Breaking News

বাড়িওয়ালার ছেলে । পর্ব - ০৯



না তাকিয়ে ইসস্ কে এইটা বার বার ডাকছে অযথায় যাবেন এখান থেকে (আমি)। হুম যাবো তো দাড়াঁন দেখাচ্ছি মজা (মিম)। এক বালতি পানি এনে ঢেলে দিল আমার মাথার উপর। এক লাফ দিয়ে উঠলাম।

কে কে (আমি)। দেখি মিম আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। কি বলব বুঝতে পারছি না। এই যে শোনেন (আমি)। কিন্তু মিম না দাড়িঁয়ে এক দৌড়ে চলে গেলো। ধ্যাত সকাল সকাল ঘুমের দিলো বারটা বাজিয়ে। কোনো উপায় না পেয়ে উঠে পরলাম। ব্রাশ করবো কিন্তু ব্রাশ টা বাসায় রেখে চলে এসেছি। বাহিরে বের হলাম। দেখি মামা জাল নিয়ে বসে আছে মাছ ধরবে।

মামা ব্রাশ তো বাসায় ফেলে চলে এসেছি এখন ব্রাশ কিভাবে করবো (আমি)। ওহ কি আর করবে কয়লা দিয়ে কোনো রকম দাতঁ মেজে ফেলো (মামা) । মনে মনে হায় রে কয়লা? কোনোদিন তো দাতঁ মাজিনি আচ্ছা দেখি কেমন লাগে।
আচ্ছা মামা কয়লা কোথায় পাবো (আমি)। এই মিম সাঈমকে রান্না ঘর থেকে একটু কয়লা এনে দে (মামা)। ঠিক আছে বাবা (মিম)। দেখি মিম ২ টা কয়লার টুকরা নিয়ে এসে আমার হাতে দিলো।
আমিও কোনো কিছু না ভেবে দাতঁ ঘষা শুরু,করলাম। দাতঁ মাজা শেষ দেখি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কি ব্যাপার? হাসছে কেনো সবাই । একটা ছোট আয়নায় নিজের চেহারা টা দেখলাম। দেখি কালি দিয়ে সব মুখ ভরে গেছে। কয়লার কালি বুঝতেই পারছেন কেমন হয়।
তাড়াতাড়ি করে পানি দিয়ে মুখ দুয়ে ফেললাম তবুও কালি ভালো করে উঠে নি। তবে এখন আগের চেয়ে একটু কম বলে মনে হচ্ছে। চলো মাছ ধরতে পুকুরে যাওয়া যাক (মামা)। কিন্তু আমি তো সাতার জানি না (আমি)।
ওহ তাহলে তোমার নামার দরকার নেই (মামা)। দেখি মামা জাল নিয়ে পুকুরে নেমে পরলো। মোটামোটি ভালোই মাছ ধরলো মামা। আমি উপর থেকে বসে বসে সব দেখছিলাম।
মাছ ধরে এসে খাবার খেলাম। একটু হেঁটে আশে পাশের প্রকৃতি টা দেখলাম খুবই মনোরম পরিবেশ মনে হচ্ছিল এখানেই সারাজীবন কাটিয়ে দেই। এভাবেই ঐ দিন পার হয়ে গেলো।
পরের দিন সকাল ৮.৫০। এইযে উঠেন বাবা আপনাকে ডাকছে (মিম)। ঘুমের মধ্য বলতেছিলাম এখন উঠতে পারবো না (আমি)। ওহ পানি ঢেলে তুলতে হবে নাকি (মিম)। কথাটা শোনে একটা লাফ দিয়ে উঠে পরলাম। না না প্লিজ এইসব করবেন না (আমি)। হুম বাবা আপনাকে ডাকতেছে আসেন (মিম) ।
জ্বি আপনি যান আমি আসছি (আমি)। মিম চলে গেলো মনে মনে মেয়েটা কেনো যে বার বার আমার সামনে আসছে। বুঝেছি আমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে নইলে মেয়েটার কথা আমি ভুলতে পারবো না। উঠে ফ্রেশ হলাম দেখি মামা আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে।
খাবার খাওয়া শেষ করলাম। সাঈম বাবা শোনো তুমি মিমের সাথে ওর ভার্সিটি থেকে ঘুড়ে আসো ভালো লাগবে (মামা)। মনে মনে মিম কেনো আবার? না মামা আমি একাই ঘুড়তে পারবো (আমি)। না বাবা একা একা তুমি কিছু চিনবা না হারিয়ে যাবা (মামা) । কি বলো মামা (আমি)।
হুম বাহিরে কুকুরের দল আছে সমস্যায় পড়ে যাবা (মামা) । মনে মনে এই রে কুকুর তাহলে আমি শেষ? তারপর আজ আবার দৌড়ানি দিয়ে গাছে তুলবে, থাক থাক তার চেয়ে ভালো মেয়েটার সাথেই যাই। আচ্ছা ঠিক আছে মামা (আমি)।

এই বলে মিমের সাথে ওর ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাস্তা দিয়ে হাটছি আর বলছি? আচ্ছা আপনার ভার্সিটি এখান থেকে কত দূরে (আমি)। প্রায় ১০ কিলো হবে (মিম)।
ওরে বাবা ১০ কিলো হেটে যাবেন নাকি (আমি)।
হুম হেটে যাবো (মিম)। না আমি যাবো না আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ আমি বাসায় ফেরে যাবো (আমি)। না আপনাকে তো ছাড়া যাবে না আজকে আমার সাথে যেতেই হবে (মিম)।
মনে মনে ইসস্ মামা এ কোন বিপদে ফেলল আমাকে? না সত্যি বলছি আমার অনেক ঘুম পেয়েছে আপনি যান আমি কাল যাবো (আমি)। অহ আচ্ছা ঠিক আছে তবে বাসায় যাওয়ার পথে কিন্তু কুকুরের দল আছে (মিম)।
মনে মনে এই কুকুর সালাদের কি কোনো কাজ নেই সারাদিন রাস্তার পাশে বসে থাকে এখন কি করি যদি আমার প্যান্ট খুলে নিয়ে চলে যায়। মামার বাসা থেকে প্রায় অনেকটাই তো এসে পরেছি । মান সম্মান সব দূলোয় মিসবে? এর চেয়ে ভালো মিমের সাথেই চলে যাই হয়তো কুকুরের হাত থেকে বাচাঁ যাবে।

না আমি আপনার সাথে যাবো (আমি)।
না,এখন তো আমি আপনাকে নিয়ে যাবো না (মিম) । না না প্লিজ এমন কথা বলবেন না,, এমনিতেই আমি শিশু বাচ্চা পরে যদি হারিয়ে যাই (আমি)। হেসেঁ হেসেঁ আপনি শিশু, দেখলে তো মনে হয় বয়স ৮০ পার হয়েছে (মিম)।
মনে মনে মেয়েটা তো দেখছি বিশাল শয়তান আনোয়ার মামার মেয়ে দেখে আজ বেচেঁ গিয়েছে। ইশিতা আর ইলমা যদি হতো নগদে কেলানি দিতাম। কিন্তু ওরে তো আমি কিছু করতে পারবো না।
কি বলছেন এইসব,,আমার বয়স কেবল মাএ ২১ আর আপনি বলছেন আমি ৮০ বছরের ভুইড়া এইটা ঠিক না (আমি)। হয়েছে হয়েছে এখন হাটেন তো পরে আবার ক্লাস পাবো না (মিম)। হাটছি আর চিন্তা করছি ১০ কিলো হাটলে কালকে আমাকে খুজে পাওয়া যাবে না। তবে এখন কিছুই করার নেই পরিস্থিতির শিকার।
আরও ১০ মিনিট হাটার পর একটা অটোতে উঠে পরলো মিম। কি ব্যাপার বললো যে হেটে যাবে কিন্তু এখন আবার অটোতে উঠে পরলো। মনে মনে ভাবলাম হয়তো আমাকে ভয় দেখিয়েছে। কোনো কথা না বলে সোজা আমিও অটোতে উঠে পরলাম।

দেখি মিম এর একটা বান্ধবী উঠেছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের অটোতে। ওরা দুজন ভালোই কথা বলছিলো। মিমের বান্ধবী আস্তে করে জিজ্ঞেস করছিলো? কিরে মিম ছেলেটা কে,, কি সুন্দর কি হ্যান্ডসাম(মিমের বান্ধবী) । কিন্তু আমি তাদের সাথেই ছিলাম তাই কথা টা আমার কানে এসে পড়লো।
মনে মনে নিজেকে নায়ক সালমান খান বলে মনে হচ্ছিল। মাথার চুল গুলো একটু ঠিক করলাম।
মিম আমার ভাবটা দেখছিলো।
ওহ ওই ছেলেটা আমার বাবার সাথেই দাড়োয়ানের চাকরি করে (মিম)। মিমের কথাটা শোনে সাথে সাথে নায়ক বাপ্পারাজে পরিনত হলাম।
আর মনে মনে বলছিলাম মেয়েটা এমন নীচে নামিয়ে দিলো আমাকে মন চায়ছিলো দুইডারে ধইরা নারী নির্যাতনের পিডানি দেই। কিন্তু এর ফল পেতে হবে মিমকে ।
ওহ দাড়োয়ান, কিন্তু দেখে তো মনে হয় কোটিপতির ছেলে (মিমের বান্ধবী) । আরে না তুই যে কি বলিস না (মিম)।
ওদের কথা শোনে কিছু না বলে চোরের মতো অটোর এক পাশে বসে থাকলাম। ৩০মিনিট যাওয়ার পর মিমের ভার্টিসির সামনে চলে আসলাম।

এই যে তিনজনের ভাড়াটা দিয়ে ভেতরে আসেন (মিম)। কি বলেন এইসব আমি ভাড়া দিবো কেনো, আমার কাছে টাকা নেই (আমি)। টাকা নেই তো এসেছেন কেনো ভাড়া দেন আমি গেলাম (মিম)।
এই বলে মিম ভার্সিটির ভেতরে চলে গেলো। এদিকে আমার কাছে কোনো টাকা নেই। সত্যি কথা বলতে মানিব্যাগ টা বাড়িতে ফেলে চলে এসেছি। আমি তো আর জানতাম না টাকার প্রয়োজন হবে।এখন কি করি মনে মনে ভাবছি মহা বিপদে পড়ে গেলাম দেখছি। মিম আমার সাথে এমন করলো ভাবতে পারছি না।
ওই মিয়া ভাড়া দেন হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো ( অটোওয়ালা)। জ্বি ভাই আমার কাছে তো কেনো টাকা নেই (আমি)। টাকা নেই মানে? ভাড়া দেন তাড়াতাড়ি নইলে আপনার দাতঁ ভেঙে ফেলবো( অটোওয়ালা)।
ওই মিয়া কি কইলেন দাতঁ ভাঙবেন মানে কি বলেন এসব উল্টা পাল্টা (আমি)। যা বলছি ঠিকই বলছি তাড়াতাড়ি ভাড়া দেন নইলে কিন্তু ভালো হবে না (অটোওয়ালা) ।
কি করবেন মারবেন নাকি (আমি)। প্রয়োজন হলে
তাই করবো (অটোওয়ালা)।
মনে মনে এই বেটা তো দেখছি খুবই ফাজিল? মারামারি করবে বলে মনে হচ্ছে,,, মারামারি করলে আগে কেলিয়ে নিবো পরের টা পরে হবে।

দেখি অটোওয়ালা অটো থেকে নেমে পড়লো
আর আমার শার্টের কলার ধরে বসলো। আমিও কোনো কিছু না ভেবে দিলাম ঘুষি। মারামারি শুরু হয়ে গেছে ৫ মিনিট মারামারি করার পর ভার্সিটি থেকে কিছু ছাএ এসে আমাদের মারামারি থামালো।
দেখি অটোওয়ালা বেশি মাইর খাইছে তার লুঙ্গী ছিড়ে গেছে আর আমার শার্ট ছিড়ে গেছে। রাগে দিসি বেটাকে কয়েকটা ভালো করে। ধ্যাত কি করবো? আমার শার্টের কলার ধরে, আমি কি ছেড়ে দিবো নাকি। প্রায় ৩০ মিনিট পর মিম কোথা থেকে যেনো আসলো। দেখে আমাদের এই অবস্থা তারপর তাড়াতাড়ি করে ভাড়া দিয়ে অটোওয়ালাকে বিদায় করলো।
আমার খুব রাগ হলো মিম ইচ্ছে করে এই কাজ টা করেছে। সে জানতো আমার কাছে টাকা নেই। মাএ ৬০ টাকার জন্য আজ মারামারি করতে হলো। সালার এলাকার লোকজন গুলো তো দেখছি ভালো না। 😰😰😰
আর ভালো হবেই বা কি করে কুকুর গুলোই তো ঠিক না। আসতে না আসতেই দৌড়াইয়া পুকুরে নামিয়েছে। আর আজ মারামারি? বাবা জানতে পারলে আমাকে আর জীবনে আসতে দিবে না।
আরো থাকবো এখানে আজই চলে যাবো।
এইযে কি হয়েছিলো আপনার সাথে আর আপনার এই অবস্থা কি করে হলো (মিম)।
আপনাকে একটা থাপ্পোড় মেরে বুঝাবো কেনো হল এই অবস্থা (আমি)। মিম ভয়ে আর কোনো কথা বলল না। বুঝলো আমি অনেক রেগে গিয়েছি।

মিম ক্লাস না করে সোজা আমাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলো। এর মধ্যে কোনো কথা হলো না মিমের সাথে। বাড়ির কেউ টের পায়নি আমি মারামারি করেছি। তাড়াতাড়ি ছেঁড়া শার্ট টা বদলিয়ে ফেললাম।
চিন্তা করছি মামা যদি জানতে পারত আমি মারামারি করেছি তাহলে মিমের বারটা বাজাতো। তাই মামাকে আর কিছু বলিনি। এভাবেই ২-৩ দিন চলে যায় মিমের সাথে কোনো কথা বলিনি।
এখন থেকে সব জায়গায়,মামার সাথে যাই।
কিন্তু মিমকে নিয়ে আমার চিন্তা ভাবনা কমছে না। সারা রাত ওর কথা ভাবতে ভাবতে পার হলে যায়। মিমের সেই হাসি, মায়াবি চেহারা যেনো আমাকে মুগ্ধ করে ফেলেছে। ভাগ্যের পরিহাস কেনো আমার সাথে এমনটা হলো। কেমন জানি মিমের প্রতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ছি।
কিন্তু এভাবে আর কতদিন। ভাবলাম এখান থেকে চলে যাওয়া টাই ভালো হবে। পরের দিন সকাল ৭.০০টায় রেডি হয়েচ্ছ আজ আর থাকবো না। মামাকে একটা মিথ্যা বলে চলে যাবো। বলবো ভার্সিটি থেকে স্যার ফোন দিয়েছে।

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com