Breaking News

ডেন্জারাস ভিলেন লাভার । পর্ব - ৩২



আরিয়ান কথাটা বলতে যাবে ঐ সময়ই অয়নের চোখ যায় দরজার দিকে। দরজার ওপর পাশে কেউ দাঁড়িয়ে আছে এবং তার ছায়া নিচে পড়ে আছে। অয়ন আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে ইশারায় চুপ থাকতে বলে, আরিয়ানকে দরজার দিকে তাকাতে ইশারা করে। আরিয়ান ঘুরে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে কেউ একজন দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে। আরিয়ান রেগেমেগে যেতে নিলে অয়ন আরিয়ানের হাত ধরে থামতে বলে আর চোখ টিপ মেরে বলে,,,

- ভাই ভাবি তো দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছে,,( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)

- ঠিক বলেছিস,, ( মাথা নেড়ে)
- একজন পাগলের সাথে সংসার করার থেকে না করাই ভালো। ( চোখ টিপ মেরে)
- কি করবো তাহলে? ( অবাক হয়ে)
- তুমি ভাবিকে এসাইলামে পাঠিয়ে দাও,, (চিন্তিত হয়ে)
- কিহ,, ( অবাক হয়ে)
- হ্যাঁ ভাইয়া, সেখানে ভাবির উন্নত চিকিৎসা হলে ভালো হতেও পারে। ( আরিয়ানের কাঁধে হাত রেখে)
- দেখি ভেবে, কি করা যায়। ( দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে)
- ওকে ভেবে দেখো,, ( মাথা নেড়ে)
- হুম,, ( হালকা হেসে)
আরিয়ান ঘুরে দেখে ছায়াটি নেই। অয়ন আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- ভাই নিশ্চয়ই এতে এই বাড়ির কোনো গার্ড বা সার্ভেন্টের হাত আছে। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- এতোবড় দুঃসাহস কার? ( রেগে)
- ভাইয়া মাথা গরম করে কোনো কাজ হবে না, যা করার ঠান্ডা মাথায় করতে হবে। ( শান্ত কন্ঠে)
- সিমরান ধীরে ধীরে এবনরমাল হয়ে যাচ্ছে। ( চিন্তিত হয়ে)
- ঠিক বলেছো, ভাবির এই অস্বাভাবিক আচরণের পেছনে কোনো ড্রাগ বা মেডিসিনের প্রভাব আছে। নাহয় এতো দ্রুত একটা জলজ্যান্ত মানুষ বদলাতে পারে না। ( মাথা নিচু করে ভাবতে ভাবতে)
- সিমরান অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি ওর ট্রিটমেন্টের ব্যাবস্থা করতে হবে, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কিন্তু বুঝবো কি করে,, ( চিন্তিত হয়ে)

- এটা বোঝার একটা মাত্র উপায় আছে! ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কি উপায় ভাইয়া? ( অবাক হয়ে)
- সিমরানের ব্লাড টেষ্ট,, ( মাথা নেড়ে)
- You're absolutely right bhai,, ( হালকা হেসে)
- কিন্তু সিমরানকে সরাসরি হসপিটালে নেওয়া যাবে না এতে ক্রিমিনাল গুলো জেনে যাবে। যা করার ওদের অজ্ঞাতসারে করতে হবে। ( থুতনিতে আঙুল রেখে)
- ভাই তাহলে এই কাজটা আমার ওপরে ছেড়ে দাও,, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- প্ল্যানটা শোন,, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- ওকে বলো,, ( আরিয়ানের কাছে এসে)
আরিয়ান অয়নকে পুরো প্লানটা বিস্তারিত বলে। অয়ন খুব মনোযোগ সহকারে আরিয়ানের সব কথা শোনে। আরিয়ান অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- Do you understand? ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- Yes bro, no tension. I do it.... ( হালকা হেসে)
- Well done.. ( অয়নের কাঁধে হাত রেখে)
- Thanks bhai.. ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- দেখে আসি কি করছে? অনেকক্ষণ হলো রুমে গিয়েছে, এখনো খবর নেই। ( ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
- হ্যাঁ ভাই দেখে আসো। ( মাথা নেড়ে)
- হুম,, ( হেসে)

আরিয়ান রুম থেকে বের হয়ে তার রুমে যেতে নেয় তখনই আরিয়ানের চোখ যায় ড্রইং রুমের দিকে। শেফ থমাস জনসন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কার সাথে যেনো কথা বলছে খুব আস্তে করে। আরিয়ানের মনে সন্দেহের জট বাঁধতে শুরু করে। আরিয়ান বিড়বিড় করে বলে,,,
- এই সময় কিচেন রেখে এখানে কি করছে ইনি। ব্যাপারটা মোটেও সুবিধার নয়। আর ঐ অজ্ঞাত ছায়ার মাথায় ও শেফদের ক্যাপ ছিলো। কিন্তু বাসায় তো আরো দুইজন শেফ আছে? দেখা যাক কার এতো সাহস যে আরিয়ান চৌধুরীর কলিজায় হাত দিয়েছে! তার অবস্থাও বাকিদের মতোই হবে। আমার জানের কিছু হলে আমি কাউকে ছাড়বো না, Because i'm a dangerous villain lover of my jaan.............. ( বিড়বিড় করে বলে দাঁতে দাঁত চেপে)

আরিয়ান সোজা তার সিক্রেট কন্ট্রোল রুমে চলে যায়। সেখানে গিয়ে চেয়ারে বসে কম্পিউটার অন করে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ গুলো দেখতে থাকে। সব ফুটেজ চেক করার পরে আরিয়ানের সন্দেহের তালিকায় পরে পাঁচ জন লোক। তাদের মধ্যে শীর্ষে থমাস জনসন, সার্ভেন্ট ফ্লোরা, আর তিনজন গার্ড যারা সার্বক্ষণিক বাড়ি পাহারার দায়িত্বে থাকে। আরিয়ান বিড়বিড় করে বলে,,,
- তোদের এক একটাকে এতো নির্মম কষ্ট সহ্য করতে হবে যা ভাবতেও পারবি না আর তোদের লিডার জিনিয়াকে তো এবার নিজের হাতে শেষ করবো। ভাগ্যের জোরে আগেরবার বেঁচে গেছো কিন্তু এবার আমার হাত থেকে তোমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। গেইম শুরু করেছো তুমি আর শেষ করবো আমি। ( রেগেমেগে)
আরিয়ানের চোখ যায় তার রুমের ফুটেজের দিকে। রুমের ফুটেজ দেখে আরিয়ান ভড়কে যায়। আরিয়ান তাড়াতাড়ি করে সব কম্পিউটার অফ করে তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বের হয়ে দৌড়ে তার রুমে যায় আর গিয়ে দেখে সিমরান মেঝেতে পড়ে আছে। আরিয়ান দৌড়ে গিয়ে সিমরানকে কোলে তুলে বেডে শুইয়ে দেয়। সিমরানের হুঁশ নেই।
আরিয়ান অয়নকে ডাক দেয়। অয়ন সিমরানের অবস্থা দেখে, আরিয়ানকে এম্বুলেন্স আনতে বলে। আরিয়ান তাড়াতাড়ি করে এম্বুলেন্স কল করে আসতে বলে। কিছুক্ষণ পরে এম্বুলেন্স আসে। সিমরানকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার এঞ্জেলা হেন্স সিমরানকে নিয়ে তার চেম্বারে নিয়ে যায় চেকাপের জন্য। আরিয়ান আর অয়ন বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।

প্রায় বিশ মিনিট পরে ডাক্তার এঞ্জেলা হেন্স তার চেম্বার থেকে বের হয়। আরিয়ান তার সামনে আসে। ডাক্তার এঞ্জেলা আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- Half
congrats
Mr. Ariyan Chowdhury.. ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- But why you
congrats
me? ( অবাক হয়ে)
- I think Miss Chowdhury is pregnant but still i'm not sure because some test and pregnancy test is remaining..( হালকা হেসে)
- When we know that surely? ( বিচলিত হয়ে)
- just one hours later not much.. ( ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
- Thanks doctor.. ( হেসে)
- You're most welcome... ( হেসে)
ডাক্তার এঞ্জেলা হেন্স চলে যায় টেস্ট করতে। আরিয়ান আপ কামিং নিউজটা শুনে খুশি কিন্তু তার থেকে বেশি চিন্তিত। অয়ন আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
- ভাই তুমি হবে বাবা আমি হবো চাচ্চু। বাহ্ কতো বড় একটা গুড নিউজ। ( আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে)
- হুম...... ( দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে)
- ভাই তুমি খুশি হওনি! ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- এই সময় যদি সিমরান প্রেগন্যান্ট হয়, কতোবড় বিপদ হবে বুঝতে পারছিস? ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- বিপদ! ( অবাক হয়ে)

- হ্যাঁ বিপদ, সিমরানের স্মৃতি, আচরণ সবকিছু একটা ছোটো বাচ্চার মতো হয়ে গেছে। যেখানে ওর খেয়াল আমাকে রাখতে হয় সেখানে যদি সিমরান প্রেগন্যান্ট হয় তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস? ( বিচলিত হয়ে)
- ওহ মাই গড, ভাই আমিতো সেটা ভাবিনি। ( মাথায় হাত দিয়ে)
- প্লিজ গড, রিপোর্ট যেনো নেগেটিভ আসে। আমি আমার জানকে হারাতে চাই না। ( দেয়ালে হাত রেখে, হাতের ওপর মাথা ঠেকিয়ে)
- ভাই রিপোর্ট পজিটিভ আসলে? ( চিন্তিত হয়ে)
- তাহলে পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে। ( অস্ফুট স্বরে)
- আল্লাহ তুমি যা করো ভালোর জন্যই করো। ( দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে)
বিপদের সময় যেনো কাটতেই চায় না। মনে হয় থমকে গেছে সময়। থেমে গেছে ঘড়ির কাটা। আবহমান নদীর স্রোতধারা যেনো ক্রমশ স্থীর হয়ে যাচ্ছে। সময়ের জড়তা কাটিয়ে ডাক্তার এঞ্জেলা হেন্স রিপোর্ট নিয়ে আসে। ডাক্তার এঞ্জেলাকে দেখে আরিয়ান চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। ডাক্তার এঞ্জেলা মুচকি হেসে বলে,,
-
Congratulations
Mr. Ariyan Chowdhury. Your wife is pregnant... ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে )
-...........................................( স্তব্ধ হয়ে যায়)
- Either you meet your wife.. ( হেসে)
- Yeah sure,, ( মাথা নেড়ে)
- let's go.. ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- yeah. ( হেসে)

আরিয়ান আর অয়ন কেবিনে ঢোকে আর ঢুকেই দেখে সিমরান গান গাইছে আর গানের তালে নাচছে। আরিয়ান দৌড়ে সিমরানের কাছে গিয়ে সিমরানের হাত ধরে বলে,,
- What's wrong with you? ( ধমক দিয়ে)
- চিল্লাচ্ছো কেনো? ( ঝারি দিয়ে)
- কি করছো এসব? ( রেগেমেগে)
- আমি নাচছি, নাচতে দাও। ( কাঁদো কাঁদো সুরে)
- সিমরান,,, ( চিৎকার করে)
আরিয়ান জোরে ধমক দেয় সিমরানের চোখ ছলছল করে ওঠে। অয়ন আরিয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে,,,
- ভাইয়া শান্ত হও, ভাবিকে বুঝিয়ে বলো। ( শান্ত কন্ঠে)
- ভুলে গিয়েছিলাম। ( শান্ত হয়ে)
- আমি যাচ্ছি, তুমি ভাবিকে বোঝাও। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- ওকে,, ( মাথা নেড়ে)
অয়ন বের হয়ে যায়। সিমরান বেডের ওপর বসে চোখের পানি ফেলছে। আরিয়ান সিমরানের পাশে বসে, সিমরান সরে গিয়ে অন্যপাশে বসে। আরিয়ান আবারও এগিয়ে বসে, সিমরান আবারও সরে যায়। আরিয়ান এবার আবারও এগিয়ে বসে, সিমরান সরে যেতে নিলে আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে নিজের কাছে এনে জড়িয়ে ধরে। আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে সিমরান কান্না জুরে দেয়। আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,

- আগে তুমি একা ছিলে জান, যা খুশি করেছো কখনো বাঁধা দেইনি কিন্তু এখন তোমার মধ্যে আমাদের সন্তান বেড়ে উঠছে। সেই অনাগত মেহমানের জন্য তোমাকে শান্ত থাকতে হবে। (সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- কি বললেন? ( অবাক হয়ে)
- হুম জান, ( মাথা নেড়ে)
- বুঝিনি। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কিছুদিন পরে আমাদের একটা ছোট্ট বেবি আসবে, আমরা তাকে নিয়ে খুব সুখে থাকবো। ( সিমরানের গালে হাত রেখে )
- কবে আসবে? ( অবাক হয়ে)
- নয় মাস পরে,, ( গুনে গুনে)
- এতো দেরি! ( ভ্রু কুঁচকে)
- একটু তো দেরি হবেই। এবার ভালো মেয়ের মতো প্রমিজ করো, যে কোনো দুষ্টামি করবে না। ( হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

- প্রমিজ কোনো দুষ্টামি করবো না। ( আরিয়ানের হাত ধরে)
- বলো আমার কথার অবাধ্য হবে না। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- তোমার কথার অবাধ্য হবো না। ( হেসে)
- That's like a good girl... ( সিমরানের কপালে কিস করে)
আরিয়ান, অয়ন সিমরানকে নিয়ে বাসায় চলে আসে। আরিয়ান সিমরানকে বেডে শুইয়ে দিয়ে অয়নের রুমে আসে। অয়ন আর আরিয়ান ভিষণ চিন্তিত। দুজন বুঝতে পারছে না কি করবে? আরিয়ান অয়নের মতো তাকিয়ে বলে,,
- এরকম চলতে থাকলে সিমরানের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। ( মাথা নিচু করে)
- ভাই তাড়াতাড়ি করে এর একটা বিহিত করতে হবে। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- এখন সিমরানকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে হবে। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কেনো? ( অবাক হয়ে)
- সেখানে ওর মা, বাবা, ভাই আর বোন আছে তারা ওর খেয়ালের কোনো কমতি রাখবে না এখানে আমি ওকে একা আগলে রাখবো কতক্ষণ, তুই ও তো কয়দিন পরে চলে যাবি। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- একদম ঠিক বলেছো। ( সায় দিয়ে)
- শত্রুদের চিরতরে বিদায় দিয়ে তারপর যাবো। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
- কি করবে ভাই, ( ভয়ে ভয়ে)
- আজ ওদের জন্য সিমরানের এই অবস্থা ওদের কাউকে আমি ছাড়বো নাআআআ,,( জোরে চিৎকার করে)
কথাটা বলার সাথে সাথে আরিয়ান কোটের মধ্যে থেকে পিস্তল বের করে শুট করে পরপর ৬টি গুলি ছোঁড়ে,,,


চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com