Breaking News

তুমি আমার এক অন্যরকম শান্তি । পর্ব - ১৫

মেধা হবু জামাইয়ের সাথে সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে ১ টা ৩০ বেজে গেলো বুঝতেই পারলো না। হবু জামাই মেধাকে বললো

- তোমার ঘুম পাচ্ছে না।
- না। কেন তোমার ঘুম পেয়েছে।
- না। ভাবলাম তোমার হয়তো ঘুম পাচ্ছে বলতে পারছোো না তাই জিঙ্গেস করলাম।
- সমস্যা নেই। রাত জাগতে পারবো। অভ্যাস আছে।
- কেন এর আগে কি কারো সাথে কথা বলতে।
মেধা থ ম খেয়ে
- ন ন ন না৷
- তাহলে রাত জেগে কি করতা।
মেধা আমতা আমতা করে
- ঐ যে পড়াশোনা করতাম। পড়া কমপ্লিট করতে করতে কখনো ভোর হয়ে যেতো৷ কখনো মাঝ রাতে।
- ওহ তুমি তো ভালো স্টুডেন্ট।
- হ্যা তা কি আর বলতে?
- তোমার সাথে তাহলে সারা রাত কথা বলা যাবে।
- হুম।

রাত ২ টা
দরজা ধাক্কানোর শব্দে মেহেরাবের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। মেহেরাব ভাবছে এই রাতে আবার কে আসলো? আসার মতো কেউ নেই। তাহলে ডাক্কাছে কে? মেহেরাব বললো
- কে?
কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা খুলতেই অবাক হয়ে গেলো মেহেরাব। মেহেরাব হা হয়ে
- রা রাতুল তুই এতো রাতে।
রাতুল মেহেরাবের হাত ধরে
- দোস্ত তুই একমাত্র পারবি এই সমস্যা সমাধন করতে৷ ।
- ঘরে আই আগে সব শুনবো৷ দাঁড়িয়ে থাকবি নাকি।
রাতুল ভেতরে ঢুকলো। মেহেরাব বললো
- কি সমস্যা বল?
- জান্নাতকে দুই দিন ধরে বলছি তোদের এখানে নিয়ে যাবো। কিন্তু কাজের চাপে আর নিয়ে আসা হয়নি। তা নিয়ে আজ তুমুল ঝগড়া বাধাইছে ।
- কেন?
- বলছি আজ নিয়ে যাবো।
- ও কি বললো
- রাজি ছিলো কিন্তু আমার আবার একটা কাজ পড়ে গেলো। ওকে বলতেই আমার সাথে কি ঝগড়া। কি বলছে জানিস?
- না কি বলছে?
- বলছে, তোর সংসার তুই কর। আমাকে কথা দিয়ে কথা না রাখিস। ঠকাস আমাকে তুই আজ বাড়িতে আই। আমি তোকে নিয়ে যাবো না। তুই আমাকে নিয়ে খালি যাস ঐ বাড়িতে। আমি একা চলে যেতে পারবো তোকে লাগবে না। তোর কাজ নিয়েই থাক। আমি গেলাম।

মেহেরাব কথাগুলো শুনে হাসছে। রাতুল বললো
- হাসছিস কেন?
- তোর কথা শুনে৷ ।
-আমার কথা শুনে হাসি পেলো তোর।
- জান্নাত কেমন তা তুই ভালো করেই জানিস। ও অল্পতে রেগে যায়।
- আছে কিছু বলার মতো নেই৷ বললেই কি রাগ।
- রাগ ঝগড়া যদি না থাকে তাহলে ভালোবাসা বাড়বে কি ভাবে?
- আজ আমার জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেছে।
- সকাল হোক জান্নাতকে সব বলে দিবো তোর জীবন তেজপাতা।
রাতুল মেহেরাবের হাত ধরে
- দোস্ত এটা বলে আর তেজপাতা করিস না। ও কেমন জানিস তো।
- কেন রে? তোদের জন্য আমি যে দু দিন জেলে ছিলাম ভূলে গেছিস।
রাতুল মুচকি হেসে
- ঐটা জেল ছিলো নাকি তোর রেস্ট রুম ছিলো বল তো৷
- হ থাকলে বুঝতিস মশার কিস কাকে বলে?
- তা ও তো মশাকে পেয়েছিলি।

রাতুল হাসলো। মেহেরাব বললো
- তুই একটা সেলফিস। জান্নাতকে নিয়ে উদাও হলি তো হলি কোনো খোঁজ নেই তোদের। একটা খোঁজ ও তো নিস নি। নাম্বার আছে আমার তোর ফোনে। নেই তো।
- তুই বুঝলি কি করে?
- না বোঝার কি আছে। জান্নাত আসছে কি না তুই ফোন দিয়ে জিঙ্গেস করতি না করে সোজা চলে এসেছিস। আমি তো জানি জান্নাতকে ছাড়া তুই থাকতে পারবি না। তবে
- তবে কি?
- আমি প্রতিশোধ নিবো।
রাতুল অবাক হয়ে
- প্রতিশোধ মানে৷ কিসের।
- কিসের আবার আমাকে ভূলে যাওয়ার। এক মাসের আগে বাড়ি থেকে যেতে দিবো না।
- না না দোস্ত এমন করবি না। আমার কাজ থাকবে না তাহলে।
- না থাকুক। তুই চলে যাস। জান্নাত থাকবে নে।
- ওকে চোখের আড়াল করতে পারি না কিভাবে ওকে রেখে যাবো৷
- আহারে ভালোবাসা। খাইছিস কিছু নাকি ডাকবো।
- না খাইছি।
- তাহলে ঘুমাতে চল। সকালে দেখবানি।
রাতুল মেহেরাব দুজনে ঘুমাতে চলে গেলো।

এদিকে
মেধা আর তার হবু জামাই নাহিদ দুজনে কথা বলছে। কথা বলতে বলতে এক পর্যায় দুজনে রোমান্টিক হয়ে গেলো। দুজনের অনুভূতি জেনো কিছুতেই কমছে না৷ নাহিদ বললো
- তোমাকে ছাড়া আমার থাকা অসম্ভব।
- আমার ও। এতোটা সুন্দর অনুভব আমি আগে কখনো করি নি।
- বিয়ের তারিখ টা আরো আগে নি।
- হ্যা তাই নাও।
- আমি কালকেই কথা বলবো। তোমাকে আমার কাছে চাই।
- আমার ও। এতোটা শান্তি পাচ্ছি। কাছে পেলে না জানি কতোটা শান্তি পাবো৷
দুজনের ভেতর কথা চলতে থাকলো।
পরেরদিন সকালে
জান্নাত মেহেরাবের ঘরে ঢুকে হাতে থাকা পানি ভরা বালতি ঢেলে দিলো৷ রাতুল হুড়মুড় করে উঠে পড়লো৷ জান্নাত কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাতুল জান্নাতের দিকে তাকিয়ে
- এটা কি হলো?
- কি হলো বুঝছো না। ক টা বাজে তোমার না কাজ আছে।
রাতুল রাগি গলায়
- আমি কি আমার বাড়িতে যে কাজে যাবো?
- তোমাকে আসতে বলছে কে? যাও না কাজ নিয়ে থাকো। বিয়ের আগে তো কতো টাইম দেওয়া। এ করবো সে করবো। বিয়ের পর আমারেই চিনো না।
- তুমি কিন্তু বেশি বেশি করছো।
জান্নাত চোখ রাঙ্গিয়ে
- রাগ কাকে দেখাও হ্যা। আমার সাথে আসতে পারো নি রাত ২ টায় চলে এসেছো। কেন? আমি আসতে বলছি তোমাকে।

লে দুজনের ভেতর ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো। মেহেরাব ঘরে ঢুকে
- তোরা আবার শুরু করলি ঝগড়া।
জান্নাত বললো
- তুই আমাদের মাঝে আসছোস কেন? যা বের হ।
- ওরে হইছে থাম। এতো ঝগড়া করতে হবে না।
- দেখলি তো মেহেরাব কিভাবে আমাকে অত্যাচার করে।
জান্নাত রাগি গলায়
- আমি অত্যাচার করি তোমাকে।
দুজনে কথা কাটাকাটি করছে মাঝখান দিয়ে মেহেরাব সব শুনছে। এটা নতুন কিছু না। দুজনে একটু ঝগড়া লাগলে হয়েছে অভিযোগের বস্তা নিয়ে বসে থাকবে।
মিহু মিথিলা মা তিনজনে ঘরে বসে হাসছে ওদের ঝগড়া শুনে। মিহু বললো
- মা ওদের থামানো উচিত ।
- থেমে যাবে নে৷ এই ঝগড়া এই ভালো।
মিথিলা বললো
- তাই বলে এভাবে।
- হুম৷ একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করছে তো তাই এমন।
- মেহেরাব কে ডাক দি। ও ওদের মাঝখানে কেন গেলো?
- না। মেহেরাবকে এখন সব অভিযোগ গুলো বলবে৷
- ওকে বলে কি হবে?
- অভিযোগ শেষ কষ্ট ও শেষ। আবার ঠিক হয়ে যাবে সবকিছু।

মেধার বাবার ফোনে কল আসলো। মেধার বাবা ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
- বেয়াই সাহেব বলতেছিলাম যে আগামি সপ্তাহে ওদের বিয়ে টা যদি হতো।
- কেন বেয়াই? আপনি না বলছিলেন এক মাস।
- হ্যা। তবে আমি ভেবেছিলাম ছেলে মেয়ে দুজনে এক অপরকে এই এক মাসে জানবে বুঝবে কিন্তু
- কিন্তু কি বেয়াই?
- একদিনে চিনে বুঝে গেছে। তাই আর দেরি করতে চাই না। আপনার যদি অসুবিধা না হয়।
- কি যে বলেন বেয়াই। ঠিক আছে আগামি সপ্তাহে।
- ঠিক আছে বেয়াই।
ফোনটা কেটে গেলোব৷ মেধার বাবা বাসায় সবাইকে জানিয়ে দিলো।
আত্মীয় স্বজন দাওয়াত করতে হবে।
মেধার কানে খবর টা যেতেই নাহিদ কে কল করলো। নাহিদ কলটা ধরে
- কি খুশি তো?
- হ্যা খুব খুশি।
- আমরা খুব তাড়াতাড়ি একে অপরকে কাছে পাচ্ছি।
- যাহ দুষ্ট লজ্জা নেই একটু ও।
নাহিদ মেধা দুজনে লজ্জা পেয়ে লাল হয়ে গেলো
( হিহিহি অন্যদের মতো এদের দুজনকে লজ্জায় লাল বানিয়ে দিলাম 😁)
মেহেরাব জোরে এক ধমক দিয়ে দুজনকে থামিয়ে দিলো। দুজনে মেহেরাবের দিকে তাকিয়ে পড়লো........

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com