Breaking News

বোকা ছেলে। পর্ব - ০৭



আমি না পারছি কাউকে বলতে না সইতে। আমি এই বোঝাটা সারা জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো না।

রিক্ত নিলয়ের কথা থ হয়ে গেলো৷ নিলয় বোকা বোকা চেহারা নিয়ে
- কি হয়েছিলো সেদিন ভাইয়া?
সেদিন
( আমি আঙ্কেলের থেকে পাশের একটা পরিত্যক্ত বাড়ির গল্প শুনে বাংলা ভাইয়াকে ফোন করি। বাংলা ভাইয়া ফোনটা রিসিভ করতেই আমি বললাম
- তোমার অনেক তো সাহস তাহলে একটা বাজি হয়ে যাক।
ওপাশ থেকে বাংলা ভাইয়া অবাক হয়ে
- হঠাৎ আবার কিসের বাজি।
- ভূতের। তোমার তো অনেক দিনের শখ ভূতের সাথে দেখা করবা সুযোগ পেলে। আমি একটা বাড়ির সন্ধান পেয়েছি।
বাংলা ভাইয়া খুশিতে
- তাই। কোথায়?
- কোচিং এর পাশে পরিত্যক্ত যে বাড়ি ওটা।
- ওটা নাকি অনেক ভয়ংকর ।
- হ্যা আমি শুনেছি। তুমি তো আবার ওসব পেত আত্মা ভয় পাও না। তাহলে হয়ে যাক বাকি।
- ঠিক আছে।
- তাহলে আজ যাবে ঐ বাড়ির ভেতরে।
- ওকে।
নিলয় ফোনটা কেটে দিলো। বাংলা ভাইয়া চলে আসলো৷ বাড়িটার সামনে নিলয় আর বাংলা ভাইয়া দুজনে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িটা বেশ পুরানো৷ খুবই নির্জন জায়গা টা। কেউ আসে না। নিলয় বাংলা ভাইয়া কে বললো
- তাহলে প্রস্তুত তুমি।
- হ্যা।
- আমি ওখান থেকে যাবো আর ১ ঘন্টা থেকে বেরিয়ে আসবো। আমি যা চাইবো দিতে হবে কিন্তু।
- ওকে।
বাংলা ভাইয়া বাড়িটার ভেতরে ঢুকে যায়। নিলয় বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। নিলয়ের মনের ভেতর ভয় কাজ করছে। নিলয়ের ফোন টা বেজে উঠায় নিলয় লাফিয়ে উঠলো। ভয় পেলো এমনিতে। নিলয় ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
- ভাইয়া আম্মুর শরীর ভালো নেই ব্যস্ত বাসায় আই।
নিলয় কিছু না ভেবে চলে গেলো। বাসায় যেয়ে মা কে নিয়ে হাসপাতালে চলে গেলো।
২ ঘন্টা পর নিলয়ের ফোনে বাংলা ভাইয়ার ফোন আসলো। নিলয় ভূলেই গেছিলো। । নিলয় তাড়াতাড়ি ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
- নিলয় ভয়তে পালালে নাকি।
- না। আম্মুকে নিয়ে হাসপাতালে আসছি।
- কেন কি হয়েছে?
- হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে৷ নিয়ে এলাম। তাই তোমার ওখানে থাকতে পারিনি।
- আচ্ছা ব্যাপার না। ভালো করেছো।
- তুমি কই?
- এই তো রাস্তায়। আমি কিছুটা রহস্য পেয়েছি। আমি থানায় পুলিশের কাছে যাচ্ছি। ওখান থেকে তোমার সাথে দেখা করবো৷
- ঠিক আছে।
ফোনটা কেটে দিলো। নিলয় হাসপাতালে থাকে।
বিকাল থেকে রাত হয়ে গেলো কিন্তু বাংলা ভাইয়ার কোনো ফোন আসেনি৷ নিলয় অনেক বার ফোন দেয় ফোন সুইচটপ। ভাবছে চার্জ নেই বাসায় গেছে। পরেরদিন বাংলা ভাইয়ার লাশ পাওয়া গেলো। )
বাস্তবে
নিলয়ের চোখ বেয়ে পানি ঝরছে। রিক্তর চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো । নিলয় বললো
- কি করবো আমি এখন? আমি দায়ী বলো।
- না ভাইয়া আপনি দায়ী না। আমি যায় পরীক্ষা দি। ।
রিক্ত চলে আসলো। ম্যাডামকে বলে ক্লাস রুমে ঢুকলো। নিজের জায়গায় বসলো। টাইম শেষে ম্যাডাম সবার খাতা নিয়ে নিলো। সিয়াম রেজা প্রান্ত রিক্তর সামনে দাঁড়িয়ে
- দোস্ত সেদিনের জন্য রিয়েলি সরি। আমরা বুঝতে পারিনি। বাক্সে এসব ছিলো৷ আমাদের ক্ষমা করে দে। কাউকে কিছু বলিস না।
রিক্ত অসহায় চাহনি দিয়ে
- যেটা কপালে ছিলো তাই হয়েছে। আমি তোদের উপর কোনো অভিযোগ করবো না।
প্রান্ত রিক্তর পাশে বসে
- দোস্ত তুই কখনো মুখ দিয়ে এসব বলবি না কাউকে।
- ঠিক আছে।
রিক্ত কোচিং থেকে বের হলো। রিছা রিক্তর পথ আটকিয়ে বললো
- ওরা তোমার কাছে ক্ষমা চাইলো কেন?
রিক্ত রিছাকে সবকিছু খুলে বললো সেদিনের কথা। রিছা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো৷ রিক্ত রিছার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। প্রান্ত সিয়াম রেজা বের হলো। রিছাকে ডাক দিলো। রিছা দাঁড়িয়ে পড়লো। তিন জনে রিছার কাছে যেতেই রিছা বললো
- ছি ঃ তোমরা কেমন মানুষ। বন্ধু কে বিপদে ফেলতে লজ্জা করে না। এতো টা খারাপ মানুষ কিভাবে হয়।
রেজা সিয়াম প্রান্ত একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। রিছা রাগান্বিত কন্ঠে বললো
- এমন বন্ধু থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। বোকা পেয়েছো তো তাই যা ইচ্ছা তাই করবে। এই হচ্ছে তোমাদের এতো দিনের বন্ধুত্ব
রিছা কথা গুলো বলে ওদের সামনে থেকে চলে গেলো। প্রান্ত সিয়াম কে বললো
- রিক্ত দেখি রিছা কে বলে দিছে।
রেজা বললো
- হ্যা। ও যদি সবাইকে বলে দেয় তাহলে তো আমাদের সব ব্যবসা লাটে উঠে যাবে।
সিয়াম বললো
- কি করা যায় ওকে? ও এতটাই বোকা সরল মনে সবাইকে বলে দিবে।
প্রান্ত রাগ নিয়ে বললো
- চল ওকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দি।
- এতো তো ঝামেলা হবে।
- আরে কোনো ঝামেলা হবে না। ওকে এমন ভাবে সরাবো যাতে কোনো প্রমাণ আর না আমাদের কেউ সন্দেহ করবে।
- কিভাবে?
- কেন পরিত্যক্ত ঐ বাড়ি টার ভেতরে ওকে পাঠিয়ে দিবো।
- তারপর
- তারপর আবার কি বাড়ির ভেতরের ভূত আত্মা ওর ঘাড় মটকে ফেলে রাখবে।
তিনজনে হেসে উঠলো। রেজা বললো
- ও রাজি হবে তো।
- কেন হবে না? ওর বোকার দূর্বলতা নিতে হবে।
- ও কি আমাদের বিশ্বাস করবে।
- কেন করবে না। পরশু দিনের পরীক্ষা শেষ করে সন্ধ্যার পর ফেরার পথে ওকে ঐ বাড়িতে একা ঢুকিয়ে দিবো।
- ব্যাস আমাদের প্ল্যান শেষ।
তিনজনে চলে গেলো।
রিক্ত বাসায় আসলে মর্জিনা বেগম বললো
- পরীক্ষা কেমন দিলি।
- খালি খাতা জমা দিয়ে আসছি।
মর্জিনা বেগম অবাক হয়ে
- কেন কিছু লিখিস নি?
- না। পারি না তা কি করবো।
মর্জিনা বেগম রাগি চোখে তাকিয়ে
- তোকে।
- আম্মু তোমাকে মানাচ্ছে না রাগ চেহারাই। একটা সিরিয়াস কথায় মুচকি হাসো কেন? রাগ দেখাবা রাগ দেখানোর মতো হাসো কেন?
রিক্তর কথায় মর্জিনা বেগম হাসি লুকাতে পারলো না। হেসে দিলো। মর্জিনা বেগম রাগ করলে ও হেসে দেয়। রিক্ত তা বুঝতে পেরে গেছে। তাই তো রাগ করতে পারে না।
রিক্ত ফাইল রেখে বের হতে যাবে পিছন থেকে মর্জিনা বেগম বললো
- কই যাচ্ছিস তুই এখন।
- দোকানে চানাচুর কিনতে।
- তোকে যেতে হবে না । আমি কাউকে দিয়ে আনিয়ে দিচ্ছি।
- কেন মা?
- না না তোকে যেতে দিবো না। আবার কে কোন বিপদে ফেলবে তোকে। না বাবা তুই আমার চোখের সামনে থাক।
রিক্ত আর বাইরে যেতে পারে না।
দু দিন পর
আজকে কোচিং এ পরীক্ষা। রিক্ত পরীক্ষা দিতে আসলো কিন্তু খাতায় কিছু লিখলো না। রিক্ত দেখলো ম্যাডাম খুব আপসেট হয়ে আছে। কি নিয়ে খুব চিন্তিত। রিক্ত দাঁত কেলিয়ে হেসে দিয়ে বললো
- ম্যাডাম আপনাকে আপসেট দেখাচ্ছে। কি নিয়ে এতো চিন্তিত?
ম্যাডাম রিক্তর এমন ছোড়া কথার উত্তর কি দিবে বুঝতে পারছে না। ঘাবড়ে গেলো। ম্যাডাম রাগ দেখানোর মতো করে
- কি পরীক্ষা দিচ্ছো? এখনো কিছু লেখো নি। কি পড়াশোনা করছো। তোমার জন্য কি কোচিং এর বদনাম হবে। আমি কিন্তু আংকেলের কাছে যেয়ে বলবো।
- না না ম্যাডাম আংকেল কে বলতে হবে না।
ম্যাডাম দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে মনে মনে ভাবছে হুটহাট সব কথার উত্তর দেওয়াটা সম্ভব না। এই ছেলে বোকা কিন্তু প্রশ্ন টা জায়গা মতো করতে জানে ।
পরীক্ষা শেষে রিক্ত বের হলো। পিছন থেকে রেজা বললো
- দোস্ত চল এপাশ থেকে আজকে সবাই একসাথে যায়।
রিক্ত হাসি দিয়ে বললো
- আমি ও ভাবছিলাম এই পথ দিয়ে যাওয়ার জন্য। - তা ভালোই হলো বল।
- হ্যা চল।
রিক্ত রেজার সাথে গল্প করতে করতে যাচ্ছে। হঠাৎ করে প্রান্ত পরিত্যক্ত বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো৷ রেজা বললো
- কি রে দোস্ত এখানে দাঁড়ালি কেন?
- বাড়িটা দেখতে অনেক পুরানো। এই বাড়ির ভেতর যে আগে যেতে পারবে। তার জন্য রয়েছে সারপ্রাইজ।
সিয়াম বললো
- এটা কোনো কথা। আমি এক্ষুনি যাবো আবার এক্ষুনি চলে আসবো।
রেজা বললো
- তুই তো গেছিস আর আইছিস। রিক্ত তো যায় নি।
প্রান্ত হাসি দিয়ে বললো
- হ্যা তাই আগে রিক্ত যাবে।
- কি রে রিক্ত পারবি না।
- রিক্তর সাহস নেই ঘুরে আসার।
রিক্ত কিছুটা রেগে যেয়ে
- ভেতরে কি আছে জানিস তোরা। আমার সাহস আছে আমি যেতে পারবো৷
- ঠিক আছে বাড়িটাতে একা ঘুরে আই। আমরা এখানে দাড়ানো আছি।
রিক্ত ওদের কথা মতো বাসার ভেতর ঢুকে যায়। রিক্তকে বাসার ভেতর আড়াল হতে দেখা মাত্র ই তিন জনে সরে যাবে তখনি ওদের সামনে একজন দাঁড়িয়ে পড়লো........
( waiting for next part.........)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com