Breaking News

বোকা ছেলে। পর্ব - ০৩



রিক্ত সিয়াম রেজা যখন কোচিং এর গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকে তখন আঙ্কেল বললো

- এই দাঁড়া । কই যাচ্ছিস।
সবাই দাড়িয়ে পড়লো। রেজা বললো
- ক্লাসে।
- টাকা এনেছিস। টাকা ছাড়া ক্লাসে যাওয়া যাবে না।
সিয়াম বললো
- হ্যা আঙ্কেল এনেছি।
রেজা ও বললো
- আমি ও এনেছি।
রিক্ত অবাক হয়ে যায়। দুজনে বললো কাল দিলে হবে। ওরা আনেনি তাহলে এখন বলছে আনছে।
আঙ্কেল রিক্তর দিকে তাকিয়ে
- তুই আনছিস।
রিক্ত আমতা আমতা করতে লাগলো। রেজা বললো
- আঙ্কেল ও আনে নি।
আঙ্কেল বললো
- রিক্ত বাসায় চলে যাও। টাকা ছাড়া ফাইনাল কোচিং এ বসতে দেওয়া যাবে না।
রিক্ত মাথা নিচু করে
- আঙ্কেল কালকে এনে দিবানি।
- কোন কালকে না। টাকা লাগবে আজ। আজ না দিতে পারলে তোকে ক্লাস করতে হবে না।
- আঙ্কেল আজকে ক্লাসে যেতে দিন। কাল এসেই দিবো৷
- না।
আঙ্কেল রিক্তকে ডাক্কা মেরে
- বের হয়ে যা। এমনিতে পড়াশোনায় মাথায় গোবর ভরা তোর। পারিস না কিছু। তোর মতো স্টুডেন্ট আমার কোচিং লাগবে না।
রিক্ত অপমানে মুখটা কালো হয়ে গেলো। চোখ বেয়ে পানি পড়বে এখনি। রিক্ত চোখের পানি আটকিয়ে বের হয়ে গেলো। রেজা সিয়াম বললো
- আঙ্কেল একদম ঠিক কাজ করেছেন।
- আমার এখানে টাকা ছাড়া কোনো কথা নেই।
- দুইটা থাপ্পড় মারলে ভালো হতো৷
আঙ্কেল ধমক দিয়ে
- ক্লাসে যাও। বেশি বক বক করো।
রেজা সিয়াম ক্লাসে চলে গেলো।
রিক্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটছে আর চোখের পানি মুছছে। কিছুতেই জেনো চোখের পানি থামছে না। আঙ্কেল এভাবে তাড়িয়ে দিলো। একটা দিনই তো টাইম চেয়েছিলাম। রেজা সিয়াম ওরা কাজ টা ভালো করলো না। রিক্তর সাথে একটা মেয়ের ডাক্কা লেগে যায়। রিক্ত ভাবনার জগতে থাকার কারণে তাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেলো৷ মেয়েটা রিক্ত কে সরি বলতে বলতে রিক্তর কাছে যায়। রিক্ত একা উঠে হাঁটা শুরু করে দেয়। মেয়েটা অবাক হয়ে যায়।
সিয়াম রেজা ক্লাসে এসে রিবা, প্রান্ত, ইরা ও মিরাকে সবকিছু বললো। সবাই শুনে হাসাহাসি করলো। ইরা বললো
- চল আরেকটা কাজ করি।
সবাই অবাক হয়ে
- কি কাজ?
ইরা সবার মাথা এক জায়গায় করে ফিসফিসিয়ে কিছু বললো৷ সবাই হেসে উঠলো৷ ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলো।
রিক্ত বাসায় ঢুকতে মর্জিনা বেগম রিক্ত কে দেখে
- কি হয়েছে বাবা?
রিক্ত সবকিছু বললো। মর্জিনা বেগম সবটা শুনে
- আঙ্কেল তোমাকে ভালোর জন্য বলছে। এতে কষ্ট পেয়ো না। তাদের বকা মানে দোয়া দেওয়া। আর তুই তোর বন্ধু দের থেকে দূরে থাকবি।
- ঠিক আছে।
মর্জিনা বেগম টাকা এনে দিলো রিক্তর হাতে। রিক্ত টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
নিলয় গেইট দিয়ে ঢুকবে তখন নিলয় ওদের সবাইকে দেখে বললো
- রেজা তোরা ক্লাসে না যেয়ে এখানে কেন?
ইরা বললো
- ভাইয়া আঙ্কেল রিক্তকে বের করে দিছে। আজকে টাকা দেয়নি বলে। এটা মোটেও ঠিক করেনি।
নিলয় সবটা শুনে
- আঙ্কেল এটা ঠিক করে নি। তোরা ভেতরে যা আমি আঙ্কেলর সাথে কথা বলে নিচ্ছি।
- রিক্ত আসুক যাচ্ছি।
নিলয় ভেতরে চলে গেলো। রিক্ত চলে আসলো। সবাই রিক্তকে দেখে হাসি দিলো৷ রিবা যেয়ে
- দোস্ত তোর সাথে আঙ্কেল কাজটা ঠিক করে নি। তাই আমরা সবাই বের হয়ে গেছে। তোকে নিয়ে ঢুকবো।
রিক্ত খুশি হলো। ইরা বললো
- টাকা এনেছিস। কত দিবি জানিস তো
- হ্যা। হুম ৪০০০ টাকা দিবো।
মিরা বললো
- তুই আসলে একটা বোকা।
রিক্ত ভ্রু কুচকে মিরার দিকে তাকালো৷ ইরা বললো
- ১০০০ টাকা করে আমরা সবাই দিছি। তুই ও ১০০০ টাকা দিবি
- কিন্তু আঙ্কেল যদি কিছু বলে।
- কিছু বলবে না। আমরা আছি তো
রিক্ত টাকা নিয়ে আঙ্কেলের কাছে। বাকীটা শুরুতে পড়ে আসছেন। )
রিক্ত আঙ্কেল কে থামিয়ে
- সিয়াম রেজা ইরা মিরা রিবা এরা আমাকে বলছে। ওরা সবাই ১০০০ টাকা দিছে তাই আমি ও দিলাম৷
আঙ্কেল ধমক দিয়ে
- নাটক করছিস আমার সাথে। তোর ফাইনাল কোচিং করতে হবে না। তুই চলে যা।
- সরি আঙ্কেল।
রিক্ত টাকাগুলো বের করে দিলো। আঙ্কেল রাগ দেখিয়ে রিক্তর গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
- এই বয়সে টাকা মেরে খাওয়ার ধান্দা তো ভালই৷ বাসা থেকে টাকা ঠিকি এনেছিস আমাকে দিস এই টাকা। পরিবারের আড়ালে এভাবে টাকা মেরে দিস। তোর বাসায় আমি কথা বলবো।
রিক্ত গালে হাত দিয়ে
- আঙ্কেল এমনটা করবেন না। আমার ভূল হয়ে গেছে আর কখনো এমনটা করবো না। এবারের মতো
আঙ্কেল গম্ভীর কণ্ঠে
- যা ক্লাসে।
রিক্ত আঙ্কেলের রুম থেকে বের হতেই প্রান্ত বললো
- কেমন লাগলো।
রিক্ত মাথা নিচু করে চলে যায়। সবাই হাসাহাসি করে। ক্লাসে নিলয় ক্লাস নিচ্ছিলো রিক্ত যেয়ে
- ভাইয়া আসবো।
- হ্যা এসো। ক্লাস শেষে আমার সাথে দেখা কইরো তোমার সাথে কথা আছে।
- ঠিক আছে।
রিক্ত যেয়ে ক্লাসে বসলো। সবাই ক্লাসে আসলো। নিলয় একটা মেয়েকে দাঁড়াতে বললো তার নাম রিছা। রিছা উঠে দাড়ালো। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। রিক্ত রিছাকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। সেইদিনের সেই মেয়েটা। ওকে সাহায্য করছিলো৷
ক্লাস শেষে কোচিং ছুটি হলো। রিক্ত নিলয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে । নিলয় রিক্তকে বললো
- শুনলাম তুমি কোচিং এর টাকা দিতে পারোনি। তুমি ২০০০ টাকা এনে দিয়ো বাকী টাকাটা আমি দিয়ে দিবো।
রিক্ত নিলয়ের কথা শুনে মনটা ভরে গেলো। রিক্ত হাসিমুখে বললো
- ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি পুরো টাকাটা দিয়ে দিছি। আপনি বলছেন এতেই আমার মন টা ভরে গেছে।
নিলয় অবাক হয়ে
- তাহলে তোমার বন্ধু রা।
- ওরা শুধু জানে কাকে কিভাবে ছোট বানানো যায়। কিভাবে মজা নেওয়া যায়। যখন এই জিনিস টা উপলব্ধি করতে পারবে তখন ওদের চেয়ে ভালো আর কেউ হবে না।
- বাহ্ তুমি তো সুন্দর কথা বলো৷
রিক্ত চলে গেলো। গেইট দিয়ে বের হতে রিছার সাথে দেখা হয়ে গেলো৷ রিছা বললো
- তুমি সেদিনের সেই ছেলেটা না। তোমার নাম কি?
- হুম। আমার নাম রিক্ত ।
- আজকে তোমার কি হয়েছিলো ওভাবে যাচ্ছিলে কেন?
- ডাক্কাটা আপনি মেরেছিলেন।
- হ্যা।
- আঙ্কেলের কথায় অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম তো তাই।
- ওহ। আমি রিছা। তোমাদের সাথে পড়ি৷ আমাকে নোট দেওয়া যাবে। ইরা বললো তোমার কাছে নোট আছে।
রিক্ত মাথা চুলকাতে চুলকাতে
- আমার কাছে কিছুর নোট নেই। ওরা মিথ্যা বলছে।
রিছা রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে
- মিরা ঠিকি বলছিলো। তুমি একটা সেলফিস৷ কাউকে কিছু দিতে চাও না। নিজের স্বার্থ টাই দেখো। আমার দাঁড়ানো ভূল হয়েছে৷
রিছা চলে গেলো। রিক্ত অবাক হয়ে গেলো। না জেনে এতো কিছু বললো।
পরেরদিন
রিক্ত কোচিং এ আসবে কিন্তু মর্জিনা বেগম আসতে দিবে না। কোচিং এর পাশে লাশ পেয়েছে । রিক্ত শুনে পুরো থ হয়ে গেলো................
(Waiting for next part........)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com