তুমি আমার এক অন্যরকম শান্তি । পর্ব - ১০
- স্যার এতো রাগবেন না। সে অফিসার আর তো জানতো না ও আপনার ভাই।
- ঐ অফিসার বাচবে না। আমার ভাইকে যেভাবে মেরেছে তার থেকে বেশি কষ্ট দিয়ে মারবো।
- মাথা ঠান্ডা করেন। ঠান্ডা খাবেন না কফি।
- আমি কিছু খাবো না।
- ঠিক আছে স্যার। আমার ব্যাপারটা যদি দেখতেন।
লোকটা উঠে দাঁড়িয়ে ফোন দিয়ে বললো ব্যাগ নিয়ে ভেতরে আসার জন্য। একজন একটা বড় ব্যাগ এনে টেবিলের উপর রেখে চলে গেলো। অফিসার বললো
- স্যার যদি খুলে দেখাতেন।
- তুমি নিজেই দেখে নাও৷
- কি যে বলেন না? আপনি দেখালে খুশি হতাম।
লোকটা ব্যাগের চেইন খুলে টাকাগুলো দেখালো। অফিসার হা হয়ে গেলো।
তামান্না ব্যাগ পত্র সব কিছু গুছিয়ে বেরিয়ে আসলো। তামান্না আর তামান্নার মা ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হতে যাবে তখনি তামান্নার ফোনে কল আসলো। তামান্না রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
- আপনি তামান্না।
- হ্যা কিন্তু আপনি কে?
- আপনার আম্মুকে নিয়ে এক্ষুনি থানায় চলে আসবেন। যদি না আসেন আমরা ধরে নিয়ে আসবো।
ফোনটা কেটে গেলো। তামান্নার মা জিঙ্গেস করলো
- কে?
- থানা থেকে ফোন দিছে এক্ষুনি যেতে হবে। না গেলে সমস্যা আছে।
- ঐ ছেলেটা কোনো ঝামেলা করলো কি না?
তামান্না চিন্তিত হয়ে পড়লো। মায়ের দিকে তাকিয়ে
- কি করবো এখন? যাবো।
- মন টানছে না। চল যেয়ে দেখি।
ব্যাগ রেখে থানার উদ্দেশ্যে বের হলো।
মেহেরাব চোখ বুঝে বার বার তামান্নাকে কল্পনা করছে। বাসা থেকে বের হয়ে যখন আবার যেয়ে হাত টা ধরলো তখন মনের ভেতর উষ্ণতা অনুভব হলো৷ কেমন শান্তি লাগতেছিলো। যখন শক্ত করে হাত ধরে বাইরে বেরিয়ে নিয়ে আসছিলো মনে হচ্ছিলো আমার মতো এতোটা খুশি আর কেউ নেই।
মেহেরাব চোখ বন্ধ করে কল্পনা করছিলো আর হাসছিলো। মিহু মিথিলা মা মেহেরাবের হাসি দেখে একে অপরের দিকে বার বার বার তাকাচ্ছে।
মা বললো
- ব্যাপার টা কি? ও হাসছে কেন।
মিথিলা বললো
- ও নতুন কারো প্রেমে পড়ছে। তাই স্বপ্ন দেখছে।
মিহু বললো
- আমিও তাই ভাবছিলাম৷ নাহলে এতো সুন্দর কথা সাজিয়ে বলতে পারতো না।
মিথিলা হেসে দিয়ে
- ওর প্রেমে পড়া বের করছি।
মিথিলা জোরে ডাক্কা দিলো। মেহেরাব লাফ মেরে উঠে বসে
- ক ক ক কি হয়েছে।
মিথিলা বললো
- মায়ের কোলে মাথা রেখে নতুন প্রেমিকার কথা ভাবছো। এত সুখ পাইছো কই।
মেহেরাব লজ্জা পেয়ে যায় । উঠে বেরিয়ে পড়লো কোনো কিছু না বলে।
তামান্না তামান্নার মা থানায় পৌছে গেলো। তামান্না বললো
- আমাদের কে কল করা হয়েছিলো আাসার জন্য। একজন এসে বললো
- স্যার ঐ রুমে আছে ওখানে যান।
তামান্না আর তামান্নার মা দরজার কাছে দাড়ালো। দরজায় দুজনকে দেখে অফিসার উঠে দাঁড়িয়ে আসতে বললো । তামান্না আর তামান্নার মা ভেতরে ঢুকলো। অফিসার বসতে বললো। দুজনে বসলো। তামান্নার মা বললো
- স্যার আমাদের এখানে কেন ডেকেছেন?
- আপনার হাসবেন্ড কে কল করা হয়েছে? সে আসুক তারপর বলছি।
অফিসারের কথা শুনে তামান্নার মা তামান্নার দিকে তাকালো। তামান্না মায়ের দিকে তাকালো। কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছে না। কনস্টেবল একজন চা নাস্তা নিয়ে ভেতরে এসে টেবিলের উপর রাখলো। অফিসার বললো
- আপনারা এ গুলো খেতে লাগেন। আমি আসতাছি।
অফিসার বাইরে বেরিয়ে গেলো। তামান্নার মা তামান্নাকে বললো
- কি হতে যাচ্ছে আমি কিছুই বুঝতাছি না। তোর বাবাকে ও ডেকেছে।
- হঠাৎ করে কেন তারা আমাদের ডেকে আনলো।
দুজনে খুব চিন্তিত হয়ে পড়লো।
মেধার বাবা বাসায় এসে সবাইকে ডাকলো এক সাথে। মেধার মা বললো
- কি হয়েছে?
- ছেলে খুব ভালো৷ আমার খুব পছন্দ হয়েছে। মেধা অনেক সুখী হবে।
মেধা কথাটা শুনে লজ্জা পেয়ে রুমে চলে গেলো। মেধার মা বললো
- মেয়েটা লজ্জা পেয়েছে। মেয়ের সামনে বলে।
- বুঝতে পারিনি।
- তা কি বললা ছেলেদের।
- আগামি মাসেই বিয়ে।
মেধা রুমে ঢুকে শুয়ে পড়লো। তখনি মেধার বয়ফ্রেন্ড কল দিলো। মেধা কলটা কেটে দিলো। আবার কল দিলো। কেটে দিলো। এক পর্যায় কলটা রিসিভ করে মেধা বললো
- তোর সমস্যা কি? কলটা কেটে দিচ্ছি বুঝিস না আমি বিজি আছি। ফোন রাখ। তুই আর আমাকে কল দিবি না
ওপাশ থেকে
- তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছো কেন? কি হয়েছে?
- তোর সাথে আমার এই মুহুর্তে ব্রেকআপ৷ তুই আর কখনো আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবি না।
- মানে কি তোমার মাথা ঠিক আছে তো। কি হয়েছে বলবা আমাকে?
- আমি ঠিক আছি। এখন তুই ঠিক কর তোর মাথা। তুই একটা ছোটলোক। অন্যের বাইক নিয়ে এসে আমার সাথে ভাব নিস। তোর মতো ছোট লোকের সাথে আমি মেধা রিলেশন রাখবো না। তুই আমাকে ঠকিয়েছিস। যদি ভালো চাস আমার সামনে পড়িস না। সামনে পড়লে গণধোলানি খাওয়াবো। সোজা জেলে যেয়ে পচবি তো সাবধান।
মেধা ফোনটা কেটে দিলো। নাম্বার ব্লক করে দিলো। মেধা এখন হবু জামাইকে নিয়ে ভাবনায় ব্যস্ত। তার জামাইটা স্মার্ট। জামাইকে নিয়ে ঘুরতে যাবে। গাড়িতে ছাড়া চলবে না। বড় বড় শপিংমল থেকে শপিং করবে। বড় রেস্টুরেন্টে খাবে৷ জামাই সরকারি চাকরি করে সবাই ভয় পাবে। কেউ কিছু বলবে না। একা একা ভাবছে আর হাসছে। সবাইকে দেখিয়ে দিবে ও কত বড় লোক।
ঘড়ির কাটায় রাত ১২ টা
তামান্নার বাবা থানায় চলে আসলো। তামান্নার বাবাকে অফিসারের রুমে যেতে বললো। অফিসারের রুমে ঢুকে তামান্নার মায়ের দিকে তাকিয়ে
- তোমরা কি আমাকে একটু ও শান্তিতে থাকতে দিবা না। কেন আমার মানসম্মান নিয়ে খেলা করছো।
তামান্না তামান্নার মা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। তামান্নার বাবা বললো
- কি করেছো তোমরা? আমাকে ডাকা হলো।
তামান্নার মা বললো
- আমরা কিছু করেনি।
- সত্যি করে বলো। তা না হলে এখানে এমনি এমনি আসোনি।
- হঠাৎ করেই ডেকেছে৷ কিছুই বুঝতে পারছি না৷
- আর কতো বলো আমাকে। তোমাদের ঝামেলা তোমরা মেটাতে আমাকে কেন জড়ালে এর ভেতর।
এর ভেতর অফিসার ভেতরে ঢুকে পড়লো৷ অফিসার চেয়ারে বসে
- আপনি এসেছেন। বসুন আপনারা।
তিনজনে বসলো। তামান্নার বাবা বললো
- আমাদের কেন এখানে ডেকেছেন?
- আপনাদের নামে একটা কেস ফাইল হয়েছে
- কেস ফাইল। কে করেছে?
অফিসার উঠে দাঁড়িয়ে
- আমি
তামান্নার মা বাবা তামান্না পুরো অবাক হয়ে দাঁড়ালো। তামান্নার বাবা বললো
- কেন? আমরা কি করেছি?
অফিসারের কথাটা শুনে তিন জনে
হা হয়ে গেলো...........
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com