Breaking News

বখাটে ছেলে আর রাগী মেয়ের প্রেম কাহিনী । পর্ব -০৪



উপহার টা হলো আপনি আর কখনো সিগারেট খাবেন না।

নিজের ভবিষ্যৎ টা কে সুন্দর করে সাজাবেন।

এটাই হবে আপনার কাছে পাওয়া আমার সব চেয়ে ভালো উপহার।......(অবন্তিকা)

এ মা ছেমড়ি কয় কি।
আমি তো কিছুই বুঝতাছি না।অবন্তিকা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
ইসসসস হাসলে অবন্তিকা কে হেব্বি লাগে।এটা তো আগে খেয়াল করি নাই।
এমন সময় আমার মা আসলো।
----আরে তুমি রফিক ভাই এর মেয়ে না।......(মা)
----জি আন্টি।......(অবন্তিকা)
অবন্তিকা এবার আমার মা কে সালাম করতে গেলো।
---থাক থাক মা।কত বড় হয়ে গেছো।.......(মা)
আমি মনে মনে বলছি। হ মা ঐ মেয়েটার বড় হয়ে যাওয়া টাই তোমার চোখে পড়লো আমি ও যে বড় হয়ে গেছি এটা তোমার চোখে পড়েনা😜😜😜😜
----আন্টি কাল আমার জন্ম দিন আপনি আর আংকেল অবশ্যই যাবেন কিন্তু।.....(অবন্তিকা)
---না মা আমরা মনে হয় যেতে পারবো না।..... (মা)
----ওওও তো আজ আসি আন্টি।.....(অবন্তিকা)
----কি বলো মা খালি মুখেই চলে যাবে নাকি।.....(মা)
---না আন্টি কিছু খাবো না আজ।অন্য দিন এসে খাবো।......(অবন্তিকা)
----ওও।..... (মা)
এবার অবন্তিকা আমাকে ইশারা করে বললো।
----এই আপনি আমার সাথে চলেন তো।....(অবন্তিকা)
----কোথাই যাবো।.....(আমি)
---আপনার বন্ধুদের কাছে।তাদের কে দাওয়াত দিতে হবেনা।.....(অবন্তিকা)
হায় হায় আমি যদি এখন অবন্তিকার সাথে আমার বন্ধুদের কাছে যায়।আর তারা যদি অবন্তিকা আর আমায় এক সাথে দেখে তাহলে সালারা আমার ইজ্জত মাইরালাবো।সালারা এমনি তেই আমারে সন্দেহ করে।
---ওকে চলেন।.....(আমি)
এই বলে আমি অবন্তিকা কে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।
আমি অবন্তিকা কে নিয়ে আমরা যেখানে প্রতিদিন আড্ডা দেই সেখানে গেলাম।আমাকে আর অবন্তিকা কে এক সাথে দেখে তারা আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমি মনে মনে বলছি, আল্লাহ তুমি আবিরের মুখ টা বন্ধ রাখো।এই আবির সালার কোনো কথাই মুখে আটকায় না।
.
আমি আর অবন্তিকা তাদের কাছে গেলাম।
----আপনারা কেমন আছেন।.....(অবন্তিকা)
অবন্তিকার এই কথা শুনে সব কয় টা এক সাথে বলে উঠলো
----জি ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন।
---হুম ভালো।কাল আমার জন্ম দিন আপনারা সবাই কাল আমার বাসাই আসবেন কিন্তু।.....(অবন্তিকা)
অবন্তিকার এই কথা শুনে আবির লাফ দিয়ে বলে উঠলো।
----আরে আমাদের ভাবির জন্ম দিন আর আমরা যাবো না এটা কি হয়।......(আবির)
ইসসসসসসসসসসস
যা ভাবছিলাম সালা তাই করলো।সালার মুখে কোনো কিছু আটকায় না।অবন্তিকা যে রাগী আজ মনে হয় আবিরের বারো টা বাজাবে।এবার বুঝবা মনো কত ধানে কত চাল।
এ মা আমি কি দেখছি এটা😱

আবিরের কথা শুনে অবন্তিকা মিটি মিটি হাসতাছে।
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা।
-----ওকে কাল কিন্তু অবশ্যই আসবেন।....(অবন্তিকা)
এই বলে অবন্তিকা মুচকি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো।
অবন্তিকা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আমার বন্ধুরা সব আমার দিকে কি রকম অদ্ভুত ভাবে তাকাতে লাগলো।
আর আবির বলে উঠলো।
-----দুস্ত পার্টি দিবা কিন্তু আজ।....... (আবির) সালা কয় কি

----ঐ কিসের পার্টি।....(আমি)
---ওওওও মা কিছুই বুঝনা।.....(আবির)
--- হ বুঝিনা।ঐ অবন্তিকার সামনে ঐ টা কি বললি।.....(আমি)
---কয় কি বললাম।.....(আবির)
-----ঐ অবন্তিকা তর কোন কালের ভাবি।......(আমি)
----তোমার সাথে অবন্তিকার ইয়ে হলে তো সে আমাদের ভাবি ই হবে তাই না।.....(আবির)
----ঐ ইয়ে মানে কি।....(আমি)
---কেন কিছুই বুঝনা।ফিডার খাও নাকি।.....(আবির)
---এই দেখ তুই কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছিস।ঐ অবন্তিকার সামনে ভাবি বললি সে যদি কিছু মনে করতো।.....(আমি)
---কি মনে করবে।আর যখন ভাবি ডাকলাম তখন অবন্তিকা কি হাসি টা দিয়েছে খেয়াল করছিস।......(আবির)
---আমার খেয়াল করার দরকার নাই।.....(আমি)
---দুস্ত আর যাই হোক অবন্তিকা ভাবি টা কিন্তু দেখতে সেই।....(আবির)
---দেখ তুই কিন্তু ইচ্ছা মতো কেলানি খাবি আমার হাতে।......(আমি)
---না দুস্ত আমার পেট ভরা সকাল বেলা ইচ্ছা মতো বাবার বকা খাইয়া আসছি আর কিছু দিস না তুই।.....(আবির)
উফফফফফ আবিরের কথা শুনে মন টা চাইতাছে নিজের মাথা নিজেই ফাটিয়ে ফেলি।
----তরা যা ভাবছিস আসলে তা না।.....(আমি)
---দুস্ত তুই আর অবন্তিকা যখন এক সাথে আসলি এখানে তদের দুজন কে হেব্বি লাগছিলো।......(আবির)
---থাম ভাই তুই✋✋✋।....(আমি)
---দুস্ত অবন্তিকা কিন্তু তর প্রেমে পড়ে গেছে।দুস্ত কাল তার জন্ম দিন এ তাকে প্রপোজ করে দে।.....(আবির)
---এই তুই পাগল হয়ছিস। আমি কি তাকে ভালবাসি যে তাকে প্রপোজ করবো।....(আবির)
---আমার তো মনে হয় তুই ও তার প্রেমআবিে পড়ে গেছিস।....(আবির)
----তর তো কত কিছুই মনে হয়।.....(আমি)
---দুস্ত তদের দুইজন কে এক সাথে কিন্তু সেই মানাবে।.....(আবির)
----ধ্যাত্তোরি,তরা থাক আমি গেলাম।......(আমি)
--হ যা আর কাল অবন্তিকা কে কি গিফট দিবি।.....(আবির)
---ঐ ছেরি যে গিফট চাইছে সেটা দেওয়া সম্ভব না।.......(আমি)
----কি গিফট।...... (আবির)
---আমাকে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিতে বলেছে।আমি যদি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেই এটাই নাকি তার কাছে আমার দেয়া সব চেয়ে দামি উপহার হবে।.....(আমি)
---আরে তাইলে ছাইড়া দে।......(আবির)
---আরে এটা সম্ভব না।.....(আমি)
---আরে বেডা সব সম্ভব।আমারে যদি অবন্তিকার মতো কেউ এমন বলতো তাইলে আমি সব ছাইড়া দিতাম।......(আবির)
----ধুর থাক তরা।.....(আমি)
এই বলে আমি চলে আসলাম বাসায়।
আমি রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে আছি।
.
ঘুমানোর চেষ্টা করছি।হঠাৎ করেই আমার সামনে অবন্তিকার সেই হাসি মাখা মুখ টা ভেসে উঠলো।
এএএএ মা এই টা কি হয়তাছে।আমি কিছুতেই ঘুমাতে পারছিনা।
যখন ই ঘুমানোর জন্য চোখ টা বন্ধ করি তখন ই অবন্তিকার ঐ হাসি মাখা মুখ টা
 আমার চোখে ভেসে উঠে।কিছু তেই ঘুম আসছে না।
সালা আবির এর খবর আছে।এই সালায় বার বার অবন্তিকার কথা বলে বলে 
আমার ভিতরে একটা ফিলিংস তৈরি করে দিছে।
আজ আমার এমন হচ্ছে কেন।আমি ঘুমাতেই পারছিনা।
এই আমি তো আবার অবন্তিকার প্রেমে পড়ে যাচ্ছিনা।
আমি মনে মনে বলছি,কন্ট্রোল হৃদয় কন্ট্রোল কোনো ভাবেই অবন্তিকার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়া যাবে না।
.
বার বার শুধু অবন্তিকার চিন্তায় মাথাই আসতাছে।
আমি যতবার ই চেষ্টা করছি অবন্তিকার চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলতে,
তত বার ই আরো নতুন নতুন চিন্তা এসে যাচ্ছে মাথাই।
আমি এসব ভাবতে ভাবতে যে কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না।
সকাল প্রায় ৭ টা।
কিন্তু কিসের জন্য যে আজ আমার এতো তাড়াতাড়ি আমার ঘুম ভেঙে গেলো 
আমি নিজেও জানি।রাতেও ঠিক মতো ঘুম হয়নি।চোখ টা ফুলে আছে।
১০ টাই আমি আমি বাসা থেকে বের হলাম।চায়ের দোকানে গেলাম।
চায়ের দোকানে গেলাম আর যেয়েই দেখলাম আবির বসে আছে।
আমাকে দেখেই আবির বলে উঠলো।
----কি রে দুস্ত রাতে ভাবির কথা চিন্তা করে কি ঘুম হয় নাই নাকি ঠিক মতো।
চোখ মুখ যে ফুলে আছে।......(আবির)
উফফফফফ আমি চেষ্টা করতাছি অবন্তিকার চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে।
কিন্তু এই সালা বার বার অবন্তিকার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
----এই তরে কে বলছে রে।.....(আমি)
----দুস্ত আমি সব বুঝি।.....(আবির)
মিথ্যা বলে আর লাভ কি আবির তো ঠিক কথায় বলছে।
ঐ ছেমরির কথা ভেবেই তো আমার রাতে ঘুম হয়নাই।
-----হ বুঝছো ভালো হয়ছে।.....(আমি)
---দুস্ত আজ কি উপহার নিয়ে যাবি অবন্তিকার জন্য।.....(আবির)
---কি আর নিবো একটা চকলেট বক্স নিয়ে যাবো।......(আমি)
---দুস্ত একটা তাজমহল কিনে নিয়ে যা।
শাহজাহান যেমন মমতাজ কে ভালবেসে তাজ মহল উপহার দিয়েছিলো।
তুই তো আর পারবিনা ঐ রকম তাজমহল দিতে।
তাই বাজার থেকে একটা তাজমহল কিনে এনে অবন্তিকা কে দে।.....(আবির)
---এই তুই কিন্তু বেশি কথা বলিস।.....(আমি)
----হু বলি ই তো।আমি না বললে কে বলবে।.....(আবির)
---তর মুখে অবন্তিকার ব্যাপার ছাড়া আর কোনো কথা নাই।.....(আমি)
----না নাই।......(আবির)
----থাক তুই আমি গেলাম।.....(আমি)
---দুস্ত তুই আজ ঐ নীল পাঞ্জাবি টা পরে যাস।তাহলে ভাবি তরে দেইখা ক্রাস খাইবো।...... (আবির)
উফফফফ এই সালা তো অবন্তিকার ভুত টা মাথায় আরো চাপিয়ে দিচ্ছে।
---পারবোনা।....(আমি)
এই বলে আমি বাসা তে চলে আসলাম।
দেখতে দেখতে প্রায় রাত ৯ টা বেজে গেলো।অবন্তিকা তো তার জন্ম দিনের কেক কাটবে রাত ১২ টাই।আমি অবন্তিকার বাসাতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম এমন সময় আবিরের ফোন আসলো।আমি ফোন টা রিসিভ করতেই আবির বলে উঠলো।
---কি রে দুস্ত তাড়াতাড়ি আয়।.....(আবির)
---যাইতাছি।....(আমি)
---হ চায়ের দোকানে আয় আমরা সবাই সেখানেই আছি।.....(আবির)
এই বলে আবির ফোন কেটে দিলো।
আমি চকলেট এর বক্স টা নিয়ে বাসা থেকে বেড় হয়ে চায়ের দোকানে গেলাম।তারপর আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে অবন্তিকা দের বাসাতে গেলাম। বাসা তে যেয়ে দেখতে পেলাম অবন্তিকার আরো অনেক ফ্রেন্ড আসছে। অবন্তিকা আজ অনেক সুন্দর করে সেজেছে।আমি চোখ সরাতেই পারছিনা তার দিক থেকে।আমার এই অবস্থা দেখে আবির বলে উঠলো।
---দুস্ত ভাবিরে দেইখা ক্রাস খাইলা নাকি।.....(আবির)
---না।.....(আমি)
---যেভাবে তাকিয়ে আছো মনে হচ্ছে তো ক্রাশ খাইছো।.....(আবির)
এমন সময় অবন্তিকা আমাদের দেখে এগিয়ে আসলো।
----এতক্ষনে আসার সময় হলো আপনাদের।.....(অবন্তিকা)
----কেন আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছিলেন নাকি।......(আবির)
---হুম করছিলাম ই তো সেই কখন থেকে।....(অবন্তিকা)
----ওও আমাদের সবার জন্য তো অপেক্ষা করেন নাই।অপেক্ষা করছেন তো শুধু এক জনের জন্য।(আমাকে ইশারা করে)।......(আবির)
আবিরের এই কথা শুনে অবন্তিকা হেসে হেসে বলতে লাগলো।
---কি যে বলেন না আপনি।.....(অবন্তিকা)
---আমি ঠিক ই বলি।.....(আবির)
মন টা চাইতাছে এই আবির রে ধইরা আমি ইচ্ছা মতো কেলানি দেই।
আমি এবার অবন্তিকার হাতে চকলেট এর বক্স টা দিয়ে বললাম।
---এই নেন আপনার জন্য সামান্য একটা উপহার।......(আমি)
অবন্তিকা চকলেট এর বক্স টা আমার হাত থেকে নিয়ে বলতে লাগলো।
----এই উপহার না দিলেও হতো।আমি যে উপহার টা আপনার কাছে চেয়েছি সেটা পেলেই আমি খুশি হবো।আপনার সেই উপহার টাই হবে আমার জন্ম দিনের পাওয়া সব চেয়ে সেরা উপহার।.....(অবন্তিকা)
উফফফফ, আমি কি যে বলবো বুঝতে পারছিনা।আরে সিগারেট খাওয়া ছাড়বো কিভাবে।
কেক কাটার সময় হয়ে গেছে।অবন্তিকা তার জন্ম দিনের কেক কাটলো।
রাত ২ টাই আমরা সবাই চলে আসলাম অবন্তিকার বাসা থেকে।আজ অবন্তিকা বার বার আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকাচ্ছিলো।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com