যদি দেখা না হতো । পর্ব - ০৪
ডাক্তারনিঃ আচ্ছা শুনেছি তুমি নাকি বই পড়তে খুব ভালোবাসো,,তাই তোমাকে আমি এখানে এনেছি,,
আমিও খুব ভালোবাসি বই পড়তে
আব্বু আম্মু ছাড়া কেউ জানেনা আমি বই পড়তে ভালোবাসি।
এভাবে আমার খুটিনাটি সব বিষয় আপু খেয়াল রাখেন,
,ইতিমধ্যে আমরা অনেক ক্লোজ হয়ে গেছি।কোথাও শপিং করতে গেলেও আমি আর আপু
একসাথে যায় আবার ক্লাস শুরু করি বেশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে জানতে পারি আমার যে ফুপ্পা বিদেশ ছিলো তাকে কেউ খুন করেছেন,,
খুন শব্দটা শুনতেই আমার শুভ্রের কথা মনে পরে গেলো,,
সব শুকানো ঘা আমার টকটকে হয়ে গেলো আর আপুর চেষ্টা সব পানি হতে লাগলো
আমাকে আব্বু আম্মু কিছুতেই আর দাদুবাড়িতে নিয়ে গেলো না সম্পূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে গেলো আপুর উপর।
আপু আমাকে আবার নানান ভঙ্গিতে ঠিক করতে লাগলো।
সকালে,,
ডাক্তারনিঃ তানিশা রেডি হয়ছিস তুই
তানিশাঃ হুম,,আচ্ছা কই যাচ্ছি আমরা?
ডাক্তারনিঃ আমার ভাইকে পিকআপ করতে।
আমি আর আপু চলে আসলাম এয়ারপোর্টে,,, এসে দেখি আপুর ভাই আগেই ওয়েট করছে।
ডাক্তারনিঃ সরি সরি সরি,,কাব্য লেট হয়ে গেছে আসলে লেট তো তাই
কাব্যঃ থাক আর এক্সকিউজ দিতে হবেনা(অভিমানী সুরে)
ডাক্তারনিঃ সরি বাবা, তোর সব পছন্দের রান্না আমি করে খাওয়াবো আর অভিমান করিসনা
কাব্যঃ ওকে এবার চলো
আমরা চলে আসলাম,,, এতোটুকু বুঝলাম তার নাম কাব্য আর সে আমেরিকায় ছিলেন।দেখতে অনেক সুন্দর,, যেমন লম্বা ঠিক সেইরকম ফর্সা।
কাব্যঃ বাই দা ওয়ে,,আপু এই মেয়েটা কে??
ডাক্তারনিঃ ও আমার আরেক বোন,,পরিচয় হো ওর নাম তানিশা,,,,,,তানিশা এ আমার একমাত্র সম্ভল আমার ভাই কাব্য
তানিশাঃ নাইস টু মিট ইউ ভাইয়া
কাব্যঃ হুয়াট ,, আমি অনলি আপুর ভাইয়া অন্য কারোর নাহহ ওকে।
তানিশাঃ কি আজব লোকরে বাবা,,ভাইয়াও বলা পাপ নাকি(মনে মনে)
বাড়িতে পৌছে,,,
সবাই সবার মতো রেষ্টে চলে গেলেন,,আর আমি বেলকনিতে বসে আজব ভাবনার মধ্যে চলে আসলাম।
অন্যদিকে,,,
ডাক্তারনিঃ আরে কাব্য রাগ করিসনা,,ভাইয়া ই তো বলছে ও তো জানেনা আমি কেন তোকে এখানে এনেছি
কাব্যঃ হুম তাও কেন ভাইয়া বলল,,আমি ওর ভাইয়া লাগি।আচ্ছা ও এতো কিউট কেন গো,,,
ডাক্তারনিঃ আমি এতোদিন পর তোর জন্য উপযুক্ত একটা মেয়ে পেয়েছি,,হয়তো ওর একটা পাস্ট আছে কিন্তু ওর লাইফে একজনকে খুব দরকার।
কাব্যঃ কিন্তু ও কি মানবে??
ডাক্তারনিঃ মানবে না মানাতে হবে,,তোর সেই ভালোবাসা ওকে দিতে হবে যেটা একজন মেয়ে স্বপ্ন দেখে।
কাব্যঃ আমি পারবতো আপু
ডাক্তারনিঃ হুম অবশ্যয় পারবি,,আমি তানিশার মা-বাবার সাথেও কথা বলে রেখেছি,,তারাও চায় তানিশা ঠিক হয়ে যাক।
রাতে,,,
ছাদের দোলনায় বসে আকাশের তারা দেখছে তানিশা।
গায়ে চাদর বেনুনী করা চুল সামনে রেখে আছে চোখের চাহনি আকাশের দিকে
তানিশাঃ আচ্ছা মানুষ মারা গেলে নাকি আকাশের তারা হয়ে যায়,,
তাহলে তুমিও কি ওই ওখানে আছো শুভ্র,,,,
এক মাস তিন সপ্তাহে বিবাহের ইতি এ কেমন বিচার করলো আমার সাথে (মনে মনে)
কাব্যঃ আপনি এতো রাতে এখানে ঠান্ডা লাগছেনা
কারোর কথা শুনে তানিশা কিছুটা ভয় পায়,,পিছে তাকিয়ে দেখে ডাক্তারনির ভাইয়া।
তানিশাঃ কিছুই হবেনা আমার,,আমার কথা বাদ দিন আপনি এখানে কেনো
কাব্যঃ এমনিই (মুচকি হেসে) আচ্ছা আপনার সম্পর্কে অনেক শুনেছি
তানিশাঃ কি শুনেছেন
কাব্যঃ আপনার পাস্ট সম্পর্কে,, তো নিউ লাইফ শুরু করতে ইচ্ছে করে না
তানিশাঃ নিউ লাইফেই তো আছি,,
কাব্যঃ মানে তোমার লাইফে নতুন কেউ আসার অধিকার নাই
তানিশাঃ যে আসবে সে শত বাধার পরও আসবে,,ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও,, তাকে আমি আটকাতে পারবোনা
এই বলে তানিশা নিচে চলে আসলো আর কাব্য মন খারাপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
তানিশার সম্পর্কে সব জানে তবুও যেন তানিশাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
যেতই হোক ছোটবেলার ক্রাস বলে কথা,,
বিচ্ছেদ হলো শুধু কাব্যের আম্মু মারা যাওয়ার জন্য,জোর করে বিদেশ পাঠিয়ে দিলো।
বেশ কিছুদিন পর,,
হঠাৎ তানিশা খুব অসুস্থ হয়ে পরলো,,অতিরিক্ত ঘুমের মেডিসিন আর অনিয়মের জন্য তানিশা এতো অসুস্থ হলো।সেলাইন চলছে এখন,,, এখন থেকে তানিশার সব দায়িত্ব নিলো কাব্য।
কাব্যঃ তানিশা,,এই তানিশা
তানিশা চোখ খুলে দেখে হাতে খাবার নিয়ে দাড়িয়ে আছে কাব্য,,
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও উঠে বসলো।
তানিশাঃ কিছু বলবেন
কাব্যঃ কিছু বলবেন মানে,,এগুলো এখন তুমি খাবে
তানিশাঃ এতো খাবার কেন
কাব্যঃ এতোই খেতে হবে,,শরীরের হাড্ডি তো সব বের হয়ে গেছে।নিজেকে আয়নার দেখেছো,,
এবার হা করো
তানিশাঃ আমি খাবো,,,,
কিছু বলার আগেই এক লোকমা তানিশার মুখের দিয়ে দিছে।
তানিশা কাব্যের দিকে তাকিয়েই মুখ নাড়াতে থাকলো।
খাওয়া শেষে মেডিসিন খেয়ে তানিশা শুয়ে পরলো,,,আর কাব্য রুম থেকে চলে আসলো।
কাব্যঃ তোমাকে আমি স্বাভাবিক ও সুস্থ করবোই,,যে করেই হোক না কেন,,,অনেক ভালোবাসি তানিশা।
এই কয়েকটা দিনে তানিশা কাব্যের কথা শুনতে বাধ্য হয়েছে,,আর জেদ খাটালেই ধমক দেয়,,সেটার ভয়ে তানিশা সব কথা শুনে। সুস্থ ও হয়ে উঠেছে....
তানিশার আব্বু আম্মু নিতে এসেছে কিন্তু ডাক্তারনি যেতে দিলো না।আজ ঘুরতে যাবে,,তানিশা না না করলেও কাব্য জোর করেই নিয়ে আসলো।
একটু গ্রাম সাইডে আসলো কারণ তানিশা গ্রামের পরিবেশ পছন্দ করে।
চারিদেকের সুন্দর্য আজ বেশিই সুন্দর লাগছে কাব্যের কাছে শুধু মাএ তানিশার জন্য।
তানিশাও অনেকদিন পর হাসি মুখটাকে দেখা যাচ্ছে
ডাক্তারনিঃ কি বলো কাব্য তানিশা নৌকায় ভ্রমণ করা যাক
তানিশাঃ হুম অবশ্যয়,,আপনার ভাই না গেলেও আমি যাব
কাব্যঃ কেনো মনে হলো আমি যাব না
তানিশাঃ আপনি কি আমার সাথে ঝগড়া করতে চান
কাব্য তানিশার নিউ রূপ দেখে কিছুটা অবাক।তানিশার এমন কথা শুনে ডাক্তারনি হাসছে
কাব্যঃ তুমি আবার ঝগড়াও করতে পারো
তানিশাঃ হুম,,আসেন শুরু করি
ডাক্তারনিঃ এই তোরা ঝগড়া করা বন্ধ কর,,চল তাড়াতাড়ি
তানিশাঃ ওকে।
তারপর আমরা নদীর কাছে গিয়ে নৌকায় উঠলাম,,,
তিনজনে মিলে সুন্দর্যের এক চরম পর্যায়ে হারিয়ে গেছি।কাব্য শুধু তানিশাকে দেখছে,,
আর তানিশা নৌকার কিনারায় গিয়ে টাইটানিক মুভির মতো দুহাত দুপাশে দিয়ে চোখ বন্ধ আছে
কিন্তু কোন কিছুর কমতি আছে তা হলো নায়ক,,
এটা মনে করতেই মুচকি মুচকি হাসতে থাকে
ডাক্তারনিঃ কি হলো হাসিস কেন(ফিস ফিস করে) তানিশাকে খুব দেখা হচ্ছে তাইনা
কাব্য এবার লজ্জা পেয়ে গেলো,,,আর তার বোন তাকে নানা কথায় লজ্জা দিচ্ছে।।
অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরির পর,,রাতে বাড়িতে ফিরছে।
কাব্য ড্রাইভ করছে আর পেছনে তানিশা আর ডাক্তরনি বসে আছে
কাব্যঃ তো আজকের দিন কেমন কাটলো মিস, তানিশা
তানিশাঃ ভালো না না খুবই ভালো(মুচকি হেসে)
বাড়িতে পৌছে,,
তিনজনই ক্লান্ত,, ডাক্তারনি তো ঘুমিয়ে গেলো,,
কিন্তু কাব্য জোর করে তানিশাকে খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে ঘুমাতে বলল।
তানিশা যেহেতু ক্লান্ত আর অসুস্থ ছিলো তাই আজ খুব তারাতারি ঘুমিয়ে পরলো।
কাব্যও নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com