Breaking News

বোকা ছেলে। পর্ব - ০২



প্রান্ত সিয়াম রেজা রিবা হাসতাছে রিক্তর দিকে তাকিয়ে। রিক্ত ভয়তে কাঁপতে থাকে। নিলয় বেত উঁচু করে রিক্তর হাতের উপর রেখে

- এতোটা ভয় পেতে হবে না। তুমি নতুন তাই ছেড়ে দিলাম। পরের বার কিন্তু আর ছাড় পাবে না।
রিক্ত নিলয়ের কথা শুনে ভয়তা কমে গেলো। চোখ খুললো। নিলয় জায়গায় চলে গেলো। রিক্ত বসতেই প্রান্ত নিলয়কে বললো
- ভাইয়া এটা কিন্তু ঠিক করলেন না। সবাইকে মারলেন কিন্তু ওকে মারলেন না।
নিলয় ধমক দিয়ে
- তুই কি ওর মতো বোকা। মারতে গেলে চোখ বুঝে কাপাকাপি করিস। ওর ভেতরে ভয় আছে। তাই ওকে মারিনি।
সিয়াম বললো
- তাহলে আমরা ও করবো। মার খাওয়া থেকে বেঁচে যাবো।
নিলয় সিয়ামের দিকে তাকিয়ে
- আমার চোখ কে ফাঁকি দেওয়া এতো সহজ না।
সিয়াম চুপ হয়ে গেলো। নিলয় খাতায় ভূল করা লেখার প্রশ্ন সল্ভ করে দিলো। নিলয় ক্লাস শেষ করে চলে গেলো। এভাবে সবাই ক্লাস নিয়ে চলে যায়। রিক্তকে নিয়ে বন্ধু রা বেশ মজা করে।
দেখতে দেখতে ১ মাস কেটে গেলো। রিক্ত সবার মজার মাত্র হয়ে গেছে। রিক্ত কে নিয়ে বেশ মজা করে। বোকা বলদ বলে। এতে রিক্তর কিছু যায় আসে না। রিক্ত সবার কথা শুনে দাঁত কেলিয়ে হাসে।
একদিন
.
রিক্ত রিবা প্রান্ত সিয়াম ইরা মিরা যাচ্ছিলো। রিক্তকে নিয়ে মজা করতে করতে ইরার আঙ্গুলের আংটি খুলে ড্রেনে পড়ে যায়। সবাই থেমে যায়। ইরা বললো
- আমার আংটি।
বন্ধু রা সবাই হেসে উঠলো। প্রান্ত বললো
- যা তুলে নিয়ে আই।
ইরা বিনয়ের সুরে
- দোস্ত তুই তুলে দে না। বাসায় গেলে আম্মু শুনলে অনেক বকবে আর মারবে।
সিয়াম মুখে ভেংচি কেটে
- আমি পারবো না। তোর টা তুই তোল।
সিয়াম চলে গেলো। প্রান্ত রিক্ত কে বললো
- এই রিক্ত থাকতে এতো চিন্তা কিসের। রিক্ত দোস্ত একটু খুজে দে।
রিক্ত বোকার মতো তাকিয়ে
- আমি।
ইরা বললো
- হ্যা তুই। তোর ব্যাগটা আমার কাছে দে আমি ধরছি।
- ওটা তো পঁচা পানি৷
রিবা বললো
- আরে বোকা পানি তো পানি পঁচা হয় নাকি। যা নেমে খুঁজে দে।
-ঠিক আছে।
রিক্ত ব্যাগটা ইরার কাছে দিয়ে ড্রেনের ভেতর নামলো৷ হাঁটু সমান ডেবে গেছে। রিক্ত একটু ঝুকে আংটি টা খুজতে লাগলো। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সবাই হাসাহাসি করতে থাকে। কিন্তু ইরার মুখে চিন্তার ছাপ পড়ে আছে। যদি না পায় তাহলে তো ওকে আস্তো রাখবে না। ইরা বললো
- রিক্ত একটু ভালো করে খোজ না।
- পাচ্ছি না তো।
- সামনের দিকে এগিয়ে দেখ।
.
রিক্ত সামনের দিকে এক পা দিতে পায়ের ভেতর কিছু একটা ঢুকে গেছে। রিক্ত ব্যথা পেয়ে উহু করে উঠলো। মিরা বললো
- কি হয়েছে?
- পায়ে কি জেনো ঢুকছে।
ইরা রাগান্বিত কন্ঠে
- তোর পায়ে কি ঢুকছে পড়ে দেখিস। আগে আমার আংটি টা খুঁজে দে।
রিক্ত কিছুক্ষণ খোজা খুজির পর আংটি টা পেলো। আংটি টা পেয়ে ইরার হাতে দিলো। ইরা খুশি হয়ে গেলো। রিক্ত প্রান্তকে বললো
- আমার হাত টা একটু ধর। আমি উঠে আসি।
- তোর পঁচা মার্কা হাত ধরে কি আমার হাত নষ্ট করবো?
রিবা বললো
- এই ইরা ওর ব্যাগটা পাশে ফেলে চল। লেট হয়ে যাচ্ছে।
- হ্যা হ্যা ঠিক বলেছিস চল।
ইরা রিক্তর ব্যাগ ফেলে রেখে সবাইকে নিয়ে চলে যায়। রিক্ত বোকার মতো ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি রাস্তা দিয়ে একটা মেয়ে যাচ্ছিলো। রিক্তকে দেখে থমকে দাড়িয়ে
- এই তুমি এই পঁচা ড্রেনের ভেতর নেমে কি করছো?
- বন্ধুর আংটি পড়ে গেছিলো। খুঁজে দিলাম।
- তা তোমার বন্ধুরা কই।
- আমাকে রেখে চলে গেছে।
- তুমি কি বোকা নাকি। বন্ধুতে বললো আর নেমে গেলা।
রিক্ত মেয়েটার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে
- আমার হাত টা একটু ধরবেন। পায়ে জেনো কি ঢুকছে উঠতে পাচ্ছি না।
- হ্যা সিউর।
.
মেয়েটা হাত বাড়িয়ে দেয়। রিক্ত হাতটা ধরে বাম পায়ে ভর দিয়ে উঠে আসে। রিক্ত বসে পড়ে পাশে। পায়ে কাঁদা ভরতি। তার উপর লাল আবরণ। রক্ত বের হচ্ছে। মেয়েটার হাতে পানির বোতল ছিলো। পানির বোতলের মুখ খুলে পায়ের উপর পানি ঢেলে দিলো। কাঁদা সব ধুয়ে চলে গেলো। পায়ের তলায় বেশ খানিকটা কাচ ভাঙ্গা ঢুকে আছে। রিক্ত চোখ বন্ধ করে নিলো এটা দেখে। মেয়েটা বসে ভাঙ্গা কাচ টুকু এক টানে তুলে ফেললো। রিক্ত এক চিৎকার দিলো ব্যথায়। মেয়েটা হেসে দেয়। রিক্ত চোখ খুললো মেয়েটা বললো
- রক্ত তো বের হচ্ছে থামাবো কি করে?
- আমার ব্যাগের ভেতর একটা বাক্স আছে ওর ভেতর সব আছে।
মেয়েটা ব্যাগটা খুলে বক্স টা বের করে রিক্তর পা ড্রেসিং করে দিয়ে চলে গেলো। একটু ও দাড়ালো না। রিক্ত কিছু বলার সুযোগ পেলো না। রিক্ত উঠে দাঁড়িয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে হেটে বাসায় আসলে মর্জিনা বেগম বললো
- এই দাঁড়া ঘরে উঠবি না একদম
রিক্ত ভয় পেয়ে যায়। মনে মনে বলে এই রে মা তো আজকে মেরে শেষ করে দিবে। কি করবো এখন। কি বললো?
মর্জিনা বেগম রিক্তর অবস্থা দেখে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে
- এই অবস্থা কি করে হলো?
- মা মা ড্রেনে পড়ে গেছি।
- কেন চোখ কি কপালে নিয়ে হাঁটিস ?
- না।
- পা ও কেটে নিছিস৷
- হুম।
মর্জিনা ব্যাগটা নিয়ে নিলো রিক্তর থেকে আর বললো
- সোজা কল পাড়ে যাবি। গোসল করবি সাবান লাগাবি। তারপর ঘরে আসবি।
রিক্ত আস্তে আস্তে করে বললো
- মা পারবো না।
মর্জিনা বেগম রেগে
- পারবি না মানে। বেত আনছি দাঁড়া ।
- না না মা। আমি যাচ্ছি।
রিক্ত চলে যায় কল পাড়ে। গোসল সেরে ঘরে আসে। পায়ের ব্যথাটা বেড়েছে। মর্জিনা বেগম রিক্তকে ওষুধ খেতে দিলো। রিক্ত খেয়ে নিলো।
দেখতে দেখতে আর ১ মাস কেটে যায়। এর ভেতর আঙ্কেল ক্লাসে এসে বললো ফাইনাল কোচিং এর টাকা দেওয়ার জন্য৷ আর আজই শেষ তারিখ ছিলো৷ রিক্তর মনে ছিলো না টাকা নেওয়ার কথা। রিক্ত কোচিং এর উদ্দেশ্যে বের হয়। রাস্তায় সিয়াম রেজার সাথে দেখা। রেজা রিক্তকে বললো
- ফাইনাল কোচিং এর টাকা নিয়ে আসছিস।
রিক্ত জিভে কামড় দিয়ে
- এই রে ভূলে গেছি।
রিক্ত যেতে লাগলো কিন্তু সিয়াম বললো
- কই যাস।
- বাসায় টাকা আনতে।
- আরে বোকা আজ আনিস নি তো কি হয়েছে। পরশু দিবি। আমাদের সাথে।
- তোরা দিস নি।
- না।
রেজা বললো
- হ্যা আমরা পরশু দিবো। আমাদের সাথে দিস।
- আচ্ছা।
রিক্ত কোচিং দিয়ে ভেতরে ঢুকতে যেয়ে অবাক হয়ে গেলো.........
( waiting for next part.......)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com