Breaking News

বোকা ছেলে। পর্ব -০৬



মর্জিনা বেগম বেহুশ হয়ে পড়াতে সবাই অবাক হয়ে গেলো৷ মহিলা পুলিশ দুজনে এসে মর্জিনা বেগমকে যেয়ে ধরে। বড় অফিসারের নির্দেশে রিক্তকে আর মর্জিনা বেগমকে গাড়ি তে উঠিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। বড় অফিসার থানার অফিসার কে শাসিয়ে গেলো। বড় অফিসার থানা থেকে বের হতেই থানার অফিসারের ফোনে কল আসলো। ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে

- তোমার জন্য তো আমরা ফেসে যেতাম। এভাবে মারে কেউ।
- সরি স্যার। বুঝতে পারিনি এতোটা চাপ পড়বে। আমি তো মেরেছিলাম যাতে আদালতে যেয়ে জবান বন্দী না দিতে পারে। কিন্তু বড় অফিসার এসে সব গোলমাল করে দিলো৷
- চোখ কান একটু খোলা রেখো।
- স্যার ছেলে তিন জনকে
- ওদের নিয়ে আবার কি সমস্যা?
- বড় স্যারের চোখে পড়েছে। ওদের উপর নজর রাখবে হয় তো।
- তাহলে ওদের তিন জনকে মেরে দি।
- না না স্যার। তাহলে তো আরো জটিল হয়ে যাবে ব্যাপারটা। এমন বোকামি করা যাবে না।
- ঠিক বলেছো। আমি দেখছি ব্যাপার টা।
ফোনটা কেটে গেলো।
রিক্ত আর মর্জিনা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসলো৷ কিছুক্ষণ পর মর্জিনা বেগমের জ্ঞান ফিরতেই
- আমার রিক্ত কোথায়? রিক্ত।
একজন নার্স মর্জিনা বেগমের সামনে দাঁড়িয়ে
- আপনি শান্ত হোন রিক্ত কে নিয়ে আসছে?
- ও সুস্থ আছে তো।
- হ্যা। সুস্থ আছে। আর কোনো সমস্যা নেই।
মর্জিনা বেগম উঠতে যাবে তখন রিক্তকে বেডে আনা হলো৷ মর্জিনা বেগমের পাশে বসালো। মর্জিনা বেগম রিক্তর গাল ধরে কেঁদে দিয়ে
- তোকে আর এই অভিশাপ শহরে থাকতে হবে না। তোকে নিয়ে আমি চলে যাবো।
- মা কি বলছো? আমার সামনে পরীক্ষা। দেখো না আমি সুস্থ আছি। কিছু হয়নি।
- বাবা রে তুই আমাকে বোঝায় না। আর কত কাল বোকা থাকবি তুই। তোকে পুলিশ কেন ধরবে। দোষ তো করিস নি।
রিক্ত মাথা নিচু করে
- মা আমি বুঝতে পারিনি। ওরা এমন টা করবে।
- বলদই থাক। তোকে চালাক হতে হবে না। আমি তোকে নিয়ে দূরে কোথা ও চলে যাবো৷
- মা শান্ত হও। আমি এখন গেলে আমার পরীক্ষা দেওয়া হবে না৷
- তোকে পরীক্ষা দিতে হবে না। তুই আমার সামনে সবসময় থাকবি। তোর আর কিছু হতে দিবো না।
- আচ্ছা মা আমি তোমার চোখের সামনেই থাকবো।
প্রান্ত রেজা আর সিয়াম কে দূরে নির্জন একটা জায়গায় নিয়ে
- তোরা তিন জনের কেউ আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করবি না। যখন বলবো তখনি করবি এর আগে না। আর যদি পুলিশের কাছে কিছু স্বীকার করিস তাহলে তোদের তিনজনের লাশ ছিটিয়ে ফেলে রাখবো কেউ তোদের খুঁজে পাবে না৷
প্রান্ত ঢোক গিলে
- ভাই আমরা তো আপনাদের সাথে এতোদিন কাজ করে আসছি কখনো কোনো ক্লেইম পাইছেন।
- না কিন্তু সমস্যা তোদের বোকা বন্ধু। ও তো সব ফাস করলে
সিয়াম থামিয়ে এসে
- আমরা ওকে ম্যানেজ করে নিবো। চিন্তা করবেন না। আপনাদের কাজ কর্ম কেউ জানতে পারবে না।
- ঠিক আছে মাথায় থাকে জেনো। তোদের উপর পুলিশ নজর রাখবে। যদি কোনো চালাকি করেছিস তাহলে তোদের সোজা উপরে পাঠিয়ে দিবে
- ঠিক আছে বস।
লোকটা চলে গেলো। প্রান্ত রেজাকে বললো
- আমরা রিক্তর সাথে খুব অন্যায় করে ফেললাম।
- এতোটা হবে জানতাম না তো। পুলিশ তো আমাদের সাথেই ছিলো৷ একটা মানুষকে লাগবে যাকে ফেস করতে সুবিধা হবে৷
- তাই বলে এভাবে মারলো৷
- রিক্তর শরীর দেখে আমি ভয় পেয়ে গেছি। ওর যদি কিছু হয়ে যেতো।
- রিক্তর কাছে আমাদের ক্ষমা চাইতে হবে।
- হ্যা। ও কই আছে জানতে হবে।
তিনজনে চলে গেলো।
বড় অফিসার হাসপাতালে রিক্তর বেডে ঢুকে
- কি অবস্থা এখন?
- জ্বী ভালো।
- আচ্ছা তুমি যা বলেছো সব কি সত্য।
- হ্যা স্যার । আমি মিথ্যা বলি না।
- ঠিক আছে এর পর থেকে কেউ কিছু হাতে দিলে আর কখনো নিবে না। সে তোমার যেই হোক। নিলে ও দেখে শুনে নিবা। এবারের মতো তোমাকে মাফ করে দেওয়া হলো।
মর্জিনা বেগম হাত জোর করে
- আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না।
- না না ঠিক আছে। ছেলের দিকে খেয়াল রাখুন। আপনার ছেলে অনেক বোকা।
বড় অফিসার ওদের কে বললো রিক্তদের বাসায় পৌঁছে দিতে। বড় অফিসারের কথা মতো রিক্তকে মর্জিনা বেগমকে বাড়ি পৌঁছে দিলো।
১৫ দিন পর
রিক্ত কোচিং এ আসলো। আজ কোচিং এ পরীক্ষা। আঙ্কেল রিক্তকে দেখে
- এসেছো ভালো কথা। কোনো মেয়েকে জেনো ডিস্টার্ব না করিস। ডিস্টার্ব করলে তোমার কপালে শনি আছে। আর পরীক্ষায় জেনো ভালো করা হয়। যদি খারাপ করা হয়ে থাকে তাহলে সমস্যা আছে।
আঙ্কেল কথা টা বলে চলে গেলো। রিক্ত ক্লাসের দিকে গেলো। রিক্ত যেয়ে বেঞ্জে বসলো। রিছা রিক্ত কে দেখে অবাক হয়ে গেলো৷ এতদিন পর আসলো চেহারার অবস্থা নাজেহাল। ক্লাসে ম্যাডাম ঢুকলো খাতা দিলো সবাই খাতা পূরণ করলো। ঠিক টাইমে প্রশ্ন দিলো। সবাই লিখলে ও রিক্ত লিখছে না। গালের ভেতর কলম দিয়ে প্রশ্নের দিকে চেয়ে আছে। রিছা রিক্তকে বললো
- কি হলো লিখছো না কেন?
- কিছুই বাঁধে নি।
- এসো আমার টা দেখে লিখো।
- না।
- আরে কিছু না লিখলে তো তোমাকে বকবে।
- না না ম্যাডাম বকবে খাতা নিয়ে নিবে। আপনি লিখেন
ম্যাডাম ডাক নিলো
- রিছা কি হচ্ছে কি এসব? খাতা নেওয়া লাগবে।
- না না ম্যাডাম। আমি লিখছি।
- চুপ চাপ লিখো।
রিছা লিখতে থাকলো৷ ১ ঘন্টা পর রিক্ত উঠে দাঁড়িয়ে
- ম্যাডাম বাহিরে যাবো।
ম্যাডাম কর্কর ভাষায়
- বাহিরে কি? নকল করতে যাবি। একে তো খাতায় কিছু লিখিছ নি।
- ম্যাডাম প্লিজ।
- আচ্ছা যা।
রিক্ত উঠে বাহিরে চলে গেলো। ম্যাডাম রিক্তর খাতা ধরে দেখলো কলমের কালি ও পড়ে নি। তখনি ম্যাডাম খাতা নিয়ে বলতে লাগলো
- কত সুন্দর স্টুডেন্ট এখন ও কিছু লেখেনি৷ এসব কই থেকে যে আসে। এদের জন্য কোচিং এর বদনাম হয়৷ পরীক্ষায় করবে ফেল দোষ হবে আমাদের আমরা কিছু করাই নি। আঙ্কেলের কাছে নালিশ দিবো। ওকে বের করে দেওয়ায় ভালো।
সিয়াম বললো
- হ্যা ম্যাডাম ঠিকি বলছেন। ও পারে না কিছু।
- তোমার লেখা তুমি লেখো। নিজে তো পারো না আবার অন্য কে কথা বলো।
সিয়াম চুপ চাপ লেখা শুরু করলো।
রিক্ত নিজের কাজ শেষে আসার সময় দেখলো জামরুল গাছের গোড়ায় নিলয় দাঁড়ানো। রিক্ত পেছন থেকে নিলয়কে ডাক দিলো। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ দেয় নি। রিক্ত নিলয়ের হাত ধরে
- ভাইয়া।
নিলয় চমকে উঠে থ ম খেয়ে
- ত ত তুমি। পরীক্ষা দিচ্ছো না।
- হ্যা ভাইয়া দিচ্ছি। নিজের কাজ করে আসার সময় দেখলাম আপনি দাঁড়ানো৷ অনেক দিন দেখি না তো আপনাকে তাই ভাবলাম একটু কথা বলে যায়।
- আচ্ছা যাও পরীক্ষা দাও। পরীক্ষা শেষে দেখা করো৷
- ভাইয়া একটা কথা বলবো
- হ্যা বলো
- আপনাকে বেশি চিন্তিত লাগছে কি হয়েছে?
- কই কিছু না তো। তোমার টাইম যাচ্ছে তুমি যাও। - ভাইয়া আপনাকে এমন চিন্তিত আগে তো দেখি নি। কি হয়েছে বলেন না?
- তোমার বাংলা ভাইয়ার কথা মনে পড়ছে। আমি না কিছুতেই বলতে পারছি না এই কথা কাউকে
রিক্ত অবাক হয়ে
- কি কথা ভাইয়া?
- তোমার বাংলা ভাইয়া মরার পিছনে আমার কারণ রয়েছে। আমি দায়ী বাংলা ভাইয়ার মৃত্যুতে।
রিক্ত পুরো থ হয়ে যায় নিলয়ের কথা শুনে.......
( waiting for next part.......)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com