কালো ছেলে । পর্ব - ০৮
সানি আজ আকাশটা অনেক সুন্দর লাগছে।
== কি রে এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন?
== আজকে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
কথাটা হঠাৎই মুখ ফোসকে বেড়িয়ে পরল।
আমি লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে ফেললাম। রিহা আপু হেসে
বলল......
= = এতে লজ্জার কি আছে? তোরে আকাশ
দেখতে বলছি। আর আমার প্রশংসা করার জন্য ধন্যবাদ।
,
== আকাশ দেখে কি লাভ বলো যদি পাশে থাকে
পরী,
তোমার রুপে মুগ্ধ আমি এখন কি করি?
আকাশটাকে খুব মলিন লাগে তোমার রুপের কাছে।
তাকে কি আর মনে ধরে যদি পরী থাকে পাশে?
জ্যোৎস্নার আলো হার মেনেছে, চাঁদ লুকায়
মেঘে।
আমিও আজ হারিয়ে গিয়েছি তোমায় দেখে
দেখে। *
== ওয়াও, তুই তো সেই রোমান্টিক রে সানি। কবিতাটা
অনেক সুন্দর হইছে। তুইবকি কবিতা লিখিস?
== আরে না। কিভাবে যেন আজ মুখ থেকে
বেরিয়ে পরল।আজ আকাশটা সত্যিই সুন্দর।
জ্যোৎস্না রাত। হালকা সাদা মেঘের ভেলা ভেসে
বেরাচ্ছে। মেঘের সাথে চাঁদের লুকোচুরি
খেলা। খুব সুন্দর লাগছে।
,
এমন সময় রিহার ফ্রেন্ডরা আসলো। সাথে শাকিল।
,
== তুই এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছিস। কেক কাটবি
কখন?( এক বান্ধবী)
==তোরা যা। আমি আসছি।
আমি শাকিলকে বললাম হিয়াকে যেন থাকতে বলে।
শাকিল, রিহা,হিয়া আর আমি ছাড়া সবাই চলে গেল।
,
== হিয়া। এই হলো সানি। আগে আমাদের সাথে......
==পরিচয় করাতে হবে না। আমি চিনতে পারছি। (হিয়া)
== রিহা আপু,শাকিল আপনারা যান। আমরা আসছি।
== আচ্ছা। তারাতারি আসিস। এমনিতেই কিন্তু লেট হয়ে
গেছে।
,
রিহা আর শাকিল চলে গেল৷
== হিয়া আপু। আপনার মোন খারাপ?
== না। কেন বলুন তো?
== আপনি তো শাকিল ভাইয়ার সাথে রিলেশনে
আছে। তো ভালোবাসার মাঝে রাগ,অভিমান
থাকবেই। আপনার শরিরের কোনো অংশ কেটে
গেলে যেমন তা কেটে ফেলে না দিয়ে
ভালো করার জন্য ঔষধ খান। তেমনি ভালোবাসায় রাগা
রাগি হলে তা ভেংগে না ফেলে রাগ কমা পর্যন্ত
অপেক্ষা করুন। রাগের মাথায় মানুষ অনেক ভুল কাজ
করে। যার জন্য পরে তাকে পস্তাতে হয়।
আমাদের ছায়ার কথাই ধরুন। আমরা যত অভিমান রাগ করিই না
কেন সে সবসময় আমাদের পাশেই থাকে।
== সানি ভাইয়া। আধারে তো নিজের ছায়াও ছেড়ে
চলে যায়।
== না আপু, এটা ভুল। আধারে ছায়া শুধু মাত্র অদৃশ্য হয়ে
যায়। কিছুর আলো পড়লে আবার সে ফিরে আসে।
== হুম। কিছুর আলো পড়লে। তবুও একা আসে না।
== আপনিও সেই আলোটার অপেক্ষায় করুন।তাছাড়া
শাকিল ভাই অনেক ভাল ছেলে।
,
হিয়া চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
,
== চলুন নিচে যাই।
,
নিচে নেমে হিয়া চলে গেল কেকের দিকে।
সবাই দাঁড়িয়ে আছে। কেক কাটার জন্য।
হঠাৎ চেয়ে দেখি মামা, মামি,রিদয় ভাইয়া ও লিমা। অরা
এখানে?
আমি এক কোনে দাঁড়িয়ে রইলাম।
এই ড্রেসে সবার সামনে যাওয়া ঠিক হবে না। আর
পার্টিটাও নস্ট হয়ে যেতে পারে।
হঠাৎ দেখি রিহা আপু আমার দিকে আসছে।
,
== তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ওদিকে চল।
কেক কাটব।
== রিহা আপু ওনারা কে?( মামা মামিকে দেখিয়ে)
== আমি গিয়ে কি করবো। ওখানে অনেক লোক।
আপনি গিয়ে কেক কাটুন। আমি এখানে আছি।
== তুই না গেলে আমি কেক কাটব না।
,
কি আর করা। অগত্যা যেতেই হল। কিন্তু দাড়ালাম সবার
পিছনে।
কেক কাটা শেষ হলে সবাই কেক নিয়ে খাওয়া শুরু
করল।
আমি সেখান থেকে আবার ছাদে চলে যেতে
লাগলাম।
হঠাৎ কারও সাথে ধাক্কা।
চেয়ে দেখি আমার মামাতো ভাই।
,
== তুই এখানে কি করছিস রে ফকিন্নির বাচ্চা। ওহ, কেক
খেতে আসছিস? ভাত পাসনা আবার কেক খাবি।
তোকে ঢুকতে দিল কে রে?
== না ভাইয়া এমনি আসছি।
== চুপ। তুই আমার কিসের ভাই রে। তোর মত
ফকিন্নির পুত আমার ভাই হতে পারে না।
,
আমি আর কিছু না বলে ছাদে চলে এলাম।
আকাশটা আজকে খুব সুন্দর।
আম্মার কথা মনে হওয়ায় কাওকে কিছু না বলে চলে
বাসায় চলে এলাম।
,
== কি রে খাইয়া আইছস?
== হুম৷ তুমি খাইছো।
== হুম। এহন গিয়া পড়তে বস।
,
আমি পড়তে বসলাম।
কিন্ত্য খালি পেটে কি আর পড়া মাথায় ঢুকে।
পানি খেয়ে আপাতত পেটটাকে শান্ত করে আবার
পড়ায় লেগে পরলাম।
কিছুক্ষন পড়ে শুয়ে পরলাম।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রিহা আম্মার
সাথে গল্প করছে।
আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
রিহা আপু এতো সকালে?
রিহা আপু আমাকে দেখে বললেন.......
== রেডি হয়ে বাইরে আয়।
,
বলেই রিহা বাইরে চলে গেল।
আমি হাত মুখ ধুয়ে বাইরে এলাম।
রিহা আমার হাত ধরে টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে
এলো।
হাতটা ছেরে দিয়ে এমন একটা চড় মারল। যা খাওয়ার পর
আমার মাথায় চক্কর দেওয়া শুরু হল।
,
== ওই তোরে কাল আমাদের বাসা থেকে না
খেয়ে আসতে বলছিল কে?
আর রাতে না খেয়ে ছিলি কেন?
আসার আগে আমায় একবার জানিয়ে আসতে পারলি না?
==.....................
== কি রে কথা বল। আমি আগে ভুল করছি। তার জন্য
তোর কাছে আমি লজ্জিত। কিন্তু কাল তুই না খেয়ে কেন চলে আসলি?
,
বলে রিহা কান্না শুরু করে দিল।
আমি পরলাম বিপাকে।
রাস্তায় এভাবে বাচ্চারাও তো কান্না করে না।
আর ইনি তো দেখি তার থেকেও উলটা।
,
== আরে আপু কান্না করছেন কেন?
== তুই এখনও আমায় মাফ করতে পারিস নি। তাই কাল
অইভাবে চলে আসতে পারলি।
== আরে আপু এভাবে বলেন কেন?
== তুই আমায় আপু বলিস কেন?আর আমি তোর ক্লাস
মেট আপনি করে বলিস কেন?( কান্না করছে আর
বলছে)
== আচ্ছা আর আপু বলব না। এখন তো কান্না থামান৷
== চল আমার সাথে। এখনি। কোনো কথা বলবি না।
জানি তোর পড়া আছে।
তবুও কিছু বলবি না।
== আচ্ছা যাব। আগে বলেন কই?
== আমাদের বাসায়। সবাই কাল রাতে ছিল।এখন চল। গ্রুপ স্টাডি করব।
,
আমি আর রিহা আপু বাসায় এসে দেখি সবাই পড়ছে।
সব থেকে বড় কথা হল শাকিল আর হিয়াকে একসাথে
দেখে খুব ভালো লাগছে।
,
==অই তুই কাল রাতে কিছুই না বলে চলে গেলি
কেন?( শাকিল)
== সানি এটা কিন্তু আপনি ঠিক করেন নি।( হিয়া)
== আসলে আপু হঠাৎ করেই শরির খারাপ হওয়ায় চলে
গেছি। ( আমি)
== আচ্ছা বাদ দেন। আপনাকে অনেক অনেক
ধন্যবাদ আমার ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। ( হিয়া)
== এতে ধন্যবাদ কেন? ফ্রেন্ড হিসেবে এতটুকু আমার দায়িত্ব।
,
এরপর কিছুক্ষন গ্রুপ স্টাডিতে মনোযোগ দিলাম৷
হঠাৎ দেখি রিহা আপু আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে।
আমার সাথে চোখাচোখি হতেই লজ্জা পেয়ে
চোখ নামিয়ে ফেললেন?
ব্যপার কি!
*বুঝতে পারি না তোমার চোখের ভাষা।
কেন তাকাও তুমি নীল নয়না?
হারিয়ে যাই ওই চোখের চাহুনিতে।
অনুরোধ, আর তাকিয়ো না এভাবে.......
.
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com