মেডামের বোরকাওয়ালি মেয়ে । পর্ব - ১৪
কুকুরের দৌড়ানি খেয়ে কোনো রকম বাসার সামনে এসে পড়লাম,,,
এসে হাঁফাতে লাগলাম,,
হালার পুত কি দৌড়ানি টাই না দিল,,
হাঁফাতে হাঁফাতে কলিং বেল বাজানোর কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে দিলে
আমি তো অবাক,,
কারণ শ্রদ্ধা ভাজন বোরকা ওয়ালি উরফে সামিয়া,, আমার সামনে দাঁড়িয়ে,,
ও আমার আগে কেমনে আসল,,,
আমি যে দৌড়া দৌড়েছি,,তাতে প্লেন ও আমাকে ধরতে পারবে কিনা সন্দেহ,,
জানিনা পেত্নি টা আমার আম্মু কে আমার নামে কি কি বলেছে,,
এগুলো ভাবছিলাম
তখনি--
সামিয়া--কি মশাই কুকুর দৌড়ানি কেমন দিল,,,
এইরে শাকচুন্নী টা কেমনে জানল,,
আমি--আমাকে কেন কুকুর দৌড়ানি দিবে,,
সামিয়া--কুকুর কে ইভ টিজিং করছ তাই,, কুকুর দৌড়ানি দিছে,,
আমি--আমি কুকুর কে দৌড়ানি দিছি যে,,(একটু ভাব নিয়ে)
সামিয়া--আমি দেখছি তো কে কাকে দৌড়ানি দিছে,,
আমি--আচ্ছা আপনি এইখানে কেন,,?
সামিয়া--আমার শশুর বাড়ি,, আমি যখন ইচ্ছা তখন আসব,,,
আমি--এ আইছে শশুর বাড়ী লক্ষি বউ,, আপনার শশুর বাড়ী এইটা না,, ভুল করে অন্য জায়গায় এসে পড়েছেন,,
সামিয়া--সেটা তুকে বলতে হবে না,,
আমি--দেখেন আমি আপনার সব শর্ত মেনে চলছি,, এখন আপনি আমাকে ডিস্টার্ব করতেছেন,, আমি কিন্তু---
সামিয়া--আমি কিন্তু কি,,,?
আমি--আমি কিন্তু আপনার নামে ইভটিজিং এর মামলা করব,,
সামিয়া--তুই আমার শর্ত মানতেছস তাই আমি খুশি হয়েছি,, কিন্তু অন্য মেয়ের সাথে টাংকি মারতে বলি নি,,
আমি--টাংকি কেমনে মারে গো,,?
সামিয়া--দেখ মাথা এমনিতেই গরম,, আমার রাগ বাড়াইস না,, দাঁড়া আন্টি থুক্কু Future শাশুড়ি আম্মা কেমনে বলি,,যে তুই অন্য মেয়ের সাথে লুতুপতু করতেছিস,,
এই রে আম্মু কে বলে দিলে তো এই জীবনে আর বিয়ে করা হবে না,,
বিয়ের আগেই তাকে আর কমু না,,
আমি--আমার এত বড় সর্বনাশ করবেন না আপা,,
সামিয়া--কি তুই আমাকে আপা বললি,,(চোখ দুটো হাঁসের ডিম এর মত করে ফেলল)
আমি--না না ভুল হয়ে গেছে,,, এবারের মত মাফ করে দেন,,
সামিয়া--মাফ করতে পারি একটা শর্তে,,
আমি--বলেন,,?
সামিয়া--তুই কোন মেয়ের দিকে তাকাতে পারবি না,,, কোন মেয়ের সাথে কথা বলবি না,,
আমি--ওকে আমি রাজি,, মেয়ের মধ্যে আপনি ও পরেন,,, আমি তো আপনার সাথে একদমই না,,
সামিয়া--ওকে যাও রুমে যাও,,
। আমি--হুম,,
সামিয়া--((আমারো খুব ইচ্ছে করে তোমার সাথে কথা বলতে,, তোমার সাথে ঘুরতে,,রাত জেগে কথা বলতে,, কিন্তু তুমি যদি আমার তালে পড় তাহলে তুমার পড়ালেখা আর হবে না,, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও,, আমি যা করছি তোমার ভালোর জন্য করতেছি,,)) মনে মনে ভাবতেছে,,
এইভাবে দেখতে পরিক্ষা চলে এল,,
এই কয়েক মাস ভালো করে পড়ায় পরিক্ষা অনেক ভালো হয়েছে,,
আল্লাহর রহমতে সবাই পরিক্ষা ভালই হয়েছে,,
কিন্তু সামিয়ার সাথে একটা কথাও বলিনি,,
আজ পরিক্ষা শেষ,,
আজ আমি অনেক খুশি,,কারন সামিয়া আজ থেকে আমার হবে,,
আমি পরিক্ষা দিয়ে বাসায় চলে এলাম,,
তারপর ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রুমে শুয়ে থাকলাম,,
চোখে ঘুম লেগে আসল,,
হঠাৎ কারো ডাকে আমার ঘুম নানুর বাড়ী চলে গেল,,,
আমি চোখ খুলে দেখি সামিয়া,,
সামিয়া--এই তাড়াতাড়ি উঠ,,!
আমি--কেন,,?.
সামিয়া--আমরা ঘুরতে যাব,,
আমি--আমরা মানে,,?
সামিয়া--আমি আর তুমি,,?
আমি--আমি কেন আপনার সাথে যাব,,
সামিয়া--তুমার সাথে আমার কথা আছে,, তাড়াতাড়ি উঠে রেডি হ,,
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে চলে গেল,,
আমি- উঠে রেডি হয়ে নিচে এসে আমার চক্ষু চড়কগাছ,,
কারণ সামিয়া আজ বোরকা পরেনি,,আজ একটা নিল ড্রেস পড়েছে,,
কিন্তু মুখ বাধা,, শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে,,
আমি তো ওর দিকে থেকে চোখ সরাতে পারছি না,,
ওকে আজ নিল ড্রেস এ নীল পেত্নি থূক্কু পরি মনে হচ্ছে,,
সামিয়া--কি দেখছ এভাবে,,(লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে)
আমি--কিছু না,,,
আম্মু--আমার ছেলে বৌমার থেকে চোখ সরাতে পারছে না,,
এই যে কাজ সারছে,, আম্মু সব দেখছে,,মান সম্মান বিরিয়ানি হয়ে গেল,,
আম্মু-যা আর লজ্জা পেতে হবে না,,ওকে নিয়ে ঘুরে আই,
আমি--হুম আস
তারপর আমি আর সামিয়া একটা পার্কে এলাম,,
এসে কিছুক্ষণ হেটে,,,একটা বেঞ্চে গিয়ে বসলাম,,
আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত ওর সাথে একটা কথাও বলিনি,, যদিও ও কথা বলতে চেয়েছে,,
সামিয়া--রিয়াদ তোমার হাত টা দাও তো,,
আমি--কেন,,
সামিয়া--দিতে বলছি দাও,,
আমি হাত বাড়িয়ে দিলাম,,
ও আমার হাতে একটা আংটি পরিয়ে দিয়ে,,
সামিয়া--আমি ও তোমাকে ভালোবাসি,, আমিও তোমাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি,,,
এতদিন তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য আমাকে ক্ষমা করে দাও,,,
আমাকে তোমার এইখানে একটা ছোট করে জায়গা দিতে পারবে না,,(আমার বুকে হাত দিয়ে),,
আমাকে কি ভালোবেসে আপন করে নিবে,,((কেঁদে কেঁদে))
আমি--ওর কথা শুনে আমার খুব খুশি লাগছে,,,
সামিয়া--কি হল চুপ কেন,,, আমার উপর এখনো রেগে আছ,,,,প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও,,
আমি--আমিও তোমাকে ভালোবাসি,,এই পাগলি কান্না থামাও,,,,
সামিয়া--সত্যি,,?
আমি--হুম সত্যি,,, কিন্তু এতদিন অনেক কষ্টে নিজেকে তোমার থেকে দূরে রেখেছি,,, এখন সব কষ্ট উধাও,, তোমাকে পেয়ে,,,,
তারপর সামিয়া সুজা আমাকে জড়িয়ে ধরল,,
সামিয়া--আমি তোমাকে আর কষ্ট পেতে দিব না,,
এই ছাড় সবাই দেখছে,,
সামিয়া তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিল,, লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে,,
আমার কিন্তু সেরকম ফিলিংস হচ্ছিল,,ওর ছোঁয়া পেয়ে,,
আমি--আচ্ছা তোমার চেহারা টা কখন দেখাবা,,
সামিয়া--সামনের মাসের ২ তারিখ তো তোমার জম্মদিন,,
আমি--তুমি কেমনে জানলে,,?
সামিয়া--৭ টা ৫ টা না আমার একটা মাত্র সোয়ামি,,তার জম্মদিন আমি জানব নাতো কে জানবে,,
আমি--হুম বুঝলাম,,
সামিয়া--তোমার জম্মদিন এ তোমায় একটা বড় ধরনের সারপ্রাইজ দিবো,,আর সেদিন আমি আমার চেহারা তোমায় দেখাব,,
আমি--সারপ্রাইজ টা কি,,?
সামিয়া--সারপ্রাইজ ইজ সারপ্রাইজ,,
আমি--ওকে,,?
সামিয়া--আচ্ছা যদি আমাকে দেখার পর আমাকে যদি তোমার ভালো না লাগে,, তখন কি আমাকে দুরে পেলে দিবে,,?
আমি--নারে পাগলি,,,তুমি যেমনি হওনা কেন,, আমার ভালোবাসা তোমার প্রতি একটুও কমবে না,, আমি তোমার রুপ দেখে ভালোবাসিনি,, আমি তোমার তোমার ঐ মায়াবি আঁখি দুটি কে দেখেই তোমাকে ভালোবাসি,,
সামিয়া--তাহলে কথা দাও,, সারাজীবন আমাকে ভালোবাসবে,,এই হাতে আজীবন আগলে রাখবে,,
আমি--হুম কথা দিলাম,,এ জীবনে আমি শুধু তোমার,,
তারপর সামিয়া যেটা করল,,,
সেটা নাহয় পরের পর্বে জানবেন,,
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com