ওসির অহংকারী মেয়ে । পর্ব -০৪
সবাই তো অবাক
সবাই মিলে ওকে মারতে এসে ওকে দেখে সবাই পালিয়ে গেলো,
কি হচ্ছে এই সব...
এই খ্যাত ছেলেটার পায়ে ধরে কেনে মাফ চাচ্ছে ওরা
ধুর মাথায় কাজ করছে না,
এদিকে ছেলেটা আকাশের পা ধরে পড়ে আছে,ভাই আপনার পায়ে ধরে মিনতি করছি,ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে মাফ করে দেন..?
আকাশ,এই পা ছেড়ে উঠে দাঁড়াও..?
ছেলেটা,ভাই আপনি আমায় মাফ না করলে আমি আপনার পা কখনো ছাড়বো না
আকাশ,এই তোকে উঠে দাঁড়াতে বলেছি না বলে গরম হয়ে যায়,
আরুর মাথায় যেন কিছুই কাজ করছে না,যেখানে সবাই ওকে অপমান করে সেখানে এই ছেলে আকাশের পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছে,মাথা ঠিক আছে নাকি এই ছেলের আল্লাহ জানে
কিন্তু বাকি ছেলে গুলো পালিয়ে গেলো কেন,একজনের মাথা খারাপ ধরে নেওয়া যায়,কিন্তু বাকি যারা ছিলো ওরা কেন পালিয়ে গেলো,আরুর কোনো ভাবেই হিসাব মিলছে না,তাহলে আকাশের কি অন্য কোনো পরিচয় আছে যেটা আমরা জানি না
আকাশকে নিয়ে হাজারো কৌতূহল মাথায় কাজ করছে,
ছেলেটা,মাটি থেকে উঠে দাঁড়ায়..
আকাশ,আজকের মত কিছু বললাম না
সব ছেড়ে ভালো হয়ে গিয়েছি,না হয় তোরা তো জানিস যে তোদের মৃতদেহ দেখে এত সময়ে মানুষের কান্নার রোল পড়ে যেতো
ভবিষ্যতে যদি এমন ভুল দেখি ঐদিন এই ভুবনে তোদের শেষ দিন হবে
ভালো থাক চললাম,এই আরু চলো বলে আরুকে নিয়ে শপিংমল থেকে বের হয়ে যায়,
সমস্ত কিছু যেন হেনার মাথার উপর দিয়ে গেলো
ছেলেটার ভয়ে এখনো হাত পা কাঁপতেছে,
হেনা,কি ভাই ওকে মারতে গিয়ে নিজেরাই ভয়ে কাবু হয়ে গেলেন..?
আপনারা চারজন আর ঐ খ্যাতটা একা ছিলো,তাও আপনারা ওকে মারতে পারলেন না,বাহ শুরুতে তো অনেক বীরবল দেখিয়েছেন..?
ছেলেটা,হেনার গালের মধ্যে কোষে একটা থাপ্পড় বসাই দেয়,
হেনা,থাপ্পড়ের টাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরের উপরে গিয়ে পড়ে,
এই মেয়ে তোর গুষ্টি মারি,আরেকটা শব্দ বের করবি মুখ দিয়ে তাহলে তোকে থাপড়াইতে থাপড়াইতে এখানেই মেরে ফেলবো,ফাজিল মেয়ে কোথাকার...
নিজের জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরেছি এতেই শুকরিয়া,এই
মেয়ে তুই জানিস এই ছেলে কে...?
বা কি তার পরিচয়..?
আমি কেন আমার মত একশত ছেলেপেলে আসলেও ওর শরীরের পশম পর্যন্ত বাকা করতে পারবো না,
আজকে তোর জন্য নিজের জীবনটা ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছিলাম
দোষ ভাইয়ের না দোষ তোর,তুই ইচ্ছা করে ভাইকে ধাক্কা দিয়েছিস,সোজা এখন এখান থেকে কেটে পর,না হয় আরেকবার যদি আমার চোখের সামনে পরিস,তাহলে তোকে খুন করে দিব..
হেনা,ভয়ে শপিংমল ছেড়ে বের হয়ে যায়,বান্ধবীদেরকে নিয়ে,
কিন্তু হেনা ভিতরে ভিতরে রাগে ফসফস করছে,একে তো শপিং করতে পারে নাই,দ্বিতীয় এই খ্যাত আকাশের জন্য অপরিচিত একটা ছেলের হাতে থাপ্পড় খেলো,
সব এই খ্যাত আকাশের দোষ,বেটাকে আমি ছাড়বো না,
তোর জন্য মার খেয়েছি তোর শেষ দেখেই ছাড়বো আমি,
আর সালা ফকিন্নির বাচ্চা কি বললো ওর মত একশত ছেলেপেলে আসলেও এই খ্যাতটার কিছু করতে পারবে না,
আরে একশত ছেলেপেলে কেন,খ্যাত টাকে আমি নিজেই সাইজ করবো,
অন্যদিকে আরু গাড়ি ড্রাইভ করছে আকাশ চুপচাপ বসে আছে,এমনিতে আরুর মাথায় তো আকাশকে নিয়ে হাজারো কৌতূহল,তার মধ্যে ছেলেটাকে বলা আকাশের শেষ কয়েকটা কথা তাকে আরো ভাবাচ্ছে,সে শিউর আকাশের কথা শুনে যে আকাশের কোন লুকানো অতিত আছে,
আকাশ,চুপচাপ গাড়িতে বসে আছে,মন মেজাজ একদম বিগড়ে আছে আকাশের,কচুপোড়া দুনিয়ায় মানুষ গুলো এত আজিব কেন,আমি ভালো থাকলে ওদের শরীরে এত জ্বালা করে কেন,যেখানেই যাই পিছনের অতিতের সাথে রিলেটিভ কোন কর্মকান্ড ঘটে যায়,আকাশের গালে আঙ্গুলের ছাপ বসে আছে,
আরু,গাড়ি ড্রাইভ করে আকাশের বাসার সামনে এনে আকাশকে
নামিয়ে দেয়,
আকাশ,গাড়ি থেকে নেমে আরু সাবধানে যেও,আর কোন সমস্যা হলে আমায় ফোন দিও বলে সে ঘরের দিকে হাটা দেয়,
আরু,আচ্ছা তুমিও ভালো থেকো
আকাশ,বাসার ভিতরে ঢুকবে আরু পিছন থেকে আবার ডাক দেয়,
এই আকাশ শুনো তো একটু..?
আকাশ,হা বলো..?
আরু,কাছে আসো...?
আকাশ,আরুর কাছে গিয়ে হা বলো...?
আরু,ঠুসস করে আকাশের গালে একটা কিস বসিয়ে দেয়
আকাশ,এই এই কি হলো এটা..?
আরু,কই কি হয়েছে...?
আরে এত চাপ নিচ্ছো কেন,বন্ধুকে ভালোবেসে দুই একটা পাপ্পি দেওয়াই যায়
আকাশ,আচ্ছা গেলাম,সে বাসার ভিতরে চলে আসে,আরু ও চলে যায়,
আকাশ,এসে দেখে পল্লব ও বাসায় নাই,সে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে পড়তে বসে,পল্লব একটু পরেই চলে আসে,
পল্লব,ভাই আপনার গায়ে নাকি কে হাত দিয়েছে..?
কিন্তু তাও নাকি আপনি তাঁদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন..
আকাশ,কিরে তুই কি করে জানলি..?
পল্লব,ভাই আমি আপনাকে নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসি,আপনার গায়ে হাত দিয়ে কি ভাবে বেঁচে যাবে,আপনার গায়ে হাত দিয়েছে আর আমি ওকে ছেড়ে দিব সেটা আপনার মনে হয়
বেটাদের কেচ্ছা-কাহিনী খতম
আকাশ,আরে তোরা কি কখনো মানুষ হবি না
তোদের নিয়ে আর পারি না,আমি যেই খানে কিছু করিনি সেই খানে তুই কেন উল্টো-পাল্টা করতে গেলি,
পল্লব,এটা তো কম ভাই আপনার গায়ে আঘাত করবে এমন জানতে পারলেও জীবন কেঁড়ে নিব
আকাশ,জানে ওদের যত মানা করুক কিন্তু কাজ হবে না,বেটাদের খেইল খতম করে দিয়েছে পল্লব
আচ্ছা আমার পড়তে হবে,তুই কোন কাজ থাকলে শেষ কর,
আকাশ পড়ায় মন দেয়,পড়া শেষ করে রাতের বেলায় খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,
কিন্তু অন্যদিকে হেনার চোখের ঘুম কেঁড়ে নিয়েছে আকাশ,ওকে আজ মাইর খাইয়েছে খ্যাতটা,কিন্তু একটা জিনিস মাথায় কাজ করছে না আকাশকে মারার পর সে কোন রিয়েক্ট করলো না,ছেলেটা দেখতে খ্যাত হলেও ওর মধ্যে ভালোকিছু গুন আছে
ধুর আমি ঐ খ্যাতটাকে নিয়ে কি সব উল্টা-পাল্টা চিন্তা ভাবনা করছি,
তবে খ্যাতটার কোন একটা দিক হেনাকে দূর্বল করে দিচ্ছে,আকাশকে সে কোন ভাবেই তার সৃতিশক্তি থেকে সরাতে পারছে না,
সকাল বেলায় আকাশ ঘুম থেকে উঠে কলেজে চলে যায়,
আরুও আজ আগেভাগে চলে আসে,তিশান ও আজ কলেজে এসেছে,তিশান আকাশের সাথে আরুকে দেখে তো অবাক,
আকাশ,তিশান আরু আমাদের বন্ধুত্বর মধ্যে নতুন জয়েন হয়েছে,
ক্লাস শুরু হতে আরো ৩০ মিনিট বাকি তাই সবাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে,
এমন সময় হেনা কলেজে আসে,এসেই দেখে তিনজন একসাথে বসে গল্প করছে,
হেনার কেন জানি একদম গা জ্বলে যাচ্ছে,বিশেষ করে আকাশের সাথে আরুকে দেখে,নাহ দাঁড়া তোদের ব্যবস্থা করছি,তোদের দুইটাকে আমি কখনোই একসাথে থাকতে দিব না,
ক্লাসের ঘন্টা পড়ে সবাই ক্লাসে চলে যায়,
আকাশ,আজ আবার সামনে বসেছে,স্যার এসে দেখে আকাশ কাপড় পালটেছে,যাক তাহলে এবার নতুন কাপড় কিনে পরিধান করেছো,তাই আর কিছু বললাম না,
হেনা,স্যার কিনেছে না কেউ ভিক্ষে দিয়েছে,এসব খ্যাত মার্কা ছেলেদের সামর্থ্য আছে নাকি নতুন কাপড় চোপড় কিনার
হেনার কথা শুনে ক্লাসের সবাই সজোড়ে হেসে দেয়,
স্যার,এই স্টপ স্টপ.. এটা ক্লাস কোন বিনোদনের কারখানা না,
স্যার,লেকচার দিতে শুরু করে,সবাই স্যারের কথার দিকে ফোকাস করে কিন্তু হেনা অন্যকিছু ভাবছে,আকাশকে সে শিক্ষা দিয়েই ছাড়বে,
কিন্তু কি ভাবে দিবে একটা বুদ্ধি আটে
হা পেয়েছি
এবার বেটা যাবি কই...
ক্লাস শেষ করে আকাশ তিশান আর আরু গাছ তলায় বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় হেনা আকাশকে ডাক দেয়..
আকাশ,শুনেও না শুনার ভান করে আছে,
হেনা,আকাশের কাছে গিয়ে এই আকাশ শুনো তো একটু..?
তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে...
আরু,এউ আকাশ তুই যাবি না,তোকে আবার অপমান করবে..
আকাশ,সরি আপনার সাথে আমার কোন কথা নাই আপনি যেতে পারেন,
হেনা,প্লিজ শুনো যাস্ট দুই মিনিট কথা বলবো খুব দরকার
আকাশ,নাহ বলেছি না আপনার সাথে আমার কোন কথা নাই,
আপনি যান এখান থেকে,
হেনা,প্লিজজজজজ একটু কথা শুনো না
আকাশ,আচ্ছা আরু তোমরা দাঁড়াও কি বলে শুনে আসি,এত করে রিকোয়েস্ট করছে
আরু,আমি শিউর আবার অপমান করবে
আকাশ,আরে অপমান করলে করুক আমার সয়ে গেছে,
তারপর সে হেনার কাছে যায়,জ্বি কি জন্য ডেকেছেন এবার বলেন..?
হেনা,আসলে আকাশ সরি কালকের বিষয়টার জন্য,শুধু কালকের না আগের সমস্ত খারাপ ব্যবহারের জন্য সরি
আকাশ,আরে আরে কি করছেন পাগল হয়ে গেছেন নাকি,
আপনি কোথায় আর আমি কোথায়,আপনি হচ্ছেন ওসির মেয়ে,আর আমি হচ্ছি কোথায় একটা খ্যাত মার্কা ছেলে,আমার কাছ থেকে মাফ চাওয়া আপনার মানায় নাকি
হেনা,আকাশ জানি তুমি আমার উপরে এখনো রেগে আছো
প্লিজ মাফ করে দাও..?
তোমায় আর কখনো খ্যাত বলবো না
আকাশ,আচ্ছা যান মাফ করে দিয়েছি,এবার ভালো থাকেন বলে চলে আসতে ধরছে এমন সময় হেনা আবার ডাক দেয়,
হেনা,এই আকাশ দাঁড়াও..?
আকাশ,আবার কি..?
হেনা,এত তাড়াহুড়ো কেন তোমার হা,একটু কথা বললে কি হয় আমার সাথে..?
আকাশ,আরে আজিব তো কি বলবো আপনার সাথে,মাফ চাইতে এসেছেন কাজ শেষ,এরপর আর কি কথা থাকতে পারে
হেনা,প্লিজ আমি তোমার বন্ধু হতে চাই
আমাকে তোমাদের বন্ধুত্বের মধ্যে শামিল করে নাও..
আকাশ,আচ্ছা আপনি আসলে কোন মতলব নিয়ে এসেছেন বলেন তো,শুরুতে মাফ চাইলেন এখন বলছেন বন্ধু হতে চান,আসলে ঘটনাটা কি..?
এক রাতের মধ্যে কি এমন পরিবর্তন হয়ে গেলো যে আমার মত খ্যাতের সাথে ভালো ব্যবহার করছেন..?
হেনা,কি, কি, কি,কিসের মতলব থাকবে,আমার কোম মতলব নেই,আমি তোমার বন্ধু হতে চাই
আকাশ,ধুর আপনার সাথে কথা বলাই বেকার,আপনাকে বন্ধু বানানো ইম্পসিবল কখনোই না,আমার মাথা খারাপ হয়নি যে আপনাকে বন্ধু বানাতে যাবো,আকাশ হেনাকে রেখে তিশানদের কাছে চলে আসে,হেনাও আকাশের পিছনে পিছনে আসে,
হেনা,এই আরু আমি তোমাদের বন্ধু হতে চাই
আকাশকে বলেছি সে আমাকে বন্ধু বানাতে রাজি হচ্ছে না,প্লিজ তোমরা আমাকে বন্ধু বানিয়ে নাও...?
আরু,সরি হেনা মাফ করো
আমাদের আর কোন বন্ধুর দরকার নাই,এই আকাশ চল তো বাসায় চলে যাবো,যত্তসব পাগল ছাগলের কারখানা,
অপমান করে আসছে বন্ধু বানাইতে
হেনাকে পাত্তা না দিয়ে যে যার মতন বাসায় চলে আসে,
হেনা তো রেগে মেগে শেষ,সালা ছোটলোকের বাচ্চাগুলা আমার বন্ধুত্বকে ঠুকরে দেয়,তোদের সব কয়টাকে আমি দেখে ছাড়বো,বন্ধু তো আমি হবোই, আর খ্যাত টাকে শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো,
আকাশ,বাসায় এসে পড়ে,বাসায় এসে যখন দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে তখন দেখতে পায় পুরো ফ্লোর রক্তে লাল হয়ে আছে,আর একটা হাত কব্জি থেকে কাটা ফ্লোরে পড়ে আছে,
এটা দেখে তো আকাশের হুশ এই উড়ে গেছে,আল্লাহ পল্লব এর কিছু...
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com