Breaking News

বোকা ছেলে। পর্ব -০৮



রিক্ত ওদের কথা মতো বাসার ভেতর ঢুকে যায়। রিক্তকে বাসার ভেতর আড়াল হতে দেখা মাত্র ই তিন জনে সরে যাবে তখনি ওদের সামনে একজন দাঁড়িয়ে পড়লো। ওরা তিন জনে অবাক হয়ে যায়। লোকটা বললো

- কি রে তোরা এখানে কি করছিস?
রেজা ঘাবড়ে যেয়ে
-আমরা এই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম।
- তাহলে ঐ ছেলেটাকে তোরা ভেতরে পাঠালি কেন?
সিয়াম থ ম খেয়ে
- ক ক ক কই আমরা পাঠাইছি। কোন ছেলে কই গেছি।
লোকটা সিয়ামের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
- তোরা জানিস না বাড়ির ভেতর যে যায় সে আর ফিরে না। তোরা ছেলেটাকে এভাবে পাঠালি। তোদের আমি পুলিশে দিবো দাঁড়া ।
রেজা সিয়াম প্রান্ত পালাতে যাবে তখনি আরো পাঁচজন এসে ওদের পথ আটকালো৷ লোকটা ফোনটা বের করে পুলিশকে ফোন দিলো। সাথে সাথে পুলিশ গাড়ি নিয়ে চলে আসে। কথাটা এলাকার সবার কানে কানে হয়ে গেলো। এলাকার লোকজন এসে বাড়িটার সামনে দাঁড়ালো। পুলিশ রেজা সিয়াম আর প্রান্ত কে জিঙ্গাসা করছে কিছুতেই স্বীকার যাচ্ছে না। থানার অফিসার এসে
- তোমরা সত্যি করে বলো কাকে পাঠাইছো ঐ মরন বাড়িতে। তোমরা সত্যি কথা বললে তোমাদের যেতে দিবো৷ তা না হলে তোমাদের আমরা কেউ বাঁচাতে পারবো না।
.
রেজা সিয়াম প্রান্ত ঘামতে থাকে। সিয়াম ভয়তে বললো
- স্যার আমরা আসছিলাম এই পথ দিয়ে। রিক্ত আমাদের বললো এই বাড়িটা নাকি অনেক ভয়ানক। ও এসব ভয় পাই না। ও যদি বাড়িটার ভেতরে যেয়ে আসতে পারে আমরা তাকে জেনো বিরিয়ানি খাওয়ায়।
রেজা বললো
- স্যার আমি মানা করেছি৷ এই বাড়িতে যে ঢুকেছে সে আর ফিরে আসেনি। কিন্তু ও বললো ও নাকি ফিরে আসবে। এসব পেত ভূত মিথ্যে।
প্রান্ত বললো
.
- স্যার আমি ওকে আটকাতে চেয়েছি কিন্তু ও বাড়িটার ভেতর ঢুকে গেছে।
তিনজনের কথা এলাকার লোকজন শুনলো। থানার অফিসার বললো
- এদের কোনো দোষ নেই। দোষ সব ঐ ছেলেটার। ছেলেটা ইচ্ছা করেই গেছে। ছেলেটা ভালো না। এদের ফাসানোর জন্য এই প্ল্যান করছে। আমি ছেলেটাকে থানায় নিয়ে গেছিলাম একবার।
এলাকার লোকজন সব কিছু বিশ্বাস করে নিলো। কেউ কেউ বলতে লাগলো
- বেশি সাহস দেখাতে যেয়ে এখন লাশ হয়ে ফিরবে।
- ছেলেটার মাথায় কি বুদ্ধি নেই। এতো বাড়ি থাকতে এই বাড়ির ভেতরে যেতে হলো। এখন তো বাচতেই পারবে না।
- ছেলেটা এদের তিনজনকে ফাসাতে বাড়িটার ভেতরে চলে গেলো। কি আজব?
- এমন ছেলে সমাজে থাকলে তো আমদের দূরনাম হবে। মরেই যাক । এলাকাটা সুরক্ষিত থাকবে।
অনেকে আরো অনেক কিছু বলছে৷
পুলিশে লাইটিং এর ব্যবস্থা করলো। কেউ কেউ বলছে
- বাড়ির ভেতরে সবাই মিলে ঢুকলে ছেলেটা বাঁচতে পারে।
- না না ভেতরে ঢোকা যাবে না। তাহলে সব শূন্য হয়ে যাবে। এলাকায় আর একটা ও মানুষ থাকবে না৷
গ্রামের বাড়িতে মর্জিনা বেগম। রিক্তর পরীক্ষা বলে আনে নি।
ঘরিতে রাত ৮ টা
মর্জিনা বেগমের মনে হঠাৎ ডাক দিয়ে উঠলো রিক্তর কোনো কিছু হয়নি তো। মনে মনে ভাবছে।
রিক্ত বাড়ির ভেতর ঢুকে হাটছে। আশ পাশ দিয়ে ভয়ংকর শব্দ ভেসে আসছে। মাঝে মাঝে চামচিকার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। শব্দ গুলো যেনো বেড়ে যাচ্ছে যত এগোচ্ছে ততো। আশপাশ ভয়ানক অন্ধকার। রিক্ত সামনের দিকে এগোতে লাগলো। রিক্তর মাথায় হঠাৎ কি এসে পড়লো। সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো রিক্ত।
.
থানার অফিসার বললো
- আমাদের হাতে আর কিছু করার নেই। বাড়ি তার
ভেতরে কেউ ঢুকতে চাইছে না। কি করবেন?
এক জন বললো
- আমরা এখানে সবাই থাকবো। দেখি ছেলেটা বেচে ফেরে নাকি মরা অবস্থায়।
কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকের গাড়ি চলে আসলো। গাড়ি থেকে নেমে বাড়িটার দিকে ক্যামেরা সেট করলো।
একজন সাংবাদিক বলছে
- কি সাংঘাতিক? কল্পনা করা যায় এসব। আপনারা যারা ক্যামেরায় সামনের বাড়ি টা দেখছেন এটাকে ভূতের বাড়ি বলে সবাই। যে যায় সে আর ফিরে আসে না। কিন্তু এর ভেতর একটা ছেলে ঢুকে পড়ছে। সে কি পারবে ফিরে আসছে।
কিছুক্ষন পর সামরিক বাহিনীর গাড়ি এসে থামলো। থানার অফিসার তো পুরোই অবাক হয়ে গেলো। কিছুই বুঝতে পারছে না। থানার অফিসার বললো
- আপনার এখানে।
- নিউজ দেখে আর থাকতে পারলাম না। ছেলেটাকে বাচাতে চলে আসলাম।
- কিন্তু স্যার বাড়িটা তো ডেঞ্জার খুব।
- আমাদের কাজ মানুষদের সেবা দেওয়া। তাতে যদি আমার প্রাণ যায় যাবে।
- স্যার আমরা সবাই সব ধরণের প্রস্তুতি নিছি। আমরা ভেতরে ঢোকার ট্রাই করবো।
- ততোক্ষণে দেরি হয়ে যাবে।
- স্যার খুব রিস্কের কাজ।
.
সামরিক বাহিনীর অফিসার রেগে যেয়ে
- আমি কি আপনার সাথে ফাজলামি করতে এসেছি এখানে। আপনি তো কিছুই বের করতে পারেন নি মৃত্যুর রহস্য। ভূত ভূত বলে সবার মনে আতংক ছড়িয়ে গেছে। ভূত বলতে কিছু নেই।
- স্যার পোস্ট মোডেম রিপোর্টে তো এটাই বলে।
এর ভেতর বড় পাওয়ার ওয়ালা টর্চ হাতে কয়েকজন এসে
- স্যার আমরা রেডি। ভেতরে যাবো এখন।
- হ্যা হ্যা। ছেলে টাকে যে করে হোক বাঁচাতে হবে।
- ঠিক আছে স্যার।
লোকগুলো ভেতরে ঢুকতেই চিৎকার দিয়ে উঠলো। সবাই চিৎকার শুনে পিছনে সরে গেলো। আতংকিত হয়ে পড়লো।
রেজা সিয়াম কে বলছে
- এই কি হবে নে এখন.?
- ওকে মারতে যেয়ে আমরা ফেসে গেলাম।
- আমাদের আর বাঁচার চান্স নেই। অফিসার না আমাদের ইন কাউন্টার করে দেয়।
- আমার কিন্তু খুব ভয় করছে।
- এরকম টা হবে আগে জানলে রিক্ত কে গাড়ি চাপা দিয়ে মারতাম।
- বাঁচবো কি ভাবে সেই চিন্তা কর।
থানার অফিসার অন্য অফিসারকে বললো
- স্যার বলেছিলাম খুবই ডেঞ্জার। দেখলেন তো আত্মা আছে কি না। সকাল না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারবো না।
সামরিক অফিসার বললো
- আমি একা যাবো। এদিক টা আপনি সামলান।
- স্যার রাত তিন টা বাজে আপনার যাওয়া টা ঠিক হবে না।
- আপনাদের কাউকে যেতে হবে না। আমি যাবো।
.
বাড়িটার ভেতর থেকে ভয়ংকর আওয়াজ বের হতে লাগলো। এলাকার লোকজন আরো কয়েক হাত দূরে চলে গেলো। কেউ কেউ বলছে
- আর রক্ষা নেই। সবাইকে মরতে হবে।
কেউ কেউ ওখান থেকে পালাবে কিন্তু সাহসে হচ্ছে না। একা একা এই অন্ধকারে যদি ধরে নিয়ে মেরে ফেলে।
অফিসার একাই বাড়িটার ভেতর ঢুকে পড়লো । থানার অফিসার আশ পাশের মানুষজন অনেক বারণ করলো কিন্তু শুনলো না।
সবাই বসে আছে রাস্তার পাশে। মিডিয়ার লোকজন লাইভে রয়েছে। প্রায় ১ ঘন্টা হয়ে গেলো বাড়ির ভেতর যাওয়া অফিসার টা তার কোনো খোঁজ নেই।
হঠাৎ করেই এ্যাম্বুলেন্সের গাড়ি এসে দাঁড়ালো। ভোরের আলো হালকা ফুটছে। এলাকার লোকজন বাড়িটার দিকে তাকিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে পড়লো। হা হয়ে যেয়ে আছে৷ সবাই পুরো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো এলাকার লোকজন............
( waiting for next part........)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com