Breaking News

ওসির অহংকারী মেয়ে । পর্ব -০৮

 

হেনা,কি ভাবে পারলি এমন একটা ছেলের মন নিয়ে খেলা করতে,
সে এত বড় মাপের একজন মানুষ হওয়া সত্বেও নিজের টাকা আর নিজের
পজিশন নিয়ে অহংকার করে নি,আর তুই সামান্য একটা ওসির মেয়ে হয়েও এত দেমাগ তোর..?
হেনা,নিজেকে ধিৎকার দিয়ে কান্না করতে থাকে...
আকাশ,ওর ড্রাইভারকে বলে সোজা গাড়ি টান দিয়ে থানায় যেতে,আজ ওসির বারোটা বাজাবে সে...
ড্রাইভার,আকাশের কথা মত গাড়ি টান দিয়ে থানার সামনে নিয়ে যায়,
এদিকে আরুর তো মাথা ভো ভো করে ঘুরছে এড দামী গাড়িতে সে কোন দিন উঠেনি,আরে উঠা তো দূরের কথা সে মিজের সচক্ষে দেখে নি,
সে ভাবতেই পারছে না আকাশ শহরের নাম করা কোটিপতির ছেলে,
আকাশ থানায় গিয়ে সোজা ওসির কাছে চলে যায়,
ওসি,কিরে গরিবের বাচ্ছা আজ কি মনে করে থানায় এলি..?
ঐদিনের ধোলাই তো মনে হয় কম হয়ে গেছে..
আকাশ,এই ওসি গলা নামিয়ে কথা বল,তোর মত দুই টাকার ওসি আমার পকেটে থাকে,আকাশ ওসির অনুমতি না নিয়েই চেয়ারে বসে পড়ে আর ওসির টেবিলে পা তুলে দেয়,
ওসির তো মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আকাশের কর্মকান্ড দেখে,
এই ছোটলোক তোর কত্ত বড় সাহস,তুই আমার সামনে এসে আমার টেবিলের উপরে পা তুলে দিস,একে তো অনুমতি নিস নি তার উপরে আবার বেয়াদবি ও করছিস.?
আকাশ,এই ওসি গলা নামিয়ে কথা বল,না হয় কন্ঠনালিটা সোজা লক করে ফেলবো,তুই বাপ চিনতে এখনো ভুল করেছিস,বলেছিলাম না একক দশকে সব হিসাব করবো,সময় টা এসে গেছে..
ওসি তো সেই লেভেলের ক্ষেপে গেছে,এই বেয়াদবের বাচ্চা আমার সাথে বেয়াদবি বলে সে আকাশের কলার ধরে টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়...
আকাশ,এই ওসি খুব বড় ভুল করছিস,পুরোনো হালখাতার হিসেব এখনো বাকি,তার উপরে নতুন করে আবার হিসেবের খাতা ভাড়ি করছিস..?
ওসি,এই কনস্টেবল এদিকে আয় বেটাকে নিয়ে গিয়ে লকাপে ঢুকা আর ইচ্ছা মতো ধোলাই কর,মাথা থেকে পা পর্যন্ত ধোলাই কর যাতে করে বাকি জীবন আর হাঁটাচলা করতে না পারে,
আরু,দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখছে,কারন আসার সময় আকাশ ওকে বারন করে দিয়েছে,আরু মনে মনে ভাবছে আজ ওসির শেষ দিন,কতবড় তুফান আসতে চলেছে তার কোন আইডিয়া নাই,
কনস্টেবল আকাশকে নিয়ে গিয়ে লকাপে ঢুকায়,ওসি হাতের মধ্যে বড় একটা রোলার নেয়,আর বাকি দুই-তিন জন কনস্টেবল ও হাতের মধ্যে রোলার উঠিয়ে নেয়,
.
আকাশকে ওরা লকাপের মধ্যে ঢুকিয়ে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে,
ওসি রোলারটা দিয়ে যেই না আকাশকে মারতে যাবে তখনি পুরো থানা কাঁপতে আরম্ভ করে,কনস্টেবল একজন দৌড়ে এসে বলে স্যার রানা মাস্তান থানায় এসেছে,তার সাথে কয়েক শতাধিক ছেলে পেলে...
ওসির তো কলিজা কাঁপা শুরু করে,রানা ভাই থানায় কেন,আল্লাহ জানে আজ কপালে কি লিখা আছে,ওসি রানাকে যমের মত ভয় পায়,শুধু ওসি না শহরের যত নামি-দামি ব্যাক্তি আছে সবাই রানাকে বাঘের মত ভয় পায়,
ওসি লকাপ থেকে বের হয়ে রানার কাছে যায়,ভাই আপনি হটাৎ এখানে?
আর ভাই আপনি কেন কষ্ট করে আসতে গেলেন,
আমায় একবার শুধু ফোন করে বলতেন আমি চলে যেতাম,
ওসি এক কনস্টেবলকে বলে এই তোরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছিস যা ভাইয়ের জন্য চা নিয়ে আয়,
ওসির তো ভয়ে বুক ধুপধুপ করছে,বাকি থানার যারা আছে
কারোর কলিজায় পানি নাই,কারন রানা মাস্তান থানায় এসেছে,
ওর নাম শুনে নাই এই শহরে এমন একটা মানুষ ও নাই,
ওর নাম নিয়ে ভয় দেখিয়ে বাচ্চাদেরকে মা বাচ্চাকে ঘুম পাড়ায়,
.
রানা,এই ওসি তোর খেল খতম,তোর নাকি অনেক পাওয়ার বেড়েছে..?
ওসি,রানার পায়ে পড়ে যায়,
ভাই আপনার পায়ে পড়ি আমার কি ভুল হয়েছে বলেন আমি শুধরে নিচ্ছি,ভাই বিশ্বাস করেন আমি কোন ভুল করিনি...
আকাশ,তো লকাপের ভিতর থেকে পৈচাশিক হাসি হাসছে,
আরুর ও সেই হাসি পাচ্ছে,
রানা,এই ওসি তুই কোন ভুল করিস নি,তুই যেটা করেছিস সেটা মহাভুল,যেই ভুলের কোন ক্ষমা নাই,আর তুই আমার পা ধরেছিস কোন সাহসে তোকে তো জুতার তলায় পিষে মারবো...
ওসি,ভাই আপনার পায়ের জুতাটা দিয়ে ইচ্ছা মত আমাকে মারেন,আমি আপনার পোষা কুকুর,কিন্তু ভাই জানে মারিয়েন না,আমার যা ভুল হয়েছি আমি তা শুধরে নিব,প্লিজ ভাই একটা সুযোগ দেন....?
রানা,তোকে আমি কেনো পৃথিবীর কোন কারোর সাধ্য নাই তার হাত থেকে বাঁচানোর,সে যদি তোর প্রান ভিক্ষা দেয় তাহলেই তোর দেহতে প্রান থাকবে..
এমন সময় কনস্টেবল চা নিয়ে আসে,ভাই আপনার চা,চা,চা,,,তোতালাতে তোতলাতে,কনস্টেবল এর হাত অনবরত কাঁপতেছে,মনে হয় এখনি জায়গার মধ্যে মলমূত্র ত্যাগ করবে....
রানা,এই ওসি তুই লকাপে কাকে আটক করেছিস..?
ওসি,ভাই সে থানায় এসে বড় গলায় কথা বলছিলো তাই আটক করেছি,
ভাই সে মনে হয় আপনার লোক,আমার ভুল হয়ে গেছে ভাই,আমি এখনি ছেড়ে দিচ্ছি....
রানা,ওসির বুকের মধ্যে সজোড়ে একটা লাথি মারে,ওসি সোজা লাথি খেয়ে ফ্লোরে গিয়ে ছিটকে পড়ে,এই কুত্তার বাচ্চা সে আমার লোক না,বরং আমি তার পোষা কুত্তা....
ওসির চোখ বড় বড় হয়ে যায়,রানা মাস্তান কি বলছে
এই সব উল্টা পাল্টা😲
রানা,সি ইজ বিল্লা ভাউ,যাকে এক নামে পুরো শহর চিনতো,বিল্লাহ দ্যা কিং,
আমি রানা তার কাছে কাট-পুতলি,আমার মত রানা তার আসেপাশে অনেক গুলা ঘুরঘুর করে,
তুই তাকে লকাপে আটক করেছিস,তাহলে ধরে নে তোর সমাধিটা এই থানায় এই হবে আজকে,
ওসির চোখ দিয়ে ঝর্নার মত পানি ঝরতে আরম্ভ করে,ওসির কলিজা যেন শুকিয়ে গেছে,সে কি করছে তার কোন আইডিয়া নাই,বিল্লাকে লকাপে না শুধু তাকে সারারাত মেরেছেও,
থানার মধ্যে যত পুলিশ মৌজুদ ছিলো কারোর কলিজা সাথে নাই,আজ ওসির পাত্তা কেটে গেছে,
ওসি,দৌড় লকাপে ঢুকে পড়ে,আর আকাশের পায়ে গিয়ে ঝাপটে ধরে,
ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে আমায় ক্ষমা করে দিন,ওসি নিজের হাত দিয়ে নিজের মুখে সজোড়ে আঘাত করতে থাকে,ও ভাই আমায় ক্ষমা করে দিন,আমি জানতাম না আপনি কে,আর আমি আমার পাওয়ার এর ও অপব্যবহার করেছি,আর কোনদিন এমন করবো না বলে আকাশের পায়ে ঝাপটে ধরে কান্না করতে থাকে,
আকাশ,এই ওসি পা ছেড়ে উপরে উঠ,দেখছিস পাওয়ার....?
হা এটাই পাওয়ার,দশজন কনস্টেবল সাথে নিয়ে গিয়ে মানুষকে তুলে এনে লকাপে ঢুকিয়ে মারধর করা এটা পাওয়ার না,পাওয়ার হচ্ছে তোর মত ওসি এসে পায়ে ধরে হামাগুড়ি দিয়ে মাপ চাওয়া,কি বলেছিলাম তোর হালখাতা ভাড়ি হচ্ছে,কিন্তু শুনলি না সেই এসে আমার পায়ে ধরে হামাগুড়ি দিয়ে কান্না করছিস,যা জীবনটা ভিক্ষা দিলাম,কারন এই সমস্ত কিছু আমি ছেড়ে দিয়েছি,না হয় তোর দেহটা এত সময়ে ফ্লোরে পরে থাকতো,এরপর আর এমন পাওয়ার এর অপব্যবহার করিস না...?
ওসি,ভাই আমার জীবন থাকতে আর কোনদিন এমনধারা করবো না...
আকাশ,এই রানা চল..?
তারপর সবাই বাসায় চলে যায়,
কনস্টেবল,একজন ওসির উপরে গরম হয়ে যায়,এই ওসি শোন এটাই হচ্ছে মনুষ্যত্ব,তোর মধ্যে কোন মনুষ্যত্ব নাই...
ওসি,যেনো পাগল হয়ে গেছে,তার মধ্যে কোন হিতাহিত জ্ঞান নাই,
আকাশ,বাসায় এসে পড়ে,সাথে আরুকেও নিয়ে আসে,
আরু,আকাশ তুই এতবড় মাপের একজন হওয়ার পরেও এমন নরমাল হয়ে থাকিস কেন রে..?
আকাশ,ভেসভোসা তে কি আছে...
খালি অহংকার এটাই তো...
শোন অহংকার আমার দুই চোখের শত্রু,
আরু,আসলেই রে তুই মহান একজন মানুষ,তোর মত একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী করে পেতাম জীবনটা সুন্দর হয়ে যেতো😊
আকাশ,কেন করে নে, বারন করেছে কে...?
আরু,নাহ রে তা আর হবে না,কারন একজনের সাথে আমার সম্পর্ক আজ তিন বছরের সে ইতালি থাকে,ওকে আমি অনেক অনেক অনেক লাভ করি,
আর তার চেয়ে বড় কথা তোকে আমি বন্ধু ভাবি আকাশ,তোর পাশে এভাবেই সারাজীবন থাকতে চাই,আজ যদি তাকে ছেড়ে দিয়ে তোর সাথে জীবনের সূত্রপাত করি,তাহলে এটা স্বার্থের লোভ ছাড়া আর কিচ্ছু হবে না😊
আকাশ,যাক তোরা ভালো থাক এটাই দোয়া,আর শোন তোকে নিয়ে আমার মনে এমন কোন ফিলিংস নাই,কারন তুই একটা ভালোমানুষ,তোর মত ভালো চরিত্রের অধিকারী হতে হলে আমায় আরো সাতবার জন্ম নিতে হবে,
সারা জীবন তোর পাশে এভাবে বন্ধু হয়ে থাকতে চাই😊
আরু,আকাশ তুই নিজেকে যাই ভাবিস না কেন,তুই আসলেই অনেক ভালো যেটা আমি জানি😊
আচ্ছা শোন আজ যেতে হবে রে অনেকটা সময় হয়ে গিয়েছে,
আকাশ,আচ্ছা যা কাল কলেজে গেলে দেখা হবে,
আর শোন ড্রাইভার তোকে বাসা পর্যন্ত একদম এগিয়ে দিয়ে আসবে,বাসায় পৌঁছে আমায় ফোন করিস...
আরু,আচ্ছা তারপর চলে যায়,
আকাশ,এখন দুনিয়ার সব চাইতে হ্যাপি একটা মানুষ, কারন সে নিজেকে বদলাতে শিখে গেছে,তার মধ্যে এখন কোন হিংস্রতা নাই,তার চাইতে বড় কথা হচ্ছে তার জীবনে আরু নামের একটা ভালো বন্ধু পেয়েছে,
পরেরদিন সকাল বেলা রেডি হয়ে কলেজে চলে যায়,
আজ একদম পুরো ভিন্ন গেটাপে,ল্যাম্বারঘিনিটা নিয়ে সে নিজে ড্রাইভ করে কলেজের সামনে পার্ক করে,তারপর সে ভিতর থেকে নেমে আসে,পুরো কলেজের সবাই গাড়িটার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,
আকাশকে দেখে সবাই তো অবাক,এক কথায় রাজপুত্রের মত লাগছে,ওকে দেখে কেউ চোখ ফিরাতে পারছে না,
এমন সময় কেউ একজন পিছন থেকে এসে আকাশকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,আর আকাশের ঘাড়ের মধ্যে কয়েকটা চুমু বসিয়ে দেয়...
.
চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com