সে আমার আপন জন । পর্ব -০৪
ইমান এই ব্যপার টা নিয়ে মিম কে তেমন ঘাটলো না।
এবং বাবাকে।
অর্ক ও আহান,,,,,,,,,,, এই মুহূর্তে মিমের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছে কারণ তাদের বুঝতে বাকি নেই। যে মিম খানিক টা চোটে আছে।
রাতে খাবার টেবিলে ইমান মিমকে অনুধাবন করার চেষ্টা করলো,,,,, তার বারংবার মনে হতে লাগলো যে তার কক্ষে মিম ঢুকেছে। মিম,,,,, চুপচাপ খেয়ে হলে গিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে বসলো।
ইমান স্বাভাবিক ভাবেই তাকে জিজ্ঞেস করলো,,,,,,,,
- "আপনার লজ্জা করলো না, নক না করে'ই আমার শয়ন কক্ষে ঢুকতে?" মিম সরল গলায় উত্তর দিলো,
- "আমি দুঃখিত, আসলে বুঝতে পারিনি৷ তাই কৌতু
-হল বশত ঢুকে পরেছিলাম আপনার কক্ষে।" ইমান
মিমের কাছ থেকে এমন সাবলীল উওর পেয়ে বেশ চমকে গেলো,
সে আশা করেনি,,, যে মিম তার নিজের ভুল টা এতো সহজে'ই স্বীকার করে নেবে৷ সে তখন তাকে জিজ্ঞেস করলো,
- "আপনার কি কোনো কারণে মন খারাপ? না মানে,
মা-বাবার জন্য আপনার কষ্ট হচ্ছে?" মিম,,,,,, মুচকি হেসে বললো,
- "হুমম, আসলে আমি আমার বাবা-মা কে অনেক ভালোবাসি। আমি কখনো ভাবতে পারিনা,,, যে বাবা তার মায়ে'র কথায় প্ররোচিত হ'য়ে আমাকে এবং মা কে কষ্ট দেবে। যাগগে সে সব কথা। আমি আমার দাদী'র প্রতি অনেক বিরক্ত, অনেক ঘৃণা করি তাকে।
সে কখনো আমি প্রিয় মানুষের তালিকায় পরে না।
এবং আমার মনে হয় না,,, সে কখনো আমার প্রিয় মানুষ হ'য়ে উঠতে পারবে।" ইমান মিমে'র কথা শুনে বললো,
- "এ ক্ষেত্রে,,, আমি ও একমত আপনার সাথে। বাই দ্যা ওয়ে....! আমি কি আপনাকে "তুমি" করে বলতে পারি?
আপনাকে "তুমি" করে বললে কি আপনার কোনো অসুবিধে আছে?" মিম মুচকি হেসে বললো,
- "নো সুগার মামু,,, অসুবিধে কেন থাকবে? আপনি তে বয়সে বড়, আপনি চাইলে "তুমি" করে সম্বোধন করতে পারেন আমাকে।" ইমান,,,,,, মিমের কথা শুনে জিজ্ঞেস করলো,
- "সুগার মামু মানে কি?? আমি আপনার সুগার মামু হলাম কোন দিক থেকে?" মিম হাসতে হাসতে বলল,
- "নিজে থেকে বুঝে নিন,, আমার হাতে এতো সময় নেই যে সব কিছু খুলে বলবো আপনাকে।" মিমে'র কথা শুনে হাসলো ইমান সে মিম কে অনুরোধ করে বললো,
- "কালকে একটা বিয়েতে দাওয়াত আছে আমার।
আপনি কি যেতে চান আমার সাথে?" মিম,,,,,, তখন
মুচকি হেসে বললো,
- "আমি কেন যাবো? না মানে,,,,,, তারা কি আমাকে বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত করেছে? " ইমান,,,,,,, মৃদু হেসে বললো,
- "সেখানে,,,,, আমার পুরো পরিবার নিমন্ত্রিত এবং আপনি এর ব্যাতীক্রম নন, ঠিক আছে?" মিম,, তাকে
আস্বস্ত করে বললো,
- "আচ্ছা যাবো ক্ষণ..........! কিন্তু ওখানে যেন কেউ নাচতে না বলে আমাকে।" ইমান মুচকি হেসে বললো,
- "আচ্ছা বেশ,
তাহলে তৈরি হ'য়ে থাকুন ঠিক আছে?" মিম মুচকি হেসে নিজের ঘরে চলে এলো, সেখানে সে আহান কে পেয়ে জিজ্ঞেস করলো,
- "কার বিয়ে নিয়ে এতো জল্পনা-কল্পনা চলতেছে?" সে মুচকি হেসে বললো,
- "মামার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু, সোহান মামার। ছোটো মামা নিজে'ই দাঁড়িয়ে থেকে তাদের বিয়ে'র সমস্ত আয়োজন করেছে।" মিম,,,,,, তার কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো,
- "দ্যাট'স গ্রেট.......! তা তোর মামার উইকেট পতন কবে হচ্ছে?" মিমে'র কথা শুনে অর্ক ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,
- "কি জানি? হ'য়তো,,,,,,,, সে চিরজীবন চিরকুমার সংঘে'র সভাপতি হ'য়ে থাকতে চাইছে?" মিম হাসতে হাসতে বললো,
- "সে যা বলেছিস,,,,,, তবে অনেক স্মার্ট সে।" তখন হঠাৎ, করে'ই পূর্বা ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,
- "তুই চাইলে আমাদের মামী শাশুড়ী হতে'ই পারিস। তবে আমার মনে হ'য় না যে এতে অর্ক এবং আহান মাইন্ড করবে।" ওর কথা শুনে মিম একটা স্কেল নিয়ে ওর পেছনে ছুটলো।
পথিমধ্যে, পূবা থেমে গেলো ইমান কে দেখে,,,,,,,,, সে তাকে সালাম দিয়ে বললো,
- "দেখো না মামা,,,,,,, মিম কে বিয়ে করতে বলায় ও আমাকে স্কেল নিয়ে মারতে এসেছে।" ইমান,,,, মুচকি হেসে মিম কে উদ্দেশ্য করে বললো,
- "বিয়ে করা নিয়ে আপনার এতো সমস্যা কেন? এই কথা টা কেন বারবার আপনার অস্বস্তি'র কারণ হচ্ছে?" মিম দাঁতে দাঁত চেপে তখন তাকে বললো,
- "হবে না কেন? আগে জিজ্ঞেস করেনিন ও আমায় কাকে বিয়ে করতে বলেছে?" ইমান সাথে সাথে ভ্রু কুঁচকে পূর্বার দিকে তাকালো, সে বললো,
- "শুনুন মামা, বিয়ে করতে বললে'ই বিয়ে হ'য়ে যায় না। এই কথাটা একটু বুঝিয়ে বলুন, এই বোকা এবং শর্ট টেম্বার মেয়ে টা কে।" মিম বলল,
- "মারবো না একটা চটকানা,,,,,,,,,,,,, যা ভাগ এখান থেকে।" ইমান দু'জনে'র ঝামেলায় না পরে হাসতে হাসতে চলে গেলো।
সকালে সবাই রেডি হয়ে এসে অর্ক কে উদ্দেশ্য করে বললো,
- "কি রে মিম কোথায়? ও কি যাচ্ছে না আমাদের সাথে?" হঠাৎ করেই মিম বলে উঠলো,
- "জ্বি, যাচ্ছি...! সবাই একটু তাকিয়ে দেখ এদিকে।"
মিমের গলা'র আওয়াজ পেয়ে সবাই সিঁড়ি'র দিকে তাকিয়ে পরলো।
ইমান মৃদু হেসে মিম কে বললো,
- "আপনার শাড়ির সাথে দেখছি,,,,, আমার পাঞ্জাবি ম্যাচিং হ'য়ে গেছে?" মিম বলল,
- "হ্যাঁ তো? এতো স্পেশাল ফিল করার মতো কিছু হয়নি মিস্টার। ঠিক আছে?"ইমান মুচকি হেসে বলল,
- "স্পেশাল ফিল করার মতো কি হলো?
আমি জাস্ট,,,,,,,,,,, কথার কথা বললাম আপনাকে।"
মিম বললো,
- "আপনার হাবভাব দেখে তো আমার অন্য কিছু বলে মনে হচ্ছে?" ইমান মিমে'র কথা শুনে হাসলো,
বললো,
- "চলুন, যাওয়া যাক? আমাদের দেরি হ'য়ে যাচ্ছে।"
ওরা সকলে বেলা বারোটায় বিয়ে বাড়িতে পোঁছে
গেলো। বিয়ে বাড়ির গেইটে মিম অনেক বাগ-বিতণ্ডা করলো সকালে সাথে।
অতঃপর তারা বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো, তারপর বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তারা নতুন বউ নিয়ে খুলনা থেকে রওনা হলো তখন রাত সাতটা বাজে।
সবাই গাড়িতে বসে হাসি-তামাশা করছিলো,,,, ইমান কিঞ্চিৎ ঝুঁকে মিমে'র কাছে জিজ্ঞেস করলো,
- "কি হলো? হঠাৎ করে'ই আপনার টেপ-রেকর্ডার টা বন্ধ হয়ে গেল যে?" মিম হঠাৎ করে'ই একটা পলি ব্যাগে নিজের মাথা ঢুকিয়ে ফেললো,,,,,,,, ইমান সঙ্গে সঙ্গে মিমের মাথা টা চেপে ধরে ড্রাইভা'র কে বললো,
- "গাড়ি এক সাইডে রাখুন...! মিম, আপনার কি খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে?" মিম,,,,,,,, সে বমি করে পানি খেয়ে কিছুক্ষণ চোখ বুঝে রইলো, ইমান কে ঝাড়ি মে'রে বললো,
- "বলেছিলাম, যে আমি এতো বেশি খেতে পারবে না
আপনি কেন ঠেসে মুখে তুলে খাইয়ে দিতে গেলেন আমাকে?
ঢং যতসব...............! এখন থেকে দয়া করে নিজের লিমিটের মধ্যে থাকবেন,,, ঠিক আছে?" মিমের কথা গুলো চুপচাপ মনোযোগ দিয়ে শুনলো ইমান,,,,,,,, সে মাথা নিচু করে বসে আছে। মিমের আবারও বমি হল
অর্ক তারপর ইমান কে বললো,
- "মামা তুমি সরে যাও। আমি বসছি ওর কাছে। ও আমার কাঁধে মাথা রেখে একটু ঘুমানো'র চেষ্টা করুক ওর ভালো লাগবে।" মিম রেগে গিয়ে বললো,
- "আমার কারো প্রয়োজন নেই,,,,, ডোন্ট টক রাবিশ অর্ক। ইট'স ওকে।" অতঃপর, গাড়ি আবারও তার নিজ গন্তব্যে'র উদ্দেশ্যে ছুটে চললো,
ইমান অনেক বার করে সেধে সেধে কথা বলার চেষ্টা করলো মিমের সাথে।
মিম ততক্ষণে ঘুমিয়ে কাঁদা,
সে নিজের অজান্তে ইমান কে জড়িয়ে ধরে তার মাথা টা রাখলো তার কাঁধে।
ইমান তখন আলতো হাতে মিম কে ধরে রাখলো৷
রাএি তখন অর্ক আহান কে খোঁচা মে'রে জিজ্ঞেস করলো,
- "বুঝলাম না,,,,,,,,,,,,
এই ব্যপার টা কি হচ্ছে?" পূর্বা মিটিমিটি হেসে বললো,
- "যা হচ্ছে হতে দে না। বদ নজর দিসনা বোন, ঠিক আছে?"
.
চলবে,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com