Breaking News

ওসির অহংকারী মেয়ে । পর্ব -১০

আকাশ,সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কলেজে চলে যায়,

কিন্তু কলেজে গিয়ে যা দেখে তাতে তো আকাশের হুঁশ এই উড়ে যায়....
গতকাল যেই মেয়েটা আমাকে প্রপোজ করেছিলো,তাকে হেনা উদুম কেলানি কেলাচ্ছে,
মেয়েটা,আমাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে ছুটে এসে আমার পিছনে লুকালো,
হেনা,তেড়েফুঁড়ে আসতেছে মেয়েটাকে মারার জন্য,
আকাশ,এই কি সমস্যা তোমার হা?
তুমি ওকে মারছো কেন?
হেনা,আমার অনেক সমস্যা,সে তোকে প্রপোজ করেছে কোন সাহসে?
আকাশ,এই মেয়ে মুখ সামলে কথা বলো,তোমার লেভেলের না আমি,যে তুমি আমার সাথে তুই তুকারি করবে,আর কথা হচ্ছে ওর ইচ্ছে হয়েছে সে আমাকে প্রপোজ করেছে,তোমার সমস্যা কোথায় এতে..?
হেনা,না তোকে কেউ প্রপোজ করতে পারবে না,তোকে খালি আমি প্রপোজ করবো,ওর কতবড় সাহস সেটা আমি আজ দেখবো বলে মেয়েটাকে আবার মারতে ধরে,এবার আকাশের মেজাজা খারাপ হয়ে যায়,সে ঠাসসসস করে হেনার গালে কোষে একটা লাগাই দেয়,এই তোকে একবার বলেছি না যে আমি তোর লেভেলের না,তার পরেও তুই তুকারি করতেছিস,আর তোর কতবড় সাহস তুই আমার জিএফ এর গায়ে হাত দিস,সে আমাকে গতকাল প্রপোজ করেছে আর আমি এক্সেপ্ট করে নিয়েছি,
হেনা,গালে হাত দিয়ে কান্না করতে করতে প্লিজ আকাশ তুমি এমন টা করো না,তুমি শুধু আমাকে ভালোবাসবে,তোমার ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার শুধু আমার আছে,প্লিজ ওকে না করে দাও...
আকাশ,হাহহহ আমার এত ঠেকা পড়ে নাই,যে তোমার মত ধোঁকাবাজকে আবার ভালোবাসতে যাবো,ভুলি নাই আমি এখনো কোনকিছু,মনে আছে সেদিন সবার সামনে জুতোর বাড়ির কথা🙂
সেদিন আমার সবটাই তোমার ছিলো,কিন্তু আজ অন্যজন পাড়ি জমিয়েছে,সে যাই করুক না কেন আশা করি সে অন্তত তোমার মত ধোঁকাবাজি করবে না,আর প্লিজ তোমার ড্রামা গুলো বন্ধ করো,আর আমার চোখের সামনে থেকে দফা হও...
হেনা,কান্না করতে করতে সেখান থেকে চলে যায়....!
মেয়েটা তো সেই খুশি যে আকাশ তাকে এক্সেপ্ট করে নিয়েছে,
আকাশ,এই সবাই দাড়িয়েছিল কি দেখছেন যান ক্লাসে যান,
আর এই যে মেয়ে তুমি আমায় যত ভালোই বাসো না কেন,কখনো আমার মনে ঢুকতে পারবা না,কারন যখন আমার ভেসভোসা খারাপ ছিলো তখন কেউ আমার ধারেকাছেও আসতো না,আর আজ যখন নিজকে বদলে নিয়েছি মানুষের লাইন পড়ে গেছে,
এমন লোক দেখানো ভালোবাসা আমার দরকার নাই,
যে ভালোবাসায় মন দেখেনা,মানুষটা কেমন সেটা বিবেচনা করে না,খালি দেখতে কেমন টাকা পয়সা আছে কিনা সেটা দেখে,এমন ধারা ভালোবাসা আমার দরকার নাই,আর শুনো হেনার সামনে তোমায় এমন বলেছি তার অন্য কারন আছে,এখন তুমি যেতে পারো আমার দ্বারা ভালোবাসা হবে না,সে এটা বলেই মেয়েটাকে রেখে ক্লাসের দিকে চলে যায়,
স্যার ক্লাস করাচ্ছে,স্যারের লেকচার শুনছি মন দিয়ে,কিন্তু হটাৎ কি কারনে জানি জানালার দিকে নজর যায়,তখনি চোখে পড়লো অনেক গুলো গাড়ি কলেজের গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে,
গাড়ি গুলো আমার পরিচিত মনে হচ্ছে,ধুর যাই হবে হোক স্যারের লেকচারের দিকে মন দেই,স্যারের লেকচার শুনছি এমন সময় পিয়ন এসে বলে হেডস্যারের রুমে এখনি ডেকেছে আমাকে...
পিয়নের সাথে সাথে হেডস্যারের রুমে গেলাম,ভিতরে ঢুকতেই তো বড় ধরনের একটা ঝাটকা খেলাম,
কারন হেডস্যারের রুমে হেডস্যার একা না,উনার সাথে আরেকটা লোক বসে আছেন,যিনি হচ্ছেন আমার বাবা🙂
হা এবার বুঝে আসছে গাড়ি গুলো চেনা চেনা কেন লাগছিলো...
--লোকটা আমাকে দেখতে পেয়ে চেয়ার থেকে উঠে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিলো,
--আমার ভিতরে কোন ফিলিংস কাজ করছে না, আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি,
--বাবা তুই এতবড় শাস্তি কি করে দিলি আমাদেরকে,আজ একটা বছর তুই ঘর থেকে বাহিরে,সেদিন না হয় রাগ করে তোর গায়ে হাত তুলেছিলাম,আর কিছু কথা শুনিয়েছিলাম,তাই বলে তুই এভাবে আমাদেরকে ছেড়ে চলে আসবি,আজ একটা বছর আমাদের মনে কোনো শান্তি নাই,তোর মা রোজ কাঁদে তোর জন্য,আর আমার কথা না হয় বাদ এই দিলাম,আজ তোর হেডস্যার খবর না দিলে তো তোর কোন খোঁজ এই পেতাম না,বাবা তুই কি ভাবে পাড়লি আমাদের ছেড়ে একটা বছর কাটিয়ে দিতে,
আকাশ,ওর বাবাকে ছাড়িয়ে নিয়ে মাত্র এক বছর হয়েছে,আরো অনেকটা সময় পড়ে আছে🙂
আকাশের বাবা,প্লিজ আকাশ আর রাগ করে থাকিস না,প্লিজ এবার ঘরে ফিরে চল..?
আকাশ,নাহ কখনোই নাহ..
ঘরের গন্ডিতে ঐদিন পাড়া দিব যেদিন মানুষের মত মানুষ হতে পারবো,কারন ঐ দিন এটা বলে ঘর ছাড়তে বলেছিলে আমার মত কুলাঙ্গার সন্তান তোমার দরকার নাই,আরো বলেছিলি আমার মত ছেলে দুনিয়ায় বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নাই,আমার মরে যাওয়াই ভালো...
কিছুই ভুলিনি আমি,জেদ করে যেমন ঘর ছেড়েছি,তেমন মানুষের মত মানুষ হতে পারলেই ঘরে ফিরবো আবার🙂
আর আপনার যদি স্যারের সাথে কোন কাজ থাকে তাহলে কলেজো আসতে পারেন,আমার খোজ নিতে কলেজে আসতে হবে না,
আমার সামনে পরিক্ষা আমাকে তাতে ফোকাস করতে দিন,চলি এবার আমার গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস চলছে....
আকাশ,চলে যাচ্ছে কিন্তু হটাৎ একটা কথা মনে পড়ে,
সে পিছনে ফিরে ওহ হা একটা কথা বলতে ভুলে গেছি,শুনেন আমি যেমন এই ছিলাম যেই পথেই ছিলাম না কেন,কখনো অন্যায় করি নাই,মানুষের ক্ষতি করি নাই,আর আপনি আজ বেঁচে আছেন আমি আকাশের জন্য,সেই জন্য আমিই কুলাঙ্গার হয়ে গেলাম🙂
আকাশ,হেডস্যারের রুম থেকে বের হয়ে ক্লাসে চলে আসে,
ইতিমধ্যে পুরো কলেজে খবর পৌঁছে গেছে যে এই শহরের টপ বিজনেসম্যান ইয়াকুব সাহেব কলেজে এসেছে,তাই স্যাররা ক্লাস ছুটি দিয়ে দিছে,
পুরো কলেজে গমগম করছে মানুষের জন্য,কলেজ স্টুডেন্ট আরো বাহিরের অনেক মানুষ ও কলেজে এসেছে ইয়াকুব সাহেবকে দেখার জন্য,
আকাশের সেই দিকে কোন আক্ষেপ নাই,তার মন খারাপ হয়ে আছে,তাই সে আরুকে নিয়ে গাছ তলায় চলে যায়,
আরু,কিরে তোর বাবা আসছে তোর আরো খুশি হওয়ার কথা,কিন্তু সেখানে তুই মন খারাপ করে বসে আছিস..?
আকাশ,কারন আমি উনার ছেলে না তাই...
আরু,মানে কি বলছিস আকাশ...?
আকাশ,তুই তো জেনেই গেছিস আমি কে,দেখ আমি যাই করেছি কখনো মানুষের খারাপ করিনি,মানুষের সাথে অন্যায় বা খারাপ আচরণ করিনি,আর আজ সেই লোক ও বেঁচে আছে আমার জন্য,পিন্টু হাজি উনার পিছনে লোক লাগিয়ে দিয়েছিলো মারার জন্য,কিন্তু আমার জন্য কিছু করতে পারে নি,আমি উল্টো ওদের সব কয়টাকে সাইজ করেছি,আর সেই ঘরের মানুষ এই আমাকে বলে আমি নাকি কুলাঙ্গার,আমার নাকি বেঁচে থাকার অধিকার নাই,আমি সন্ত্রাস....
আরু,দেখ আকাশ তুই হয়তো কষ্ট পেয়ে কথা গুলো বলছিস,কিন্তু দেখ তোর বাবা রাগের থেকে কথা গুলো বলেছে,আর তুই যত ভালোই করিস না কেন,তোর কাজ করার লাইনটা তো খারাপ তাই তিনি হয়তো রিয়েক্ট করেছেন...
আকাশ,আরু তুই কি উনার পক্ষ হয়ে কথা বলছিস...?
আরু,আরে নাহ উনার পক্ষ নিয়ে কথা বলতে যাবো কেন,আমি তোর পক্ষ নিয়েই কথা বলছি,আচ্ছা থাক এবার আর গাল ফুলিয়ে থাকতে হবে না,চল কেন্টিনে যাবো আইসক্রিম খাবো....
আইসক্রিম খেয়ে দুজনে দুজনের বাসায় চলে যায়,
ইয়াকুব সাহেব নৈরাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যায়,
অন্যদিকে হেনা তো বাসায় গিয়ে সমস্ত কিছু তোলপাড় করে ফেলছে,ওকে কেউ থামাতে পারছে না,আমি আকাশকে ভালোবাসি,আমার আকাশকে চাই,বাসায় যত কাঁচের শোপিস ছিলো সব ভেঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি করে ফেলেছে...
হেনার বাবা আই মিন ওসি,মা রে তুই তাকে অপমান করেছিস,আমিও তাকে অত্যাচার করেছি,এত কিছুর পরেও কি সে তোকে মেনে নিবে...?
হেনা,আমি জানি না,আমার আকাশকে লাগবে ব্যস লাগবেই,না হয় আমি সুইসাইড করবো শেষ কথা,তোমার আমার ভালো চাও তো ওকে এনে দাও..?
না হয় তোমাদের মেয়ের মৃত লাশ কাঁধে নিতে প্রস্তুত হও...
আকাশ,বাসায় এসে গোসল করে খাওয়া দাওয়া শেষ করে,পরে একটু ঘুম যাবে বলে ভাবে কিন্তু তখনি অচেনা একটা নাম্বার থেকে ফোন আসে,
আকাশ,হ্যা কে বলছেন...?
আমি থানার ওসি বলছি....
আকাশ,আমাকে কি কারনে ফোন করেছেন..?
ওসি,প্লিজ বিল্লা ভাউ আমার কথাটা একটু শুনেন,আমার মেয়েটা আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসে,সে আপনাকে না পেলে নাকি সুইসাইড করবে,প্লিজ আপনি আমার মেয়েটাকে গ্রহণ করে নেন...
আকাশ,এই ওসি মাথা পাগল হয়ে গেছে হা,সামান্য একটা ওসির মেয়েকে আমি বিয়ে করবো,এটা কখনোই সম্ভব না,আর কে কি করবে এত কিছু আমার দেখার সময় নাই,সুইসাইড করবে না কি করবে সেটা ওর ব্যাপার,এর পরেরবার যদি আমার নাম্বারে ফোন আসে তাহলে অবস্থা খারাপ করে ছেড়ে দিব🙂
আর আমার রিলেশন আছে অন্য মেয়ের সাথে,কিছুদিন পর আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি,আপনার মেয়েকে বলবেন অযথা কোন কিছু করে নিজের বিপদ ডেকে না আনতে,এতে আপনার মেয়ের এই ক্ষতি হবে,বায় ভালো থাকেন...!
আকাশ,ফোন কেটে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,বিকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গে কারোর হাতের স্পর্শে,কেউ একজন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,আকাশ মিটমিট করে চোখটা খুলে দেখে আম্মু😲
আম্মু তুমি....
.
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com