বাড়িওয়ালার ছেলে । পর্ব - ০২
বসে বসে ভাবছি আমাদের ক্লাসে তো ভালোই ছাএ-ছাএী আছে। প্রথমদিন বুজতেই তো পারছেন তেমন ক্লাস হলো না। স্যার ম্যাডামদের সাথে একটু পরিচিত হলাম।
ক্লাস শেষ করে বের হয়ে পরলাম। গেইটের সামনে আসতেই দাড়োয়ান মামার সাথে আবার দেখা?
কাল কিন্তু সাইকেল চালিয়ে একটু তাড়াতাড়ি আসবেন (ভার্সিটির দাড়োয়ান)।
একটু হেসেঁ আচ্ছা মামা ঠিক আছে (আমি)।
বাইকটা start দিলাম মানে বুঝছেনই তো সাইকেলের কথা বলছি। বাতাসের গতিতে ছুটছি ঘন্টায় ১৮০ কিলো গতি সীমা হাস্যকর বিষয় তাই না।
রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি এমন সময় পিছন থেকে একটা Private Car বার বার হর্ন দিচ্ছে,,, একটু সাইট হলাম,,,, কিন্তু আবারও হর্ন দিচ্ছে ধ্যাত কে? এইটা রাস্তার পাশে এবার দাড়িঁয়ে পরলাম।
দেখি Car টা আমার পাশে এসে দাড়ঁ করালো।
গাড়ির গ্লাসটা নিচে নামালো? দেখি ঐ মেয়েটা। মানে আমাদের বাসার ভাড়াটিয়া আংকেল এর মেয়ে। একটা মুখ মুচোড়া দিয়ে গ্লাস লাগিয়ে আবার চলে গেলো।
আমি বুঝলাম মেয়েটা আমার সামনে একটু ভাব নিলো। কিন্তু তার ভাব দেখার টাইম নাই আমার? তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছাতে হবে।
সত্যি কথা বলতে আমার বাবার এর চেয়ে দামি গাড়ি আছে? কিন্তু আমি ঐ সব গাড়ি ব্যবহার করি না। কারণ আনোয়ার মামা (মানে আমাদের বাসার দাড়োয়ান মামা) বলছে দুনিয়াতে ভোগ-বিলাসিতা করলে আখিরাতে তার জবাব দিতে হবে।
তাই এতো বড়লোকি দেখাই না সাধারণ ভাবে জীবন-যাপন করি।
ঐ সব চিন্তা বাদ দিয়ে সাইকেল নিয়ে বাতাসের গতিতে আবার ছুটছি। ৮মিনিট যাওয়ার পর দেখি রাস্তার পাশে একটা গাড়ি দাড়ঁ করানো ড্রাইভার Start দিচ্ছে কিন্তু গাড়িটা start হচ্ছে না।
আমি সাইকেলটা গাড়িঁটার পাশে দাড়ঁ করালাম। সাইকেল থেকে নামতেই দেখি ঐ শয়তান মেয়েটা মানে ভাড়াটিয়া আংকেলের মেয়েটা যে একটু আগে আমাকে দেখে মুখ মুচোড়া দিয়েছিলো।
মেয়েটাকে দেখে আমি রাগে বাইকে উঠে বাইক start দিলাম। ইসস্ sorry মানে ঐ সাইকেলের স্টন্ড তুললাম।
চলে যাবো এসময়?
ভাই আমাকে একটু সাহায্য করবেন(ড্রাইভার)। পারবো না (আমি)।
আবারও মামার কথা মনে পড়ে গেল। মামা বলেছে কেউ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করতে হয়। তাই মত পাল্টে গেল আমার। কি হয়েছে গাড়ির? (আমি)।
ভাই দেখেন গাড়িটা start হচ্ছে না (ড্রাইবার)।
পিছন থেকে মেয়েটা বলে উঠলো? এসব ছোট লোক দাড়োয়ান, গাড়ি ঠিক করবে (ভাড়াটিয়া মেয়ে)।
কথাটা শোনে মন চাইছিলো মেয়েটা গালে কসিয়ে ২টা চর মারি। ভাবলাম বেটা ড্রাইবার পরেছে বিপদে নইলে আজ এখানেই ঐ মেয়েকে থাকতে হতো।
মেয়েটার কথায় কান না দিয়ে গাড়ির দিকে চলে গেলাম দেখি মোটামোটি ভালোই সমস্যা হয়েছে গাড়িটার।
অবশ্য আমি এসব গাড়ি সম্পর্কে সবই বুঝি? কারণ যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন আমাকে একটি ড্রাইবার প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যেতো আবার নিয়ে আসতো? যখন গাড়ি start না হতো সে নিজেই ঠিক করে ফেলতো। আর আমি তার পাশে দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে দেখতাম। এবং ভালোই কাজ শিখে ফেলেছিলাম। অবশ্য একটা গ্যারেজ দিলেও পারতাম??? মজা করলাম। তখন এসব কাজ শিখেছি।
গাড়িঁটার সমস্যা বুঝতে পারলাম এবং ২০ মিনিটের মধ্যে গাড়িটা ঠিক করে ফেললাম।
এবার start দেন (আমি)।
ড্রাইবার গাড়িতে উঠে start দিতেই। গাড়ি start হয়ে গেল । আর মেয়েটা দাঁড়িয়ে দাড়িঁয়ে সবকিছু দেখছিলো? গাড়ি চালু হওয়ার সাথে সাথে মেয়েটা আরও অবাক হয়ে গেলো।
ভাই আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো(ড্রাইবার)।
আরে সমস্যা নেই মানুষতো মানুষের বিপদে আসবে এটাই স্বাভাবিক (আমি)।
ভাই আপনাকে ৫০০ টাকা দেই (ড্রাইবার)।
টাকার কথা শোনে একটু হাসলাম। আর মনে মনে বলছিলাম আরে ভাই তোমার গাড়ির মতো ১০ টা গাড়ি কিনে ফেলা আমার জন্য কোনো বেপার না।
না না ভাই কি বলছেন সাহায্য করেছি তার জন্য টাকা নিবো এমন মানুষ আমি না (আমি)।
এই বলে আমার বাইকে ওঠে পরলাম।
দেখি মেয়েটা আর ড্রাইবার আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। অবশ্য মেয়েটা কিছু বলতে চেয়েছিলো তার আগেই আমি আমার বাইক? মানে সাইকেলে উঠে চলে আসি।
সাইকেল চালিয়ে চালিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
অবশ্য আমার আগের ওনারা চলে আসছে? কারণ আমার বাইক আর তাদের উড়োপ্ল্যান।
রুমে গিয়ে বসলাম।
ইসস্ কতো ঘেমে গিয়েছো তোমাকে আমি আর আমার সাইকেল নিয়ে যেতে দেবো না তুমি তোমার বাবার গাড়ি দিয়ে যাবে(আনোয়ার মামা)।
মামার কথা শোনে আমি কিছু মনে করিনি কারণ আমি জানি মামা আমার কষ্ট সহ্য করতে পারে না।
তাই এমন কথা বলছে।
আরে মামা তোমার সাইকেল দিয়ে যেতে আমার খুব ভালো লাগে? আর তুমি কি জানো আমার সাথে আরও অনেক ছেলে ভার্সিটিতে সাইকেলে করে যায়(আমি)।
মামাকে মিথ্যা বলে কোনোরকম বেচেঁ গেলাম।
অবশ্য মামা আমার মিথ্যা কথা বুঝেও পেরেও কিছু বলেনি আমি জানি ।
ফ্রেশ হয়ে উপরে উঠে খাবার খেয়ে নীচে নেমে পড়লাম। এভাবেই প্রথমদিন কেটে গেলো। পরের দিন সকাল ৭.৫০এর দিকে উঠে পরলাম অবশ্য আজ একটু তাড়াতাড়ি উঠে পরেছি।
ভাবলাম আজ একটু তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নীচে নেমে পড়ি তাহলে ভার্সিটিতে সময় মতো পৌছাঁতে পারবো।
এই বলে ফ্রেশ হয়ে লিফ্ট দিয়ে উপরে উঠবো এসময়?
এইযে আপনি সিঁড়ি দিয়ে উঠেন আমি এখন উপরে উঠবো লিফ্ট দিয়ে,আর আপনার সাথে আমি একসাথে লিফ্ট দিয়ে যেতে পারবো না (ভাড়াটিয়া আংকেলের ২য় মেয়ে)।
আমি মেয়ের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হলাম আমাকে সিঁড়ি দিয়ে যেতে বলছে।
এই আপনার কি হলো? সিঁড়ি দিয়ে যেতে বলেছি তো? হা করে তাকিয়ে কি দেখছেন (ভাড়াটিয়া আংকেলের ২য় মেয়ে)। আচ্ছা যাচ্ছি (আমি)।
এই বলে রাগে সিঁড়ি দিয়ে উঠা শুরু করলাম।
আর মেয়েটা লিফট্ দিয়ে উপরে উঠে গেলো। মনে মনে অনেক রাগ হলো। ভাড়া এসেছে আর ভাব নিচ্ছে যেনো পুরোবাড়ি টাই কিনে নিয়েছে। খাবার খেয়ে নীচে নেমে পড়লাম। এদিকে ভার্সিটির সময় হয়ে গেছে। মামার সাইকেল টা নিয়ে ভার্সিটির দিকে যেতে লাগলাম। ভার্সিটির ভেতরে এসে পড়লাম। আজ ভার্সিটির দাড়োয়ান মামা কিছু বললো না। ক্লাসে ডুকে যথারীতি ক্লাস শেষ করে আবার বাসায় ফিরে আসলাম। এভাবেই ৪-৫দিন কেটে গেলো।
চলবে...?
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com