Breaking News

তুমি আমার এক অন্যরকম শান্তি । পর্ব - ১৩



মিথিলা মিহু দুজনে প্যাকেট দুটো নিলো। খুলে দেখলো প্যাকেটে লাল নীল রংয়ের কাঁচের চূড়ি৷ সাথে চকলেট। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো৷ মেহেরাব ঘর থেকে বললো

- যদি পছন্দ হয় তাহলে ওগুলো পড়ে ভাই কে কল দিয়ো৷
মিহু মিথিলা চলে গেলো যে যার রুমে। এক নিমিষে দুজনের রাগ হারিয়ে গেলো৷ মিহু ফোনটা নিয়ে সজীবকে কল করলো। আর মিথিলা রাশেদ কে। মিথিলার অভিযোগ গুলো সব বললো। মিহু ও তার অভিযোগ বললো। ওপাশ থেকে সরি শব্দ টা ভেসে আসলো৷ তারা আর কখনো এমন টা করবে না।
পরেরদিন
মেহেরাবের পথ একটা মেয়ে আটকে ধরলো মেহেরাব বললো
- কে আপনি ? পথ আটকালেন কেন?
- তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
মেহেরাব অবাক হয়ে
- আমার সাথে আবার কি কথা?
মেয়েটা মেহেরাবের হাত ধরে বসলো। মেহেরাব হাতটা ছিটকে মেরে সরিয়ে দিয়ে
- আজিব তো আপনি। আমার হাত ধরছেন কেন? সমস্যা কি?
- তুমি রাগছো কেন? আসলে আমি
- রাগার মতো কাজ করলে তো রাগবই। আমি কি?
- আসলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মেহেরাব কথাটা শুনে হেসে দিলো। হাসিটা জেনো থামছে না। মেয়েটা অবাক হয়ে
- হাসছেন কেন?
- আপনার মাথায় কি সমস্যা হয়েছে। নাকি মাথা খেয়ে ফেলছেন৷ ভালো ডাক্তার দেখান।
- এভাবে কথা বলছো কেন? সত্যি বলছি আমি তোমাকে ভালোবাসি৷
- আমার কোচিং আছে। দেরি হয়ে যাচ্ছে।
মেয়েটা মেহেরাবের হাত আবার ধরলো। মেহেরাব হাত সরিয়ে দিয়ে
- আবেগ দিয়ে জীবন চলে না। এসব আবেগ বাদ দেন৷

মেহেরাব চলে গেলো। মেয়েটা দাঁড়িয়ে মেহেরাবের যাওয়া দেখছে৷ মেহেরাব কোচিং এ চলে আসলো।
মেহেরাবের মা মিথিলার কাছে এসে
- বউ মা। পায়ের ব্যথাটা আবার বাড়ছে।
- কি বলছেন কখন থেকে হলো?
- অনেক্ষণ ধরে। ভাবছি কমে যাবে৷ কিন্তু কমে নি।
মিথিলা রেগে যেয়ে
- আপনি না সব সময় বেশি বোঝেন৷ অল্পতে ডাক দিলে কি হতো।
- আমি কি আর ওরকম বুঝতে পারি নাকি।
- বসেন উঠে।
মিথিলা মিহুকে যেয়ে বললো। তারপর মিথিলা মলম নিয়ে এসে মায়ের পায়ে লাগিয়ে মালিশ করে দেয়। মিহু কিছুক্ষণ পর এসে
- ভাবি ডাক্তার কি আনা লাগবে?
মিথিলা কিছু বলতে যাবে তখনি মা থামিয়ে দিয়ে
- না বউ মা লাগবে না। ঠিক হয়ে যাবে। টেনশন করো না।
মিহু মায়ের আরেক পা টিপে দিতে লাগলো
মেধা সেজেগুজে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে হবু জামাইয়ের জন্য। লং ড্রাইভে যাবে দুজনে। এক অপরকে চিনবে জানবে বুঝবে। কিছুক্ষণ পর মেধার হবু জামাই এসে বললো
- সরি সরি। লেট হয়ে গেছে অনেক।
মেধা একটু ভাব নিয়ে
- ইট’স ওকে।
- আপনি রাগ করছেন।
- না ঠিক আছে।

মেধা হবু জামাইয়ের গাড়িতে উঠে পড়লো। মেধা খুব খুশি এতো দিনের স্বপ্নটা পূরণ হলো অবশেষে।
তামান্না মেহেরাবের নোট ফেরত দিয়ে
- ধন্যবাদ। বড় উপকার হয়েছে।
মেহেরাব নোট টা নিয়ে নিলো। কিছু বললো না। তামান্না বললো
- মন খারাপ নাকি।
- না।
- তোমাকে কেমন জানি দেখাচ্ছে আজকে। কিছু কি হয়েছে?
- কই না তো।
ক্লাসে ভাইয়া চলে আসলো। সবাই চুপচাপ বসে পড়লো।
ক্লাস শেষে মেহেরাব বের হয়ে দেখলো তামান্নার মা সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মেহেরাবকে দেখে
- কেমন আছো বাবা তুমি৷
- ভালো। আপনি কেমন আছেন আন্টি৷
- এই তো ভালো।
তামান্না বের হয়ে মা কে দেখে এসে জরিয়ে ধরে
- এসেছো ভালো করেছো। না হলে যেতাম কি করে?
- হ্যা তোর জন্যই তো এতো দূর কষ্ট করে আসতে হলো।
- চলো।
তামান্নার মা মেহেরাবকে বললো
- একদিন এসো বাসায় তামান্নার সাথে।
- ঠিক আছে আসবানি আন্টি।
তামান্নার মা তামান্না চলে গেলো। মেহেরাব মাঝ রাস্তায় যেতে না যেতে সেই মেয়েটা এসে সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো। মেহেরাব পাশ কাটিয়ে চলে যেতে যাবে আবার পথ আটকালো। মেহেরাব বললো
- সমস্যা কি?
- তুমি।
- মানে কি?

- তুমি আমার বড় সমস্যা। খেতে গেলে তোমাকে মনে পড়ে। ঘুমাতে গেলে তুমি। যেখানেই যায় শুধুই তুমি৷
- আপনার আসলে মাথার তার সব ছিঁড়ে গেছে।
- শুধু মাত্র তোমার জন্য।
- একদিনে এতো কিছু। ।
- আমি তোমাকে অনেক আগে থেকে ফলো করি৷ দেখি। কিন্তু বেহায়া মন আর বারণ শুনলো না। তাই আমার তোমাকে লাগবে৷
মেহেরাব অবাক হয়ে
- আমি জানলাম না এতোদিনে।
- এখন তো জেনেছো।
মেয়েটা মেহেরাবের হাত আবার ধরলো। মেহেরাব হাত সরিয়ে দিয়ে
- আপনার কি বিন্দু মাত্র লজ্জা নেই। বার বার হাত ধরছেন কেন ?
- তোমার কাছে লজ্জা পাবো কেন? তুমি তো আমার।
- দেখুন আপু আমাকে মাফ করুন। আমি এসব প্রেম ভালোবাসার ভেতর যাবো না। আপনি অন্য কাউকে খুঁজুন।
- আমি অন্যকে না শুধুই তোমাকে ভালোবাসি।
- আবেগ ছাড়ুন আর বাস্তবে ফিরুন। আমার কাছে সম্ভব না৷
মেহেরাব মেয়েটাকে কথা বলে হাটা দিলো৷ মেয়েটা মেহেরাবের সামনে দাঁড়িয়ে
- কি নেই আমার ভেতর ? আমি দেখতে কি খুব খারাপ।
- দেখুন আপনি বুঝতে পারছেন না৷
- আমি কিছু বুঝতে চাই না৷ আমার তোমাকে লাগবে৷ তুমি যা বলবে সব শুনবো। যদি বলো রুমে যেতে তাও যাবো আমার তোমাকে লাগবে।

মেহেরাব মেয়েটার গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
- ভালোবাসা এতোটা সস্তা জিনিস বানিয়ে ফেললেন। আপনার ভেতরে তো ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। সময় থাকতে নিজেকে শুদ্রে নেন৷
মেহেরাব কথাটা বলে চলে গেলো। মেয়েটা গালে হাত দিয়ে মেহেরাবের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
মেহেরাব বাসায় আসতেই মিহু বললো
- কি ব্যাপার এতো রেগে আছো কেন?
মেহেরাব সবকিছু বললো। মিহু শুনে অবাক হয়ে গেলো। মিথিলা পাশ থেকে
- এতো বড় সাহস। কাল তুমি যেয়ো মেয়েটা রাস্তা আটকালে আমরা সব দেখে নিবো৷
- হুম তোমরা থাকতে আমার আর চিন্তা করতে হয় না।
- যাও ফ্রেশ হয়ে এসো নাস্তা দিবো৷
- এখন দিতে হবে না। আমার ফ্রেন্স আসতাছে৷ ওকে আনতে যাবো।
- কি বলো? আমাদের বলবা না আগে।
- আমাকে হুট করে ফোন দিলো আসতাছে।
- ঠিক আছে।

মেহেরাব ব্যাগ রেখে বেরিয়ে পড়লো। মিহু বললো
- ভাবি এতোদিন পর আসছে ওর জন্য তো কিছু রান্না করতে হবে।
- হ্যা। মা মনে হয় ঘুমিয়ে আছে। চলো আমরা রান্না শেষ করে নি।
মিহু মিথিলা রান্না ঘরে চলে গেলো।
তামান্না তামান্নার মা কে বললো
- কাল মেহেরাবকে নিয়ে আসি বাসায়৷
- কাল তোর বাবা বাসায় থাকবে৷ আনতে হবে না। অন্য টাইম নিয়ে আসিছ।
- বাবার সাথে মেহেরাবকে পরিচয় করিয়ে দিবো
- না। তোর বাবা রাগ করবে৷
তামান্না নিজের রুমে চলে গেলো।
মেহেরাব স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে৷ মেহেরাব মনে মনে বললো আমাকে বললো ৫ মিনিটে পৌঁছে যাবে। ৩০ মিনিট হয়ে গেলো ট্রেন আসার নাম নেই। আসুক আজ বোঝাবো ওকে........

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com