ডেন্জারাস ভিলেন লাভার । পর্ব - ৩০
সিমরানের পিঠ দেয়ালের সাথে ঠেকে যায় আর তখনই আরিয়ান সিমরানের শাড়ির আঁচল হালকা সরিয়ে ক্ষত স্থানে হাত রেখে বলে,,,,
- তোমাকে জিহাদ মেরে ফেলতে চেয়েছে আর তুমি ঐ খুনির জন্য সহানুভূতি দেখাচ্ছো, This is not fair jaan. ( দাঁতে দাঁত চেপে)
কথাটা বলেই আরিয়ান স্তিচের থ্রেডে আঙুল ঢুকিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। সিমরান ব্যাথায় চিৎকার করে ওঠে। সিমরান ক্ষত স্থান থেকে গলগল করে রক্ত বের হয়। সিমরান আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- এসব কি করছেন? ( কেঁদে কেঁদে রক্ত থামানোর জন্য ক্ষত স্থান চেপে ধরতে নেয়)
- না না, তুমি রক্ত থামাতে পারবে না, আমি দেবো না। ( সিমরানের হাত চেপে ধরে)
- আরিয়ান আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, প্লিজ হাত ছাড়ুন। ( কেঁদে কেঁদে)
- তাহলে বলো, তুমি নিজ হাতে জিহাদকে খুন করবে। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- মানুষ খুন করা পাপ, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- দরদ উঁপচে পড়ছে এক্সের জন্য। ( রেগেমেগে)
- কুকুর মানুষ কামড়ায় কিন্তু মানুষ কখনো কুকুর কে কামড়ায় না। ( জিহাদের দিকে তাকিয়ে)
- এক্সের হাতে মরতে রাজি আছো তাও তাকে মারতে নারাজ, বাহ বাহ ( সিমরানের হাত ছেড়ে দিয়ে হাত তালি দিয়ে)
- আপনি ভুল ভাবছেন, ( মাথা নেড়ে)
- আজ হয় ওকে মারবে না হয়,, ( রেগেমেগে)
- না হয়,, ( অবাক হয়ে)
- সিমরান,, ( জোরে চিৎকার করে)
আরিয়ান সিমরানের গালে কষে থাপ্পড় মারে। সিমরান তাল সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে যায়। সিমরানের ঠোঁট কেটে গিয়ে রক্ত বের হয়।
জিহাদ অবাক হয়ে যায় যাকে সে সাত পাঁচ না ভেবে মেরে ফেলতে চেয়েছে সেই সিমরানের সামনে মোক্ষম সুযোগ এখন তাকপ মেরে ফেলার কিন্তু তারপর ও সে জিহাদকে মারতে চাইছে না।
সিমরান হাত দিয়ে তার পেট চেপে ধরে।আরিয়ান সিমরানের সামনে বসে সিমরানের গাল চেপে ধরে, আরিয়ান রেগেমেগে বলে,,,
- বলো কতদিনের সম্পর্ক তোমাদের? ( গাল চেপে ধরে)
- বিশ্বাস করুন, ( আরিয়ানের হাত ধরে)
- সোজাসাপটা উত্তর দাও, ( জোরে ধমক দিয়ে)
- জিহাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ( কেঁদে কেঁদে)
- তাহলে ওকে মারতে এতো দ্বিধা কেনো তোমার? ( ভ্রু কুঁচকে)
- সে আমার ভাইয়ের মতো, সে নাহয় ভুল করেছে,, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- এতো সহমর্মি হওয়া ঠিক না জান, ( বাঁকা হাসি দিয়ে আরও জোরে গাল চেপে ধরে)
- আহ্,( ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠে)
- ওঠো, ( আরিয়ান উঠে দাঁড়ায় আর সিমরানের টান দিয়ে বলে)
আরিয়ান সিমরানকে টেনে উঠায়। আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে দুই হাতে চাপাতি চেপে ধরে।
সিমরান কাঁদতে থাকে। জিহাদ সিমরানের দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়।
আরিয়ান সিমরানকে জিহাদের সামনে নিয়ে যায় আর চাপাতি উল্টো করে এক মূহুর্ত দেরি না
করে জিহাদের পেটের ডান পাশে ঢুকিয়ে দেয়।
জিহাদের সাথে সাথে সিমরানও জোরে চিৎকার করে ওঠে।
আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে চাপাতি একটানে উঠিয়ে ফেলে।
সিমরান সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আর পড়ে যেতে নেয় আরিয়ান সিমরানকে ধরে ফেলে।
আরিয়ান সিমরানকে এক হাতে ধরে অন্যহাত দিয়ে রিভলবার বের করে
জিহাদের দিকে তাক করে শুট করে।
জিহাদ মারা যায়। এবার আরিয়ান মেয়েটির দিকে তাকায়।
মেয়েটি আরিয়ানের নৃশংসতা দেখে প্রায় আধমরা হয়ে গেছে। আরিয়ান বাঁকা হাসি দিয়ে বলে,,
- চয়নিকা গনজালভেস, জিনিয়ার অন্যতম বিশ্বস্ত সহচর।
তোমার এখন কি হবে? ( বাঁকা হাসি দিয়ে)
আরিয়ান তৎক্ষনাৎ মেয়েটার কপালে গুলি করে ।
মেয়েটা স্থীর হয়ে পড়ে, চেয়ারে পড়ে আছে তার নিথর দেহ।
আরিয়ান গার্ডদের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- এদের ছবি তুলে পার্সেল করে পাঠিয়ে দে জিনিয়ার বাসায় আর লাশগুলো এমন ভাবে গুম করবি যাতে কোনো মাছিও ওদের হদিস খুঁজে না পায়। ( গার্ডদের দিকে তাকিয়ে)
- ওকে বস, ( স্ট্রেইট ভয়েসে)
আরিয়ান সিমরানকে কোলে তুলে নিয়ে বের হয় গোডাউন থেকে বের হয়ে সোজা গাড়ির দিকে যায়।
আরিয়ান সিমরানকে সীটে বসিয়ে সীট বেল্ট লাগিয়ে দেয়।
সিমরানের গোলাপি শাড়ি রক্তে লাল হয়ে গেছে । আরিয়ান গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
আরিয়ান গাড়ি চালাচ্ছে। সিমরান এখনও বেঁহুশ।
আরিয়ান উইন্ডোর গ্লাস নামিয়ে দেয়। মৃদু বাতাস এসে সিমরানকে স্পর্শ করে যায়।
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- সরি জান, মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। আমি ইচ্ছে এসব করিনি।
প্লিজ মাফ করে দাও। ( সামনের দিকে তাকিয়ে)
বাসার সামনে গাড়ি থামে। আরিয়ান সিমরানকে কোলে করে নিয়ে রুমে গিয়ে বেডে শুইয়ে দেয়।
আরিয়ান সায়নকে কল করে। সায়ন কল রিসিভ করে,,,
- ডক্টর নিয়ে এখনই বাসায় আয়। ( বিচলিত হয়ে)
- বস কি হয়েছে আপনার? ( অবাক হয়ে)
- যা বলছি তাড়াতাড়ি কর,, ( ধমক দিয়ে)
- ওকে বস,, ( ভয় পেয়ে)
আরিয়ান তাড়াতাড়ি করে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে আসে। আরিয়ান দেখে সিমরানের শাড়ি রক্তে ভিজে গেছে। আরিয়ান সিমরানের শাড়ি চেঞ্জ করে তারপর তুলোয় স্যাভলন নিয়ে রক্ত মুছে হালকা অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম লাগিয়ে দেয়।
সায়ন ডাক্তারকে নিয়ে এসে পড়ে। ডাক্তার একজন মহিলা বিশেষজ্ঞ মিস ক্রিশ্চান এলিজা।
তিনি এসে সিমরানের স্তিচ চেক করে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,
- Her injury has been infectioned.. ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে )
- What? ( ভড়কে গিয়ে)
- Yes Mr. Ariyan but don't worry, you take proper care, she become well soon. ( সান্ত্বনা দিয়ে)
- Yeah,, ( মাথা নেড়ে)
ডাক্তার আরিয়ানের হাতে প্রেসক্রিপশন দিয়ে চলে যায়।
আরিয়ান সায়নকে প্রেসক্রিপশন দেয় মেডিসিন গুলো আনার জন্য ।
সায়ন মেডিসিন গুলো আনার জন্য যায়। আরিয়ান সিমরানের পাশে বসে।
সিমরান ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকায়।
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে আছে। সিমরান আরিয়ানের দিকে তাকায়,
আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে বলে,,,
- এখন কেমন লাগছে জান? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
................... ( অন্যদিকে তাকায়)
- রাগ করে আছো, তাই না? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
...................( চোখের পানি মোছে অন্যদিকে তাকিয়ে)
- এই যে কান ধরে বলছি, আর কখনো এমন করবো না। ( কান ধরে বলে)
..................( অন্যদিকে তাকিয়ে)
- একটু তো কথা বলো প্লিজ,, ( অনুরোধ করে)
................( আরিয়ানের দিকে তাকায়ে)
- তুমি কথা বলবে না তাই তো! ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- জিহাদকে মেরে ফেলেছেন? ( অস্ফুট স্বরে)
- জিহাদ সহ ঐ মেয়েকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছি। ( বাঁকা হাসি দিয়ে )
........... ( অবাক হয়ে তাকায়)
- তোমার আর আমার মাঝে কেউ আসলে তাকেই আমি শেষ করে দেবো। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
................( অন্যদিকে তাকায়)
- তুমি তো কিচ্ছু খাওনি? আমি তোমার জন্য গরম গরম চিকেন স্যুপ নিয়ে আসছি। ( সিমরানের মাথয় হাত বুলিয়ে দিয়ে)
..................( অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে)
আরিয়ান উঠে চলে যায়। সিমরান শুয়ে শুয়ে পুরোনো দিনের কথাগুলো ভাবছে আর চোখের পানি ফেলছে । সিমরান নিজেকে খুব অসহায় মনে করছে। সিমরানের চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। সিমরান মনে মনে বলে,,,
- আপনাকে সবেই তো ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম আর সেই আপনি আমার চোখের সামনে খুন করে খুনি হয়ে গেলেন আমার চোখে। ( মনে মনে বলে)
আরিয়ান স্যুপ নিয়ে চলে আসে। আরিয়ান স্যুপের বাটি টেবিলে রেখে সিমরানকে ধরে বসায় ।
সিমরান চুপচাপ উঠে বসে। আরিয়ান স্যুপ চামুচে করে নিয়ে সিমরানের মুখে তুলে দেয়।
সিমরান স্যুপ মুখে নেয়। অয়ন রুমের সামনে এসে বলে,,,,
- আসতে পারি? ( রুমের সামনে এসে)
- হুম আায়,, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কি অবস্থা ভাবি? ( সিমরানের সামনে চেয়ারে বসে)
- ভালো। ( মাথা নেড়ে)
- ডাক্তার আসলো যে,,, ( অবাক হয়ে)
- চেকাপের জন্য এসেছিলো। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- ওহ আচ্ছা,, ( মাথা নেড়ে)
- তো ভাবি এখন কেমন ফিল করছো? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- ভালো, ( মাথা নেড়ে)
- সেই কখন থেকে ভালো ভালো করছো, তোমার কি মন খারাপ? ( ভ্রু কুঁচকে)
- তোর ভাবির তো সবসময়ই মন খারাপ থাকে। ( সিমরানকে খাইয়ে দিতে দিতে)
- ভাবি এটা কিন্তু ঠিক না, সবসময় হাসিখুশি থাকবে। ( সিরিয়াস হয়ে)
- কে শোনে কার কথা, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- না ভাবি সবসময় চিয়ারফুল মাইন্ডে থাকবে কেমন। ( হেসে)
-.................................................( চুপচাপ বসে থাকে)
- তোমরা থাকো, আমি একটু আসছি। ( মোবাইলের দিকে তাকিয়ে)
- ঠিক আছে যা। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
অয়ন উঠে চলে যায়। সিমরানকে স্যুপ খাইয়ে দিয়ে আরিয়ান সিমরানকে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরে।
সিমরান কোনো রেসপন্সই করে না।
এদিকে,,, জিনিয়ার হাতে ফটো গুলো চলে আসে। ফটো দেখে জিনিয়া রেগেমেগে চিৎকার করে বলে,,,
- শুরু করেছো তুমি আর শেষ করবো আমি। ঐ সিমরানকে তো আমি ছাড়বো না।
ওর শেষ আমি দেখে ছাড়বো নাহয় আমার নাম জিনিয়া নয়।( রেগেমেগে)
সিমরান রুমে একা বসে আছে হঠাৎ সিমরানের মনে হয় বেলকনিতে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
সিমরান মনে মনে বলে,,,
- অয়ন তো ওর রুমে আর আরিয়ান তো বাহিরে তাহলে বেলকনিতে কার অবয়ব।
যেয়ে দেখবো? দেখি কে আছে। ( বিড়বিড় করে)
সিমরান কম্বল সরিয়ে বিছানা থেকে উঠে ধীরে ধীরে বেলকনির দিকে যায়।
মায়া বেলকনির ভেইল সরাতেই দেখে সেখানে কেউ নেই।
সিমরান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে পেছনে ফিরতে যাবে তখনই আরিয়ান এসে সিমরানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
- এখানে কি করছো জান? ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- কিছু না। ( আস্তে করে)
- কিছু একটা তো করছিলে? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- মনে হলো ঐখানে, ( বেলকনির দিকে তাকিয়ে)
- ঐখানে কি? ( ভ্রু কুঁচকে)
- মনে হলো ঐখানে কেউ আছে তাই দেখতে গেলাম। ( মাথা নিচু করে)
- কেউ নেই এখানে। এসো মেডিসিনের সময় হয়ে গেছে। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- হুম,, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ান সিমরানকে বেডে বসিয়ে দিয়ে মেডিসিন গুলো খাইয়ে দেয় আর স্তিচে আস্তে করে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেয়। এসবে সিমরানের কোনো দৃষ্টি নেই। সিমরানের কাছে এসব আদিখ্যেতা মনে হয়।
আরিয়ান সিমরানকে শুইয়ে দেয়। সিমরান শুয়ে পড়ে। আরিয়ান সিমরানের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় কিছুক্ষণ পরে সিমরান ঘুমিয়ে পড়ে। আরিয়ান সিমরানের কপালে কিস করে সিমরানের কম্বল টেনে দিয়ে উঠে রুম থেকে বের হয়।
এরই মধ্যে সায়ন চলে আসে। আরিয়ান সিঁড়ি থেকে নেমে এসে সোফায় বসে। সায়ন আরিয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,,
- বস অফিসের আঁটকে থাকা ফাইলগুলো নিয়ে এসেছি। ( আরিয়ানের সামনে ফাইলগুলো রেখে)
- Good... ( ফাইলগুলোর দিকে তাকিয়ে)
- বস আপনার অর্ডার অনুযায়ী, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
সায়ন কথাটা বলতে নিবে তখনই আরিয়ানের ফোনে কল আসে। আরিয়ান ফোন হাতে নিয়ে মুচকি হেসে রিসিভ করে কথা বলে,,,
- আসসালামু আলাইকুম শশুর মশাই। ( হেসে)
- ওয়ালাইকুম আসসালাম বাবা, কেমন আছো তোমরা? ( সংকোচ নিয়ে)
- আল্লাহর অশেষ দয়ায় ভালোই আছি আমরা। আপনি, মা এবং আমার একমাত্র শালাবাবু কেমন আছে? ( শান্ত গলায়)
- আমরাও ভালো আছি। আমার মেয়েটা কোথায় বাবা? ( স্বাভাবিক ভাবে)
- আপনার মেয়ে ঘুমাচ্ছে। ( ল্যাপটপ অন করে)
- অনেকদিন হয় সিমরানের সাথে কথা হয় না , ও ঘুম থেকে উঠলে বোলো যে আমি কল করেছিলাম। ( অস্ফুট স্বরে)
- অবশ্যই বলবো বাবা। ( ফাইল হাতে নিয়ে)
- বাবা তোমরা দেশে আসবে কবে? সেই যে গেলে আর তো এলে না? ( মন খারাপ করে)
- আসবো খুব শীঘ্রই আসবো। ( হেসে)
- তাড়াতাড়ি এসো কেমন, তোমাদের জন্য তো কিছুই করতে পারলাম না। ( হেসে)
- ঠিক আছে বাবা। ( মাথা নেড়ে)
- তাহলে এখনকার মতো রাখছি বাবা। ( হেসে)
- Bye.. টুট টুট টুট
আরিয়ান ফোন রেখে ল্যাপটপে কাজ করা শুরু করে দেয়। সায়ন আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- বস আপনার অর্ডার অনুযায়ী দুজনকে গুম করে দিয়েছি। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- গুড, এবার জিনিয়ার খোঁজ নেওয়া শুরু কর। ও এখানেই আছে। ( ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)
- বস জিনিয়া আপাতত কোথায় আছে তা জানা যায়নি তবে সে বেঁচে আছে সেটা কনফার্ম। ( মাথা নিচু করে)
- সেটা তো আমিও জানি। ( কাজ করতে করতে)
- কল লোকেশন অনুযায়ী ডি রোজারিও স্ট্রিটে জিনিয়ার ফার্ম হাউজ কিন্তু
সেখানে আমাদের গার্ডরা রিপেয়ারার হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু সেখানে কেউ ছিলো না।
দরজায় তালা ঝুলছিলো।
আরেকটু পরখ করে দেখার জন্য রিমোট কন্ট্রোল হেলিকপ্টারের সাথে মিনি ক্যামেরা
অ্যাটাচ করে ভেতরে পাঠাই কিন্তু কাউকে খুঁজে পাইনি। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- ও বুঝতে পেরেছে যে লোকেশন ট্র্যাক করে ওকে বের করে ফেলবো এজন্য তৎক্ষনাৎ স্থান পরিবর্তন করে ফেলেছে। ( বাঁকা হাসি দিয়ে)
- ঠিক বলেছেন বস। আমাদের সব গার্ডরা হোম সার্ভিস রিপেয়ারার হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।
কেউ টেলিফোন রিপেয়ারার কেউ বাথরুম রিপেয়ারার কেউ ট্যাপ
রিপেয়ারার হয়ে। খুব দ্রুত জিনিয়ার হদিস পেয়ে যাবো। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে)
- Very good.. ( ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)
- Thanks sir. ( হেসে)
- বাকি কাজ গুলো সেরে ফেল। ( ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)
- ওকে বস, আসি। ( মাথা নেড়ে)
- হুম, ( ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ান নিচে বসে কাজ করছে। সিমরান রুমে ঘুমাচ্ছে। সিমরানের মনে হয় তার
আশেপাশে কেউ হাঁটাচলা করছে। চেনা সুরে কেউ তার নাম ধরে ডাকছে।
সিমরানের মনে হচ্ছে দুটো হাত এসে তার গলা চেপে ধরেছে। সিমরানের নিশ্বাস নিতে
ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। সিমরান ছটফট করা শুরু করে দেয়।
সিমরান আর নিজেকে স্থীর রাখতে পারে না। সিমরান জোরেশোরে চিৎকার করে,,
সিমরানের চিৎকার শুনে আরিয়ান কাজ রেখে দৌড়ে ওপরে রুমে চলে আসে। আরিয়ান সিমরানের পাশে বসে। সিমরান আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে,,,
- ও আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে,,, ( কেঁদে কেঁদে)
- কে? কার কথা বলছো জান? এখানে তো কেউ নেই। ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- ছিলো একটু আগ পর্যন্তই ছিলো। এসে আমার গলা চেপে ধরেছিলো। ( আশেপাশে তাকিয়ে)
- দাঁড়াও আমি দেখছি, ( সিমরানকে বসিয়ে উঠতে নেয়)
- আমাকে ছেড়ে যাবেন না প্লিজ। ( কেঁদে কেঁদে)
- আমি থাকতে কেউ তোমার শরীরে একটা টোকাও লাগতে দেবো না জান। আমি দেখছি, ( সিমরানের দুই গালে হাত রেখে)
আরিয়ান উঠে পুরো রুম চেক করে কিন্তু কাউকে বা কোনোকিছুই খুঁজে পায় না।
আরিয়ানের মনে সন্দেহ হয়,
- এই কাজ অয়নের নয়তো কিন্তু এমন কাজ অয়ন কোনো করবে? ( মনে মনে)
- আরিয়ান আমার ভয় করছে, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- জান একটু বসো আমি যাবো আর আসবো। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- কোথায় যাবেন? ( ভয় পেয়ে)
- এইতো এখানে, ( সামনের দিকে তাকিয়ে)
- প্লিজ তাড়াতাড়ি আসবেন। ( কেঁদে কেঁদে)
- হ্যাঁ জান, ( মাথা নেড়ে)
আরিয়ান রুম থেকে বের হয়ে সায়নের রুমে যায়।
আরিয়ান দরজা খুলে দেখে অয়ন নিশার সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে ল্যাপটপে কানে
হেডফোন লাগিয়ে। অয়নকে দেখে আরিয়ানের সন্দেহ উড়ে যায়।
সিমরান আরিয়ানের নাম ধরে ডাকছে জোরে জোরে। আরিয়ান আর সাত পাঁচ না ভেবে রুমে চলে যায়। সিমরান আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
- বলুন আপনি আমার পাশে থাকবেন। ( আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে)
- হ্যাঁ জান আমি তোমার পাশেই আছি। ( সিমরানের মাথায় হাত রেখে)
- আমাকে ও মেরে ফেলবে, ( কাঁদো কাঁদো সুরে)
- কে তোমায় মারবে কার এতো বড় সাহস? (গম্ভীর কন্ঠে)
- আমি জানি না কিন্তু, ( মাথা নেড়ে)
- Baby cool, কেউ নেই। আমি তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি। ( সিমরানের হাত ধরে)
- আমি ঘুমিয়ে পড়লেও আপনি যাবেন না, বলুন। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- না জান যাবো না, তোমার পাশেই থাকবো। ( হেসে)
- হুম,, ( মাথা নেড়ে শুয়ে পড়ে)
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com