ডেন্জারাস ভিলেন লাভার । পর্ব - ৩১
আরিয়ান সিমরানের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
হঠাৎ করে সিমরানের এমন আচরণ করা আরিয়ানকে ভাবনায় ফেলে দেয়।
সিমরান ঘুমিয়ে পড়ে। আরিয়ান সার্ভেন্টকে দিয়ে ফাইলগুলো আর ল্যাপটপ রুমে আনায়।
আরিয়ান সিমরানের পাশে বসে কাজ করে।
সিমরান আরিয়ানের বুকের মধ্যে এসে পড়ে। আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বলে,,,
- বিয়ের পরে সিমরান তো কখনো এভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরেনি আর
কখনো তো এভাবে বুকে এসে ঘুমায়নি? তার ওপর এমন আচরণ! ( চিন্তিত হয়ে)
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আরিয়ান ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে আরিয়ানের ঘুম ভেঙে যায় সিমরানের চিল্লাচিল্লি শুনে।
আরিয়ান ঘুম ঘুম চোখ কচলাতে কচলাতে শোয়া থেকে উঠে বসে।
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে দেখে সিমরান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে চিল্লাচিল্লি করছে।
আরিয়ান বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে বেলকনিতে যায়।
বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়াতেই আরিয়ানের চোখ কপালে উঠে যায়।
আরিয়ানের পছন্দের ফুলসহ গাছ আর টব ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে আছে।
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- টবগুলো ভাঙলো কি করে? ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- আরিয়ান জানেন কি হয়েছে? ( হেসে)
- কি হয়েছে? ( অবাক হয়ে)
- ফুলগুলোর ওপর কতগুলো প্রজাপতি উড়ে এসে বসেছিলো।
এজন্য আমি সব টবগুলো ভেঙে ফেলেছি যাতে ওরা না বসতে পারে। ( হেসে হেসে বলে)
- What? ( পুরোপুরি অবাক হয়ে)
- ঠিক করেছি না বলুন? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- তুমি, ( ধমক দিয়ে)
- একদম চোখ রাঙিয়ে আমার দিকে তাকাবেন না তাহলে আপনাকে আচ্ছা করে বকা দিয়ে দেবো। ( কোমরে দুই হাত রেখে)
..............( চমকে যায়)
- উফফ খুব খিদে পেয়েছে, আমাকে খাইয়ে দিবেন, চলুন। ( পেটে হাত রেখে)
- একটু ওয়েট করো, আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- না এখনি যাবেন। ( আরিয়ানের হাত ধরে)
- ফ্রেশ না হয়ে খেতে হয় না, প্লিজ জান আমি ফ্রেশ হয়ে আসি, ( অনুরোধ করে)
- তাড়াতাড়ি করুন তো, ( বিরক্ত হয়ে)
- তুমি বেডে বসো, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- হুম। ( বিরক্ত হয়ে)
আরিয়ান সিমরানকে বেডে বসিয়ে দেয় আর মেইডকে ডেকে বলে, মাটি আর টব ভাঙা টুকরো গুলো পরিষ্কার করতে তারপর আরিয়ান ফ্রেশ হতে চলে যায়। সিমরান খাটের ওপর বসে পা নাড়াতে থাকে।
সার্ভেন্ট এসে রুম সাথে বেলকনিও পরিষ্কার করে চলে যায়। দেয়ালে হাত ঠেকিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। আরয়ান অবাক হয়ে ভাবছে সিমরানের কথাগুলো। সিমরান সচরাচর এতো বোকা টাইপের কথা কখনো বলে না কিন্তু সেই সিমরান আজকে পরিবর্তন হলো কি করে? আরিয়ান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছে তখনই বাহির থেকে সিমরান চিল্লানো শুরু করে দেয়।
আরিয়ান শাওয়ার অফ করে টাওয়েল পড়ে বের হয়। সিমরান আরিয়ানকে দেখে আরও জোরে চিৎকার করে। আরিয়ান এসে সিমরানের মুখ চেপে ধরে বলে,,
- এতো চেঁচাচ্ছো কেনো? ( সিমরানের মুখ চেপে ধরে)
- উমমমমমমমমমম,,,( মাথা নেড়ে)
- সরি সরি,,,( সিমরানকে ছেড়ে দিয়ে)
- লজ্জা শরম বলতে কি আপনার কিছু নেই? ( রেগে)
- অবশ্যই আছে কেনো থাকবে না। ( ভাব নিয়ে)
- তাহলে এসব কি পড়ে বের হয়েছেন? ( রেগে)
- তুমি আমার কি হও? ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- কি হই?( অবাক হয়ে)
- তুমি তো আমার ওয়ান এন্ড অনলি জান। ( মুচকি হেসে)
- ওহ আচ্ছা,, ( আড়চোখে তাকিয়ে)
- তোমার সামনে পড়ে আসলে সমস্যা কোথায়? ( হেসে)
- আমার খুদা লেগেছে আর আপনি কিনা হুদাই বকবক করছেন। ( চিৎকার করে)
- ওহ সরি জান, এখনই রেডি হচ্ছি। ( তাড়াতাড়ি করে আলমারির কাছে গিয়ে)
- ঢং দেখে আর বাঁচি না, হুহ ( ভেংচি মেরে)
আরিয়ান তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে সিমরানকে নিয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে যায়। সার্ভেন্ট সব খাবার পরিবেশন করে রেখেছে। আরিয়ান সিমরানকে চেয়ার টেনে বসিয়ে দেয়। সিমরান চেয়ারে বসে একটা আপেল নিয়ে আরিয়ানের দিকে ছুঁড়ে মারে।
সময়মতো আরিয়ান আপেলটা খপ করে ধরে ফেলে। আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- এসব কি? ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- আপনি ধরে ফেলেছেন তাহলে আমি আবার মারবো। ( হাততালি দিয়ে)
- জান স্ট,,,( সিমরানের দিকে তাকিয়ে )
আরিয়ানের কথা শেষ করার আগেই সিমরান ফ্রুট বোলে রাখা ছুড়ি উঠিয়ে আরিয়ানের দিকে ছুঁড়ে মারে। ছুঁরিটা আরিয়ানের বুক বরাবর আসে। আরিয়ান তখনই মাথা নিচু করে বসে পড়ে। ছুড়িটা গিয়ে নিচে পড়ে। আরিয়ান উঠেই রেগেমেগে সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- কি করছো তুমি? মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? ( রেগেমেগে)
- কি করলাম,, ( অবাক হয়ে)
- Shut up, just shut up.. ( ধমক দিয়ে)
- তুমি আমাকে বকছো কেনো? ( জোরে চিৎকার করে)
.............. ( চুপ হয়ে যায়)
- কে তুমি আমাকে বকা দেওয়ার? এতো সাহস কে দিয়েছে তোমাকে? যাও আমি কিচ্ছু খাবো না। ( রেগেমেগে)
- জান সরি, আর বকা দেবো না। প্লিজ খেয়ে নাও। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- না,, ( রেগে)
আরিয়ান সিমরানকে বোঝাচ্ছে তখন শেফ এসে টেবিলের ওপর চিকেন স্যুপ, সালাদ আর ভেজিটেবল স্যান্ডউইচ রেখে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- Now our madam is very sick weak. So she need nutriment, vitamins and hygienic food. So i made this special foods for madam... ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- Thanks,, ( হালকা হেসে)
- Most welcome sir,, ( মাথা নিচু করে)
আরিয়ান স্যুপের বাটি হাতে নিয়ে চামচ দিয়ে নেড়ে হালকা ফুঁ দিতে দিতে সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- নাও জান, হা করো,, ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- খাবো না, ( মুখ ফিরিয়ে নিয়ে)
- কেনো খাবে না? ( বিরক্ত হয়ে)
- সরি বলো নাহয় খাবো না। ( ভেংচি মেরে)
- না বললে হয় না,,( আড়চোখে তাকিয়ে)
- সরি বলো তাড়াতাড়ি? ( রেগে)
- Okay, Extremely sorry... ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- এভাবে না কান ধরে বলো, ( ভ্রু কুঁচকে)
- Okay okay,,, Extremely sorry jaan. Please forgive me,, ( কান ধরে বলে)
- আর এমন করবে নাতো? ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- আর কখনো এমন করবো না প্রমিজ,, ( মাথা নেড়ে)
- ঠিক আছে দাও,, ( হেসে)
- এইযে নাও,, ( মুচকি হেসে)
আরিয়ান সিমরানকে খাইয়ে দেয়। সিমরান খুব তৃপ্তি নিয়ে খায়। আরিয়ান সিমরানকে খাইয়ে দিয়ে নিজে এক কাপ গ্রিন টি আর বাটার টোস্ট খেয়ে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলে,,,
- তো জান এখন আমার অফিসে যেতে হবে। ( টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে)
- আমাকে একা রেখে তুমি কোথাও যেতে পারবে না, ( অভিমানী সুরে)
- অফিসে না গেলে সব কাজ কে করবে? ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- সে আমি জানি না। ( আরিয়ানকে সরিয়ে দিয়ে)
- বাসায় তো অয়ন আছে, ওকে বলে দেবো যে তোমাকে যেনো ঘুরতে নিয়ে যায়। ( হালকা হেসে)
- অয়ন কে? ( অবাক হয়ে)
................ ( স্তব্ধ হয়ে যায় সিমরানের কথা শুনে)
- বলো না,, ( বিচলিত হয়ে)
- অয়ন কে মানে? দুষ্টামি করছো তাই না। ( হেসে)
- আমি কেনো দুষ্টামি করতে যাবো! ( বিরক্ত হয়ে)
- অয়ন আমার ভাই তোমার দেবর,, ( হেসে)
- কোথায় সে? ( আশেপাশে তাকিয়ে)
- সে হয়তো এখনও পড়ে পড়ে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে, ( ওপরের দিকে তাকিয়ে)
- যাও গিয়ে উঠাও,, ( আরিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে)
- আ,,,,,,,,
আরিয়ান কথা বলতে যাবে তার আগেই অয়ন সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে,,,
- আমাকে নিয়ে কি গবেষণা হচ্ছে শুনি,, ( সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে)
- এই ছেলেটাই কি অয়ন? ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- জান তুমি অয়নকে চিনতে পারছো না? ( অবাক হয়ে)
অয়ন সিমরানের দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে বলে,,,
- Hey bhabi what's up? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- 7 up,,, ( হেসে)
- কি? ( অবাক হয়ে)
- কানা নাকি বয়রা,, ( ভ্রু কুঁচকে)
- দুইটাই। ( হাসতে হাসতে)
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে তারপর অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- তোর ভাবিকে শপিং মল আর পার্ক বেড়াতে নিয়ে যাস কেমন। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- ভাবি যাবে? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- হুম যাবে,, ( মাথা নেড়ে)
- ঠিক আছে ভাইয়া, নিয়ে যাবো। ( হেসে)
- তাহলে আমি এখন আসি। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ান চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় সিমরান আরিয়ানের হাত ধরে আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকায় সিমরান বলে,,,
- তাড়াতাড়ি আসবে! ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- ঠিক আছে জান, ( মাথা নেড়ে)
- আচ্ছা,, ( হেসে)
- আসি,, ( মুচকি হেসে)
- হুম। ( মাথা নেড়ে)
আরিয়ান রেডি হয়ে চলে যায়। সিমরান ড্রইং রুমের সোফায় বসে বসে পা দুলাচ্ছে। অয়ন সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- ভাবি রেডি হয়ে নাও,, ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে (
- কেনো? ( অবাক হয়ে)
- বেড়াতে যাবে না! ( হেসে )
- ও হ্যাঁ তাইতো,আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম, ( চমকে গিয়ে)
- তাড়াতাড়ি যাও তাহলে,, ( হেসে)
- ঠিক আছে, আমি রেডি হয়ে আসছি। ( হেসে)
সিমরান দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে রুমে চলে যায়। সিমরান আলমারি থেকে একটা অরেঞ্জ কালার গাউন বের করে ওয়াশরুমে যায়। সিমরান গাউনটা পড়ে চুল স্ক্রেপ করে, ঠোঁট হালকা অরেঞ্জ কালার লিপস্টিক দেয় আর চোখে হালকা কাজল দেয় আর কানে হোয়াইট স্টোনের টপ কানের দুল পড়ে। তারপর তাড়াতাড়ি করে বের হয়। অয়ন আগে থেকেই রেডি ছিলো।
অয়ন আর সিমরান গাড়িতে বসে। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
অয়ন সামনে বসে আর সিমরান পেছনে বসে।
সিমরান বাহিরের দিকে তাকিয়ে দৃশ্য গুলো উপভোগ করছে।
কিছুক্ষণ পরে গাড়ি এসে থামে একটা সুন্দর পার্কের সামনে। সিমরান গাড়ি থেকে বের হয়ে
দেখে রাস্তার অপর পাশে টবে লাগানো গোলাপ গাছে খুব সুন্দর সদ্য ফোঁটা গোলাপ ফুঁটে আছে।
সিমরানের ঠোটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে ওঠে। অয়ন গাড়ি থেকে বের হতে নেবে তখনই
অয়নের ফোনে কল আসে। অয়ন কল রিসিভ করে কথা বলতে বলতে ধীরে ধীরে বের হয়।
সিমরান রাস্তার ডানে বামে না তাকিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করে।
এদিকে ডানদিক থেকে একটা বাস খুব দ্রুত বেগে আসছে।
সিমরানের কোনো দিকে খেয়াল নেই সে নিজের মতো করে চলছে।
বাসটা খুব কাছে চলে এসেছে। অয়ন গাড়ির মধ্যে তাকিয়ে দেখে সিমরান নেই।
অয়ন আশেপাশে তাকিয়ে সামনে তাকতেই দেখে এই দৃশ্য।
অয়ন ফোন রেখে দৌড়ে সিমরানের হাত ধরে টেনে অন্যপাশে নিয়ে দাঁড় করায়।
বাসটা চলে যায়। অয়ন রেগেমেগে সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- কি করতে যাচ্ছিলে তুমি ভাবি? তুমি জানো আরেকটু হলে তোমার কি হতো? ( রেগে)
- বকছো কেনো? আমি তো ঐ ফুলটা নিতে যাচ্ছিলাম। ( ভ্রু কুঁচকে)
- তাই বলে রাস্তার লেফট রাইট চেক না করেই সোজা হাঁটা শুরু করবে? ( রেগে)
- বুঝতে পারিনি। ( মাথা নেড়ে)
- আজ তোমার কিছু হয়ে গেলে ভাইয়ের চোখে আমি সারাজীবনের জন্য খুনি হয়ে যেতাম। ( রেগে)
- কোন ভাই? ( অবাক হয়ে)
- What? ( অবাক হয়ে)
- এতো লেকচার আমার মোটেও ভালো লাগে না, চুপ করো তো। ( ধমক দিয়ে)
- ভাবি তুমি,,,, ( অবাক হয়ে)
- চুপ করো, আমি ঐখানে যাবো নিয়ে যাও। ( সামনের দিকে দেখিয়ে দিয়ে)
- হুম,, ( মাথা নেড়ে)
অয়ন সিমরানের কথাবার্তা শুনে হতবাক হয়ে যায়।
অয়ন বুঝতে পারছে না সিমরানের মতো ম্যাচিউর একটা মেয়ের আচরণ এতো
অদ্ভুত কি করে হয়ে গেলো? অয়ন সিমরানকে নিয়ে পার্ক ঘুরে আসে।
সিমরান খুব আনন্দে কাটায় সময় টা। দুপুরে রেস্টুরেন্টে নিয়ে লাঞ্চ করতে যায় সিমরান আর অয়ন।
অয়ন আর সিমরান একটা টেবিলে বসে। সিমরান আশেপাশে তাকিয়ে সবকিছু দেখছে। অয়ন সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- ভাবি কি খাবে বলো? ভেজিটেরিয়ান নাকি নন ভেজিটেরিয়ান? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- জানি না,, ( মাথা নেড়ে)
- কি অর্ডার করবো সেটা তো বলো? ( অবাক হয়ে)
- চিজ বার্গার, হড্ডক, পিৎজা আর কি খাবো? ( গালে হাত দিয়ে ভাবতে থাকে)
- দুপুরে এগুলো খাবে? ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
- হ্যাঁ খাবো, অর্ডার করো। ( ধমক দিয়ে)
- ওকে,, ( মাথা নেড়ে)
- সাথে পেপসি আর থাই নুডলস ও অর্ডার করো কেমন। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- এতোগুলো ডিস খেতে পারবে তো! ( অবাক হয়ে)
- পারবো। ( ভেংচি মেরে)
- আচ্ছা ঠিক আছে। ( হেসে)
অয়ন ওয়েটারকে ডেকে হড্ডক, চিজ বার্গার, পিৎজা আর থাই নুডলস এর অর্ডার করে।
সিমরান আশেপাশে তাকিয়ে সব দেখছে।
অয়নের কাছে এই সিমরান কে কেমন জানি অচেনা লাগছে। ওয়োটার এসে খাবার দিয়ে যায়।
সিমরান অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- খাইয়ে দাও,, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কি? ( অবাক হয়ে)
- শুনতে পাওনি, খাইয়ে দাও আমাকে, আমি হাত দিয়ে খাবো না। (গম্ভীর কন্ঠে)
- ভাবি তুমি,, ( অবাক হয়ে)
- খাইয়ে দেবে, নাকি চিৎকার করবো? ( রেগেমেগে)
- আচ্ছা, দিচ্ছি। ( মাথা নেড়ে)
অয়ন এবার সিমরানের কথা শুনে বুঝে যায় কোনো না কোনো গন্ডগোল আছে।
নিশ্চয়ই সিমরানের কিছু হয়েছে। অয়ন সিমরানকে নুডলস আর দুই স্লাইস পিৎজা খাইয়ে দেয়।
সিমরান অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- আর খাবো না। ( মুখ ফিরিয়ে নিয়ে)
- এতোগুলা খাবার কে খাবে তাহলে? ( অবাক হয়ে)
- তুমি খাবে। ( হেসে)
- আমি এতোগুলো খাবার একা কি করে খাবো? ( বিরক্ত হয়ে)
- সে আমি কি জানি? ( ভেংচি মেরে)
- এজন্যই আগে বলেছিলাম,, ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- চুপ করো। ( ধমক দিয়ে)
সিমরানের কথা শুনে অয়ন চুপ হয়ে যায়। অয়ন কোনোমতে বার্গার আর হড্ডক খায়।
সিমরান বসে বসে পেপসি খায়। খাবার শেষ করে বিল পে করে।
অয়ন আর সিমরান বের হয়। তারপর গাড়িতে করে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুজন ঘুড়ে আসে।
সন্ধ্যার পরে অয়ন আর সিমরান বাসায় চলে আসে।
সিমরান বাসায় ঢুকেই দেখে আরিয়ান বসে আছে।
সিমরানকে দেখে আরিয়ান দাঁড়িয়ে যায়। সিমরান দৌড়ে গিয়ে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে।
আরিয়ান থ হয়ে যায়। সিমরান আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- জানো আজকে আমি অনেক জায়গায় ঘুড়তে গিয়েছিলাম। ( আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে)
- তাই,, ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- জিজ্ঞেস করো, কি কি দেখেছো? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কি কি দেখেছো? ( মুচকি হেসে)
- উফফ খুব ক্লান্ত লাগছে, ( বিরক্ত ফিল করে)
- যাও আগে ফ্রেশ হয়ে এসো তারপর সব শুনবো। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- আচ্ছা তুমি বসো, আমি ঝটপট ফ্রেশ হয়ে এসে তোমাকে সব বলবো। ( হেসে)
- Okay meri jaan.. ( সিমরানের কপালে কিস করে)
- আমি যাই তাহলে। ( হেসে)
- হুম যাও। ( মাথা নেড়ে)
সিমরান দৌড়ে চলে যায়।
অয়ন সিমরান আর আরিয়ানের সব কথা শোনো। অয়ন আরিয়ানের সামনে এসে বলে,,,
- ভাই তোমার সাথে কিছু কথা আছে! ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- হ্যাঁ বল,, ( মাথা নেড়ে)
- এখানে না, রুমে চলো। ( আশেপাশে তাকিয়ে)
- ওকে চল, ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ান অয়নের সাথে তার রুমে যায়। অয়ন আরিয়ানের দিকে তাকায়। আরিয়ান সোফায় বসে। অয়ন আরিয়ানের সামনে বসে বলে,,,
- ভাই ভাবির কি হয়েছে? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কি হয়েছে? ( অবাক হয়ে)
- ভাবির আচরণ এতো বদলে গেলো কি করে? ( চিন্তিত হয়ে)
- সেটাই তো বুঝতে পারছি না। ( দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে)
- ভাই আজকে ভাবি কি করেছে জানো? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কি করেছে? ( অবাক হয়ে)
অয়ন আরিয়ানকে শুরু থেকে সবকিছু খুলে বলে আরিয়ানকে। সিমরানের কথা শুনে আরিয়ান রীতিমতো চমকে যায়। অয়ন আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- ভাই ভাবি স্বেচ্ছায় এমন করেনি বা করছে না, এতে নিশ্চয়ই কারো হাত আছে। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কিন্তু,,
আরিয়ান কথাটা বলতে যাবে ঐ সময়ই,,
চলবে......
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com