Breaking News

ভালোবাসা দিন কতটা রঙিন । পর্ব - ০৩

 


ছেলের বোন বললো

-তোমার যদি কোনো কিছু জানার থাকে তাহলে জিঙ্গেস করো।
প্রিয়ন্তি বোকার মতো একটা প্রশ্ন করে বসলো
-আপনি কি কাউকে পছন্দ করেন?
ওপাশে থেকে আচমকা প্রশ্নে ছেলে কি বলবে বুঝতে পারছে না৷ তাই উত্তরে
- না।
ফোনটা কেটে দিলো। ছেলের বোন প্রিয়ন্তির দিকে তাকিয়ে পড়লো। প্রিয়ন্তি লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। ছেলের বোন বললো
- এমন বোকা প্রশ্ন কেউ করে?
- না মানে আপু এখনকার সময় তো আগে এটা জিঙ্গেস করতে হয়। আমার বান্ধবী বলছে।
ছেলের বোন হেসে দিলো। ছেলের বোন বাইরে এসে প্রিয়ন্তির বাবাকে বললো
- চিন্তার কোনো কারণ নেই মেয়ে রাজি হইছে।
- ঠিক আছে।
ছেলের বোন চলে গেলো। প্রিয়ন্তির বাবা খুব খুশি। প্রিয়ন্তির মনে বিয়ের ফুল ফুটলো।
প্রিয়ন্তি আয়নার সামনে নিজেকে দেখছে আর ভাবছে আর লজ্জা পাচ্ছে বেশি। ওর ও বিয়ে হবে সংসার হবে। কতোই না স্বপ্ন। প্রিয়ন্তি স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো। বাড়িতে বেশ উল্লাসে ভরে গেলো। প্রিয়ন্তির বাবা বিয়ের সকল বাজার করলো। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসলো
দুপুরে ছেলে বোন দুলাভাই সহ আরো ১০ জন আসলো। সবাই বসতে দিলো। কাজী আসলো। প্রিয়ন্তিকে সাজানো হচ্ছে। ছেলের বোন ব্যাগ নিয়ে প্রিয়ন্তির রুমে ঢুকলো। ব্যাগ টা দিয়ে বললো
- সবকিছু ঠিক আছে কি না দেইখো। কিছু না থাকলে বইলো।
মিমি বললো
- ঠিক আছে।
ছেলের বোন বের হয়ে গেলো। সবাইকে খেতে দিলো৷ খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই প্রিয়ন্তিকে সাজানো হয়েছে যে রুমে সে রুমে চলে আসলো। কাজী আসলো৷ ছেলেকে ফোন দেওয়া হলো । বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। প্রিয়ন্তিকে কবুল বলতে বললো প্রিয়ন্তি তিন বার আস্তে আস্তে কবুল বললো। ওপাশ থেকে ছেলে ও কবুল বললো। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বললো। কাবিন নামায় সবাই সই করলো। বিয়ে সম্পন্ন হলো। সবাই খুব খুশি।
হাসি খুশি ভাবেই সবাই চলে গেলো। রাত বার টা প্রিয়ন্তি বাবা বাসায় আসলো সাথে ছেলের বোন প্রিয়ন্তিকে ডেকে আনলো। বাড়ির সবাই বেরিয়ে আসলো। একটা কাগজ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রিয়ন্তির বাবা। কাগজটা এগিয়ে দিয়ে বললো
- এখানে একটা সই করে দে।
প্রিয়ন্তি জিঙ্গেস করলো
- কিসের কাগজ
- তোকে যা বলছি তাই কর।
প্রিয়ন্তি কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো ডিভোর্স পেপারস্। প্রিয়ন্ত হতভম্ব হয়ে গেলো। নিমিষেই জেনো চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলো। সব স্বপ্ন জেনো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। মিমি বললো
- বাবা এটা তো ডিভোর্স পেপারস্
- হ্যা। সই কর প্রিয়ন্তি।
প্রিয়ন্তি চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। মিমি বললো
- বাবা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? ও ডিভোর্স পেপারস্ এ সই করবে কেন?
- হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি। ও করবে সই। কর মা সই টা।
প্রিয়ন্তি আর কিছু না ভেবে সইটা করে দেই। প্রিয়ন্তির বাবা ছেলের বোনের হাতে পেপারস্ টা দিয়ে দিলো। প্রিয়ন্তির বাবা প্রিয়ন্তিকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে
- আমাকে মাফ করে দিস। আমি ভূল করে ফেলছি।
প্রিয়ন্তি বাবাকে ছাড়িয়ে ঘরে দৌড় মেরে দরজা আটকিয়ে দেয়।

.
বিয়ের প্রথম রাতেই আমাকে ডিভোর্স পেপারসে্ সই করতে হয়েছে।
বাবা মায়ের কথায় বিয়েতে রাজি হয়েছি আবার তাদের কথায় ডিভোর্স পেপারসে্ সই করেছি।
বিয়ের প্রথম রাতেই ডিভোর্স হওয়া একটা মেয়ের পরিস্থিতি যেমন
থাকে আমার ও ঠিক তেমনি ছিলো৷ আমার সব স্বপ্ন কল্পনা পানিতে ভেসে গেলো।
সেই মুহুর্থে আমি আর আমার মাঝে ছিলাম না৷ চেয়েছিলাম আত্মহত্যা করবো কিন্তু না
এখানে তো আমার কোনো দোষ নেই। চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না।
দরজা বন্ধ করে দিয়ে সারারাত কেঁদেছি৷ আমার কি ভূল ছিলো?
কেন আমার সাথে এমনটা হলো।
আমি তো বিয়েতে রাজি ছিলাম না তবুও কেন তারা আমার সাথে এটা করলো৷
আমি এই মুখ বাইরে কিভাবে দেখাবো৷
এই সমাজের কাছে এখন আমি একজন ডিভোর্সি নারী।
তারা আমাকে দেখলে অনেক কিছুই বলবে৷ আমি তো চাইনি আমার জীবনে এমন একটা দিন আসুক।
বুকের ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে কষ্ট। প্রিয়ন্তি একবার ফ্যানের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার ব্লেডের দিকে।
প্রিয়ন্তি ব্লেডটা হাত নিলো। আমি কিভাবে বেঁচে থাকবো।
আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো। আমি এই সমাজে একজন দোষী মানুষ হয়ে গেলাম।
কেন করলো আমার সাথে এমনটা।
.
এদিকে প্রিয়ন্তির বাবাকে সবাই যা না পারছে বলছে। প্রিয়ন্তির বড় চাচা বললো
- বড় ভাইদের কথা শুনতে হয়। দিলি তো মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে।
- খোকা আমি তোর মা। তুই মায়ের কথাটা শুনতি।
- বাবা তোমার জামাই ঠিকি বলছিলো কিন্তু তুমি কারো কোনো কথায় শুনলা না।
প্রিয়ন্তির বাবা
- আমার অনেক বড় ভূল হয়ে গেছে। আমি জানতাম না। এটা আমি কি করলাম? নিজ হাতে মেয়ের জীবনটা শেষ করলাম।
**
মিমির ফোনে রাজ কল করলো। মিমি ফোন ধরেই
- তুমি কিছু শুনেছো
- হ্যা। শোনো প্রিয়ন্তিকে একদম একা ছাড়বে না এখন। ওর পাশে থেকো। প্রিয়ন্তি কই
- ও রুমে চলে গেছে।
- ব্যস্ত ওকে ডাকো। কিছু করে ফেলার আগে। আমি আসছি
মিমি ভয় পেয়ে যায়। দৌড়ে দরজার কাছে যেয়ে প্রিয়ন্তিকে ডাকতে থাকে। মিমির ডাক শুনে সবাই এসে প্রিয়ন্তিকে ডাকতে থাকলো। প্রিয়ন্তির কোনো সাড়া শব্দ নেই। প্রিয়ন্তির মা বললো
- আমার মেয়ের কিছু হলে তোমাকে আমি ছাড়বো না।
কিছুক্ষণের ভেতর রাজ চলে আসলো। মিমি রাজকে ধরে কান্না করে
- প্রিয়ন্তি দরজা খুলছে না।
- দরজাটা না ভেঙ্গে এখনো কিভাবে আছো।
রাজ দরজাটা ভেঙ্গে ফেললো। ভেতরে ঢুকতেই সবাই থ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো..............
.
চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com