কালো ছেলে । পর্ব - ১০
রিহা আপুর সিটটা আমার পিছনেই।ওয়াও।
== হুম।
== ওই এদিকে তাকা।
== স্যার আসছে। পরে তাকাবো।
== না। তুই এখনি তাকা।
,
কি আর করা। তাকালাম।
,
== দেখ তো আমার চোখের কাজল টা ঠিক আছে নাকি?
,
আমি তাকিয়ে আছি রিহার চোখের দিকে।
আহাহহহ কি চোখ। হরিণীর চোখের মত মায়া জড়ানো।
চোখের কাজল লেপ্টে গিয়ে রিহার সৌন্দর্য যেন
আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
রিহাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ কেও আমার মাথায় টোকা দিল।
সামনে চেয়ে দেখি স্যার খাতা দিয়ে দিছেন।
আমি খাতাটা নিয়ে লিখা শুরু করে দিতেই পিছন থেকে
খোচা শুরু হয়ে গেল।
== কিরে কমন পরছে?
== হুম। আপনার?
== হুম। শোন কিছু না পারলে বলিস। আর আমি না পারলে বলে দিস।
(দেখছেন কথা। আমারে না জিগাইলে কভাবে বুঝব
কোনটা পারে আর কোনটা পারে না)
==আচ্ছা। এখন যা পারেন লিখে ফেলেন। । আর
আমাকেও লিখতে দেন?
== আরে সোনা রাগ করিস কেন?
==কি!!!!!!!!!
,
রিহা আপু চুপ করে লিখা শুরু করে দিল।
পরীক্ষা শেষ করে হল থেকে বের হলাম।
সারাটা সময় রিহা টর্চার করছে হলে।
নিজের গার্ল্ফ্রেন্ডও মনে হয় এমন করে জ্বালায়
না।
,
== কি রে পরিক্ষা কেমন দিলি। (সাকিল)
== হুম। ভালই হইছে। আপনারা কেমন দিলেন?
== ভালই হইছে। রিহা কই?
==জানি না। মনে হয় এখনো লিখছে।
== তুই তো ওর সামনেই। তুই বের হয়ে পরলি ওই
এখনও লিখছে।
== হুম কয়েকটা নাকি বাকি ছিল। আমি সেগুলা বলে দিয়ে চলে আসছি।
,
কিছুক্ষন পর রিহা আপু বের হয়ে আসলেন।
মনে হচ্ছে এক্সাম খুব ভাল হইছে।
,
,
== কি রে এত দেরী হলো কেন?( হিয়া)
== আর বলিস না। তিন নং টা ভুলে গেছিলাম। সানি ভুলটা
ধরিয়ে দিল। তাই একটু দেরি হল।
==চল বাসায় যাই।
== তুই আর শাকিল চলে যা। আমরা পরে আসছি।
== আচ্ছা।,
,
শাকিল আর হিয়া চলে গেল।
আমি আর রিহা রাস্তায় এসে রিক্সা নিলাম।
ভাই আমি নেই নাই।
রিহা নিছে।
একসাথে এক রিক্সায় এই প্রথম কোনো মেয়ের
সাথে উঠলাম।
আমার খুব অসস্থি লাগছে আবার ভালোও লাগছে।
রিক্সা চলতে লাগল।
রিহার চুল গুলো বার বার আমার মুখে এসে লুকোচুরি খেলছে।
মনে হচ্ছে খুব যত্ন নেয় চুলের।
আমি অন্য দিকে চেয়ে আছি। আর রিহা আমার দিকে।
কোনো একসময় আমার হাতে রিহার হাতের স্পর্শ পেলাম।
হ্যা। রিহা আমার হাত ধরেছে।
কখনও বুঝি নি মেয়েদের হাত ধরতে কেমন লাগে।
এই প্রথম কারও হাত আমার হাতের উপরে পরল।
আমি ভাল করেই বুঝতে পারছি রিহা আমায় ভালো
বেসে ফেলেছে।
আমিও তো রিহাকে যত দেখছি তত ডুবে যাচ্ছি।
আমিও ভালবেসে ফেলেছি রিহাকে।
কিন্তু এখনি বুঝতে দেওয়া যাবে না। আমি এখনি যদি ওর
প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করি তাহলে কখনই অকে পাবো না।
আগে আমাকে ওর যোগ্য হতে হবে। তারপর।
কিছুক্ষন পর রিক্সা একটা শপিং মলের সামনে এসে থামল।
আমরা রিক্সা থেকে নেমে পরলাম।
রিহা রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে বলল......
== আমার সাথে আয়। জানি তোর মনে অনেক
প্রশ্ন ঘুরছে। ঘুরতে দে। সময় হলে সব ঘোরা
থামিয়ে দিব।
,
বলেই রিহা মলে প্রবেশ করল।
আমিও ওর পিছু পিছু গেলাম।
বাবারে এতবড় দোকান আমি আর কখনও ভিতর
থেকে দেখিনি।
বাইরে থেকে কাজে যাওয়ার সময় দু একবার
চোখে পরেছে।
এরপর রিহা একটা শার্টের দোকানে গিয়ে কয়েকটা
শার্ট নিলেন।
আমাকে একটা নীল শার্ট ধরিয়ে দিয়ে
বললেন.........
== যা এটা পরে আয়।
== এটা আবার কার জন্যে?
== আমার বয়ফ্রেন্ডের জন্য। দেখতে তোর
মতই কিন্তু সুন্দর। তাই তোকে নিয়ে আসছি। যা এখন
চ্যাঞ্জিং রুমে গিয়ে চ্যাঞ্জ করে আয়।
,
রিহার মুখে বয়ফ্রেন্ডের কথা শুনে আমার কলিজাটা
ফেটে গেল।
শালার ভাবলাম কি?
আর হচ্ছে কি?
আমারই ভুল।
রিহার ব্যপারে কিছু না জেনেই অমন ভাবতে গেছি।
আমি শার্টটা পরে বেরিয়ে এলাম।
কালো ছেলেদের নীল শার্ট একদমই মানায় না।
,
==বাহ। তোকে একদম হিরো হিরো লাগছে।
তবে শার্টটা আরেকটু ব্রাইট হলে আরও ভালো
লাগবে। নো প্রবলেম। চালিয়ে নিবে।
,
এরপর রিহা আরও কয়েকটা শার্টটা নিলেন।
শপিং শেষ করে বেরিয়ে এলাম।
,
,
== এই নে এগুলা ধর।
,
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।
,
== এগুলা দিয়ে আমি কি করবো.?
== তুই কি করবি মানে। এগুলা আমি তোকে গিফট
করলাম। আর এটা আমার দেওয়া না। শাকিল আর হিয়ার
বিষয়টা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ওরা তোকে
প্রেসেন্ট করেছে।
== এটা তো ওরাই দিতে পারত।
== হুম পারতো। কিন্তু আজ ওদের একটু তারা আছে।
তাই চলে গেল।
শোন কাল এগুলা পড়ে পার্কে আমার সাথে দেখা
করবি।
== আপনার সাথে দেখা করে কি হবে?
== আমার সাথে হিয়া শাকিল ওরাও থাকবে।
== আচ্ছা। আমি এখন আসি।
,
বলে চলে আসলাম।
রিহাও চলে গেল।
রিহার বয়ফ্রেন্ড আছে?
কিন্তু কখনও তো শুনি নি।
আর আমার সাথে মিশছেই তো মাত্র কয়েক মাস
হল।
যাহ আমিই যে কেমন?
আজ থেকে সব বাদ। আগের যেমন ছিলাম তেমনই
ভাল।
কারও মনের খবর নিয়ে আমার লাভ কি?
বাসায় এসে কাপর গুলা রেখে একটা ঘুম দিলাম।
পরদন সকালে গোসল করে রিহার মানে শাকিলের
দেওয়া নীল শার্টটা পরে পরিক্ষা দিতে এলাম।
রিহা আমার দিকে বানরের মত করে তাকিয়ে আছে।
,
== এমন হা করে তাকিয়ে আছেন কেন?
== দেখছি কালু আজ নায়কের মত করে এসেছে।
অসাম লাগছেরে তোকে। আল্লাহই জানে কয়টা
মেয়ের ঘুম আজ নস্ট করিস।
== যার ঘুমের কারন হতে চাইলাম সেই তো আমার
ঘুম কেড়ে নিল। জানি না সে আমার কথা ভাবে কি না।
== কি রে বির বির করে কি বলিস?
== কিছু না। চলুন। হলে যাই।
== কি রে সানি একদন নায়কের মত লাগছে। নতুন শার্ট।
কারন কি?( শাকিল)
== এমনি। আর এটা তো আপনিই নাকি উপহার দিছেন। রিহা
বলল।
,
শাকিল কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল....
,
== অহহ। মনে পরছে। আসলে আমিই জেতাম
তোর সাথে। কিন্তু হিয়া বলল ওর নাকি কাজ আছে। তাই
আমিও ওর সাথেই চলে গেছিলাম।
যাইহোক। অনেক সুন্দর লাগছে। এই হিয়া এদিকে
আসো তো।
== হুম বলো।
== দেখ তো একে চিনতে পারো কি না?
== আরে সানি। আজ তো সেই লাগছে। আমার
বান্ধবির চয়েজ আছে। ( অবাক হয়ে)
== আচ্ছা এখন যাই। দেরি হয়ে যাচ্ছে৷ পরে আবার
এক্সাম শুরু হ্য়ে যাবে।
,
এরপর আমরা যার যার সিটে এসে বসলাম।
পরিক্ষা শেষ করে আমি গাছের নিচে এসে দাঁড়িয়ে
আছি।
এমন সময় একটা মেয়ে এসে আমায় সাথে কথা
বলতে লাগল.....
== হ্যালো ভাইয়া। আমি রাইসা। আপনার সাথে কিছু কথা
বলতে পারি?
== জি বলুন।
== আসলে আমি শাকিলের পরিচিত। একই সাথে পরি।
শাকিল আপনাকে দেখিয়ে বলল আপনি নাকি খুব
ভালো গনিত পারেন। কয়েকদিন পর তো আমাদের
গনিত এক্সাম।
আপনি আমায় কয়েকটা অংক বুঝিয়ে দিতেন তাহলে
অনেক ভাল হতো।।
== আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি কাল শাকিলের সাথে
পার্কে আইসেন। সেখানেই বুঝিয়ে দিব।
== আপনার ফোন নাম্বারটা কি পেতে পারি?
== আসলে আপু আমি ফোন ব্যাবহার করি না।
এমন সময় রিহা এসে হাজির।
== কি রে রাইসা তুই এখানে?
== সানি ভাইয়ার সাথে গনিত নিয়ে একট কথা বলছিলাম।
== সানির সাথে কিছু বলতে হবে না। তুই যা এখান
থেকে। আর তুই খালি বের হ কলেজ থেকে।
মেয়ে দেখলেই কথা বলতে মন চায়।
বলেই রিহা কান্না করতে করতে চলে গেল।
এ কেমন মেয়েরে।
আমাকে ঝারি দিয়ে নিজেই কান্না করে দিল।
.
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com