ওসির অহংকারী মেয়ে । পর্ব -০৭
ছেলে দুইটা আকাশকে তুলে নিয়ে যায়,ভাই ধরেন এই যে মাল টারে তুইলা নিয়া আসছি,লিডার ওর্ডার করে সবাই ইচ্ছা তরফে মার ওরে,মারতে মারতে মেরেই ফেলবি একদম,সবাই আকাশকে মারতে শুরু করে,
আরু,কান্না করতেছে আকাশকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য,
কিন্তু কেউ শুনছে না ওর কথা,
অন্যদিকে হেনা তো সেই মজা পাচ্ছে,বেটা তুই আমার
না হলে কারোর হতে দিব না,
আকাশের,নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়তেছে,লিডারটা দৌড়ে এসে আকাশের পায়ে পড়ে যায়,ভাই আমাকে মাফ করে দিন,ভাই বিশ্বাস করেন এটা যে আপনি আমি কখনোই জানতাম না,আমার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে,আপনার পায়ে পড়ি ভাই এবারের মত ক্ষমা করে দিন,আমি জানি একটু পর হয়তো আমার লাশ পড়ে থাকবে কলেজের মাটিতে,কিন্তু ভাই বিশ্বাস করেন আমি না জেনে ভুল করেছি..
সবাই তো অবাক,কি হচ্ছে এই সব....
আকাশ,তো হিংস্র পশুর মত হয়ে গেছে,এমন সময় মুন্না আর পল্লব কোথা থেকে যেনো হুট করে চলে আসে,সাথে আরো বিশাল একটা গ্যাং,
আকাশ,পা টা সরিয়ে নিয়ে মুন্নাকে ডাক দেয়,এই মুন্না হকি টা দে..?
মুন্না,গাড়ি থেকে হকিটা বের করে আকাশের হাতে দেয়,
আকাশ তো এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে,যারা যারা আকাশকে মেরেছে সব কয়টাকে মেরে মাটিতে শুইয়ে দিয়েছে,
মুন্না দৌড়ে এসে রকির থোবড়া বরাবর সজোড়ে একটা লাথি মারে,
কুত্তার বাচ্চা তোর কত বড় সাহস,তুই আমার ভাইয়ের গায়ে হাত দিস?
তুই শহরের মাস্তান হয়েছিস তো কি হয়েছে,ভাই কে সেটা কি তুই ভুলে গেছিস..?
আজ ভাই ভালো হয়ে গেছে সব ছেড়ে ছুড়ে,তাই বলে তোরাও সুযোগটা কাজে লাগালি...?
হেনার তো চোখ বড় বড় হয়ে আছে,কি হচ্ছে কিছুই তার মাথার ভিতরে ঢুকছে না,কিসের ভাই এর কথা বলছে ওরা,আর আকাশ মাহমুদ আসলেই কে,হাজারটা প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে,কলেজের সবার তো হুঁশ এই উড়ে গেছে,কারন যেই ছেলেকে সবাই খ্যাত ছোটলোক বলে টিটকারি করতো তাকে সবাই ভাই ভাই করছে কেন,আর লিডারটা ওর পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছে কেন,
আকাশ,এই মুন্না ছেড়ে দে রকিকে,মুন্না তো পাগল হয়ে গেছে পুরা,যে আকাশ ভাইয়ের গায়ে এই দুই টাকার রকি মাস্তান হাত দিয়েছে,
মুন্না তো কোন মতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছে না,তাও আকাশের কথায় সে শান্ত হয়ে যায়,
আকাশ,এই রকি তোকে কে কন্টাক্ট দিয়েছে..?
রকি,ভাই আপনার কলেজের এই একটা মেয়ে,
আকাশ,ওকে বুঝেছি আমি...
রকি,ভাই আপনার পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছি আপনি আমায় মাফ করে দিন,
আকাশ, সোজা এখন এখান থেকে দফা হ,
রকি,মাটি থেকে উঠে দাঁড়ায় চলে যাওয়ার জন্য,এমন সময় দেখে যে হেনা দাঁড়িয়ে আছে,রকি হেনার কাছে গিয়ে ওর গালের মধ্যে কয়েকটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়,
আজ তোর জন্য নিজের জীবন চলে যেতো,এই মেয়ে কন্টাক্ট দেওয়ার সময় কি বলেছিলি,ভাই ছোটলোক খ্যাত দেখে তাকে তোর সহ্য হয় না,আরে নাদানের বাচ্চা ভাই ছোটলোক খ্যাত না,ভাইয়ের ঘরে ফ্লোর মুছার কাপড় যেটা আছে সেটা পর্যন্ত তোদের কিনার সামর্থ নাই,ভাই কে জানিস...?
এই শহরের মোস্ট প্রপোলার টপ বিজনেসম্যান ইয়াকুব সাহেবের ছেলে,
আর ভাইয়ের আরেকটা পরিচয় আছে,এই শহরের যতগুলো নাম করা মাস্তান আছে সব গুলার বাপ সে....
হেনার তো চোখ কপালে উঠে গেছে,মনে হচ্ছে যেন তার কানটা এখনি ফেটে যাবে,কলেজের সবাই তো মুখে হাত দিয়ে ফেলছে,কি বলে এই খ্যাত মার্কা ছেলে বাংলার টপ বিজনেসম্যান এর ছেলে,সবার যেন সমস্ত কিছু মাথার উপর দিয়ে গেলো,এই ছেমড়ি তুই যত কোটিপতির মেয়ে হোস না কেন,ভাইয়ের পায়ের নিচে পরে থাকবি...
হেনার তো চোখ মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে,কথাগুলোর ওজন সে নিতে পারছে না,
রকি,তার পুরো টিমকে নিয়ে কলেজ থেকে বের হয়ে চলে যাবে,এমন সময় রানা কোথা থেকে যেনো চলে আসে,আর সে এসে রকির পুরো টিমকে মেরে মাটিতে মিশিয়ে দেয়,রকিকে মেরে মাটিতে ফেলে রাখছে,রকির নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে,রকির রুহু যাচ্ছে আর আসছে,
রানা দৌড়ে আকাশের কাছে আসে,ভাই আপনার কিছু হয়নি তো.?
ভাই আসতে দেরি হয়ে গেছে,ভাই জানোয়ারের বাচ্চা গুলা নাকি আপনার গায়ে হাত দিছে...?
আকাশ,আরে রানা তুই আগে শান্ত হ,আমার কিছু হয় নাই,আমি ঠিক আছি,রানা টিমের লোকজনকে দেখে সবাই ভয়ে কলেজের ভিতরে ঢুকে পড়ে,একেক জনের হাতে বড় বড় আর্মস,
রানা,কি ভাবে শান্ত হবো ভাই,ওরা আমার কলিজার ভাইয়ের গায়ে গাত দিছে,ওদের রক্ত পান না করলে আমার ভিতরটা ঠান্ডা হবে না,
আকাশ,এই রানা হয়েছে এবার অফ যা,আর আমি এইসব ছেড়ে দিয়েছি,
দশ মিনিটের মধ্যে পুর কলেজ খালি হয়ে যাওয়া চাই,একটা রক্তের দাগ ও যেনো না থাকে,আর রকিকে নিয়ে গিয়ে হসপিটাল ভর্তি কর..!
রানা,আচ্ছা ভাই দশ মিনিট না,আপনার চোখের পলক পড়তেই পুরো কলেজ ফাঁকা হয়ে যাবে,চোখের পলক পড়তেই পুর কলেজ ফাঁকা হয়ে যায়,
আকাশ,ক্লাস রুমের দিকে যাচ্ছে,কিন্তু পুরো কলেজের স্টুডেন্ট ওর দিকে তাকিয়ে আছে,সবার একটাই কথা, যাকে আমরা খ্যাত বলতাম সেই আসল বাদশা
আরু,কোথা থেকে জানি দৌড়ে এসে আকাশকে সকলের সামনেই খপপপ করে জড়িয়ে ধরে,এই তুই ঠিক আছিস তো বলে কান্না করে দেয়!
আকাশ,হা রে ঠিক আছি তো,এই তুই এভাবে কান্না করছিস কেন.?
আরু,তোর যদি আজ কিছু হয়ে যেতো তাহলে কেমন হতো জানিস তুই কিছু..?
আকাশ,আরে কিছু হবে না আমার,আর এই বাংলার বুকে আমার গায়ে হাত দিবে এমন কারোর বুকের পাঠা হয় নাই,আর গায়ে হাত দেওয়া তো দূরের কথা আমার নাম শুনলেই একশো হাত দূরে চলে যাবে,(হি ইজ বিল্লা দ্যা ডন)
আরুর,কান্না যেনো থামতেছেই না,
আকাশ,আরুকে ঘুরিয়ে ওর চোখের পানি গুলো মুছে দেয়,এই পাগলী আর কান্না করিস না,তোদের মত বন্ধু থাকতে আমার কে কি করবে
আর তিশান কুত্তাটা আজ ও আসে নি,ওকে কখনোই পাবো না বিপদে আপদে,ধুর আমার আর কাউকে লাগবে না তুই সারা জীবন আমার পাশে থাকলেই হয়...
আরু,সারা জীবন তোর পাশে থাকবো আমি,
আকাশ,ক্লাসে ঢুকার সাথে সাথে সবাই আকাশকে ঝাপটে ধরে,যে যার মত করে ক্ষমা চাচ্ছে,আমাদের ভুল হয়ে গেছে, আমরা না জেনে তোমার সাথে খারাপ আচরণ করেছি,প্লিজ আমাদেরকে মাফ করে দাও,
আকাশ,শারীরিক গঠন বা পোশাক আশাক দেখে তোমরা মানুষকে বিবেচনা করো,তোমাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের কমতি রয়েছে,সেটাকে পরিবর্তন করো তাহলে নিজ থেকেই মাফ পেয়ে যাবে,
অনেকের মনে এখনো সংশয় কাজ করছে আকাশকে নিয়ে,আসলেই কি সে ইয়াকুব সাহেবের ছেলে,ইয়াকুব সাহেবের ছেলে হলে সে কেন ছদ্মবেশ ধরলো,ওর বাবার তো টাকার কোন অভাব নাই,তাও কেনো এমন কমদামী পোশাক-আশাক পরিধান করে সে
আজ কলেজে ক্লাস হবে না,পুরো কলেজ আকাশকে নিয়ে থমকে আছে,স্যার রাও অবাক যে ইয়াকুব সাহেবের ছেলে এই কলেজে পড়ে,
বাংলার টপ বিজনেসম্যান এর ছেলে এই কলেজে পড়ে,তাদের যেনো বিশ্বাস এই হচ্ছে না,
আকাশ,এই আরু চল আজ ক্লাস করবো না,আরু আর আকাশ ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে যায়,ক্লাস থেকে বের হতেই কলেজের গেইটের সামনে ১০-১৫ টা গাড়ি হাজির,গাড়ি গুলো যেমন তেমন গাড়ি না,দুনিয়ার যত নামি-দামি ব্রান্ড আছে সব গুলো গাড়িই আছে,মার্সেডিজ,ল্যাম্বারঘিনি,
সবাই তো গাড়ি গুলোর দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,ওরা নিজের সচক্ষে কখনো এমন গাড়ি দেখবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নাই,
আকাশ,মার্সেডিজ এর দরজা খুলে ভিতরে বসে যায়,সাথে আরুও আছে,
সবার কনফিউশান দূর হয়ে গেছে যে আকাশ মাহমুদ কে...!
এদিকে,সবাই তো কানা ফোঁসা করছে,আকাশ মাহমুদ এত বড় লোকের ছেলে,কিন্তু হেনা কলেজের কোন এক কোনায় বসে বসে চোখের পানি ঝড়াচ্ছে,সে নিজেকে নিজে ধিৎকার দিতে থাকে,ছিহ হেনা তুই নিজেকে কোটিপতি আর মর্ডানে মনে করতি,তুই নিজেকে এলিটক্লাস দাবী করতি,আজ দেখ তোর পরিণতি,তুই যাকে ছোটলোক আর খ্যাত বলতি ওর বাসার কাজের লোক ও তোর থেকে বেশি মর্ডান,আর যোগ্যতাশীল,
ছিহ হেনা কি ভাবে পারলি এমন একটা ছেলের মন নিয়ে খেলা করতে,সে এত বড় মাপের একজন মানুষ হওয়ার পরেও নিজের টাকার আর নিজের পজিশন নিয়ে অহংকার করে নি,আর তুই সামান্য একটা ওসির মেয়ে হয়ে এত দেমাগ তোর,হেনা নিজেকে ধিৎকার দিয়ে কান্না করতে থাকে...!
আকাশ,ওর ড্রাইভারকে বলে সোজা গাড়ি টান দিয়ে থানায় যেতে,আজ ওসির বারোটা বাজাবে সে...
.
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com