গল্প : গ্রামের ছেলে । পর্ব - ১১
বাবাও অনেক খুশি। সবাই যার যার ঘরে চলে গেল।
আমিও ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলাম কারন খুব সকালে উঠে একটু কাজ করতে হবে।
সেতুর সাথে মেছেজ এ কথা হয়েছিলে। ফাহমিদা মেছেজ দিয়েছিল
কিন্তু কোনো রিপলে দেই নাই। আর ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে উঠে কাজে গেলাম। অনেক রোদ উঠছে।
বিকাল পর্যন্ত কাজ করতে হবে। আমি আসছি বলে কাজের জন্য কামলা নেই নি।
নেওয়ার বা কী দরকার আমি তো কাজের ক্ষেএেও অনেক ভালো।
বাড়ি থেকে দুই মাইল এর মতো দূরে। না খেয়ে কাজ করতে গেছি।
ওবশ্য না খেয়ে কাজ করার অব্যাস আছে।
আম্মূকে বলে গিয়েছি এগারোটার সময় ভাত দিয়ে আসার জন্য।
অতিরিক্ত রোদের কারনে কাজ করা এগুচ্ছে না।
তাও কাজ করতেই আছি।
সেতু : আনটি শুভ আঙ্কেল ওরা কখন আসবে।
আম্মু : ওরা আসবে তো তিনটার ঐদিক। এর আগে আসবে না।
সেতু : এতক্ষন কী ওরা না খেয়ে থাকবে নাকী। ইর এত রোদ উঠছে।
শুভ এর মনে হয় অনেক কষ্ট হচ্ছে।
আম্মু : আমার ছেলেকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
সেতু : কিছুদিন পর একেবারে আপন বানিয়ে নিব।
আম্মু : কীছু বললা তুমি।
আর না খেয়ে কাজ করবে না এগারো টার ঐদিক ছিনহা এর কাছে ভাত পাঠিয়ে দিব।
সেতু : আনটি আপনার একটা শারী দিয়েন তো আমি পড়ব।
আম্মু : শাড়ি পরে কই যাবা
সেতু : আমিও যাব ছিনহা এর সাথে। শুভ আঙ্কেল কে ভাত খাওয়াতে
আম্মু : ওমা বলে কী। ডাল মে কুচ তো কালা হে।
সেতু : বুঝলাম না আনটি।
আম্মু : তুমি বুঝে কী করবা। আমি তো সবি বুঝতে পারছি।
সেতু : কী বুঝতে পারছেন আনটি
আম্মু : আনটি বলা বাদ দিয়ে আম্মু বললেই তো হয়। কিছুদিন পর তো আম্মুই বলা লাগবে।
সেতু সরম পেয়ে চুপ করে আছে।
আম্মু : ওত সরম পাওয়া লাগবে নাহ। চল ঘরে যাই। শাড়ি বের করে দেই পর।
সেতু : ঠিক আছে
এদিকে ফাহমিদা অসুস্থ হয়ে পরেছে হঠাৎ করেই।
জ্বর এসেছে। সকালে তো কথাই হয় নাই।
শাড়ি পরে ভাত পাঠিয়ে দিল।
আম্মু ফাহমিদা কে বলেছিল আসতে কিন্তূ ফাহমিদা শরীর টা অনেক খারাপ তাই আসেনি।
রৌদ্রের ভিতর সেতু খাবার নিয়ে গেছে।
আমার তো প্রচুর ক্ষুদাও লাগছে তাই একটু তারতারি খাবার খেতে চলে আসলাম।
অবশ্য আব্বু একটু পরে আসবে।
আমি এসে সেতুর দিকে আপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি।
সেতু : ঐরকম করে কী দেখ
আমি : তোমাকে আজকে এই শাড়িতে অনেক অনেক সুন্দর লাগছে।
রৌদ্রের ভিতর আসার কারনে মূখটা লাল হয়ে গেছে । অনেক সুন্দর তো তাই।
আর আমি হলাম শ্যামলা রৌদ্রের কারনে কালো হয়ে গেছী।
আব্বু পরে যাওয়ার কারনে সেতু তার আচল দিয়ে মুখটা মূছে দিল।
আমি : বউ হওয়ার আগেই এতো আদর।
আব্বু : আরে সেতু মা রৌদ্রের ভিতর তুমি আসছো কেন।
তুমি শহরে বড় হয়েছো এত রোদ সৈর্য্য করতে পারবে নাহ।
সেতু : ঐরকম ভাবে বলছেন কেন?
খাবার খাওয়া শেষ হলে। সেতু ওরা চলে আসল। আবার কাজ করা শুরু করলাম।
কাজ শেষ করে বাড়িতে এসে দেখি ফাহমিদা শরীর ক্রমাগত খারাপের দিক যাচ্ছে।
মামা মামিকে খবর দেওয়া হয়েছে।
আমি ফ্রেস হয়ে ফাহমিদা এর পাশে বসে আছি। সেতুও বসে আছি।
ফাহমিদা : আমি তোকে অনেক ভালোবাসি।
যখন থেকে ভালোবাসা বুঝেছি তখন থেকেই তোমাকে ভালোবাসি।
কিন্তূ বলা হয়ে উঠেনি। আর এমন সময় বললাম যে যে সময় তোমাকে পাব না।
আমার মাথাটা একটু তোমার কাছে রাখতে দেও।
আমি : তুমি এরকম ভাবে বলছ
এতক্ষণে নানীর বাড়ির সব মানুষ এসে পরেছে।
ফাহমিদা : আমি আর বাচব না। আমার ক্যাস্নার হয়েছে।
আমি : কী বলছ এসব। আর মামা মামি জানে ক্যান্সার এর কথা
ফাহমিদা : হুম সবাই জানে।
আমি যেদিন তোমাদের বাড়ি এসেছি সেদিনি ডাক্তার কাছে থেকে
মেয়াদ নিয়ে এসেছিলাম এই কয়দিন বাচবো।
আম্মু আব্বুকে বলেছিলাম তোমাকে ভালোবাসি তারা মেনেও নিয়েছিল।
কিন্তু আফছোস অল্লাহ তোমাকে আমার কপালে রাখে নাই।
আর জীবনের শেষ মূহুর্ত গুলো তোমার সাথে কাটিয়ে গেলাম।
আর সেতু শুভকে অনেক ভালোবেসো ওকে যেন কষ্ট দেও না কোনো দিন।
ওহ অনেক ভালো
শুভ আমার কপালে একটা চুমু দেও না দয়া করে।
আমি :এসব কথা বন্ধ কর আল্লাহ্ এর নাম নেও।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com