Breaking News

বখাটে ছেলে আর রাগী মেয়ের প্রেম কাহিনী । পর্ব -০১

 

ঠাসসসসসসসসস

---যত্তসব বাজে ছেলে রাস্তায় মেয়ে দেখলেই গান বের হয় মুখ দিয়ে।মেয়েদের সাথে অসভ্যতা করিস রাস্তায় বসে।আর যদি কোনো দিন দেখি এসব করতে তাহলে তদের সব কয় টা কে পুলিশে দিবো।
এই বলে মেয়ে টা চলে গেল।
মূহুর্তের মধ্যেই সব নিরব হয়ে গেলো।
আমার মাথা টা ঝিম ঝিম করছে।কি থাপ্পর রে বাবা।
আমার বন্ধুরা সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।
মেয়ে টা আমায় থাপ্পর মারলো কেন।আর আমি কি অসভ্যতা করলাম মেয়েটার সাথে।কিছুই বুঝতে পারছিলাম না
---দুস্ত এইটা কি হইলো মেয়েটা তকে থাপ্পর মারলো কেন।.....(আকাশ)
আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। বোকার মতো আমার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে আছি।
আসলে হয়েছিলো কি,আমি আর বন্ধুরা মিলে প্রতিদিন এর মতো আজ ও এই খানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।আর আমি গান গাইছিলাম।
ও ছেরি ও ছেরি ও ছেরি,
তরে এক কালে ভালবাসিতাম।
.
এই গান টাই গাইছিলাম আর ঐ মেয়ে আমাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো।
গান টা শেষ না হতেই মেয়ে টা আমার গালে থাপ্পর বসিয়ে দিলো আর ঐ কথা গুলো বলে চলে গেলো।
মেয়ে টা হয়তো ভেবেছিলো আমি তাকে ইশারা করে গান টা গাইছিলাম তাই মনে হয় থাপ্পড় টা দিলো 
আর কথা গুলো বললো।কিন্তু আমি তো তাকে ইশারা করে গান টা গাই নাই প্রতিদিন ই এখানে বসে গান গাই।
কিন্তু আজ এটা কি হলো।আজ প্রথম আমি কোনো মেয়ের হাতে থাপ্পড় খেলাম।তাও আবার বিনাদোষ এ।
---এই আশে পাশে কেউ দেখে নাই তো ঐ মেয়ে টা যে আমায় থাপ্পড় দিলো।.......(আমি)
----না দুস্ত আমরা ৬ জন ছাড়া আর কেউ তো আশে পাশে নাই, তাই কেউ দেখে নাই।......(আকাশ)
----ঐ ৬ জন হলো কিভাবে।আমরা তো এখানে ৫ জন।.....(আমি)
----ঐ ৬ জন ই তো, আমি,তুই,আবির,সাব্বির,অর্নব আর রকি।....(আকাশ)
উফফফফ বাচলাম।যদি আমার বন্ধুরা ছাড়া অন্য কোনো পাবলিক দেখে ফেলতো তাহলে আমার মান সম্মান টা কি থাকতো।রকি হলো আমাদের ৫ বন্ধুর খুব কাছের লোক।ও সরি লোক না রকি হলো একটা কুকুর।আমরা ৫ বন্ধু মিলে তার নাম দিয়েছি রকি।সে সব সময় আমাদের সাথে থাকে।
---আমি তো ঐ মেয়ে টা কে দেখে নিবো।কত বড় সাহস আমার গালে থাপ্পড় মারলো।ঐ খুজ নে তো মেয়ে টা কে।.....(আমি)
---দুস্ত মেয়ে টাকে এর আগে দেখিনাই এলাকাতে।.....(আবির)
---ঐ খুজ নে ভালো করে মেয়েটা কে আর কোন বাসায় থাকে।আমাকে থাপ্পড় মারার মজা আমি ভালো করেই বুঝবো।.....(আমি)
---দুস্ত তুই চিন্তা করিস না। আর দুস্ত মেয়ে টা কিন্তু দেখতে হেব্বি।এমন সুন্দরির হাতে থাপ্পড় খাওয়া কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার।.....(আবির)
---সালা চোখের সামনে থেকে সর। মেজাজ টা গরম করিস না।....(আমি)
----ওকে দুস্ত।....(আবির)
---ঐ মেয়ে টা তো আমি বুঝাবোই। ঐ মেয়ে টা কে আর কোন বাসাই থাকে খোজে বের কর।আমি বাসা থেকে গোসল করে আসি।.....(আমি)
----হ দুস্ত যা তুই গোসল না করলে তো আবার তর রাগ কমবে না।আর গোসল করার সময় মাথাই একটু বেশি করে পানি ঢালিস।......(আবির)
---চুপ সালা।.......(আমি)
এই বলে আমি বাসায় চলে আসলাম।বুঝতেই তো পারছেন জীবনে প্রথম কোনো মেয়ের হাতে থাপ্পড় খাইলাম।এর আগেও খাইছি যখন স্কুলে পড়তাম তখন স্কুলের মাষ্টার এর কাছে।
আসলে আগে স্কুলে প্রতিদিন এ স্যার এর হাতে কেলানি খেতাম।কারন স্কুলে যত কুকর্ম হতো সব গুলো আমার জন্য ই হতো।আসলে আমি আমার বন্ধুদের মধ্যে তাদের লিডার ছিলাম।যখন কুকর্মের জন্য স্যার তাদের ধরতো তখন সবাই আমাকে দেখিয়ে দিতো।তারপর স্যার আমায় ইচ্ছা মতো কেলানি দিতো।আমার বন্ধদের ও দিতো কিন্তু তাদের কম দিতো।জানেন ই তো লিডার রা সব দিক দিয়েই একটু বেশি ই পায়।😜😜.
আমার নাম হৃদয়।আমি অনার্স কমপ্লিট করেছি।এরপর ভাবছিলাম একটা চাকরি করবো।কিন্তু কোনো চাকরি হেটে হেটে আমার কাছে আসেনা,তাউ আমি ও আর কষ্ট করে চাকরির কাছে যায়না।চাকরি না করেই তো হেসে খেলে ভালোই দিন কাটছে।আমি হলাম আমাদের এলাকার বখাটে দের সর্দার।সারা দিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বেড়াই।আর আমাদের এলাকাতে কার বাসায় আম গাছে আম,লিচু গাছে লিচু আর ডাব গাছে ডাব আছে এগুলো খোজে বেড়াই।আর রাতে যেয়ে আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে সে গুলো চুরি করে পার্টি দেই।কিন্তু এখন পরিস্থতি এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যে কারো বাসার কোনো গাছ থেকে কোনো কিছু চুরি হলেই সবাই এসে আমার বাসাতে বিচার দিয়ে যায়।আমি যদি না ও করি তারপরেও আমার নাম হয়।কথায় আছে না,,সব দোষ নন্দঘোষ।
.
আকাশ,আবির,সাব্বির আর অর্নব আমার বন্ধু।সেই ছোট বেলা থেকে এক সাথে বড় হয়েছি।আর রকি সেও আমাদের বন্ধুর মতোই।রকির সাথে পরিচয় হয় আমার ১ বছর আগে।আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে একদিন চায়ের দোকানে বসে ছিলাম আর চা দিয়ে পাউরুটি খাচ্ছিলাম।তখন একটা কুকুরে বাচ্চা আমার পায়ের কাছে ঘুরাঘুরি করছিলো।আমি একটা পাউরুটি কুকুরের বাচ্চা টাকে দিয়েছিলাম।তারপর থেকে কুকুর টা আমার পিছু ছাড়েনা।এরপর থেকে কুকুর টাকে আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে পালি।আর সবাই মিলে তার নাম দিয়েছি রকি।সে ও আমার বন্ধুর মতোই।
.
সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য।প্রতিদিন ই আমরা সন্ধ্যার পর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দেই আমাদের পাড়ার চা এর দোকানে।আমি চায়ের দোকানে যেয়ে দেখতে পেলাম, আমার বন্ধুরা সবাই বসে আছে সেখানে।
আমাকে দেখেই আবির বলে উঠলো।
---মামা তুমি আইছো।ঐ মেয়েটার সব খবর আনছি আমি।.....(আবির)
----ভালো করছিস এবার বল কি খবর এনেছিস।.....(আমি)
----মেয়েটার নাম অবন্তিকা।আমাদের রফিক স্যারের মেয়ে।......(আবির)
----এই কি বলিস এসব।.....(আমি)
-----হ মামা ঠিক ই কইছি।ও ছোট থেকেই তার নানার বাসাই থাকতো।তাই তাকে এতোদিন এই এলাকাতে দেখা যায়নাই।৭ দিন হলো এসেছে তার নানার বাড়ি থেকে।আমি যত দূর শুনতে পেলাম একেবারে এসে পড়েছে তার নানার বাসা থেকে......(আবির)
----ওওও সে ও আমাদের সাথেই পড়ে তাই না।.....(আমি)
---হে মামা সে ও এবার অনার্স কমপ্লিট করেছে।যায় হোক মামা তোমাকে যে থাপ্পড় দিলো তার প্রতিশোধ কিভাবে নিবো বলো।.....(আবির)
---বেশি কিছু করা যাবে না রে।.....(আমি)
---কেন মামা।....(আবির)
--;আরে বেডা জানস না রফিক মাষ্টার এর সাথে আমার বাবার কতো ভালো বন্ধুত্ব।আর আমি যদি ঐ মেয়েটারে কিছু করি আর পরে যদি আমার বাবার কাছে বিচার দেই,তাহলে তো আমাকে বাড়ি ছাড়া করে দিবে।....(আমি)
---মামা তাইলে থাপ্পড় এর প্রতিশোধ নিবা না।.....(আবির)
---প্রতিশোধ তো নিবোই আগে সু্যোগ পাই তার পর।.....(আমি)
----ওকে। আর এই নে মামা সিগারেট নে।.....(আবির)
----দে বেডা।..... (আমি)
আমরা সবাই সিগারেট খাচ্ছি আর আড্ডা দিচ্ছি।ভাবছিলাম মেয়ে টাকে রাস্তায় অপমান করবো আর আমাকে থাপ্পড় দেয়ার প্রতিশোধ নিবো।কিন্তু তা আর হলো না। কিন্তু প্রতিশোধ তো আমি নিবোই।
রাত ১ টার দিকে আড্ডা শেষ বাড়ি চলে আসলাম।
আজ সকালে নাস্তা খেয়ে তার পর বাবার কত গুলো বকা খেয়ে বাসা থেকে বেড় হলাম।আমি না ৩ বেলা খাবারের সাথে সাথে বাবার বকা ও খাই।
আবারো সেই খানে গেলাম।যেখানে আমরা সবাই প্রতিদিন গান গাই আর আড্ডা দেই।আমি, আকাশ,আবির, সাব্বির,আর্নব আর রকি বসে আড্ডা দিচ্ছি।হঠাৎ করেই আকাশ বলে উঠলো।
----দুস্ত ঐ দেখ অবন্তিকা।.....(আকাশ)
আমি চেয়ে দেখতে পেলাম অবন্তিকা এই দিকে আসছে।শালী কাল আমায় থাপ্পড় দিছিলি।আমার মাথাই শয়তানিভবুদ্ধি চাপলো।শালী তকে আজ কুকুর দিয়ে দৌড়ামি খাওয়াবো।
আজ তোকে থাপ্পড় টা দেয়ার মজা বুঝাবো।আমি রকি কে বললাম যা ঐ টা কে ধর।অবন্তিকা ইশারা করে বলার সাথে সাথেই রকি অবন্তিকার দিকে দৌড়ে যেতে লাগলো।অবন্তিকা যখন দেখতে পেলো তার দিকে কুকুর টা তেড়ে আসছে।অবন্তিকা একটা চিৎকার দিয়ে দিলো দৌড়।......

.
চলবে...😂

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com