অনুভূতিহীন । পর্ব - ২৭
তিথি অগ্নিপিন্ড হয়ে শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। অরশের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। তিথিকে হাজার কথা বলার রয়েছে। তিথি সামনে আসায় অরশের সব কথা হাওয়া। ভিরু ভিরু পায়ে এগিয়ে যায় অরশ। অভ্রের ছোট্ট হাতে হাত রেখে তাকিয়ের আছে নিস্পাপ মুখের দিকে। অভ্রের চোখের পাতা পিটপিট করছে, হাসি হাসি মুখ।
অভ্রঃ আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো আংকেল?
অভ্রের মুখে আংকেল ডাক শুনে অরশের বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব হয়।
অরশ অভ্রকে জড়িয়ে ছোট্ট অভ্রের মুখে হাজার চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।
অরশঃ আব্বু বলো সোনা আংকেল না। বলো আব্বু।
অভ্রঃ আংকেল তোমা আমি আব্বু বলব কেন?
অরশঃ আমি তোমার আংকেল না আব্বু হই।।আমাকে আব্বু বলে ডাকো সোনা।
তোমার মুখে আব্বু ডাক শুনতে আমার হৃদয় হাহাকার করছে। আব্বু বলে ডাকো আমায়।
তিথি অভ্রকে অরশের বুক থেকে ছিনিয়ে নিজের বুকে আবদ্ধ করে।
অভ্রের মুখে চুমু দিতে দিতে বলেঃ আব্বু তোমার ভয় নেই। এইতো আমি তোমার কাছে।
অভ্রঃ আম্মু আম্মু ওই আংকেল টা আমাকে আব্বু বলতে বলছে কেন?
তিথিঃ ওই আংকেল টা আমার কাছ থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নিতে চাই।
তুমি ভয় পেয়োনা আমি আছি।
অরশঃ তিথি প্লিজ অভ্রকে একটু আমার বুকে দাও। অভ্রকে জড়িয়ে বুকের জালা মিটাতে চাই।
তিথিঃ এখানে হাজার হাজার শিশু রয়েছে যান তাদের জড়িয়ে ধরুন।
আমার ছেলের কাছে আসবেন না।
অরশঃ তিথি অভ্র শুধু তোমার ছেলে না। অভ্র আমারো ছেলে।
তিথিঃ বাহ মিঃ অরশ বাহ। আপনাকে স্বাগতম না জানালে যে পাপ হবে।
ইচ্ছা করছে আপনার পায়ের ধুলো নিয়ে নিজের জীবন শুরু করি। (মুখ বাকিয়ে)।
যেদিন জানতে পেরেছিলাম ছোট্ট অভ্র আমার গর্ভে একটু একটু করে বড় হচ্ছে সেদিন
সর্ব প্রথম আপনাকে জানিয়েছিলাম আমি মা হতে চলেছি। আপনি কি বলেছিলেন?
আপনি বলেছিলেন আপনার কোন ইন্টারেস্ট নেই আর আজকে আসছেন অভ্রের বাবা হতে?
লজ্জা করেনা আপনার? আমার ইচ্ছা করছে আপনার মুখে থুথু দিতে।
পৃথিবীর সব চাইতে পাশন্ড ব্যক্তিও তার সন্তানের কথা শুনলে খুশি হয়।
আর আপনি ছিহ ছিহ।
তিথির কথা শুনে খাদেম সাহেবের চোখ কপালে উঠে যায়।
তিথির অরশ সাহেবের স্ত্রী কথাটা খাদেম সাহেব বিশ্বাসই করতে পারছেনা।
অরশ তিথির সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে দুই হাত জোড়া করে বলেঃ তিথি সেদিন তোমার দেখা শেষ দেখা ছিলোনা। তোমার দেখার পিছনে লুকিয়ে ছিলো হাজার অজানা ঘটনা। আমি আজকে তোমায় সব কিছু বলতে চাই।
তিথিঃ আমি আপনার কোন কথা শুনতে চাইনা। আমাকে যেতে দিন।
অরশঃ তিথি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি অপরাধ করেছি। আমাকে একটা বার সুযোগ দাও।
তিথিঃ হা হা হা হা। বিশিষ্ট শিল্পপতি মিঃ অরশ সাহেব সামান্য একজন মিডিল ক্লাস মেয়ের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে। সত্যি হাইস্যকর। হা হা হা। মিঃ অরশ আপনি তো জানেন না আমি মিডিল ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে না আমি তো অনাথ। আমার কাছে ক্ষমা চাইলে আপনার সম্মান কোথায় যাবে ভেবেছেন?
অরশঃ তিথি আমি অনুতপ্ত আমাকে যা ইচ্ছা অপমান করো তবুও আমাকে ক্ষমা করে দাও।
তিথিঃ চুপ করুন মিঃ অরশ। আপনি এসে বললেন আপনি অনুতপ্ত আর আমি আপনার দেওয়া প্রতিটি আঘাত ভুলে নাচতে নাচতে আপনার ঘরে চলে যাবো? যদি এমন চিন্তা করে থাকেন তা হলে ভুল করতিছেন। এই অভ্র যখন আমার পেটে ছিলো তখন আমার পাশে কাউকে থাকা কতটা দরকার ছিলো সেটা আপনি বুঝেন? আমি যখন প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম তখন আপনাকে অনেক ডেকেছিলাম সেদিন আপনি কোথায় ছিলেন? ছোট্ট অভ্র যখন তার বাবার হাত ধরতে চেয়েছিলো তখন আপনার হাত কোথায় ছিলো? অভ্র যখন তার বাবাকে বাবা বলে ডাকতে চেয়েছিলো তখন আপনি কোথায় ছিলেন? ঐ টুকু ছোট্ট বাচ্চা যখন বলতো আম্মু সবার আব্বু আছে আমার আব্বু নেই কেন? তখন আমি কি জবাব দিয়েছিলেন আপনি বলতে পারেন? যার বাবা থেকেও সে আজ পর্যন্ত বাবা ডাক বলে কাউকে ডাকতে পারেনি। তার যন্ত্রণা আপনি বুঝেন?
অরশঃ তিথি একটা সুযোগ দাও আমি আমার ছেলে অভ্র এবং তোমার দুজনের চোখের জল মুছে দিতে চাই।
তিথিঃ হা হা হা হা। আপনাকে হাত জড়ো করে বলেছিলাম আমার চাকরিটা আপনি কেড়ে নিয়েন না। এই চাকরিটা চলে গেলে আমি নিশ্ব হয়ে যাবো। আপনি অমানুষের মত আমার চাকরি কেড়ে নিলেন। আপনি কি বলেছিলেন? আপনি চান না আমি আপনার সামনে থাকি তা হলে আজ কেন এসেছেন আমার কাছে। আমার পথ আটকিয়ে কেন দাড়িয়েছেন? যেতে দিন আমাকে। আমি আপনার সামনে থাকতে চাইনা।
অরশঃ তিথি তুমি যেওনা। আমাকে ক্ষমা করে দাও।
যেদিন আমি যদি জানতাম তা হলে কখনোই তোমার চাকরি কেড়ে নিতাম না।
আমার কথা গুলি একবার শুনো প্লিজ।
তিথিঃ মিঃ অরশ, যেদিন আপনি আমার চাকরি কেড়ে নিয়েছিলেন।
সেদিন বলেছিলাম না আপনি আমার থেকে কি কেড়ে নিলেন সেটা কখনো আপনার মত
জানোয়ার বুঝবেনা। তা হলে আজ শুনুন ঐ চাকরিটা করে আমি অভ্রের মুখে খাবার তুলে দিতাম।
আমার টিফিন দেখে কি বলেছিলে? আমি আপনার বাড়ির দামি খাবার ছেড়ে
এসে আজ কি খাচ্ছি। মিঃ অরশ আমি নিজে ভালো খাবার না খেয়ে এই এতিমদের মুখে খাবার তুলে দিতাম। সেদিন আপনি আমার চাকরি কেড়ে নেন নি। কেড়ে নিয়েছিলেন এই অনাথ বাচ্চাদের মুখের খাবার। সবার সামনে আমাকে চোর বলে আমাকে অপমান করে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে
তাড়াতাড়িয়ে দিয়েছিলেন কত মিনতি করেছিলাম। হ্যাঁ আমি চুরি করেছিলাম নিজের
প্রান প্রিয় স্বামীর টাকা চুরি করে এই এতিম অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিলাম।
নিজের সন্তানের মুখের খাবার কেড়ে নিয়ে আজ বাবা হতে এসেছেন। হা হা হা হা
অরশঃ দেখো তিথি দেখো। তোমার সেই ছোট এতিমখানা আজ কত বড় হয়েছে।
তোমার স্বপ্নের এতিমখানা আজ তোমার স্বপ্নের চেয়ে বেশি সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছি।
তিথিঃ খুব ভালো কাজ করেছেন এই এতিমদের পাশে দাড়িয়ে।
একটা রিকুয়েষ্ট রাখবেন আমার?
অরশঃ বল কি চাও তুমি আমি তোমার সব কথা শুনতে চাই।
তিথিঃ বেশি কিছু চাইনা শুধু মাত্র সারাজীবন এই এতিম বাচ্চাদের পাশে থাকিয়েন।
অরশঃ আমি একা নই তুমি আমি আমরা দুজনে সারাজীবন এই এতিমদের পাশে থাকবো।
প্লিজ ফিরে আসো আমার জীবনে। ক্ষমা করে দাও আমাকে।
তিথিঃ আমি আপনার সকল কিছু ক্ষমা করে দিলাম।
অরশ চোখের জলে তিথির হাত ধরে বলেঃ চলো আজকে আমরা
এক সাথে এক প্লেটে খাবার খাবার খায়।
তিথি অরশের হাত থেকে এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলেঃ
মি. অরশ আমি আপনাকে ক্ষমা করেছি কারন এই নিস্পাপ বাচ্চাদের পাশে
দাড়িয়েছেন তার মানে এই না আমাকে আর আমার ছেলেকে আপনি ফিরে পাবেন।
আমি কখনো আপনার থেকে চলে যায়নি বার বার আপনি আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন সুতরাং
আমাকে ফিরে যাবার কথা বলবেন না।
অরশঃ তিথি আমি স্বামী হয়ে তোমার পায়ে পড়ছি আমাকে মাফ করে দাও।
তিথিঃ ছি ছি ছি মি. অরশ আপনার নুন্যতম লজ্জাবোধ বলেও কিছু নাই। যাকে বার বার স্ত্রী
বলছেন তার পায়ে পড়তে আপনার বিবেকে বাধলনা। অবশ্য যার বিবেক বলে কিছু নেই সে বুঝবেনা এসব।
অরশঃ তিথি প্লিজ যেয়োনা। আমার কথা গুলি একবার শোনো। তোমায় ছাড়া আমি থাকতে পারবনা। তুমি ছাড়া একা একা থাকতে পারবনা।
তিথিঃ একা একা থাকতে কতটা কষ্ট হয় সে টা আমি ৬ বছর ধরে বুঝেছি।
কি দোষ ছিলো এই ছোট্ট অভ্রের বলতে পারেন? আপনি যখন আমাকে রাত
অবদি অফিসে আটকিয়ে রাখতেন তখন ঐ ছোট্ট অভ্র বাসায় একা একা বসে
আম্মু আম্মু বলে কান্না করতো। কখনো বুঝতে চেয়েছেন ওই বাচ্চার কতটুকু কষ্ট হয়েছিলো।
কত মিনতি করেছি আপনি ছুটি দিয়েছিলেন আমাকে?
অরশঃ আমি জানতাম না অভ্র আমার ছেলে।
আমি ভেবেছিলাম তুমি নতুন করে করে বিয়ে করে সংসার সাজিয়েছো।
তিথিঃ আমি কি বলেছিলাম আমি নতুন বিয়ে করেছি?
আপনি ভাবেন কি ভাবে একজন নারী তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে নতুন
কাউকে নিয়ে সংসার পাতবে।
অরশঃ তিথি অনেক কিছু তোমার অজানা রয়েছে। এতোদিন বলার সাহস
পাইনি আজ সব কিছু বলতে চাই। প্লিজ আমার কথা গুলো একবার শুনো তার পর যা ইচ্ছা করিও।
তিথিঃ আপনি কোনদিন আমার কথা শোনেন নি তাই আপনার কথা শোনার
কোন প্রয়োজন মনে করিনা।
অরশঃ যত অভিযোগ আছে, সব করো তবুও প্লিজ আমার কাছে ফিরে আসো।
একটি বার সুযোগ দাও সব ফিরিয়ে দেব।
তিথিঃ মি. অরশ তা হলে ফিরিয়ে দেন আমার ৬ টি বছর।
ফিরিয়ে দেন সেই সম্মান যা আপনি শতশত মানুষের মাঝে আমাকে কাক বলে
মিডিল ক্লাস লোভি ফ্যামিলির মেয়ে বলে অপমান করেছিলেন।
দিন এই মুহূর্ত গুলো ফিরিয়ে দেন? আমার সম্মান ফিরিয়ে দেন?
অরশঃ তা সম্ভব না। কিন্তু নতুন করে আমি তোমার পাশে থাকব।
কথা দিচ্ছি এক মুহুর্তের জন্য তোমার অপমান হতে দেবনা।
রাজ রানী করে মাথায় তুলে রাখবো।
তিথিঃ প্লিজ আমাকে আর স্বপ্ন দেখাইয়েন না। আমি কখনো বড় কিছু হবার স্বপ্ন দেখিনি।
শুধু এইটুকু স্বপ্ন দেখেছিলাম আমার ছোট্ট একটা সংসার থাকে যেখানে
হাজার অভাবের মাঝেও থাকবে সীমাহীন সুখ শান্তি আর ভালোবাসা।
কিন্তু ভাগ্য আমার পক্ষে ছিলোনা। তাই এতিম হয়ে গেলাম সারাটি জীবন মানুষের থেকে
অপমান লাঞ্চনা বঞ্চনা পেয়ে গেলাম। তার জন্য আমার কোন কষ্ট নেই কষ্ট শুধু
এইটুকু আমার মত আমার ছেলেটিও সারাজীবন এতিম থাকবে।
অরশঃ না না অভ্র এতিম না ও শেখ অরশের ছেলে। হাজার মানুষ অভ্রকে সালাম করবে।
প্লিজ ফিরে আসো আমার জীবনে।
অরশ অনেক ভাবে আকুতি মিনতি করে ক্ষমা চাচ্ছে তিথির কাছে।
অনেক না জানা কথা বলতে চাচ্ছে অরশ কিন্তু তিথি তা শুনতে চাইনা।
কারন তিথি আজ অনুভূতিহীন। অনুভূতিহীন মানুষের কাছে কিছু চাওয়া বোকামি।
অরশ সেই বোকামি করেই চলেছি। কিন্তু তিথির অনুভূতিকে জাগাতে ব্যর্থ অরশ সাহেব।
তিথি চলে যাচ্ছে।
পিছন থেকে অরশ ডেকে বলেঃ তিথি একদিন তুমি আমাকে বলেছিলে। যতই সমস্যা হোক তা শেয়ার করবেন তা হলে সমাধান পেয়ে যাবেন। আজকে আমি তোমাকে সব কিছু জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি শুনতে চাওনা তাই সমাধান হওয়া সম্ভব না। অভ্র আমার রক্ত তোমাদের দুজনের পূর্ণ অধিকার রয়েছে আমার উপর যখন মন চাইবে আমার বাড়িতে চলে আসিও। আমার সন্তানকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি প্লিজ তুমি কোন দিন আমার সন্তান কে কষ্ট দিয়োনা।
রহিম এতোক্ষন মুখ বুঝে সব শুনতিছিলো এইবার মুখ খুললোঃ অরশ তুই তিথিকে যেতে দিচ্ছিস কেন?
অরশঃ তিথিকে আটকিয়ে রাখার কোন অধিকার আমার নেই।
রহিমঃ স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার চির বিদ্যমান।
অরশঃ আমি কখনো তিথিকে স্ত্রী বলে স্কৃতি দেইনি। সব সময় তিথিকে অপমান করেছি। এতো কিছুর পরেও আমি কিভাবে তিথির ভালোবাসা পেতে পারি বল?
রহিমঃ তাই বলে তুই তিথিকে তুই যেতে দিবি? তিথি চলে গেলে তোর কি হবে একবার ভেবে দেখেছিস?
অরশঃ কিচ্ছু হবেনা আমার। আমি পারিনি তিথির মত এক মহিয়ষী নারীকে ধরে রাখতে এটা আমার ব্যর্থতা।
রহিমঃ অরশ তুই পাগলামি করিস না। তিথিকে কোন ভাবেই তুই ছাড়িস না। তিথি তিথি বোন আমার তুমি অরশকে ফেলে। যেওনা আমি তোমার ভাই হয়ে বলছি অরশ খুব খুব ভালো ছেলে তুমি তাকে ছেড়ে যেওনা। তুমি গেলে সে পাগল হয়ে যাবে।
তিথিঃ রহিম ভাই তোমার এই ছোট্ট বোনকে ক্ষমা করে দিও।
অরশঃ রহিম তুই তিথিকে আটকাস না।
তিথি এক পা দু পা করে এগিয়ে চলেছে।
একটু একটু করে অরশের থেকে দুরে সরে যাচ্ছে।
তিথির খুব স্বপ্ন অরশের বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে।
অরশের কোলে বসে চাদ দেখতে।
তিথি অরশকে কতটা ভালোবাসে তা কখনোই বলে বুঝাতে পারবনা। অরশ ছাড়া তিথি শুন্য। কিন্তু অরশের ভালোবাসা তার ভাগ্যে নেই। সে জন্যই চলে যাচ্ছে অরশের জীবন ছেড়ে এমন পাশন্ডকে ভালোবাসা যায় তবে তার সাথে ঘর বাধা যায়না। তিথি সার জীবন ভালোবেসে যাবে অরশকে তবুও ফিরে আসবেনা।
তিথির চোখে বেয়ে পানি পড়ছে।
সে জল তিথি আটকাতে ব্যর্থ। এতোটা কষ্ট তিথির কোন দিন হয়নি।
বাঙালি মেয়েরা এমনি হয়।
তারা পৃথিবীর সব কিছু মেনে নিতে পারে। সব কিছু ছেড়ে দিতে পারে তবে কখনো নিজের স্বামীর থেকে আলাদা হতে চাইবেনা। তিথি সেই অসাধ্যকে সাধ্য করে চিরদিনের মত চলে যাচ্ছে অরশের জীবন থেকে।
আসোলে কি জানেন? ভালোবাসা ভাগ্যে না থাকলে পাওয়া যায়না। তিথির কপালে সুখ নেই সে শুধু শুধু সুখের পিছু ছুটে কি করবে।
অরশ স্টিল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তিথির যাওয়ার পানে।
অরশ একটু একটু করে ঢুলছে।
মাথার দুপাশে আংগুল দিয়ে টান টান ব্যথা অনুভব করছেন। ঝিম ঝিম অরশ রহিমকে বলেঃ রহিম আমার যেনো কেমন লাগছে। বলতে বলতে অরশ লুটিয়ে পড়ে জমিনে।
রহিম অরশ অরশ বলে চিৎকার দিতে দিতে ছুটে আসে অরশের পাশে।
জমিনে লুটিয়ে থাকা অরশর মাথা বুকে নিয়ে অরশ অরশ বলে ডাকছে।
অরশের মাথায় হাত দিয়ে ধাক্কা দিচ্ছে রহিম। কোন রেস্পন্স নেই।
রহিম চিৎকার দিয়ে কেদে উঠলো।
রহিমের আহাজারি কান্না। তিথি তিথি বোন আমার দেখে যা অরশ আর অরশ নেই।
রহিমের চিৎকার তিথির কানে এলে তিথি পিছু ফিরে তাকিয়ে দেখতে পায়।
অরশ নিথর হয়ে লুটিয়ে আছে জমিনে। রহিম তাকে জড়িয়ে কান্না করছে।
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com