Breaking News

যদি দেখা না হতো । পর্ব - ০৬



কাব্য আর আমি মার্কেটে যেতে লাগলাম এখান থেকে জাস্ট কিছুদূর।

কথা বলতে বলতে হাফ পথ চলে আসলাম হঠাৎ কেউ যেন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো.......
তানিশা কোন রকম সরিয়ে শুভ্রকে দেখে কয়েক পা পিছিয়ে গেলো।
নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস ই করতে পারছেনা।
যে ছেলেটা মরে গেছে সে এখন তার সামনে,,,অপলক তাকিয়ে আছে দুজন দুজনের দিকে।
কাব্য ও শুভ্রকে দেখছে

তানিশা নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলো শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।
শুভ্রও জড়িয়ে আছে।দুজনের চোখ দিকে টপটপ করে পানি পরছে।
আর সেখানের সবাই শুভ্র আর তানিশার দিকে তাকিয়ে আছে
তানিশাঃ কি করেছো তুমি নিজের,,,কপালে বেন্ডেজ,,ট্রি-শার্টে রক্ত মাথা,,,
মুখের কয়েক অংশ রক্তে মাখা,,আর কই ছিলে তুমি(জড়িয়ে)
শুভ্রঃ সব বললবো,,অনেক কিছু বলার আছে তোমাকে তানিশা,,সব বলবো
কাব্যঃ তানিশা এ কি করছো তুমি,,,তুমি হয়তো শুভ্রের আসল রূপ ভুলে গেছো
হঠাৎ মেহেন্তা আপুর কথা মনে পরতেই নিজের থেকে এক ঝটকায় সরিয়ে দিলো শুভ্রকে।
তানিশা চোখ মুছে ফেললো,,

শুভ্রঃ আসল রূপ মানে??
তানিশাঃ আপনি খুব ভালো করেই জানেন
শুভ্রঃ সিরিয়াসলি আমি কিছু বুঝতে পারছিনা
তানিশাঃ মেহেন্তা আপুর বেবির বাবা কে??
শুভ্রঃ কেন কার সাথে ফস্টিনষ্টি করেছে সেই বাবা,আমি কি করে বল...
আর কিছু বলতে পারলো ঠাসস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো শুভ্রের গালে।
তানিশার নিজের কাছে নিজেরই ঘৃণা করছে কাকে ভালোবেসে ছিলো সে।
তানিশাঃ আপনি মেহেন্তা আপুর বেবির বাবা,,
লজ্জা করেনা একটা মেয়ের সর্বনাশ করে আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করে তাকে কষ্ট দিতে
এইবার শুভ্রের মাথায় রাগ চেপে গেলো,,এখনি মনে হয় তানিশাকে আছাড় মারবে এমন রাগ।
শুভ্রঃ মেহেন্তা কোথায় এখন
তানিশাঃ নিশ্চুপ
শুভ্রঃ আমাকে নিয়ে চলো মেহেন্তার কাছে আমি নিজের ভুল শিকার করে নিবো
তানিশাঃ তার মানে এগুলো সত্যি,,কেন শুভ্র কেন আমাকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট করলেন।
আপনাকে মেহেন্তা আপুর কাছে পৌছে অনেক দূরে চলে যাব আমি(মনে মনে) চলুন,,কাব্য আপনিও চলেন
কাব্যঃ আচ্ছা চলো

তিনজনে মিলে মেহেন্তা আপুর বাড়িতে গেলো।মেহেন্তা দরজা খুলে শুভ্রকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।
শুভ্রঃ তোমার বেবির বাবা আমি
মেহেন্তাঃ কেনো সব ভুলে গেলে,,আর তুমি আমার বোনকে বিয়ে করেছো কেন??
শুভ্রঃ ও আচ্ছা ঠিক আছে চলো আমরা নতুন জীবন শুরু করবো(মেহেন্তার হাত ধরে টানতে থাকে)
হাতটা ধরাতে তানিশা মোটেও খুশি হয়নি তাও সত্যিটাকে মানতেই হবে।
সব শেষ হলেও একদিক দিয়ে খুশি হলো তানিশা।।।।
মেহেন্তাঃ এই না না
তানিশাঃ কেনো আপু
শুভ্রঃ কি হলো চলো,,আমি তো তোমাকে মেনে নিচ্ছিই তো
মেহেন্তাঃ কাব্য এখনো তুমি চুপ করে থাকবে,,শুভ্রের মাথা খারাপ হয়ে গেছে,,
অনেক মিথ্যা হয়ছে,এখন অন্তত আমাদের বেবির কথা ভাবো
তানিশাঃ কি বলছিস কি আপু
কাব্যঃ হ্যা ক,,,কি বলছো মেহেন্তা

মেহেন্তাঃ এটাই সত্য তানিশা,,আমার পেটের বেবি শুভ্রের নয় কাব্যের,,
আমার পেটের বেবির কসম করে বলছি
তানিশাঃ Whattt,, তাহলে এতো মিথ্যা বললি কেনো(প্রচন্ড রেগে)
তানিশা এতোটায় রেগে গেছে আজ যদি মেহেন্তা প্রেগনেন্ট না থাকতো তাহলে মেরেই ফেলতো
তানিশাঃ আপু যা বলছে তা সত্যি মি. কাব্য
কাব্যঃ আসলে তানিশা আমার কথাটা শোন,,তোমার আপু আর শুভ্র প্লান করেই এসব
ঠাসসস করে একটা থাপ্পড় মারলো কাব্যকে।কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো,,,,
তানিশাঃ নিজে ভুল করে আমার স্বামীর ঘাড়ে দোষ চাপাতে ছিলেন লজ্জা করেনা।আমি শুভ্রকে ভুল বুঝলাম।।কেন করলেন বলুন
কাব্যঃ হ্যাঁ আমিই মিথ্যে বলেছি,,কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসতাম।
আমি সেই কাব্য স্কুল লাইফে আমরা বেষ্টফ্রেন্ড ছিলাম।
ছোটবেলায় আমি তোমাকে ভালোবাসতাম আজ তোমার আমার বিয়ে হতো কিন্তু
তার জায়গায় এই শুভ্র চলে আসলো যা আমি মানতে পারছিলাম না।
তানিশাঃ আপনি কাব্য মানে,,, কাব্য আহম্মেদ

কাব্যঃ হুম,,,জানো আমি বিদেশ চলে যাওয়ার পর তোমার সব খবর রাখতাম,,
কিন্তু মাঝে মেহেন্তা চলে আসে।পরে যখন তুমি মেহেন্তার বোন তখন মেহেন্তাকে
ব্যবহার তখন এন্টি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু এই শুভ্র তোমাকে বিয়ে করলো।
তখন থেকেই শুভ্রকে মেরে ফেলার জন্য জন্য অনেক চেষ্টা করি কিন্তু সফল হয়নি।
ও যখন বিদেশ চলে আসে মিথ্যে মামলায় ভাসিয়ে দিয়ে মেরে ফেলি কিন্তু ও মরিনি এটা
আমি জানতাম না।তোর ফুপ্পাকে খুন করে শুভ্রের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েদি।
তারপর থেকে তোমার সাথে যা যা হয়েছে আমার প্লান অনুযায়ী।
এমনকি আপুও আমাকে সাহায্য করে।শুধু একটা ভুল করে ফেলেছিলাম তা
হলো মেহেন্তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে।কিন্তু
শুভ্রঃ শেষ রক্ষা আর হলো না তাইতো
কাব্যের কথাবার্তা শুনে আমি মেহেন্তা আপু অবাক হয়ে রইলাম।
আমি যেন এবার সবোর্চ্চ শকড খাইলাম।শুধুমাএ আমার জন্য শুভ্রের এই অবস্থা

তানিশাঃ কি পেলেন এগুলো করে আমি কখনোই আপনাকে ভালোবাসতাম না
আর তখন আপনি আমার অনলি বেষ্টু ছিলেন কোন লাভার না।আর আমি শুধু
শুভ্রকে ভালোবাসি শুধু ওকেই ভালোবাসবো
কাব্যঃ আমার প্লান সাকসেসফুল হতো যদি আমি শুভ্রকে ঠিক মতো মেরে দিতাম
আর তুমিও আমার হতে
তানিশাঃ আপনার এটা ভালোবাসা নয় এটা মানসিক রোগ,,,আর আপু দেখ কি মানুষের
সাথে তুই রিলেশন করেছিস,,যে কিনা তোকে অনলি ব্যবহার করেছে
মেহেন্তা আপু মাথা নিচু করে থাকলো আর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে কাব্যকে ধরে নিয়ে গেলো।
তানিশাঃ শুভ্র
শুভ্র রাগ দেখিয়ে চলে গেলো ওখান থেকে,, তানিশা পিছু পিছু গেলো।
তানিশাঃ ইসস আমি কেন যে শুভ্রকে ভুল বুঝলাম,,,আজ আমার জন্য ওর ওই অবস্হা(মনে মনে)
সেদিনই শুভ্র নিজের বাড়িতে চলে আসলো তানিশার সাথে।ডাক্তার দেখানো হলো
ব্রেন্ডেজ করে দিলো আর মেডিসিন দিয়ে গেলো।
আমার বাড়িতে ধুম পরে গেলো সবাই দেখে দেখে যাচ্ছে শুভ্রকে।কিন্তু এ দুদিনে
বুঝলাম শুভ্র আমার সাথে কথা বলছেনা।সবাই চলে যাওয়ার পর আমি ওর খেয়াল রাখতে লাগলাম।।।।

একদিন এক রাতে,,
তানিশাঃ শুভ্র তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন??
শুভ্রঃ আমাকে অবিশ্বাস করার সময় মনে ছিলোনা।
কতো কষ্ট করে পালিয়ে এখানে এসেছি শুধু তোমাকে ভালোবাসি বলে।
যখন মাথায় আঘাত করে ওরা অজ্ঞানের আগে শুধু তোমার সাথে দেখা করার
জন্য মনে হয়েছিল শুধু বাঁচার ইচ্ছে করেছিলো কিন্তু এতো কষ্ট করে যখন তোমার কাছে
আসলাম আর তুমি ভুল বুঝলে এখন মনে হচ্ছে আমি মরে গেলে ভালো হতো
তানিশাঃ শুভ্রওওও,,,একবার আমার অবস্থার কথা ভেবে দেখছো না।
কি অবস্থা হয়েছিলো আমার,,,পুরো মানসিক রোগী হয়ে গেছিলাম।
তারপর তোমার এইসব কথা শুনার পর আর মাথায় কোন কাজ করছিলোনা শুভ্র (কাঁদতে কাঁদতে)
শুভ্রঃ আচ্ছা আর কাঁদতে হবেনা,,আজ থেকে আমরা নতুন ভাবে জীবন-যাপন করবো,,
সব নতুন করে শুরু করবো
তানিশাঃ হুম কিন্তু এবার তুমি আর কোন অনৈতিক কাজ করবা না প্রমিজ করো
শুভ্রঃ আচ্ছা প্রমিজ
তানিশাঃ ভালোবাসি তোমাকে
শুভ্রঃ আমিও ভালোবাসি আমার পাগলিটাকে(জড়িয়ে)

চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com