জেলাসবতী বউ । পর্ব -১০
আরে তুমি কি...
বলার আগে তিথি আমার দুগালে ধরে নিজের ঠোঁট আমার ঠোঁটে ডুকিয়ে দিলো। চোখ বন্ধ করে নিলাম। অনেক্ষণ হয়ে গেলো তিথি ছাড়ছেই না। একটা অজানা আবেশে যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার কোনো প্রয়োজনই পড়ছে না। দীর্ঘ সময় পর ছাড়ল। তিথি ঠোঁট মুছলো,
- এখন ঠিক আছে।
- মানে!
হাপাতে হাপাতে বললাম।
- মানে, এখন পড়ায় মন বসবে। কি যে ভালো লাগছে?
আবার লজ্জায় নুয়ে পড়ল তিথি। আমি হেসে দিলাম।
- তাই, তাহলে তো আরেকটা দিতে হয়।
- এই না, না। এখন আমি পড়ব। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।
- তাই, তাহলে একটু আগে যে আমার কাজে ডিস্টার্ব করলে। তখন..
- কেনো আপনার ভালো লাগেনি?
- লেগেছে।
- তাহলে, ডিস্টার্ব বলছেন কেনো?
- তোমারও ভালো লেগেছে। তাহলে এটাকে ডিস্টার্ব করা বলছো কেনো?
তিথিকে টান মেরে বুকে টেনে নিলাম।
- হুম, হুম বলো।
তিথি বুকে মুখ লুকালো,
- প্লিজ, আর না পড়ব তো।
- আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না। একটু আগে যা করলে না...
- আচ্ছা, তাহলে আর মাত্র একটা ওকে।
- ওকে।
- নিন।
তিথি চোখ বন্ধ করে ঠোঁট এগিয়ে দিলো। আমি অপলক চোখে তাকিয়ে রইলাম। কি গোলাপি ঠোঁট! নেশা ধরিয়ে দেওয়ার মতো। তিথির ঠোঁট কাঁপছে। আমি তাকিয়েই আছে অনেক্ষণ ধরে। তিথি পিট পিট করে তাকাল। দেখল আমি তাকিয়ে আছে ওর দিকে,
- কি হলো?
- কিছু না।
- আরে তাড়াতাড়ি করেন না পড়ব তো।
- ওকে, চোখ বন্ধ করো।
তিথি চোখ বন্ধ করে ঠোঁট এগিয়ে দিলো আবার। আমি আবারও অজানা আবেশে তাকিয়ে রইলাম। আবার তিথি চোখ খুলে রাগী লুক নিয়ে তাকাল। তারপর আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল,
- কুত্তা, খবিশ, খারাপ লোক, বদ লোক। আপনি আমাকে নিয়ে খেলছেন।
আমার বুকে কিল ঘুসি মারতে লাগল।
আমি তিথিকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।
তারপর ঠোঁটে আলতো করে একটা চুমু দিলাম।
- যাও, এখন পড়তে বসো।
- উঁহু।
- কি?
- আমি আপনার পিটে বসে পড়ব।
- কেনো?
- জানি না।
অন্যদিকে মুখ করে বলল।
- ওকে।
আমি উপুড় হয়ে শুলাম। লেপটপে কাজ করতে লাগলাম। তিথি আমার পিটে শুয়ে পড়লাম পড়তে লাগল।
- কি হলো পড়ছো না কেনো?
- পড়ছিতো।
- কই পড়ছো। আওয়াজই তো পাচ্ছি না।
- আরে বুদ্ধু, মনে মনে পড়ছি তো।
- ওও, আচ্ছা। ভালো....।
পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ল তিথি। ডাক দিলাম দু-একবার শুনল না। মেয়েটাতো না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন কি করি?
- তিথি, এই তিথি।
- হু।
- হু কি? হ্যা। উঠো খাবে।
- কি?
- কি আবার? রাতের খাবার খাবে না?
- না, খাবো না।
- কেনো?
- পেট ভরে গেছে।
- কি এমন খেলে যে পেট ভরে গেছে?
- ঐ যে, ঐটা খেলাম না। চুমু।
ঘুম ঘুম চোখে বলল। আমি হেসে দিলাম তিথিকে পিট থেকে নামালাম।
আবার আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।
- তিথি, তিথি।
- কি?
- উঠো না। খাবে তো। আমিওতো খাইনি।
- তাহলে কোলে তুলুন।
তিথিকে কোলে করে টেবিলে নিয়ে গেলাম। মনেই নেই যে, নিচে আম্মু-আব্বু আছেন। ওহ, সরি বলাই হয়নি। আব্বু কাজ শেষ দেশে ফিরেছেন গত কালই।
নিচে নেমে যেতেই মাথায় বাজ পড়ল। হায় হায়! আম্মু-আব্বু টেবিলে বসে আছেন।
- ওওহ, ভালো হলো তোকে ডাকার আগেই এসে পড়েছিস।
বলে আব্বু মুখ ঘুরাতেই। হা হয়ে তাকিয়ে রইল। আম্মু মুচকি মুচকি হাসছেন। তিথি আমার গলা জরিয়ে আছে।
- এই আমাকে সন্ধ্যার মতো একটা চুমু খান না।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলাম তিথির।
- তিথি, চুপ। কি বলছো এসব?
- উউউ উউ।
তিথি উউ উউ করতে লাগল।
- আরে কি করছিস পড়ে যাবে তো?
আম্মু বলে উঠল।
- আরে তোকে এই বডি বিল্ডার হিসেবে তৈরি করলাম আমি। বউকে কোলেই নিতে পারিস না।
(আব্বু)
- আম্মু, আসলে ওও ঘুমিয়ে ছিল
- তো। (আম্মু)
- ডাকতে ডাকতে উঠছিল না।
- তো। (আব্বু)
- রাতের খাবারও খায়নি। ( আম্মু)
- আরে কি তো তো করছো? ঘুম থেকে উঠছে না। রাতের খাবার ও খায়নি। তাই কোলে করে নিয়ে এসেছি।
রেগে গিয়ে বললাম।
- তো। ( আম্মু)
- আবার তো।
বিরক্তি নিয়ে বললাম।
- তোর বউকে তুই কোলে নিবি। এতে আমাদের কি? ( আব্বু)
- হ্যা, তাইতো। (আম্মু)
- তবুও,
- ইয়ং ম্যান। বি ইজি। বাই দ্যা ওয়ে, তিথি কি যেন বলছিল, সন্ধ্যায় তুই কি খাইয়েছিলি তিথিকে?
- আরে আব্বু কই কি?
সাথে সাথে তিথি বলে উঠল,
- চুমু,চুমু।
ঘুম ঘুম কন্ঠে। লজ্জায় আমার মাঠির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।
- এই চুপ করো তুমি।
আম্মু-আব্বুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম দুজনেই মুখ টিপে হাসছে। আমি কোনো রকমের চেয়ারে বসলাম,
- তিথি, এখানে বসো। খাবার খাবে।
- না, আমি এসব খাবো না। আমি চুমু খাবো।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই বলছে আমার বুকে হেলান দিয়ে।
আব্বু-আম্মু উচ্চস্বরে হেসে দিলো।
আমি তিথিকে কোলে তুলে নিলাম,
- আরে কোথায় যাচ্ছিস?(আম্মু)
- উপরে। খাবার পাঠিয়ে দিয়ো রুমে।
তাড়াতাড়ি করে উপরে উঠতে লাগলাম।
- আস্তে, আস্তে যা। (আব্বু)
মিসেস সাবিনা নিজের স্বামীর দিকে তাকালেন। দুজনেই হেসে দিলেন।
,
উফ আর একটু থাকলে তো ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে দিতো। এই পিচ্ছি মেয়েটাও না। আর আব্বু-আম্মুকেওতো আমার সন্দেহ হয়। এরা আমার আম্মু-আব্বু নাকি বন্ধু।
তিথিকে কোনোরকমে খাইয়ে দিলাম। তারপর শুয়ে পড়লাম তিথিকে বুকে নিয়ে।
,
তিথির পরীক্ষা শেষ। এখন ফ্রি সময়। মাঝে মাঝেই নিজের হাত রান্না করে অফিসে আমার জন্য নিয়ে আসে। নিজের হাতে খাইয়েও দেয়।
,
সামনে রুমে বসে ছিলাম। সবাই বসে টিভি দেখছিলাম। আজ অফিস ছুটির দিন। কলিং বেল বাজল। রহিমা খুলে দিলেন। একটা মেয়ে ডুকল। আরে এতো নিশি। আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে। আমাকে দেখেই জরিয়ে ধরল,
- কাব্য, কেমন আছিস তুই?
- এইতো ভালো, তুই?
- ভালো। কি হ্যান্ডসাম লাগছেরে তোকে?
- ধন্যবাদ।
তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিথি রাগে ফুঁসছে। বেচারি জেলাস হয়েছে। বেশ ভালো লাগছে তিথিকে জেলাস করতে।
সবার সাথে কুশল বিনিময় করল নিশি। আমি তিথির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। নিশি কেমন চোখে যেন তাকাল আমার দিকে।
নিশি সারাক্ষণ আমার পিছুপিছু ঘুর ঘুর করছিল। আর তিথিতো সেই জেলাস।
- কাব্য, ছাদে চল।
- হুম, চল।
নিশির পিছুপিছু ছাদের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হাতে টান অনুভব করলাম।
- আরে তিথি, এভাবে টান মারলে কেনো?
- একদম এই মেয়ের সাথে মিশবি না। বুঝলি?
- আরে ওতো...
- চুপ! আর যদি দেখি না। মেরে ফেলব একদম।
,
( বিকেলে)
ঘুরতে যাবো নিশি আর তিথিকে নিয়ে। নিশি একটা কালো শার্ট নিয়ে আসল,
- কাব্য, তুই এটা পড়। বেশ মানাবে তোকে।
- ধন্যবাদ।
পাশ থেকে তিথি বাদ সাধল,
- না, আপনি এই শার্ট পড়বেন।
মিষ্টি কালারের একটা শার্ট।
- আরে তিথি। এটাতেই তো বেশী মানাবে কাব্যকে।
নিশি বলল তিথিকে।
- নাহ, আপনি এটাই পড়েন। এটায় বেশী মানাবে।
নিশি আমার কলার ঠিক করে দিতে দিতে বলল,
- আমার চুজ করা শার্টটাই পড় না ।
- ওকে।
তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। তারপর হাতের শার্ট ফেলে ঘটঘট করে চলে গেলো।
আমি হেসে দিলাম। পিচ্ছি জেলাসবতী বউ আমার।
( একটু ছোট হয়ে গেছে। কিছু করার নাই। যেহেতু আপনাদের কথা দিয়েছি দিবো। সেহেতু দিতেই হলো। ফোনে চার্জ নেই বড় করে দিতে পারলাম না)
.
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com