এক মুঠো রোদ । পর্ব - ০৪
এভাবে নিজের জন্মদিনে কেউ উইস করছে এটা ভেবেই মিষ্টি কেঁদে দেয়।
মিষ্টিকে কাঁদতে দেখে সানু বেগম এগিয়ে এসে মিষ্টির পাশে বসে।
--টিভিতে দেখেছিলাম এভাবে বলতে, আজ প্রথম দেখলাম চোখের সামনে।
আমার জন্মদিনে কেউ আমাকে এভাবে শুভেচ্ছা জানাবে এটা আমি কখনো ভাবি নি।
--পাগলি মেয়ে, তাই বলে কি কাঁদতে হয়?
--খুব খুশি লাগছে।
--চোখ মুছো।
--কিভাবে জানেন আজ যে আমার জন্মদিন?
--তোমার বান্ধবী রিয়াই তো জানালো।
--ও কিভাবে জানে?
--সেটা নাহয় ওকেই জিজ্ঞেস করিও, এখন এসো কেক কাটবে।
--কেক?
--হুম।
--কোথায়?
--আছে, ওঠো। সুন্দর করে সেজে নাও।
--কেনো?
--ছবি তুলতে হবে না?
--ছবি কেনো?
--কেক কাটার সময় ছবি তুলবে না?
--আমার জন্য কেকও এনেছেন?
--তোমার বান্ধবী নিয়ে এলো।
--তাই? কখন নিলো? আমি তো ওর সাথেই ছিলাম সারাক্ষণ।
--রিয়া.... এদিকে আয়...।
মায়ের ডাকে রিয়া সামনে এগিয়ে আসে।
--মিষ্টিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দে।
--আচ্ছা আম্মু।
মিষ্টি রিয়ার ব্যবহার করা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে।
আর রিয়া পেছন থেকে এসে শপিং করা সব কাপড় মিষ্টির সামনে এনে রাখে।
--নাও, পছন্দ করে নাও কোনটা পড়বে।
--আমি?
--হুম।
--না না, এত নতুন কাপড় আমাকে ভালো লাগবে না। এর চেয়ে ভালো তোমার একটা দাও। তাতেই চলবে।
--গাধী.... এগুলো সব তোমার।
--আমার?
--হুম। ভাইয়া তোমার জন্য কিনে দিলো।
--কি বলছো? এতো নতুন কাপড় আমার?
--হুম। পছন্দ করে নাও একটা।
--আমি তো বুঝি না এসব। তুমিই পছন্দ করে নাও।
রিয়া নিজের পছন্দের একটা কাপড় মিষ্টিকে পড়িয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়।
এদিকে মামুন ড্রয়িংরুমটা সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়। কেকের মাঝখানটায় ছোট্ট করে লেখা আছে,
"শুভ জন্মদিন মিষ্টি"
একটু পর রিয়া মিষ্টিকে সাথে নিয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে পা বাড়ায়।
সানু বেগম আর মামুম বেশ কিছুক্ষণ ধরে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকে।
এভাবে সবাইকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিষ্টি খুব লজ্জা পায়।
সানু বেগম এগিয়ে এসে কি যেনো বিড়বিড় করে পড়ে মিষ্টিকে ফু দিয়ে দেয়।
--কি করলে আম্মু?(রিয়া)
--যেনো কারো নজর না লাগে, তাই দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দিলাম।
আজ মিষ্টিকে নতুন করে দেখলাম। খুব সুন্দর লাগছে।
--আমাকে তো কখনো দিলে না!
--দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তোর ওপর কেউ নজর দিবে না।
মায়ের পেছন থেকে রিয়াকে উদ্দেশ্য করে মামুন এই লাইনটা বলে ওঠে।
--কি বললি?
--সত্য কথা।
--আম্মু ওকে কিছু বলবা?
--থামবি তোরা?
মায়ের ধমকে দুজন চুপ হয়ে যায়।
এই প্রথম মিষ্টি জন্মদিনের কেক কাটছে।
মিষ্টি মাঝে মাঝে আড়চোখে মামুনের দিকে তাকাচ্ছে...। কারন একটা জিনিস কেনো যেনো মিষ্টিকে বার বার তার দিকে তাকাতে বাধ্য করছে।
মিষ্টি আড়চোখে যতবারই তাকায়, ততবারই মামুনের সাথে চোখাচোখি হয়ে পড়ে।
মিষ্টি ভালো করেই বুঝতে পারে মামুন এক নাগাড়ে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে।
খানিকটা লজ্জা পেয়ে রিয়ার আড়ালে চলে যায় সে।
রিয়ারও ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পারে। মামুনের নজর থেকে আড়াল হতেই মিষ্টি রিয়ার পেছনে গিয়ে দাড়িয়ে আছে।
--রাত তো অনেক হলো। ঘুমাবে না?(রিয়া)
--ঘুম তো আসছে না।
--কেনো?
--চোখ বন্ধ করলেই চোখের সামনে কত কিছু ভেসে ওঠে।
--কি?
--এই যে আজ জীবনে প্রথম অনেক কিছুর অভিজ্ঞতা হলো।
--হুম বুঝতে পারলাম। আর কি কি মনে পড়ে?
--সবই।
--আমি কিন্তু কিছু একটা নোটিশ করেছি।
--কি?
--তোমাদের চোখের খেলা।
--বুজলাম না।
--থাক বোঝা লাগবে না।
--তুমি ভুল ভাবছো, এমন কিছুই নয়। আমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারো।
--আরে আরে, এতো সিরিয়াস হয়ে গেলে কেনো? আমি তো মজা করছিলাম।
--ও আচ্ছা।
--ঘুমাবে না?
--হুম, আচ্ছা, আজ আমার জন্মদিন এটা তুমি কি করে জানলে? আমি তো কখনো তোমাকে বলিনি।
--তোমার ডায়েরী থেকে।
--আমার ডায়েরী তুমি কোথায় পেলে?
--আমার পড়ার টেবিলে।
--অন্যের ব্যক্তিগত ডায়েরী পড়া বারণ এটা জানো না?
--সরি, খুব জানতে ইচ্ছে করছিলো তোমার ব্যাপারে।
তাই ডায়েরীটা সামনে পেয়ে আর লোভ সামলাতে পারিনি।
--আমার জীবনটা আমারই থাক, আমি আর কাউকে এই বিষয়ে জানাতে চাইনা।
--হুম বুঝেছি, কিন্তু আরো অনেক কিছুই দেখলাম তোমার ডায়েরীতে।
--ওই সব নিয়ে আর ভেবো না। অনেক রাত হয়েছে, এসো ঘুমাবে।
--তোমার হাতের লেখা কত সুন্দর, তুমি অনেক মেধাবী ছিলে তাই না?
--ওরকম কিছু না।
--কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়েছিলে?
--এসএসসি দিয়েছিলাম। তাও লুকিয়ে লুকিয়ে, মা পড়তে দেয়নি।
--রেজাল্ট কি ছিলো তোমার?
--গোল্ডেন এ(+)
--হ্যাহ!
--অবাক হওয়ার কিছু নেই।
--জানো, তোমার কথা বার্তায় মনে হয় তুমি অনেক ম্যাচিউর।
কত স্মার্টলি কথা বলো তুমি। তাহলে আমাদের সাথে ওরকম আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলো কেনো?
--এটাই আমার ভাষা, বাদ দাওতো ওসব।
--হুম
--শুয়ে পড়ো।
পরদিন সবাই যার যার কাজে চলে যায়। বাসায় শুধু সানু বেগম আর মিষ্টি।
রোজকার মতো সময় কাটানোর জন্য মিষ্টি সানু বেগমের কাছে চলে যায়।
--মিষ্টি....।
--জ্বি আন্টি।
--তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
--জ্বি বলুন না।
--আমাদের পাশের বাসার ফাতেমা চাচিকে চিনো?
--হ্যা চিনিতো। কালও তো এসেছিলো।
--হুম।
--কিছু হয়েছে?
--হুম।
--কি হয়েছে আন্টি?
--রাগ করিয়ো না প্লিজ।
--না না, বলুন প্লিজ।
--সবাই কানাঘুষা করছে, কেনো আমি একটা যুবতী মেয়েকে বাসায় রেখেছি!
যেখানে আমার একটা যুবক ছেলেও আছে।
--সবাই বলছে একটা যুবতী মেয়েকে এভাবে ঘরের মধ্যে রাখা মোটেও ঠিক কাজ নয়।
মিষ্টি হালকা মুচকি হেসে জবাব দেয়,
--আমিও শুনেছি এটা, ওনারা ঠিকই বলছেন। আমি জানি আপনি আমায় খুব ভালোবাসেন। যদি মাঝেমধ্যে আপনাদের সাথে দেখা করতে আসি, আমার সাথে দেখা করবেন?
--আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই তুমি বলা শুরু করছো, ভারী বেয়াদব মেয়েতো তুমি।
মিষ্টি চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
--তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো, দিবে?
--আপনারা আমায় না চাইতেও অনেক দিয়েছেন। আর আমি দিতে পারবো না? বলুন কি চান।
--সবার কানাঘুষা বন্ধ করতে চাই।
--আচ্ছা, আমি আজই চলে যাবো।
--কোথায় যাবে?
--তা তো জানি না। যেদিকে দুচোখ যায়।
--তুমি তো দেখি বেশি পণ্ডিত। এতো কথা কেনো বলো?
--কোথায় আর যাবো বলুন। আমার তো কোনো ঠিকানা নেই।
--কোথাও যেতে হবে না।
--তাহলে?
--সারাজীবনের জন্য আমার ঘরে থাকবে?
--আপনি যদি রাখেন। তবে যদি আমায় কিছু টাকা দিতেন, তাহলে আমি একটা ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতে পারতাম। আর কেউ কানাঘুষা করতো না। আমি আগের চেয়ে আরো বেশি কাজ করে দিবো।
--এতো বেশি বুঝো কেনো তুমি? আমি কি জিজ্ঞেস করি শুধু তার উত্তর দিবে।
--আচ্ছা।
--আমার ঘরে সারাজীবনের জন্য থেকে যাবে?
--ইচ্ছে তো আছে, বাকিটা আপনার ইচ্ছা।
--আমার ছেলেকে বিয়ে করবে?
সানু বেগমের এমন কথায় মিষ্টি কেঁপে ওঠে। তার কথায় মিষ্টি একটু নয়, বেশ অবাক হয়।
আশ্চর্যবোধক ভঙ্গিতে সানু বেগমের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।
--কিছু বলবে না?
--আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
--দেখো, সেই প্রথম থেকেই তুমি আমার পছন্দ। সত্যি বলতে তুমি আমার ঘরে আসার আগে এই ঘরটা একদম ফাকা ফাকা ছিলো। এই ঘরে যেনো প্রানই ছিলো না। তোমার আগমনে আমার ঘরটা যেনো প্রান ফিরে পায়। আমি চাইনা আমার ঘরটা আবার আগের মতো মরা ঘর হোক।
--আন্টি, আমি জানিনা আমার কি জবাব দেওয়া উচিত। তবে এটা বলতে পারি যে আমার ওই যোগ্যতা নেই আপনার ঘরের বউ হওয়ার।
--যোগ্যতা নিয়ে আমি কোনো প্রশ্ন করিনি। তোমায় আরো আগেই বলতাম, কিন্তু বলিনি তুমি কি না কি মনে করো, কিন্তু এখন তুমি ১৮ বছর বয়সী একটা মেয়ে। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার বয়স তোমায় হয়েছে। তাই তোমাকে এমন একটা প্রস্তাব দিলাম। এখন এত চাপ না নিয়ে পরে ভেবে চিন্তে আমায় জানিও।
--আপনিতো জানেনই, আমার আগেও এক বিয়ে হয়েছে। এরপরও আপনি আমায় আপনার ঘরের বউ বানাতে চান?
--দেখো মিষ্টি, ওটা তোমার অতীত, এমন তো নয় যে তোমার স্বামী বেচে আছে। সে তো মারা গেছে। তো এখন তোমার বিয়ে করতে অসুবিধা কোথায়? যদি আমাদের অথবা আমার ছেলেকে তোমার পছন্দ না হয়, তাহলে তুমি বলতে পারো।
--কি যে বলেন আন্টি। আমি কি ওসব বলেছি? আপনারা আমার আশ্রয়দাতা, কত ভালো মনের মানুষ আপনারা। আর উনিও খুব ভালো মনের মানুষ। এমন একটা পরিবার আর স্বামী পাওয়া যে কারো জন্যই ভাগ্যের ব্যাপার। আমাকে একটু সময় দিন।
--আমি শুধু তোমায় আমার ইচ্ছাটা জানিয়েছি। বাকিটা তোমার সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর।
.
মিষ্টি মাথা নিচু করে ছাদে চলে যায়। মেঘলা আকাশটায় আজ কেমন করে যেনো রোদ উকি দিচ্ছে।
আকাশটা কি আবার পুরোপুরি মেঘে ছেয়ে যাবে? নাকি আড়ালে থাকা রোদগুলো আলো দিতে বেরিয়ে আসবে?
নিজের অজানতেই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে মিষ্টির। আর মনে মনে ভাবছে...
আমার কপালে কি সত্যিই এমন কিছু আছে? নাকি ২ দিনের সুখ?
নাকি আবার কিছু একটা হতে চলেছে আমার জীবনে?
এই অভাগা কপাল নিয়ে জন্মেছি যে নিজের মা বাবা কে সেটাই জানি না,
যাদের কাছে মানুষ হলাম তারাই একসময় আমায় ছেড়ে দিলো।
এরা তো আমার আপন কেউ নয়, শুনেছি মাঝে মাঝে কিছু সম্পর্ক রক্তের
সম্পর্কের চেয়েও মজবুত হয়। কি করা উচিত আমার? যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা
বলছে সেও এখনো এই ব্যাপারে জানে না।
সে কি একটা কাজের মেয়েকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নিবে?
নাকি মায়ের জোরাজুরিতে রাজি হয়ে বিয়ে করে পরে আমায় অবহেলা করবে!
বিয়ের পরের এমন অশান্তির কথা তো অনেক শুনেছি।
কিন্তু তিনি মানুষটাতো এমন নয়। সে কি আমায় মেনে নিবে?
--মিষ্টি..... বৃষ্টি হচ্ছে, ভেতরে এসো।(সানু বেগম)
পেছনে দুহাত দিয়ে মাটিতে ভর করে উপরের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে বসে আছে মিষ্টি।
পেছন থেকে সানু বেগম জোরে জোরে ডেকেই যাচ্ছে, কিন্তু মিষ্টি কান পর্যন্ত আওয়াজ পোঁছাচ্ছে না।
একটু পর সানু বেগম মিষ্টির সামনে এসে দাড়ায়।
--মিষ্টি.....
আচমকা সানু বেগমকে সামনে দেখে উঠে দাড়ায় মিষ্টি।
--জ্বি আন্টি।
--বৃষ্টিতে ভিজতেছো কেনো? ভেতরে চলো।
--জ্বি....
সানু বেগমের সাথে দৌড়ে ভেতরে গিয়ে দাড়ায় মিষ্টি।
--কি হয়েছে তোমার?
--কিছু হয়নিতো।
--কি ভাবছিলে ওতো?
--অতীতগুলো মনে পড়ছিলো।
--ভুলে যাও ওসব। তোমার সামনে পুরো ভবিষ্যৎ পড়ে আছে। এখন ওসব নিয়ে ভাবো।
--আমি না পারছি হ্যা বলতে, না পারছি না বলতে। আমার চেয়েও ভালো কাউকে ওনার জন্য বেছে নিতে পারবেন আপনি।
--তোমার মতামত কি?
--বলো।
--তুমি কি আমাদের সাথে থাকতে পারবে না?
--আমি খুব চাই আপনাদের সাথে থাকতে।
--তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
--আমি রাজি।
--আলহামদুলিল্লাহ..... এতক্ষণ এমন বললে কেনো?
--বুঝতে পারছিলাম না কি বলবো।
--আমি আমার ছেলের জন্য যাকে তাকে তো আর বউ করে আনতে পারি না। এই ৩ মাসে সারাক্ষণ আমাদের সাথেই ছিলে..। এমন মেয়েকে তো আমি হাত ছাড়া করতে পারি না। তুমিই আমার ছেলের জন্য পারফেক্ট।
--উনি কি রাজি হবেন?
--ওটা তুমি আমার ওপর ছেড়ে দাও।
--আমার খুব ভয় করছে। জানি না আমার সাথে কি হতে চলেছে।
--পাগলি মেয়ে, এতো ভেবো না তো।
--রাতে মামুন বাসায় আসুক, তার সাথে আমি কথা বলবো।
--আচ্ছা।
.
মিষ্টি আজ মামুনের আসার অপেক্ষায় আছে। সময় যেনো কোথায়ও থমকে আছে। এক চুলও নড়তে চাইছে না।
সন্ধ্যায় রিয়া পড়ার টেবিলে বসা, আর মিষ্টি নিজের ডায়েরীটা নিয়ে বিছানার এক কোনায় বসে কি যেনো লিখছে।
হঠ্যাৎই কলিং বেলটা বেজে ওঠে।
ঘন্টা যেনো দরজায় নয়, মিষ্টির বুকের ভেতর বেজে ওঠে...। এক দৌড়ে গিয়ে দরজার সামনে দাড়ায়।
ওড়নাটা মাথায় দিয়ে আস্তে করে দরজা খুলে দেয়।
দরজা খুলে মিষ্টি মামুনের দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে।
--কি হলো? ভেতরে আসবো না?
--হুম।
--তো সরো না। হা করে দাড়িয়ে আছো কেনো?
--ওহ, সরি। আসুন।
মামুনের হাত থেকে তার ব্যাগটা নিয়ে মিষ্টি রুমে ফিরে আসে।
--কে এলো? ভাইয়া?(রিয়া)
--হুম
--কি আনলো?
--কি জানি, দেখো ব্যাগে আছে।
--ওমা, ফুসকা.....।
--তাই?
--নাও।
--আমি খাবো না, তুমি খাও।
--কেনো?
--ভালো লাগছে না।
--কি হয়েছে?
--কিছু হয়নি, এমনি খেতে ইচ্ছে করছে না।
--তাহলে আমিই খাই....
বলেই রিয়া গপগপ করে খাওয়া শুরু করে দেয়।
মিষ্টি ধীরেধীরে মামুনের রুমের কাছে এসে দাড়ায়।
আজ কেমন যেনো লাগছে মিষ্টির..। দরজা দিয়ে উকি দিতেই মামুন মিষ্টিকে দেখে ফেলে।
--কে ওখানে?
মিষ্টি মুখে হাত দিয়ে চুপ করে দরজার পাশে দাড়িয়ে আছে।
--এই মেয়ে এদিকে আসো...।
মিষ্টির বুকটা কেপে ওঠে। এক্ষুণি হয়তো কাছে ডেকে ঝারি দিবে।
ধীরেধীরে সে মামুনের সামনে এসে দাড়ায়।
--দরজায় উকি দিচ্ছিলে কেনো?
--সরি।
--কিছু বলবে?
--না।
--কোনো কারন ছাড়ায়ই এসেছো?
--কি হলো? চুপ করে আছো যে? আজ তোমাকে এরকম লাগছে কেনো? আসার পর থেকেই দেখছি কেমন করে আছো। মা বকেছে?
--না।
--তাহলে?
--আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো।
--কিহ? কেনো?
--আন্টি আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
--কোথায়?
--জানি না।
--না জেনেই রাজি হয়ে গেছো?
--জ্বি।
--কেনো?
--আর কয়দিন থাকবো এই বাড়িতে, একদিন না একদিন তো চলেই যাবো। তাই এখনই চলে যাই। মায়া বাড়িয়ে তো লাভ নেই।
--তোমার অসুবিধা হচ্ছে এখানে?
--না।
--তাহলে কেনো?
--আন্টি বললো, কি করে মানা করি?
--মা বললো আর ওমনি বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে? দাড়াও.. মা....... ও মা....... কই তুমি?
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com