Breaking News

যদি দেখা না হতো । পর্ব - ০২



শুভ্র খাওয়া শুরু করলো,,সব যেন একাই সাবার করে দিবেন।

আমি জাস্ট অবাক এতো খাবার কেমনে একা একটা মানুষ খাইতে পারেন রাক্ষস একটা।

সব খেয়ে হাত মুখ ধুয়ে টাওয়ালে মুছে আমার সামনে দাড়ালেন,,আমি তখনও অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছি


শুভ্রঃ এই এগুলা খেয়ে নাও(প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে)

তানিশাঃ কি আছে এর মধ্যে
শুভ্রঃ মনে করেছিলাম এই খাবার মুখে তুলতে পারবো না তাই আগেই ওডার করে রাখছিলাম,
কিন্তু খাবার অনেক টেষ্ট হয়ছে তাই সব খাইছি।
টাকা তো ওয়েষ্ট করতে পারিনা তাই এগুলা তুমি খেয়ে নাও
এই বলে তিনি সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেলেন।
আমি আর কি করার সকালে ব্রেকফাস্ট পর্যন্ত করি নাই বলে বাইরের খাবার খেয়ে ফেললাম।
কাল নাকি তিনি বিদেশ যাবেন কিন্তু কেন??
আমি তো পড়াশোনা শেষ ও করতে পারলাম না বলবো একবার,,বললে মন্দ হয়না
আমিও তিনির রুমে গেলাম,,ওমা গিয়ে দেখি তিনি ঘুমাচ্ছে,,
কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে গেলো।
তাহলে আরকি পরে বলবো নে কিন্তু আমি এখন কি করি?

আমি বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম।একটা রুম আছে জলসা ঘরের মতো মনে হয়
কেউ নাচে টাসে হবে,,তবলা,গিটার,,কিছু কিছু অর্ধনগ্ন ছবি ছিঃ এসব দেখেই মেজাজ গরম হয়ে
গেলো তাই ছাদে চলে আসলাম।
যাক একটা জায়গা পেলাম মনের মতো,,চারিদিকে সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ টবে ভর্তি,,
আর মাঝে একটা দোলনা ওখানে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি রোদ তীব্রতা মিষ্টি,,
শীতে রোদ গায়ে ভালোই লাগে খুব ইচ্ছে করছিলো আম্মু সাথে একটু কথা বলি কিন্তু
তিনির টানাটানির ঠেলাই ফোনটাও ফেলে এসেছি,,
আচ্ছা আমার ফ্রেন্ডরা যখন জানবে মেহেন্তা আপুর বিয়েতে গিয়ে নিজেই বিয়ে করে
ফেললাম কি ভাববে আমায় নিয়ে।ধুর কি কপাল আমার

না পেলাম স্বামীর ভালোবাসা,,না হলো স্বপ্নের সংসার কোন গ্যারাকলে পরে গেলাম আমি বুঝিনা।
হঠাৎ নিচে চেঁচামিচি শুনতে পেয়ে চলে গেলাম নিচে।
তিনি আমাকে দেখা মাএই দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলেন
শুভ্রঃ কই গেছিলে তুমি??(দুবাহু শক্ত করে চেপে ধরে)
তানিশাঃ আসলে আমি ছাঁদে গেছিলাম
ছাঁদের কথা শুনতে তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলেন।
তানিশাঃ আপনি কাল বিদেশ যাচ্ছেন তাইনা
শুভ্রঃ হুম(গম্ভীর গলায়)
তানিশাঃ আমি এই এতো বড় বাড়িতে কিভাবে থাকবো একা একা
শুভ্রঃ কিভাবে থাকবে মানে
তানিশাঃ আমার স্টাডি তো কম্পিলিট হয়নি,,আমি আবার শুরু করতে চায়,,
না হলে আমার সময় কাটবে না
তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে দাড়িয়ে কি যেন ভাবলেন,,
শুভ্রঃ ওকে ডান,,বাট শর্ত আছে
তানিশাঃ কি শর্ত

শুভ্রঃ ভার্সিটি টু হোম এর বাইরে এক পা রাখলে ওই পা কেটে দিবো এবং তুমি তোমার বাপের বাড়িতেও যেতে পারবানা শপিং করতে হলে আমাকে বলবা তার আধা ঘন্টা পরেই তুমি জিনিসগুলো পেয়ে যাবে কথাটা মাথায় থাকে যেন

তানিশাঃ আচ্ছা
তিনি চলে গেলেন।শর্ত দিলেও আমি খুশি ভার্সিটিতে তো যেতে পারবো,,কিন্তু বাপের বাড়ির কারোর সাথে দেখা করতে পারবো না এ আবার কেমন সিস্টেম।তারপর আমি আমার রুমে চলে আসলাম।শরীর এলিয়ে দিলাম বিছানার সাথে খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই ঘুমিয়ে পরলাম

রাত তখন ৯টা বাজে,,
আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো একটা খারাপ স্বপ্ন,, মুডটা খারাপ হয়ে গেলো আমার। নিচে আসতেই তিনি রুমে ডাকলেন আমিও গেলাম
তানিশাঃ আসবো
শুভ্রঃ হুম আসো
তানিশাঃ হুম বলেন
শুভ্রঃ এই নাও (একটা ব্যগ বাড়িয়ে দিয়ে)
তানিশাঃ এটা কি??
শুভ্রঃ খুলে দেখ কি
ব্যাগ খুলে দেখলাম একটা স্মার্টফোন,, অনেক সুন্দর দেখতে

শুভ্রঃ এটা আমার সাথে যোগাযোগের জন্য অনলি,,তুমি তোমার পরিবারের কারোর সাথে কথা
বলতে পারবেনা,,সব আমার ফোনের সাথে কানেক্ট করা আছে,,
যার সাথে কথা বলোনা কেন সব আমিও শুনতে পাবো সো বি কেয়ারফুল।
আমার অবাধ্য হলে তোমারই ক্ষতি মনে রাখবা।এখন যাও সামনের থেকে
আর ডাইনিং এ খাবার রাখা আছে খেয়ে নাও।।

আমিও কথা বাড়ালাম না,, কি একটা অশান্তি,,ডাইনিং এ বসে খাচ্ছি আর ভাবছি আমার
পরিবারের সাথে উনির
কি শত্রুতা বুঝলাম না,,তাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না কেন,,
কেমন আজিব গোমরামুখি লোক একটা,,কাল গেলেই শান্তি
খাবার খেয়ে সব ঠিকঠাক করে রুমে আসলাম, জানি এখন আর ঘুম হবেনা তাই
বেলকুনিতে চলে আসলাম।ভালোই শীত পরছে আবার রুমে এসে চাদরটা নিয়ে
বেলকুনিতে বসলাম আর এই ব্যস্ত শহরের কথা চিন্তা করলাম।সারাদিন কতো মানুষই যা
ভীর করে যাওয়া আসা করে আর এখন সম্পূর্ণ ফাঁকা জায়গা।হঠাৎ লক্ষ্য করলাম
তিনি চোরের মতো করে আশে পাশে তাকিয়ে কই যেন গেলো

সব ফাঁকি দিলেও আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারনিনি এক দৌড়ে উনির রুমে গেলাম দেখলাম কেউ নেই
তানিশাঃ এতো রাতে তিনি গেলেন কোথায়,, রাত এখন ১২টা বাজতে গেলো,,
শীতের রাত ১২টা মানে গরমের রাত ২টা।নাহহ এখানে দাড়ালে তিনি চলে আসলে বিপদ
রুমে এসে শুয়ে পরলাম, কিন্তু চোখে ঘুম নাই।মাথায় একটাই প্রশ্ন কই গেলেন তিনি,,
এপাশ অপাশ করতে করতে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে,,
ঘুম ভেঙ্গে আগে ঘড়ির দিকে তাকালাম দেখলাম ৯ঃ৩০ বাজে।
আমি ফ্রেস হতে হতে কাল রাতের কথা মনে পরাই তার রুমে চলে আসলাম।
তিনি গুছাচ্ছেন লাগেজে জামা কাপড়
শুভ্রঃ প্রতি সপ্তাহে রবিবার একজন লোক ঠিক ১২টার দিকে খাবার দিতে আসবে নিয়ে নিবা,,
আর যা যা লাগবে তা আমাকে বলবা।
আমার সাথে সপ্তাহে দুদিন কথা বলবা শুক্রবার আর বুধবার।
আমি সবোর্চ্চ দুবার ফোন দিব তার আগেই ফোন যেন রিসিপ চায়।সময় মতো খাবার খাবা,,
আর ভার্সিটিতে যাবা। বুঝলা

তানিশাঃ জ্বী
শুভ্র সব রেডি করে গাড়িতে বসিয়ে আবার তানিশার সামনে আসলো,,
তার আসাতেই তানিশা সরে যেতে লাগলো।
সরে যাওয়ার আগেই দুহাত দিয়ে তানিশার মুখে হাত দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলো।
শুভ্রঃ সাবধানে থাকবা,,যা যা বললাম মাথায় রেখো
তানিশা জাস্ট মাথা নাড়ালো,,লজ্জায় হয়তো কথাও বলতে পারছে না তেমন।
তিনি গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
তানিশাঃ তিনি গেলেন ঠিকি কিন্তু আমার এতো শূণ্য ফিল হচ্ছে কেন,
মনে হচ্ছে কি যেন হারিয়ে গেলো
গেট আটকে দিয়ে একবারে ছাদে চলে আসলাম,,একা একটা বাড়ি এখন আমি থাকবো,,
আগে একা রুমে ঘুমাতে ভয় পেতাম এখন একা একটা বাড়িতে থাকতে হবে ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com