Breaking News

তুমি আমার এক অন্যরকম শান্তি । পর্ব - ০৯



তামান্না ওর মাকে রাস্তায় ঘটে যাওয়া সব কিছু বললো। তামান্নার মা অবাক হয়ে

- কি বলছিস পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে?
- হ্যা মা।
- ও তো ছাড়া পেয়ে যাবে। বের হয়ে যদি তোর ভিডিও ভাইরাল করে দেয়।
তামান্না আর তামান্নার মা চিন্তিত হয়ে পড়লো৷ যেটার ভয় পেয়ে আসছিলো৷ তা যদি সত্যি হয় তামান্না তো কিছু করে বসবে৷ ঐদিনের ঘটনার পর অনেক বার নিজেকে শেষ করার অনেক চেষ্টা করে কিন্তু মায়ের জন্য পারে না। না ছিলো নাওয়া খাওয়া। অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছিলো। এখানে আসার পর স্বাভাবিক হয় কিছুটা।
মেহেরাব বাড়িতে যেয়ে ঘরে ঢুকে দরজা অফ করে দিলো। মিথিলা মিহু কে ডাক দেয়। মিহু এসে
- কি হয়েছে?
- মেহেরাবের কি হলো আবার হঠাৎ? কোনো কথা না বলে ঘরে ঢুকে পড়লো।
- কি বলছো তুমি? ব্যস্ত চলো কিছু করে ফেলবে না তো।
মিহু মিথিলা দরজায় ডাক্কা দিয়ে মেহেরাবকে ডাক দেয়। অনেকক্ষণ পর মেহেরাব বলে
- ভাবি আমি একটু একা থাকতে চাই প্লিজ। তোমরা যাও।
মিহু মিথিলার ডাকাডাকিতে মা ও চলে এসে
- কি হয়েছে?
- জানি না হঠাৎ করে এসে ঘরে ঢুকে দরজা আটকায় দেয়। এখন বলছে একা থাকতে চাই।
- ওর ভাইকে ফোন দাও।
মিহু মিথিলা দুজনকে কল দিলো। ওপাশে থেকে ভেসে আসলো
- এখন কাজে ব্যস্ত আছি। পরে কল করবো।
ফোনটা কেটে দিলো৷
মিথিলা মিহু একে অপরের দিকে চেয়ে আছে। মা জিঙ্গেস করলো
- কি বললো?
- কাজে ব্যস্ত পরে ফোন দিবে।
এর ভেতর মেহেরাব দরজা খুলে দিলো৷ ভেতরে তিন জনে ঢুকে পড়লো৷ মেহেরাব মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো । দু পাশে মিহু মিথিলা বসা।
সন্ধ্যার পর মেধা বাসায় আসতেই পুরো থ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। সোফার উপর কয়েকজন মানুষ বসে আছে৷ মেধা আসাতেই মেধার দিকে সবাই চেয়ে পড়লো। মেধার মা মেধার কাছে আসলে মেধা বললো
- কারা মা এনারা।
- তোকে দেখতে এসেছে৷
- মানে কি?

মেধার মা মেধার হাত ধরে নিয়ে ঘরে চলে গেলো। মেধার বাবা ছেলে পক্ষের লোকজনকে বলছে
- বাইরে থেকে আসছে তো ওকে সাজিয়ে নিয়ে আসুক৷
- না না আমরা মেয়েকে দেখে নিছি। আমাদের পছন্দ হয়েছে মেয়েকে। আপনারা আমাদের ছেলের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ফাইনাল জানিয়েন।
মেধার বাবা হাসিমুখে
- ঠিক আছে আমি কালকের ভেতরে জানাবো৷
- হ্যা৷ আর টাকাটা
- ছেলে পছন্দ হলেই বিয়ের দিন দিয়ে দিবো৷
- ঠিক আছে।
মেধা মা কে বলে
- দেখতে আসছে মানে কি? আমি এখন বিয়ে করবো না।
- ছেলেটা খুব ভালো৷ সরকারী চাকরি করে। ভালো বেতন পাই। বাড়ি ও খুব সুন্দর।
মেধা মায়ের দিকে তাকিয়ে
- কি বলছো? খোজ নিয়েছো।
- হ্যা তোর বাবা খোঁজ নিছে। এখন রেডি হয়ে নে ওদের সামনে যেতে হবে।
মেধার বাবা রুমে ঢুকে বললো
- লাগবে না। সবাই চলে গেছে।
মেধা মেধার মা অবাক হয়ে যায়। মা বললো
- চলে গেছে মানে?
- মেধাকে তাদের পছন্দ হয়েছে । এখন ছেলেকে দেখতে যেতে বলছে খোঁজ নিতে বলছে।
- কি বললা তুমি …?
- ঠিক আছে বলছি।
বাবা মেধার দিকে তাকিয়ে
- তোর কি কাউকে পছন্দ আছে? থাকলে বল তাহলে আমি আর ছেলের ব্যাপারে খোঁজ নিবো না।
- না না বাবা আমার কোনো পছন্দ নেই। তোমরা যেখানে বিয়ে দিবে সেখানেই রাজি।
মেধার বাবা হাসি মুখে
- এই না হলে আমাদের মেয়ে।

থানার ভেতর আড়ার সাথে ছেলেটাকে সাথে লোকগুলোকে ঝুলিয়ে পেটাচ্ছে কনস্টেবলেরা। পুলিশ অফিসার ভেতরে ঢুকে ইশারা করলো ছেলেটাকে নামাতে। অফিসারের কথা মতো নামিয়ে চেয়ারে বসালো। অফিসার ছেলেটার দিকে তাকিয়ে
- তুই কে? বুঝলি তো এখন।
- অফিসার খবর টা যদি পৌঁছে যায় তাহলে তোর এই চাকরি থাকবে না। আমার প্রতিটা মারের হিসাব তোকে দিতে হবে।
অফিসার উঠে দাড়িয়ে ছেলেটার মুখে চড় মেরে
- তোর সেই বড় বাবার অপেক্ষায় আছি আমি। ডাক তাকে।
অফিসার ফোনটা বের করে ছেলেটার দিকে ছুঁড়ে দিলো। আর বললো
- ফোন করে ডাক৷ তুই থানায় আসিছ।
ছেলেটা ফোনে নাম্বার ডায়াল করে ফোন করলো। ফোনটা রিসিভ হতে
- ভাই আমাকে থানায় ধরে নিয়ে এসেছে। মেরেছে খুব। তুমি ব্যস্ত এসো৷
ওপাশ থেকে
- কোন থানা৷ অফিসারকে ফোনটা দে।
ছেলেটা অফিসারের দিকে তাকিয়ে
- নেন কথা বলেন।
অফিসার বললো
- আমি ফোনে কথা বলি না। যার বলার সে থানায় এসে বলুক।
ফোনটা নিয়ে কেটে দিলো। অফিসার বললো
- এই ওকে ঝুলিয়ে পেটাতে থাক। ওর কোন বড় বাবা আসতাছে সে আসলে নাকি হিসাব দিতে হবে। একটু ভালোভাবে মামা শশুরের মিষ্টি খাইয়ে দে। যাতে রাস্তাঘাটে বখাটেপনা না করতে পারে।
একজন কনস্টেবল এসে
- স্যার হৃদয় এসেছে।
- ওকে যাও আমি আসছি।
অফিসার জেলের ভেতর থেকে বের হয়ে গেলো। অফিসারকে দেখে হৃদয় উঠে দাড়ালো। অফিসার বললো
- কি জানতে পারলা?
- সবকিছু চেক করেছি। কিছু তথ্য ভূল আছে৷
হৃদয় অফিসারকে সব কিছু বলতে লাগলো। অফিসার মন দিয়ে শুনছে আর অবাক হয়ে যাচ্ছে।

মা মেহেরাবের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে
- কি হয়েছে বাবা তোর?
- কই কিছু না তো।
- তাহলে এভাবে দরজা অফ করে দিয়ে কেন বললি একা থাকতে দেওয়ার কথা।
- ভালো লাগছিলো না তাই।
মিথিলা বললো
- তা ভালো না লাগার কারণ কি?
- জানি না।
- লুকাচ্ছো
- না। সত্যি জানি না৷
মিহু বললো
- কিছু তো হয়েছে একটা।
- কিছু না।
মা বললো
- তাহলে তুই বলবি না।
- আচ্ছা মা যদি মনের ভেতর আলাদা ভাবে শান্তি অনুভব করা হয় আলাদা একটা অনুভূতির সৃষ্টি হয় এটাকে কি বলে ?
মিথিলা বললো
- তাহলে এই কেস। তা কোন মেয়েটার জন্য এমন শান্তি অনুভূতি হলো। প্রেমে পড়েছো।
- না ভাবি। তবে আমার ভেতর টা এখন শূন্যতা কাজ করছে।
মিহু বললো
- যার জন্য অনুভব হয় তাকে তুমি ভালোবাসো।। তার জন্য তোমার মনে আলাদা একটা শান্তি সৃষ্টি হয়। তবে এটাকে আবেগ বলে। আর এই অনুভূতি শান্তি হুটহাট ভাবে হয়।
- এটা যদি সারাজীবনের জন্য হয়।
- তাহলে আবেগ নয় ভালোবাসা।

থানার সামনে বেশ কয়েটা গাড়ি এসে থামে। গাড়ির শব্দ শুনে ছেলেটা বলতে লাগলো
- যত পারিস মার। তোদের বাপ এসে গেছে। তোদের সবাইকে এসবের হিসাব দিতে হবে।
কনস্টেবল আরো রেগে যেয়ে পেটাতে থাকে।
গাড়ি থেকে লোকগুলো নেমে হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে পড়লো৷ সোজা অফিসারের রুমে ঢুকে পড়লো। একজন ভদ্রলোক ঢুকতেই অফিসার উঠে দাড়িয়ে
- স্যার আপনি। এখানে
লোকটা রাগি কন্ঠে
-তোমাদের এতো বড় সাহস তুমি কাকে ধরে নিয়ে এসেছো জানো তুমি।
অফিসার অবাক হয়ে
- না স্যার।
- যাকে পেটাচ্ছো এতক্ষণ ধরে সে আমার কথা তোমাকে বলে নি। ও আমার ভাই
- না তো। আপনার কথা বললে তো ছেড়ে দিতাম। আপনার এতো কষ্ট করে আসতে হতো না।
- কোন অফিসার ছিলো আমার সাথে ফোনে কথা বলতে চাইনি।
- সে তো চলে গেছে মাত্র আমি মাত্রই এলাম।
- আমার ভাইকে নিয়ে এসো।
-আপনি শান্ত হয়ে বসুন।
এই তোমরা ভেতরে কি চাও যাও বাইরে। আর বলো ছেলেটাকে নিয়ে আসতে।
সবাই বাইরে চলে গেলো..........

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com