যদি দেখা না হতো । পর্ব - ০৫
তানিশাঃ মেহেন্তা আপু তুমি এখানে আর তোমার এই অবস্থা কেনো??
তানিশাঃ ও কে??
মেহেন্তাঃ শুভ্র
তানিশাঃ কিহহহ,, শুভ্র আমার হাজবেন্ড ভদ্র ভাবে কথা বলো
মেহেন্তাঃ তোর হাজবেন্ড মানে?? ও একটা খারাপ লোক,,
তানিশাঃ সেদিন তুমি পালিয়ে যাওয়ার পর,,শুভ্র আমাকে বিয়ে করেছে
মেহেন্তাঃ এসব কি বলছিস তানিশা,,ওইদিন আমি পালিয়ে যাইনি আমাকে কিডনাপ করা হয়ছে।আর কিডনাপ করেছে ওই শুভ্র
তানিশাঃ নিশ্চুপ
মেহেন্তাঃ আমি প্রেগনেন্ট তানিশা,,,আর আমার সন্তানের বাবা শুভ্র
কথাটা শোনা মাএই তানিশার মাথা ঘুরতে লাগলো,,তার জমে থাকা ভালোবাসাও আজ প্রশ্ন করছে এগুলো সে কি শুনছে।
মেহেন্তাঃ তানিশা তুই ঠিক আছিস তো
তানিশাঃ শুভ্র মারা গেছে আপু,,,আমি তার ওয়াইফ।ও তোমার সাথে এগুলো করতে পারেনা কারণ ও আমাকে ভালোবাসে,,তুই ওর নামে মিথ্যা বলছিস
মেহেন্তাঃ একটা কথা কি জানিস,,একটা নারী অসহায় হলে কখনো তাকে সাহায্য করেনা
এই বলে মেহেন্তা আপু চলে গেলো আর আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
তানিশাঃ আমি জানি তুই মিথ্যা কথা বলছিস ও ওমন করতে পারেনা(মনে মনে)
আমি নিজের বাসায় চলে আসলাম কিন্তু কিছুতেই মেহেন্তা আপুর কথা ভুলতে পারছিনা।দরজা বন্ধ করে ভাবতে থাকলো তানিশা।
তানিশাঃ শুভ্র যদি মেহেন্তা আপুর সাথে ওইসব করবে তাহলে বিয়েতে কিডনাপ করে আমাকে বিয়ে করার কি দরকার।মেহেন্তা আপুকে বিয়ে করে তো সুখে সংসার করতে পারতো।নাহহ কিছু তো গোলমাল আছেই,,,উফফ কিছুই ভাবতে পারছিনা(মনে মনে)
এমন সময় তানিশার আম্মু দরজা নক করতে লাগলো।তানিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজা খুলে ফেললো।
তানিশাঃ কিছু বলবা
তানিশা আম্মুঃ তোর সাথে আমার কিছু দরকার ছিলো
এই বলে আম্মু আর আমি বেডে বসলাম।আম্মু আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলা শুরু করতে লাগলো
তানিশার আম্মুঃ এইভাবে তো জীবন চলেনা তানিশা।তোর তাজবিহা আপুর ভাই কাব্য,, ছেলেটা অনেক ভালো।কাব্য বিয়ের প্রস্তাব দিছে।আমি চায় তুই ঠান্ডা মাথায় ভেবে একটা সিন্ধ্যান্ত আমাকে বল
তানিশা কিছুক্ষণ চুপ থাকলো,,কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।
তানিশাঃ আমাকে সময় দাও
তানিশার আম্মুঃ আচ্ছা,,, তুই ভাব আমি তোর আব্বুর সাথে কথা বলে দেখি
এই বলে আম্মু চলে গেলো আর আমি যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
তানিশাঃ কতোটা সহজ তাইনা একজনকে ভুলে আরেকজনের সাথে সম্পর্কে জড়ানো,,
তানিশা চিন্তায় চিন্তায় মুখ চোখ শুকিয়ে গেছে,,,বারেবার একটা কথায় মাথায় আসছে " আমি প্রেগনেন্ট,,আর তার বাবা শুভ্র""
কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারছেনা,,
আমরা যাকে ভালোবাসি তার হাজার অপরাধ ও ক্ষমা করতে পারি তারপরও ভালোবেসেই যায়।আবার,,প্রথম তার ভুলগুলো বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হয় মনে হয় যেন বিষ পান করছি শরীরের ভেতরে জ্বলছে তবুও মরছিনা
রাতে,,,
শীতকালে শহরের মানুষেরা ভীড় থাকবেই,,,যেখানে গ্রামে রাত দশ'টা মানে অনেক রাত।ফোন বাজতে লাগলো অনেক দিন পর ফোনের রিংটন শুনতে পারলাম,, আগে তো দিনে দু-তিনবারও শুনেছি।
এসব ভাবনায় ফোন কেটে আবার ফোন আসলো বুঝলাম কোম্পানি দি নাই,,, বেলকনি থেকে নিজের রুমে গিয়ে ফোনেটা ধরলাম।স্কিনে কাব্য নামটা ভেসে উঠলো।রিসিভ করলাম
তানিশাঃ আসসালামু আলাইকুম
কাব্যঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম,,কেমন আছো
তানিশাঃ আলহামদুলিল্লাহ আপনি
কাব্যঃ ভালোই,,,
তানিশাঃ কিছু বলবেন
কাব্যঃ আন্টি কি কিছু বলেছে তোমাকে??
তানিশাঃ জ্বী
কাব্যঃ কাল দেখা করতে পারবা
তানিশাঃ কিন্তু কেনো
কাব্যঃ প্লিজ দেখা করো,, কিছু কথা আছে যা ফোনে বলা সম্ভব না
তানিশাঃ ভার্সিটি ছুটির পর,, ওকে
কাব্যঃ আচ্ছা
তানিশাঃ আল্লাহ হাফেজ
এই বলে তানিশা ফোন কেটে দিলো,,আবার আজব আজব চিন্তা করতে করতে ঘুমাই গেলো
অন্যদিকে,,
কাব্যঃ কালই আমি আমার মনের কথা বলবো তোমাকে,,,আমি তোমাকে নিজের করে নিবোই তানিশা(মনে মনে খুশি হয়ে)
সকালে,,
এই ভার্সিটিতে এসে আরও কয়েকজন আমার বেষ্টফ্রেন্ড হয়ে গেছে যার মধ্যে সবচেয়ে ক্লোজ দুইজন তিথি,,তনিমা দুইবোন,,, তারাও এতো ক্লোজ যে মনে হয় টুইস
তিথীঃ তানিশা তোর চোখমুখ শুকনো লাগছে কেনো
তানিশাঃ আসলে কাল রাতে ঘুম হয়নি তাই
তিথীঃ ওও
তনিমাঃ চল বাসায় যাবো,
তিথীঃ হুম চল,,,
তানিশাঃ তোরা যা আমার একজন আসবে পরে যাবো
তিথীঃ আচ্ছা বাই,,বাড়িতে গিয়ে কল দিস
তানিশাঃ আচ্ছা
তিথী তনিমা চলে গেলো,,ভার্সিটির গেটের কাছে যেতেই কাব্যকে দেখলাম দাড়িয়ে আছে।
কাব্যঃ তো কই যাবা বলো
তানিশাঃ মার্কেটে
কাব্যঃ ওকে চলো
কাব্য আর আমি মার্কেটে যেতে লাগলাম এখান থেকে জাস্ট কিছুদূর।
কথা বলতে বলতে হাফ পথ চলে আসলাম হঠাৎ কেউ যেন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো.......
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com