Breaking News

ডেন্জারাস ভিলেন লাভার । পর্ব - ৩৩


কথাটা বলার সাথে সাথে আরিয়ান কোটের মধ্যে থেকে পিস্তল বের করে শুট করে পরপর ৬টি গুলি ছোঁড়ে থমাস জনসনের দিকে তাক করে। থমাস জানালার লম্বা ভেইলের আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিলো। ভেইলটা অনেক বড় আর ঘন ভাঁজ থাকায় থমাস মনে করেছিলো আরিয়ান বা অয়ন বুঝতে পারবে না কিন্তু আরিয়ানের বাজ পাখি মার্কা চোখ ফাঁকি দেওয়া যে খুব কঠিন সেটা সে জানতো না। অয়ন ভয়ে পাশে সরে যেতে নিয়ে ধাম করে খাটের ওপর পড়ে যায়।

থমাস নিথর হয়ে পড়ে যায়। সিমরান রুম থেকে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে আসে। সিমরানের পায়ের শব্দ পেয়ে আরিয়ান অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- কুইকলি লাশটাকে সরিয়ে ফেল, সিমরান দেখলে তুলকালাম কান্ড হয়ে যাবে। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- ওকে ভাই, ( ভয়ে ভয়ে)
আরিয়ান পিস্তল পেছনে গুঁজে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়। বের হয়ে দেখে সিমরান আসছে। আরিয়ান দৌড়ে গিয়ে সিমরানকে জড়িয়ে ধরে। সিমরান অবাক হয়ে যায়। আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
- কোথায় যাচ্ছো জান? ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- অনেক জোরে শব্দ হলো ঐখান থেকে, ( অয়নের রুমের দিকে তাকিয়ে)
- কই! আমি তো শুনতে পাইনি? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে )
- আমি শুনেছি, ৫/৬ বার হয়েছে শব্দটা। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- আমি তো একবার ও শুনিনি। ( অবাক হয়ে)
- আমি সত্যি বলছি, আমি শুনেছি। ( বিচলিত হয়ে)
- তোমাকে না বলেছি এখন আর দৌড়াদৌড়ি করা চলবে না। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- আমি ঐ রুমে যাবো, ঐখান থেকেই শব্দটা হয়েছে। ( আরিয়ানের হাত সরিয়ে দিয়ে)
- আচ্ছা ঠিক আছে জান, চলো। ( হালকা হেসে)
- হুম চলুন,, ( মাথা নেড়ে)
সিমরান আরিয়ানের হাত ধরে অয়নের রুমে যায়। অয়ন সোফায় বসে আছে। সিমরানকে দেখে অয়ন উঠে দাঁড়ায়। আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- দেখো সব ঠিকঠাক আছে। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- কিন্তু,, ( চারিদিকে তাকিয়ে)

অয়ন আরিয়ানের দিকে তাকায়, আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে অয়নের দিকে তাকায়। আরিয়ান ইশারা করে অয়নকে সিমরানকে কিছু বলার জন্য। অয়ন সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- আরে ভাবি তুমি? ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- তোমার এখানে কি কিছু হয়েছে? ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কই নাতো, ( অবাক হয়ে)
- আমি যে শব্দ শুনলাম! ( ভ্রু কুঁচকে)
- জেল থেকে কয়েদি পালিয়েছে তার পেছনে পুলিশ ছুটছে আর ঢিশুম ঢিশুম করে গুলি করছে। ( জানালার দিকে তাকিয়ে)
- তাহলে কি আমি সেটাই শুনেছি! ( অবাক হয়ে)
- হ্যাঁ ভাবি, সেটাই শুনেছো। ( হেসে)
- আদৌ কি সেই শব্দ ছিলো? (আনমনে বলে)
অয়ন আরিয়ান একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। অয়নের অবস্থা বেহাল। টপটপ করে ঘাম ঝড়ছে কপাল আর শরীর বেয়ে। হঠাৎ সিমরান বলে,,
- ফ্লোরে একসাথে এতোগুলা কাপড় কেনো ফেলে রেখেছো? (অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- এ এ এমনি,, ( থতমত খেয়ে)
- আমি তুলে দিচ্ছি। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- নাআআআআআ,,( জোরে চিৎকার করে)
- এভাবে চিল্লাচ্ছো কেনো? ( ভয় পেয়ে)
- তোমরা যাও তো আমার একটু কাজ আছে। ( বিরক্ত হয়ে)
- সেটা বললেই হয় এভাবে তাড়িয়ে দিচ্ছো কেনো? ( ভেংচি মেরে)
- যাও, ( রেগেমেগে)
- যাচ্ছি, হুহ,,( ভেংচি মেরে)

সিমরান আরিয়ানের হাত ধরে টেনে অয়নের রুম থেকে বের হয়ে রুমে নিয়ে আসে। সিমারন রাগে গজগজ করতে করতে বলে,,,
- সুন্দর করে বললে কি হতো? ( রেগেমেগে)
- জান, ( সিমরানের হাত ধরে)
- চুপ করো,,( ধমক দিয়ে)
- আচ্ছা সরি বেবি,, ( কান ধরে)
- সবসময় তাড়াহুড়ো করে, কি করে রুমে আমিও দেখে ছাড়বো! ( রেগে)
- আচ্ছা আচ্ছা,, ( হেসে)
- হুহ,, ( ভেংচি মেরে)
- তুমি বসো, আমি একটু আসছি। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- কোথায় যাচ্ছো? ( আরিয়ানের হাত ধরে)
- একটু জরুরি কল করতে হবে, যাবো আর আসবো। ( ফোনের দিকে তাকিয়ে)
- ঠিক আছে যাও,, ( মাথা নেড়ে)
আরিয়ান বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে সায়নকে কল করে, সায়ন কল রিসিভ করে,,
- বাংলাদেশগামী প্লেন হায়ার কর, ( সামনের দিকে তাকিয়ে)
- বস কোন টাইমের ফ্লাইট হায়ার করবো? ( চিন্তিত হয়ে)
- একঘন্টা পরের টা, ( ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
- বস এই টাইমে তো, ( অবাক হয়ে)
- যা বলছি কর যত টাকা দরকার একাউন্ট থেকে তুলে নে, আমি কিছুক্ষণ পরেই রওনা দেবো। ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- ওকে বস,, ( মাথা নেড়ে)

- নিউজটা যেনো সিক্রেট থাকে, কোনো ভাবে ফ্ল্যাশ না হয়, Mind it... ( রেগে)
- No tension boss,, কেউ জানবে না। ( হালকা হেসে )
- গুড, টুট টুট টুট
আরিয়ান সায়নের কল কেটে দিয়ে নিচের দিকে তাকাতেই দেখে ফ্লোরা গাড়ি থেকে বের হয়ে দ্রুত দৌড়াতে দৌড়াতে গেইটের ভেতরে ঢুকছে। আর বাহিরের গাড়িটাও দ্রুত চলে যায়। আরিয়ান বাঁকা হাসি দিয়ে তার গার্ড জোহানকে কল করে, জোহান কল রিসিভ করে বলে,,
- জি বস,, ( হেসে)
- টোটাল বাড়ির সব দরজা বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দে আর ফ্লোরা, নাইম, ফয়েজ আর তাইন কে আঁটকে ভেতরে নিয়ে আয়। ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- ওকে বস,, ( মাথা নেড়ে)
- টুট টুট টুট
আরিয়ান কল কেটে দিয়ে রুমে আসে। সিমরান চুপচাপ বসে আছে বেডের ওপর। আরিয়ান সিমরানের পাশে বসে, সিমরান মায়াবী দৃষ্টিতে আরিয়ানের দিকে তাকায়। আরিয়ান মুচকি হেসে বলে,,,
- এই দৃষ্টি দিয়েই তো আমাকে ঘায়েল করেছো। ( মুচকি হেসে)
- আমি তোমাকে মেরেছি? কবে, কখন, কোন সময়, কোন বছর,কোন মাসে, কোন সপ্তাহে, কোন দিন, কোন,,, ( একশ্বাসে)

- হুঁশশ, এতো বকবক কেনো করো শুনি। ( ঠোঁটে আঙুল রেখে)
- যাহ, কথা বললেও দোষ না বললেও দোষ। ( মন খারাপ করে)
- দোষের কথা বলিনি জান, ( সিমরানের হাত ধরে)
- আচ্ছা এই বাসায় কি কেউ থাকে না? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- কেউ বলতে? ( অবাক হয়ে)
- এই যে তোমার বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্নীয়। ( আঙুলে গুনে গুনে)
- তুমি জানো না। ( ভ্রু কুঁচকে)
- কি করে জানবো, আমার তো কিচ্ছু মনে নেই। এমনকি আমার বাবা, মা, ভাই, বোন কারো কথাই তো মনে নেই। ( অস্ফুট স্বরে)
- What? ( অবাক হয়ে)
- আচ্ছা আমি তোমার কি হই? তুমি আমার এতো খেয়াল কেনো রাখো? ( আরিয়ানের হাত ধরে)
আরিয়ানের হার্টবীট যেনো থেমে গেছে। পায়ের নিচের মাটি যেনো সরে গেছে। হাত পা শীতল হয়ে গেছে। বুকের ভেতর ঝড় বয়ে যাচ্ছে। যেনো এই ঝড়ের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। আশার প্রদীপ যেনো নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। ছেলেরা পাষাণ প্রকৃতির কষ্ট কম হোক বা বেশি কখনো চোখের পানি ফেলে না।
আরিয়ান অতি মাত্রায় কঠোর মনোবলের মানুষ হয়েও প্রিয় মানুষটির মুখের বুলি শুনে নিজের ক্রন্দ আঁটকে রাখতে পারলো না। দুচোখ যেনো নোনাজলে ভেসে উঠেছে। সিমরান আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- চুপ হয়ে গেলে যে ,,, ( আরিয়ানের হাত ধরে)
-...............................................( এক দৃষ্টিতে সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- বলো না, আমি তোমার কে হই? আমার মনে থাকলে কি তোমাকে জিজ্ঞেস করতাম। ( আরিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে)

সিমরানের কথা শুনে হঠাৎ করে আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দেয়। সিমরান হকচকিয়ে ওঠে, সিমরান বুঝতে পারে না আরিয়ান কান্না কেনো করছে? সিমরান আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
- কান্না করার মতো কি বললাম? এই বোকা ছেলে কাঁদছো কেনো? ( আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে)
- তুমি কি বলছো তা তুমি নিজেও জানো না। ( কেঁদে কেঁদে)
- কি বলেছি? ( অবাক হয়ে)
- বলো জান, তুমি দুষ্টামি করে বলছো এসব। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- সত্যি আমার কিচ্ছু মনে নেই। ( মাথা নিচু করে)
- কি বলছো এসব? ( হতবাক হয়ে)
- সত্যিটাই তো বললাম,,, ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- আমি ওদের কাউকে ছাড়বো না,,, ( জোরে চিৎকার করে)
আরিয়ান উঠে হনহনিয়ে রুম থেকে বের হয়ে রুমের দরজা লক করে দেয় বাহির থেকে। সিমরান দৌড়ে এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলে,,,

- দরজা কেনো বন্ধ করলে? খোলো আমার ভয় লাগছে। ( দরজায় ধাক্কা দিয়ে)
-জান একটু অপেক্ষা করো, বাহিরে কতগুলো কালসাপ আছে ওদের শেষ না করলে ওরা তোমাকে গিলে ফেলবে। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
- কিসের সাপ? ( ভয়ে ভয়ে)
- তুমি বসো, আমি সাপ গুলোকে চিরতরে শেষ করে আসছি। ( রেগে)
- কিন্তু আ,,( ভয়ে ঢোক গিলে)
- যা বলছি শোনো নাহয় আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। (জোরে ধমক দিয়ে)
- ঠিক আছে, বসছি। ( ভয় পেয়ে)
- Good girl,, ( গম্ভীর কণ্ঠে)
আরিয়ান সিঁড়ি দিয়ে ধীরে ধীরে নিচে নামছে। অয়নও নিচে দাঁড়িয়ে আছে। ফ্লোরা,নাইম,ফয়েজ, তাইন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাঁপছে। তাদের সামনে পড়ে আছে থমাস জনসনের রক্তাক্ত নীথর দেহ।
আরিয়ান সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসে সোজা সোফার ওপর বসে পায়ের ওপর পা তুলে। আরিয়ান চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। আরিয়ানের অগ্নিশর্মা রুপ দেখে অয়নও ভিষণ ভয় পেয়েছে।
আরিয়ান চোখ বন্ধ করে তর্জমা আঙুল কপালে ঘষতে ঘষতে বলে,,,,
- তোরা কার পোষা কুকুর? ( শান্ত কন্ঠে)
- ব ব বস আ আ আপনার পোষা কুকুর আ আমরা। ( কেঁপে কেঁপে)
- আমার পোষা কুকুর হয়ে অন্যের হুকুম পালন করিস তোরা। ( শান্ত কন্ঠে)
- না না বস,, ( কাঁদো কাঁদো সুরে (
- আমার থালায় খেয়ে সেই থালা ফুটো করার মতো দুঃসাহস দেখাতে তোদের কলজে কাঁপেনি? ( জোরে চিৎকার করে)

- বস আমরা কি করেছি? ( না জানার ভান করে)
- জিনিয়া ফারান্ডেজের সাথে হাত মিলিয়েছিস তোরা, সিমরানকে পৃথিবী থেকে সড়ানো ছিলো তোদের টার্গেট। ( চিৎকার করে)
- বস,, ( কেঁদে কেঁদে)
- কি করবো, কি করবো, কি করবো তোদের ? ( সাইকোর মতো করে)
- বস এবারের মতো ক্ষমা করে দিন। ( হাত জোর করে)
- তোদের আর ক্ষমা! আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস আর তোদের ছেড়ে দেবো। ( বাঁকা হাসি দিয়ে)
- বস ভুল হয়ে গেছে, ( কেঁদে কেঁদে)
- আমার বড় ম্যাসেট টা নিয়ে আয়,, ( জোহানের দিকে তাকিয়ে)
- বস সরি, প্লিজ মা,,( হাতজোড় করে)
- Shut up. Just shut up.. ( জোরে চিৎকার করে)
একজন গার্ড আরিয়ানের বড় চাপাতি টা নিয়ে আসে। আরিয়ান উঠে দাঁড়ায়। আরিয়ান চাপাতিটা হাতে নিয়ে তার দিকে তাকায়। আরিয়ান চাপাতির ধারালো অংশে আঙুল রেখে হালকা টান দেয় আর সাথে আরিয়ানের আঙুল কেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়ে যায়। আরিয়ান বাঁকা হাসি দিয়ে বলে,,,
- খুব দারুণ ভাবে শাণ দেয়া। সর্বশক্তি দিয়ে এক কোপ দিলেই ঘাড় থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাবে। ( বাঁকা হাসি দিয়ে)

- বস মাফ করে দিন,, ( কাঁদতে কাঁদতে)
আরিয়ান বিদ্যুৎ গতিতে তাইনের দিকে ঘুড়েই এক ঘা বসিয়ে দেয় আর তৎক্ষনাৎ তাইনের মাথা ছিটকে পড়ে যায়। বাকিদের অবস্থা পুরাই বেহাল। আরিয়ান চাপাতির রক্তের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- সত্যি করে সবটা বলে দে তাহলে বেঁচে যাবি নাহয়,, ( শান্ত কন্ঠে)
ফ্লোরা কাঁদতে কাঁদতে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- বস জিনিয়া ম্যাম আমাকে টাকা দিয়েছিলো। ( কেঁদে কেঁদে)
- কতো? ( ফ্লোরার দিকে তাকিয়ে)
- তিন লাখ টাকা, ( ভয়ে ভয়ে)
- মাত্র তিন লক্ষ টাকার জন্য ওর সাথে হাত মিলিয়েছিস। আর কি করেছিস? ( বাঁকা হাসি দিয়ে)
- সে আমাকে একটা ড্রাগের বোতল দিয়েছিলো থমাসকে দেওয়ার জন্য। থমাস সেই ড্রাগ ম্যামের খাবারে দিতো। শুনেছি ড্রাগটা হিংস্র প্রাণীদের দেওয়া হতো, এতে তাদের হিংস্রতা কমে যায় একপর্যায়ে সে একদম সাধারণ প্রাণীদের মতো হয়ে যায়। আর যদি কোনো মানুষকে এই ড্রাগ দেওয়া হলে সে সব স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে। থমাস ম্যামের খাবারে হাই ডোজ দিতো যাতে তাড়াতাড়ি ম্যাম পাগল হয়ে যায়। থমাসের প্ল্যান প্রায় সাকসেস হয়েও গিয়েছিলো। তাইন জিনিয়াকে টাইম টু টাইম খবর পৌঁছে দিতো আর নাইম ম্যামের ওপর নজর রাখতো। ফয়েজ বাড়ির ওপর নজর রাখতো। ( কেঁদে কেঁদে)
- এবার তোদের কি হবে? ( দাঁতে দাঁত চেপে)
- বস ক্ষমা করে দিন। ( কেঁদে কেঁদে)

আরিয়ান পিস্তল বের করে ফ্লোরার দিকে তাক করে তৎক্ষনাৎ তিনটা গুলি ছোঁড়ে। ফ্লোরা পড়ে যায়। আরিয়ান নাইম আর ফয়েজকে কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ঘাড়ের ওপর সজোরে এক ঘা বসিয়ে দেয়। তারাও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
ওদের রক্ত গিয়ে আরিয়ানের মুখে, শার্টে গিয়ে গিয়ে পড়ে। অয়ন এই দৃশ্য দেখে থরথর করে কাঁপতে থাকে। আরিয়ান চিৎকার করে বলে,,
- বেইমান গুলোর লাশ সরিয়ে ফেল। ( জোরে চিৎকার করে)
- ওকে বস,, ( মাথা নেড়ে)
- দশ মিনিটের মধ্যে পুরো ড্রইং রুম পরিষ্কার চাই। ( লাশের দিকে তাকিয়ে)
- জি বস,, ( মাথা নেড়ে)
আরিয়ান চাপাতি টা ফেলে দিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে ওপরে যাওয়ার জন্য। আরিয়ানের ইশারা দেখে অয়ন ওপরে চলে যায়। আরিয়ান ওপরে গিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,
- রেডি হয়ে নে এখনি বের হবো। ( অয়নের দিকে তাকিয়ে)
- কোথায় যাবে ভাই? ( অবাক হয়ে)
- বাংলাদেশে, কুইকলি রেডি হবি।( গম্ভীর কণ্ঠে)
- ঠিক আছে ভাই,,( সায় দিয়ে)

অয়ন দ্রুত চলে যায়। আরিয়ান তার শার্ট খুলে ফেলে দেয়। আরিয়ান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে দরজার লক খুলে ভেতরে যেতেই দেখে সিমরান চুপচাপ বসে আছে। আরিয়ানকে দেখে সিমরান ভ্রু কুঁচকে তাকায়। আরিয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
- শার্টে চিলি সস পড়েছে তো তাই ক্লিনিং এর দিয়েছি। ( মুচকি হেসে)
- হুহ,,,,, ( ভেংচি মেরে)
- আমার জান কি রাগ করেছে আমার ওপর? ( সিমরানের পাশে বসে)
- কথা নাই কারো সাথে,, ( রেগে)
- জান আমি তোমার জন্য সব কীট গুলোকে শেষ করে এসেছি আর তুমি কিনা আমার ওপর রাগ করে বসে আছো। ( সিমরানের হাত ধরে)
- এই তোমার আঙুলে কি হয়েছে? ( আরিয়ানের হাতের দিকে তাকিয়ে)
- কোথায়? ( হাত সরিয়ে নিয়ে)
- হাত দাও আমি দেখবো,, ( রেগে)
- কিচ্ছু হয়নি জান,, ( হাত পেছনে লুকিয়ে)
- দাও বলছি, ( রেগেমেগে)
- I'm fine.... ( হেসে)

- অতিরিক্ত কথা আমি মোটেও পছন্দ করি না। ( রেগেমেগে)
সিমরান আরিয়ানের হাত টেনে সামনে আনে। আরিয়ানের কাটা আঙুল চুইয়ে রক্ত পড়ছে। রক্ত দেখে সিমরান আরো রেগে যায়। সিমরান ঠাশঠাশ করে আরিয়ানের গালে চড় মারে।
সিমরানের চড় খেয়ে আরিয়ানের মুখ ঘুরে যায়। আরিয়ান অবাকের ওপরে অবাক হয়ে যায়। সে জীবনেও ভাবেনি সিমরান তাকে এতো জোড়ে চড় মারবে। আরিয়ান গালে হাত দিয়ে সিমরানের দিকে তাকায়। আরিয়ান বোবা হয়ে গেছে সিমরানের চড় খেয়ে। সিমরানের আরিয়ানের কাটা আঙুল ধরে বলে,,,
- কতোখানি কেটে গেছে আর আমাকে মিথ্যে কথা বলো। এতো সাহস কোথায় পেয়েছো? তুমি জানো আমি কে? ( রেগেমেগে)
- Who are you miss? ( শান্ত গলায়)
- বলবো না, চুপ করে বসো এখানে একটুও নড়াচড়া করবে না। ( রেগে)
- Jo hokom.. ( মাথা নেড়ে)
সিমরান উঠে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে ফার্স্ট এইড বক্স খুঁজতে থাকে কিন্তু সেখানে পায় না। সিমরান একে একে সব জায়গা খোঁজে কিন্তু বক্স না পেয়ে আরও হতাশ হয়ে পড়ে। আরিয়ান মুচকি হাসছে আর সিমরানকে দেখছে। সিমরান শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে, চুলগুলো মেসি বান খোপা করে আরও মন দিয়ে খুঁজতে থাকে।

আরিয়ান কখনো সিমরানকে এভাবে কখনো দেখেনি। আরিয়ান অবাক হয়ে সিমরানকে দেখছে। সিমরান রেগেমেগে বলতে থাকে,,,
- কোনো একটা জিনিস সঠিক জায়গায় রাখবে না। যত জ্বালা সব আমার ঘাড়ে এসে চাপে। একটা মানুষ এতো অগোছালো কি করে হয়। একে না দেখলে বুঝতাম না। ( রেগেমেগে)
আরিয়ান ধীরে ধীরে সিমরানের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। সিমরান টেরও পায়নি। হঠাৎ করে আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে। সিমরান চমকে ওঠে। আরিয়ান সিমরানের চুলের খোপা খুলে দিয়ে চুলে নাক ডুবিয়ে দেয়। আরিয়ানের স্পর্শ সিমরানের শরীরে শিহরণ সৃষ্টি করেছে।
সিমরান তার চোখ বন্ধ করে ফেলে। আরিয়ান সিমরানের কানের কাছ থেকে চুল সরিয়ে হালকা কিস করে কানে। সিমরান কেঁপে ওঠে। আরিয়ান সিমরানের কানে ফিসফিস করে বলে,,,,
- আমার জান আমাকে এতো ভালোবাসে তা তো আগে জানতাম না। ( ফিসফিস করে)
- ছাড়ো, আমি,, ( অস্ফুট স্বরে)
- হুঁশশ, কোনো কথা নয়। শুধু তুমি আর আমি। ( ফিসফিস করে)
অয়ন তার লাগেজ, ব্যাগ সব ঠিকঠাক করে রেডি হয়ে আরিয়ানের রুমের সামনে আসে। আরিয়ানের রুমের দরজায় একটু হালকা ফাঁকা ছিলো। অয়ন দরজার ফাঁকা দিয়ে তাকাতেই দেখে দুজন রোমান্স করছে। অয়ন একরাশ হতাশা নিয়ে বলে,,,

- আমাকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে বলে, এরা রোমান্স করছে। ফাটা কপাল আমার, এখন যদি আমি নিশিতাকে ( নিশা) বিয়ে করতাম তাহলে আমিও তো, আরে অয়ন সোনা এতো ভাবতে হয় না বিয়েতে নজর লাগবে তো। ধৈর্য ধর ধৈর্য ধর, ধৈর্যের ফল অতি সুমিষ্ট হে বৎস। দরজায় কি ধাক্কা দেবো? নাহ থাক, বেচারা ভাই আমার কতদিন ধরে টেনশনে আছে। একটু টেনশন ফ্রী হোক। আমি আমার নিশা জানুকে কল করি তার সাথে গাপশাপ করি । ( আনমনে বকবক করে)
আরিয়ান সিমরানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে সিমরানের চোখে চোখ রাখে। সিমরান চোখ সরিয়ে নেয়। আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- জানতে চেয়েছিলে না আমি কে? বুঝিয়ে দেই আমি তোমার কি হই। ( অস্ফুট স্বরে)
আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে। আরিয়ানের কথাগুলো সিমরানের মনে গিয়ে লাগে। আরিয়ান সিমরানের কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে গুনগুন করে বলে,,
💓 '' permeating through sunlight, Gliding through shade'' 💓
💘 '' When we meet, time stood still'' 💘
💙 '' The sky melted into glass and shaped into your face '' 💙
💕 '' Colour me in the colour of love '' 💕
💗 '' This is the heartleft wish of your lover '' 💗
💕 '' Colour me in the colour of love '' 💕

সিমরান তাও কিচ্ছু মনে করতে পারছে না।
সিমরানের পেছনের কথাগুলো সব যেনো তার স্মৃতি থেকে মুছে গেছে।
আরিয়ান সিমরানের কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে বলে,,,,
- সব ভুলে গেলেও আমি তোমার আছি তোমারই থাকবো।
যতই বদলে যাও না কেনো তুমি আমার ছিলে, আছো থাকবে।
তোমার জন্য আমি সব শেষ করে ফেলতে পারি।
তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।
আর যে এই কাজ কল্পনাও করবে তাকে আমি চিরতরে বিদায় করে দেবো, Because i'm a dangerous villain lover..... ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে।
........... ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে থাকে)

- চলো জান, রেডি হয়ে নেবে। ( সিমরানের হাত ধরে)
- কোথায় যাবো? ( হাসি দিয়ে)
- বাংলাদেশে, ( হেসে)
- সেটা কোথায় আর সেখানেই বা কেনো যাবো? ( অবাক হয়ে)
- গেলেই বুঝতে পারবে। চলো এখন। ( স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে)
- আমি এভাবেই যাবো,, ( হেসে)
- একদম না, এসো তোমাকে আমি রেডি করিয়ে দিচ্ছি। ( সিমরানের হাত ধরে)
- কোনো দরকার নেই। ( দাঁড়িয়ে)
- নিজেও রেডি হবে না আর আমাকেও রেডি হতে দেবে না। ( রেগে)
- রাগ করছো কেনো? ( ভ্রু কুঁচকে)
- কথা না শুনলে রাগ তো করবোই। ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- যাচ্ছি,, ( মাথা নেড়ে)
- কোথায় যাচ্ছেন? ( অবাক হয়ে)
- রেডি হতে হবে না। ( বিচলিত হয়ে)
- এইতো গুড গার্ল, যাও রেডি হয়ে এসো। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- ঠিক আছে, কোনটা পড়বো দেখিয়ে দাও। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- অকে জান। ( হেসে)
আরিয়ান উঠে গিয়ে কাবার্ডের কাছে যায়।
সিমরান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পা নাড়াচ্ছে।
আরিয়ান সিমরানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে কাবার্ডের দরজা খুলেই দেখে,,,,,

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com