প্লিজ মাইরেন না,,,
কে শুনে কার কথা,,
মেম তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত,,
এইভাবে অনেক্ষণ মারার পর,,থামল,,
মেম--যা ক্লাস থেকে বেরিয়ে যা,,
আমি কিছু না বলে ব্যাগ টা নিয়ে বেরিয়ে গেলাম,,
হাঁটতে কষ্ট কষ্টে,,
মাইরের কারনে শারা শরীর ব্যথায় টনটন টনটন করতেছে,,
অনেক জায়গায় ফেটে গেছে,,
আমি জীবনে এমন মাইর খাইনায়,,
কোন রকম বাসায় এসে কলিং বেল বাজানোর পর আম্মু দরজা খুলে দিল,,,
আম্মু--আমার অবস্থা দেখে কান্না করে দিল,,, বাবা তুর এই অবস্থা কিভাবে হল,,,
আমি--মেম মারছে,
আম্মু--কেন,,
আমি--পড়া পারি নাই তাই,,,
আম্মু--কি এত বড় সাহস,,পড়া পারস নাই বলে,, এইভাবে মারবে,,(কান্না করে)
আমি--আচ্ছা বাদ দাও,,, আমি রুমে গেলাম,,
আম্মু--আচ্ছা তুই যা,, আমি তুর জন্য তেল গরম করে আনি,,
আমি কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম,,
কিছুক্ষণ পর আম্মু তেল এনে,,,সারা গায়ে মালিশ করে দিল,,
মারিস করা শেষে,,
আম্মু--তুই শুয়ে থাক,,, আমি রান্না করতে গেলাম,,
পিট টা বিছানায় লাগার সাথে সাথে ব্যাথায় কুকড়িয়ে উঠলাম,,
কোন রকম উপুড় হয়ে শুয়ে আছি,,
ঐ দিকে,,
আম্মু মেম এর কাছে ফোন দিয়ে,,
আম্মু--তুই কি করে পারলি,,
আমার ছেলেটারে এইভাবে মারতে,,,,(কান্না করে)তুই ওকে যে আঘাত গুলো করছস,,
ও তো ভালো করে হাটতেও পারছেনা,,,,
মেম--চুপ করে আছে,,,,(আসলে মেম আমাকে মারার পর থেকে অনুতপ্ত,,))
আম্মু--সামান্ন পরা পারে নাই বলে এইভাবে মারতে পারলি,,
আমি আমার ছেলেকে আজ পর্যন্ত একটা ফুলের টুকাও দিনাই,,
মেম যখনি কিছু বলতে যাবে
তখনি আম্মু ফোন কেটে দিল,,
তারপর আমার জন্য খাবার নিয়ে আসল, খাবার খাইয়ে দিয়ে,,
আমাকে ঘুমাতে বলে চলে গেল,,
আমি ও ঘুমিয়ে পড়লাম,,
হঠাৎ আমার খুব শীত লাগতে শুরু করল,,
আমি শীতে কাপতেছি,,,
কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরলাম,,
বিকেলে মা এসে দেখে যে আমি কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছি,,আর গোঙ্গাচ্ছি,,
মা আমার কপালে হাত দিতেই দেখেযে জরে আমার গা পুড়ে যাচ্ছে,,,
আম্মু ডাক্তার কে ফোন করে বাসায় আনল,,
ডাক্তার আমাকে দেখে কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে আম্মু কে বলল,,
ডাঃ--এইগুলো দিনে তিন বার করে খাওয়াবেন,,,
ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে,,
আজ তিন দিন পর,,-------
আমার জ্বর অনেক টা কমে গেছে,,,
রুমের মধ্যে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি,,এমন সময় বুকে বারি কিছু অনুভব করলাম,,,
আমি চোখ খুলে দেখি একটা মেয়ে,,
আমি চেঁচিয়ে উঠার সাথে সাথে মেয়েটা মুখ তুলল,,
ওকে দেখেতো আমি অবাক,,আর কেউ নয় জারা,,ও এখানে কেন,,,
ওর চোখে পানি দেখতে পেলাম,,
জারা--এখন কেমন লাগছে,,?
আমি--ভালো,,, কিন্তু আপনি কান্না করছেন কেন,,?
জারা--সেটা তুই বুঝবি না,,,তুই জানিস আমি এতদিন ধরে তুলে না দেখে কত মিস করছি,,?
আমি---আমাকে মিস করার কি আছে,,
জারা--কুত্তা,,তুই জানস না,,তুই তো আমার ভ,,আটকে গেল,,(এইরে কি বলে ফেলছিলাম)
আমি--কি,,?
জারা--কিছুনা,,,,
আসতে পারি,,,?
বাইরে থেকে কে যেন জিগ্গেস করলো,,
দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি বজ্জাত মেম টা,,
আমি--আসসালামু আলাইকুম,,,অনুমতি নেওয়ার কি আছে,,,আসেন,,
এই বলে যখনি উঠতে যাব,,
মেম--থাক থাক এই অবস্থাই উঠতে হবেনা,,
মেম--এখন কেমন লাগছে বাবা,,?
আমি--জী ভালো,,
মেম--আমাকে মাফ করে দাও বাবা,, আমি রাগের মাথায়,,
আমি--আরে আপনি মাপ চাইছেন কেন,,? আপনি আমার শিক্ষক,, আপনি মারতেই পারেন,,
মেম--তাও বাবা,,(মেম এর চোখে পানি দেখতে পেলাম)
আম্মু--কথা পরে বলিস আগে নাস্তা খা,(রুমে ঢুকে,,)
মেম--না আমি এখন খাবনা,, আমি এখন যাই,,পরে আসব,,
মা--সেকি,,আজ না খেয়ে ছাড়ছি না,,,
মেম--আজ না আরেক দিন খাব,,,
মা--তা বল্লেন হবে না,,,
মেম--আচ্ছা ধারাকে রেখে যাচ্ছি,,,
আমি এখন যাই,, আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেল,,
বিকেলে---
ছাদে দাঁড়িয়ে আছি,,,,
হঠাৎ কে যেন কাঁদে হাত দিল,,
পিছনে ফিরে দেখি জারা,,
জারা--একা একা ছাদে কি করছ,,
আমি--প্রকৃতি দেখি,
জারা আমার পাশে এসে দাঁড়াল,,
আমি চুপ করে আছি,, তখনি
জারা--আচ্ছা তুমি কারো কাউকে ভালোবাস,,?
হঠাৎ জারার
এমন প্রশ্ন শুনে আমি অবাক,,
আমি--আপনি শুনে কি করবেন,,?
জারা--না এমনি,,(আমি না শুনে কে শুনবে) মনে মনে
আমি--না ভাসিনা,,তবে,,?
জারা--তবে কি,,?
আমি--তবে একটা মেয়েকে খুব ভালো লাগে,,,,
এই কথা শুনে জারার মনে ভয় ঢুকে গেল,,
জারা--কে কে সে,,?
আমি--আমার সাথে পড়ে,,একটা বোরকা ওয়ালি মেয়ে,, আমি ওর চোখ গুলোর মায়ায় পড়ে গেছি,,ওর চোখ গুলো ঠিক তুমার মত,,এই এলাকায় নতুন আসছে,,
জারা--নাম কি তার,,?
আমি--সামিয়া,,
((এই কথা শুনে জারা মনে মনে প্লাজু ড্যান্স দিচ্ছে,,,তার আজ খুব খুশি লাগছে,,,
ওর ইচ্ছে করছে আমাকে জড়িয়ে ধরে পাপ্পি দিতে,, তবুও অনেক কষ্টে খুশি আটকে রাখছে,,))
জারা--তো থাকে তুমার ভালোবাসার কথা বলে দাওনা,,
আমি--ও যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয়,,,এই ভয়ে বলতে পারছিনা,,,
জারা--তবুও বলে দেখ,,ও যদি তুমাকে মনে মনে ভালোবাসে,,তাহলে রাজিও হতে পারে,,
আমি--আমার ভয় করেত,,এর আগে কাউকে বলি নাই তো,,
জারা--ছেলে মানুষের আবার ভয়,,
আমি--আচ্ছা দেখি,,
আমি--আচ্ছা তুমি লেখাপড়া করনা,,?
জারা--ন,,?
আমি--কেন,,,?
জারা--কারন আমার বায়ে ঠিক হয়ে আছে,,
আমি--কি কখন,,?
জারা--ছোটবেলা থেকেই আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে,,,
আমি--কার সাথে,,?
জারা--তখন দেখতে পাবে,,,(তুর বিয়ের দাওয়াত তুরে দিলাম,,?))মনে মনে
আমি--ওওও,,,আচ্ছা নিচে চল,,,
জারা--আচ্ছা,,
নিচে এসে ,,
আম্মু--ওই তুরা নাস্তা করতে আই,,
আমি আর জারা একপাশে বসে পড়লাম,,
নাস্তা শেষ করে,,
জারা--আজ তাহলে আমি আসি,,
মা--আজ থেকে যা,,
জারা--না,,আরেক দিন,,(আর কয়েকদিন পর পারমেনেন্টলি চলে আসব,,আমমুর কানে কানে বলল))
আম্মু--পাজিল,,রিয়াদ,,ওকে দিয়ে আয়,,
আমি--আচ্ছা,,
জারা--রিয়াদ তুমি যাও,, আমি আন্টির সাথে কথা বলে আসছি,,
আমি কিছু না বলে বাইরে চলে গেলাম
ঐ দিকে ,,,
জারা--আপনি ওকে এই বেপারে কিছু বলবেন না,,
আম্মু--তুই তো ভারি দুষ্টু,,
((আম্মু আর জারার মধ্যে অনেক কথা হয়,, সেটা আস্তে আস্তে জানতে পারবেন)
জারা --আচ্ছা বাই,,
জারা বাইরে আসলে,,,
আমি ওকে ওর বাসায় দিয়ে আসি,,
পরদিন সকালে,,
আমি---আম্মু আমি গেলাম,,
আম্মু--না আর কয়েকদিন পর যাস,,
আমি--আমি এখন পুরোপুরি সুস্থ,,
মা--আচ্ছা সাবধান এ যা,,
বাসার বাইরে বের হয়ে তো
আমার চোখ কপালে,,
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com