Breaking News

ডেন্জারাস ভিলেন লাভার । পর্ব - ৩৫



অয়ন ফ্রেশ হতে চলে যায় । সায়ন আরিয়ানের বাসায় গিয়ে সব ঠিকঠাক করছে। আরিয়ান বেডের ওপর বসে আছে। সিমরান ফ্রেশ হয়ে বের হয় হঠাৎ করে সিমরানের চোখ যায় দেয়ালের দিকে। দেয়ালে একটা ইয়া বড় টিকটিকি। সিমরানের চোখ চড়কগাছ। সিমরান ভয়ে ঢোক গিলে টিকটিকিটার দিকে তাকায়, তখনই সিমরানের মনে হয় টিকটিকিটা তার দিকে তাকিয়ে আছে।

সিমরান দুইহাত দিয়ে কান চেপে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে।
আরিয়ান সিমরানের চিৎকার শুনে হন্তদন্ত হয়ে বেড থেকে উঠে দাঁড়ায়।
আরিয়ান দৌড়ে সিমরানের কাছে যায়। আরিয়ান সিমরানকে দেখে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে।
আরিয়ান সিমরানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
- কি হয়েছে জান? চিৎকার করছো কেনো জান? ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- ঐ,,( কেঁদে কেঁদে)
- কি? কোথায়? ( অবাক হয়ে)
- দেয়ালের সাথে,, ( আরিয়ানের বুকে মুখ লুকিয়ে)
- কি দেয়ালের সাথে? ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
- টিকটিকি,, ( কেঁদে কেঁদে)
- কিহ, তুমি টিকটিকি ভয় পাও? ( টাস্কি খেয়ে)
- আমাকে ঐ টিকটিকি খেয়ে ফেলবে, আমাকে বাঁচাও ,, ( কেঁদে কেঁদে)
- কেউ তোমাকে একটা টোকাও দিতে পারবে না। এসো বেডে বসবে। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- না না, ঐ,,( ভয়ার্ত কন্ঠে)
- কিচ্ছু হবে না না এসো ,, ( হালকা হেসে)
- সত্যি তো? ( ভ্রু কুঁচকে)
- তিন সত্যি, এবার এসো। ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- ঠিক আছে। ( মাথা নেড়ে)

আরিয়ান সিমরানকে নিয়ে বেডের ওপর বসিয়ে দেয়। সিমরান ভয়ে কাঁপছে।
ভুলেও দেয়ালের দিকে তাকাচ্ছে না। আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে।
সিমরান আরিয়ানের দিকে তাকায়। আরিয়ান সিমরানের চোখে চোখ রেখে বলে,,,
- আমি থাকতে তোমার কোনো ভয় নেই জান। আমি সবসময় তোমার পাশে আছি।
তখনকার জন্য মাফ করে দাও। বেশিই রাগ করে ফেলেছি।
I'm sorry jaan, extremely sorry. Please forgive me! ( চোখে চোখ রেখে বলে)
সিমরান আচমকাই আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে। আরিয়ান মুচকি হেসে সিমরানকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
- আমাকে ক্ষমা করবে না জান? ( সিমরানকে জড়িয়ে ধরে)
- তোমার কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার, ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিত। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- না জান তোমার দোষ না। দোষ সব ঐ কালপ্রিটের। ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- কার? ( অবাক হয়ে)
- তোমার জানার দরকার নেই। এখন লক্ষি মেয়ের মতো এখানে বসো, আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। ( মুচকি হেসে)
- ঠিক আছে যাও। ( মাথা নেড়ে)
- ভয় পেও না কেমন। ( সিমরানের গালে হাত রেখে)
- হুম। ( হালকা হেসে)
- একটা কাজ করো তুমি আম্মুর কাছে যাও।( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- কেনো যাবো? ( ভ্রু কুঁচকে)
- এতোদিন পরে এসেছো, আম্মুর কাছে গিয়ে গল্প করো মন ভালো হয়ে যাবে। ( হেসে)
- আচ্ছা যাচ্ছি। ( মাথা নেড়ে)
- আবার কোনো উল্টো পাল্টা কথা বলোনা। ( সিমরানের দিকে তাকিয়ে)
- ঠিক আছে। ( হেসে)
- যাও। ( হেসে)
- হুম। ( মাথা নেড়ে)
সিমরান উঠে রুম থেকে বের হয়ে যায়। আরিয়ান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে,
টাওয়েল কাঁধে নিয়ে ওয়াশরুমে যায়। সিমরান ধীরে ধীরে ড্রয়িং রুমে যায়।
সিমরান আশেপাশে তাকিয়ে সব দেখছে। কলিং বেল বেজে ওঠে।
সিমরান আস্তে আস্তে গিয়ে দরজা খোলে।
দরজা খুলতেই দেখে আফজাল হোসেন দাঁড়িয়ে আছে।
তার বাবকে দেখে হঠাৎ তার মন কেঁপে ওঠে।
সিমরান তার বাবাকে ভিষণ ভালোবাসতো এখনও বাসে।
বাবাকে দেখে সিমরানের দুচোখ যেনো জলে ভরে এলো।
সিমরানের বাবার ব্যাগ পড়ে যায় হাত থেকে।
সিমরানের বাবা এতোদিন পরে মেয়েকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
সিমরানের অজান্তে তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে,,
- বাবা,, ( অস্ফুট স্বরে)
মি. আফজাল সিমরানকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দেয়।
সিমরানের চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
আফজাল হোসেনের দূর্বলতা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে আরিয়ান সিমরানকে বিয়ের জন্য বাধ্য করে।
এজন্যই সিমরান প্রচন্ড রেগে গিয়েছিলো যে জন্য সে কোনো যোগাযোগ করেনি পরিবারের সাথে।
কিন্তু এতোমাস পরে, সিমরানের দুর্দিনেও সবাইকে ভুলে গেলেও তার বাবার কথা
স্মৃতিতে আঁটকে রয়ে গেছে। এটাই হয়তো বাবা মেয়ের মধুর সম্পর্ক।
স্বভাবতই মেয়েরা বাবার ভক্ত বেশি হয় এবং ছেলেরা মায়ের ভক্ত।
সিমরানের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম ঘটেনি।
বাবা মেয়ের কান্ড দেখে মিস মিলিও নিজের কান্না আটকাতে পারেনি।
মাহিন ড্রইং রুমে চলে আসে নাচতে নাচতে সেও থ হয়ে যায় এমন দৃশ্য দেখে।
আরিয়ান হাত দিয়ে চুল ঝারতে ঝারতে এসে সিমরান আর তার বাবাকে কাঁদতে
দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
আরিয়ান এসে মিস মিলির পাশে দাঁড়ায়। মিস মিলি শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ চেপে কান্না করে।
সিমরানের আসায় ঘরের আলো যেনো প্রস্ফুটিত হয়েছে। ঘরের রওনক যেনো ফিরে এসেছে।
আরিয়ান মিস মিলির দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- মা আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো। ( মিস মিলির দিকে তাকিয়ে)
- হ্যাঁ বাবা বলো। ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- মা আপনি রুমে আসুন। ( সামনের দিকে তাকিয়ে)
- ঠিক আছে, বাবা চলো। ( চোখ মুছে)
আরিয়ান আর মিস মিলি রুমে যায়। সিমরান তার বাবার দিকে তাকায় আর তখনই নিশা এসে পড়ে।
সিমরান নিশার দিকে তাকিয়ে থাকে। নিশা দৌড়ে এসে সিমরানকে জড়িয়ে ধরে।
সিমরান থতমত খেয়ে যায়। আরিয়ান সোফায় বসে আছে।
আরিয়ানের সামনের বেডে মিস মিলি বসে আছে।
আরিয়ান চুপ করে মাথা নিচু করে বসে আছে। মিস মিলি আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- কি হয়েছে বাবা? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
.....................( দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে)
- তোমার মৌনতা অন্যকিছু বলছে। সিমরানের আচরণে অদ্ভুত পরিবর্তন এসেছে।
আমার মেয়েটা আগের মতো নেই, কেমন জানি হয়ে গেছে।
কি হয়েছে সিমরানের? ( ভয়ের সুরে)
- হ্যাঁ আপনি ঠিক ধরেছেন মা। সিমরান আগের মতো নেই।
এখন অনেক কথা ও বুঝতে পারে না।
সিমরানের অনেক স্মৃতি মুছে গেছে স্মৃতিপট থেকে । ( মিস মিলির দিকে তাকিয়ে)
- এসব তুমি কি বলছো? ( অবাক হয়ে)
- এসবের জন্য জিহাদ দায়ী। ( গম্ভীর কণ্ঠে)
- জিহাদ! জিহাদ এসব করেছে? ( অবাক হয়ে)
- শুনুন তাহলে মা জিহাদ কি না করেছে,,,,,,,,, ( মিস মিলির দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ান জিহাদের সব কথা মিস মিলিকে বলে কিন্তু জিনিয়ার প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে।
আরিয়ান জিনিয়ার কোনো কথাই তোলেনি। জিহাদের সব কুকর্ম শুনে মিস মিলি খুব কষ্ট পান।
আরিয়ান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলে,,,
- বলুন মা দোষ টা কার? ( নিশ্বাস ফেলে)
- জিহাদ এতো খারাপ! ( কাঁদো কাঁদো সুরে)
- খারাপ না সে একটা ক্রিমিনাল।
আমাদের দুজনকে তো মেরেই ফেলেছিলো কিন্তু ওপরওয়ালার অশেষ দয়ার জন্য আমরা বেঁচে আছি। ( রেগে)
- সিমরানের কি হবে বাবা? ( কেঁদে কেঁদে )
- সিমরানকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি এজন্য যাতে ও একাকিত্ব অনুভব না করে। তাছাড়া আরেকটা সুখবর আপনাকে দেওয়া হয়নি মা। ( স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে)
- সুখবর! ( অবাক হয়ে)
- হ্যাঁ মা। সিমরান প্রেগন্যান্ট, এজন্যই ওর কোনো রকম ট্রিটমেন্ট করাতে পারছি না। ( মাথা নিচু করে)
- আমার মেয়ের ভাগ্যটা এতো খারাপ! ( কান্না করে)
- আল্লাহ ভরসা মা সিমরানের কিচ্ছু হবে না। ( মিস মিলির দিকে তাকিয়ে)
- তাই যেনো হয় বাবা। ( মাথা নেড়ে)
সিমরান নিশাকে চিনতে না পারলেও, আরিয়ানের কথানুযায়ী সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কথা বলছে।
আরিয়ান আর মিস মিলি রুম থেকে বের হয়ে আসে। আরিয়ানা তার শশুড়কে সালাম করে।
সিমরান আর আরিয়ানকে পেয়ে সবাই অনেক খুশি।
কিন্তু সব আনন্দ অস্থায়ী আর দুঃখ স্থায়ী সেটা আনন্দঘন মূহুর্তে আমরা তা ভুলে যাই।
আনন্দের পরেই বিষাদের আগমন। বিষাদের ছায়া জীবনে পড়লে জীবনকে অতি তুচ্ছ লাগে।
যা আরিয়ান সিমরানের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম নয়।
সিমরানের মা নাস্তা বানাতে রান্না ঘরে চলে যায়। মাহিন অয়নের পাশে বসে আছে।
অয়ন আর নিশা গল্প করছে। আরিয়ান আর সিমরানের বাবা কথাবার্তা বলছে।
সিমরান একা রুমে বসে আছে।
সিমরানের বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে। সিমরানের কেমন জানি অস্বস্তি ভাব লাগছে।
সিমরানের তার রুমের সিলিংফ্যানের পাওয়ার একেবারে ফুল করে দেয় ।
ফ্যান ফুল স্পীডে ঘুড়ছে। সিমরান বেডের ওপর বসে।
আরিয়ান মনে মনে ভাবে অনেকদূরের পথ
পাড়ি দিয়ে আসায় সিমরান খুব ক্লান্ত তাই হয়তো বিশ্রাম করছে।
সবাই ব্যাস্ত আড্ডা দিতে। হঠাৎ সিমরানের চোখে যায় সামনের ফ্লোরের দিকে।
সিমরান বড় বড় চোখে তাকিয়ে দেখে একটা ছোট্ট টিকটিকি ফ্লোরের মাঝখানে।
সিমরান ভয় পেয়ে উঠে বেডের মাঝখানে জড়োসড়ো হয়ে বসে।
ওপরে সিলিং ফ্যান ফুল স্পীডে চলছে।
ফ্যানের ক্যাবল লুজ ছিলো আগে থেকেই।
অতিরিক্ত স্পীডের জন্য ক্যাবলটি ক্রমশ নিচের দিকে নামে এদিকে ফ্যানের স্ট্যান্ড নড়ছে।
সিমরান ভয়ে চুপসে গেছে চিৎকার করার মতো শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে সে।
এবার ফ্যান তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে জোরে জোরে নড়তে থাকে।
নড়চড় করার শব্দ শুনে সিমরান ওপরের দিকে তাকায়।
আরিয়ানের মনে কেমন যেনো অশান্তি লাগছে।
এতো মানুষের মধ্যেও তার অস্বস্তি লাগছে কেনো এমন লাগছে কারণ তার অজানা।
কিন্তু সে এতটুকু উপলব্ধি করতে পারছে এটা কোনো নতুন ঝড়ের পূর্বাভাস।
আরিয়ান মহা চিন্তায় পড়ে যায়।
সিমরান ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখে সিলিং ফ্যান কন্ট্রোল ছাড়া ঘুড়ছে।
সিমরান বুঝতে পারছে না আদৌ কি হচ্ছে! হঠাৎ করে ফ্যানটি স্ট্যান্ড থেকে ছিটকে নিচে পড়ে।
সিমরান জোরেশোরে চিৎকার করে।
আরিয়ান, মি. আফজাল, মিস মিলি, অয়ন, নিশা আর মাহিন সবাই সিমরানের চিৎকার শোনে।
আরিয়ান এক সেকেন্ড ও দেরি না করে দৌড়ে রুমের দিকে যায়। আরিয়ানের সাথে বাকিরাও যায়।
আরিয়ান দরজা খুলেই দেখে পুরো বেডে রক্তের ছড়াছড়ি। আরিয়ান আঁতকে ওঠে।
আরিয়ান বেডের মাঝখানে তাকিয়ে দেখে সিমরান লুটিয়ে পড়ে আছে।
সিমরানের মাথার ওপরে সিলিংফ্যান পড়েছে আর সিলিংফ্যানের ব্লেডে সিমরানের শরীরে অনেক ক্ষত হয়েছে।
সিমরানের মাথায় খুব গুরুতর ভাবে আঘাত পেয়েছে।
সিমরানের মাথা চুঁইয়ে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে। আরিয়ান দৌড়ে সিমরানের কাছে যায়।
আরিয়ান সিলিংফ্যান টা উঠিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয়।
সবাই এসে সিমরানের এ অবস্থা দেখে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।
আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে দেখে পালস খুব ধীরে ধীরে চলছে।
আরিয়ান একটা ওড়না দিয়ে সিমরানের মাথা বেঁধে ফেলে।
সিমরানের বাবা এম্বুলেন্স সার্ভিসের নাম্বারে কল করে এমারজেন্সি এম্বুলেন্স পাঠাতে বলে।
সিমরানের মা কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
নিশা মিস মিলির মাথায় পানি দিয়ে দিচ্ছে আর কান্না করছে।
মাহিন ও অনেক কান্না করছে। এম্বুলেন্স চলে আসে।
আরিয়ান সিমরানকে কোলে নিয়ে এম্বুলেন্সের বেডে শুইয়ে দেয় তারপর
এম্বুলেন্সে রাখা অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাথে এডজাস্ট করা অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে দেয় সিমরানকে। সিমরানের রক্তে আরিয়ান পুরোপুরি ভিজে একাকার হয়ে গেছে।
সিমরানের সাথে আরিয়ান আর অয়ন যায়। অন্য গাড়িতে বাকিরা আসে।
সিমরানের সুন্দর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। পলকেই যেনো তার মুখের মাধুর্য হারিয়ে গেছে।
আরিয়ান পাথর হয়ে গেছে।
পাথর তো তার কষ্টের বহিঃপ্রকাশ করতে পারে না কিন্তু আরিয়ানের চোখ থেকে
অনবরত পানি পড়ছে। আরিয়ান স্থীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সিমরানের দিকে।
অয়ন সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। অয়নের চোখ থেকেও অশ্রু ঝড়ছে।
আরিয়ানের মনকে ভয় গ্রাস করে ফেলেছে।
সেই ভয় হলো সিমরানকে হারাবার।
আরিয়ান সিমরানের হাত শক্ত করে ধরে আর কান্না করতে করতে বলে,,,
- প্লিজ জান আমাকে ছেড়ে চলে যেও না। তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।
তুমি না থাকলে আমার জীবন শূন্য হয়ে যাবে। আমার বাঁচার অনুপ্রেরণা হারিয়ে যাবে,
আমি যে জীবন্ত লাশ হয়ে যাবো। ( কাঁদতে কাঁদতে)
- ভাই মনকে শক্ত করো, ভাবির কিচ্ছু হবে না।
- অয়ন আমি সিমরানকে ছাড়া বাঁচবো না। ( সিমরানের হাত ধরে কান্না করে)
- ভাই শান্ত হও, ভাবি ঠিক হয়ে যাবে। ( আরিয়ানের কাঁধে হাত রেখে)
সারাপথ আরিয়ান সিমরানের হাত ধরে রেখেছিলো। এম্বুলেন্স এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে এসে থামে। এম্বুলেন্স থামার সাথে সাথে দুইজন ওয়ার্ড বয় গেইট খুলে স্ট্রেচার হাতে নিয়ে সোজা চলে যায়
সাথে অয়ন আর আরিয়ানও। ডাক্তার সিমরানের কন্ডিশন দেখে ডিরেক্ট অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে
যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সিমরানকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
- আপনি কি হন রোগীর? ( আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
- আমি ওর হাসবেন্ড। ( কাঁদো কাঁদো সুরে)
- এতো মারাত্মক এক্সিডেন্ট কীভাবে করলেন তিনি? ( অবাক হয়ে)
- সিলিংফ্যান,,,, ( নিজেকে সামলে নিয়ে)
- ওহ মাই গড, ( মাথা নিচু করে)
- ডাক্তার আমার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট। ( ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে)
- রোগী প্রেগন্যান্ট তার ওপর এতো বড় এক্সিডেন্ট ! অনেকটা রক্তক্ষরণ হয়েছে। আপনি ফর্মালিটি পেপার গুলো দ্রুত সাইন করে দিন। ( মাথা নেড়ে)
- জি চলুন,,, ( চোখ মুছে)
আরিয়ান ডাক্তারের সাথে চলে যায়। অয়ন অপারেশন থিয়েটারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, নিশা, সিমরানের মা, বাবা আর ভাইও চলে এসেছে।
আরিয়ান দ্রুত সব পেপার সাইন করে দেয়। ডাক্তার পেপার গুলো নেয়।
আরিয়ান উঠে গিয়ে বিল পে করে আসে। ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে চলে যায়।
অপারেশন থিয়েটারের রেড লাইট জ্বলে ওঠে, অপারেশন শুরু হয়ে যায়।

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com