সিনিয়র লেডি ডন বউ। পর্ব - ০৫
আমিঃ নাহ আমার এইসব ভালো লাগে না আর আপনি এইসব আর করবেনও না (কি আর কমু ভাই মাইয়ার লজ্জা শরম বলতে কিচ্ছু নেই)।।
মিমঃ আচ্ছা করব না তবে আজ রাতে একটু করব।। কারণ তোমার পালানোর শাস্তি এখনও রয়েগেছে।।
আমিঃ নিচে তু আমায় কয়েকটা চড় মেরেছিলেন।। এতে কি আমার শাস্তি শেষ হয়নি..?
মিমঃ কিছুটা হয়েছে কিন্তু এখনও পুরোটা হয়নি।। তাই রাতে এর পুরো শোধ নিয়ে নিব।।
আমিঃ কিছু বললাম না কারণ যত যাই বলি না কেন উনি বুঝবেন না।।
মিমঃ আচ্ছা তুমি বিছানায় বস আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।। সারাদিন ধরে তু কিছুই খাওনি, আর হে একদম পালানোর চেষ্টা করবে না নাহলে এর ফল খুব খারাপ হবে।।
কথাগুলো বলেই মিম আপু বাহিরে চলে গেলেন।। আমিও আর দাড়িয়ে না থেকে বিছানায় বসে পরলাম।। জানি এখন আর পালাতে পারব না।। আর পালাতে গিয়ে যদি মিম আপুর কাছে আবার ধরা পরে যাই তাহলে নিশ্চয় অবস্থা খারাপ করে দিবেন।।
রুমে একা একা বসে আছি এমন সময় মিম আপু হাতে খাবার প্লেট নিয়ে হাজির।। প্লেটটা নিয়ে সোজা আমার পাশে এসে বসে পরলেন।।
মিমঃ এই নাউ হা কর আমি তোমায় খাইয়ে দিচ্ছি।।
আমিঃ আমার হাত দিয়ে আমি খেতে পারব কাউকে খাইয়ে দিতে হবে না।।
মিমঃ কথা কম বলে যা বলছি তাই কর নাহলে শাস্তিটা বেড়ে যেতে পারে।।
আমিঃ দুরর ভালো লাগে না কিছু।।
তারপর একপ্রকার বাধ্য হয়েই হা করতে হলো।। মিম আপু আমার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন আর আমি খাচ্ছি।। প্লেটের খাবার প্রায় অর্ধেক খাওয়া হলে মিম আপু প্লেটটা আমার হাতে দিয়ে দিলেন।।
আমিঃ আগেই তু বললাম আমি নিজ হাতে খেতে পারব তাহলে অর্ধেক খাইয়ে রেখে দিলেন কেন..?
মিমঃ বাকি খাবারগুলো আমি খাব তাই।।
আমিঃ তু খান প্লেটটা আমার হাতে দিচ্ছেন কেন..?
মিমঃ কারণ এখন তুমি আমায় তোমার হাতে খাইয়ে দিবে।।
আমিঃ সরি আমি পারব না আপনার ইচ্ছা হলে নিজ হাতে খান।।
মিমঃ কি বললা আবার বল..? (একটু রেগে)
আমিঃ বললাম তু পারব না।।
মিমঃ আমি জানতাম তুমি এটা বলবে তাই এর ব্যাবস্থা আগে থেকেই করে রেখেছিলাম (কথাটা বলেই বিছানার নিচ থেকে একটা চাকু বের করলেন)।।
আমিঃ একি আপনি চাকু কই পেলেন..?
মিমঃ সেটা তোমার না জানলেও চলবে এখন বল একটু আগে কি যেন বলেছিলে..?
আমিঃ ককই কি বললাম..?
মিমঃ তুমি না বললে আমায় খাইয়ে দিবে না (চাকুটা আমার কাছে এনে)।।
আমিঃ না না আমি এটা কখন বললাম, আমি খাইয়ে দিব বলেছি তু।।
মিমঃ এইতু লাইনে এসেছ এখন চুপচাপ খাইয়ে দাউ তু অনেক খিদে লেগেছে।।
আমিঃ এরপর বাধ্য হয়ে মিম আপুকে খাইয়ে দিতেই হলো।।
মিম আপুকে খাইয়ে দিচ্ছি আর উনি ছোট বাচ্চাদের মতো খেয়ে যাচ্ছেন।। চাকুটা এখনও হাতে নিয়ে বসে আছেন।। খাবার মুখে দিতে একটু দেড়ি করলেই মিম আপু চাকুটা দিয়ে ভয় দেখান।। সবমিলিয়ে একটা প্যারার মধ্যেই আছি।।
মিম আপুর খাওয়া শেষ হলে প্লেটটা নিয়ে বাহিরে চলে গেলেন।। আমি আর কি করব রুমে একা একা বসে রইলাম।। অনেক্ষণ ধরে একা বসে থাকতে থাকতে শরীরটা ক্লান্ত লাগতে শুরু করল।। পাশে যখন বিছানা আছে তাহলে একটু শুয়ে পরি তাহলে ভালো লাগবে।। যেই ভাবা সেই কাজ বিছানায় পরে দিলাম ঘুম।।
ঘুম ভাঙল কারও নরম হাতের ছোয়ায়।। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি মিম আপু আমার মাথার কাছে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।। আমার দিকে উনি এক নজরে তাকিয়ে আছেন যা দেখে আমি একটু পেলাম।। লজ্জায় শুয়া থেকে উঠে বসলাম।।
মিমঃ কি হলো উঠে পরলে কেন তুমি ঘুমাউ আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।।
আমিঃ না শরীরটা একটু ক্লান্ত লাগছিল তাই শুয়ে পরেছিলাম।। এখন ভালো লাগছে আর ঘুমাব না।। আপনি কখন আসলেন..?
মিমঃ একটু আগে আসলাম এসে দেখি তুমি শুয়ে আছ তাই আর ডাক দিলাম না।।
আমিঃ ওহ, তু এখন কয়টা বাজে..?
মিমঃ ৭টা বেজে গেছে।।
আমিঃ আচ্ছা আমার একটা আবদার পূরণ করবেন..?
মিমঃ কি বল..?
আমিঃ বলছি কি অনেকদিন ধরে তু বাসার কারও সাথে যোগাযোগ হয়নি।। যদি একটু বাসায় ফোন করতে দিতেন।।
মিমঃ এতো যোগাযোগ করা লাগবে না যেভাবে আছ সেভাবেই থাক (একটু গম্ভীর কণ্ঠে)।।
আমিঃ আচ্ছা (জানি আর কথা বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না তাই আর কিছু বললাম না)।।
দেখতে দেখতে অনেকটা সময় কেটে গেল।। এদিকে মিম আপুও কোথায় জানি চলে গেলেন।। একটু পর আবার রুমে আসলেন হাতে একটা খাবার প্লেট নিয়ে।। প্লেটটা নিয়ে আমার কাছে এসে বসে পরলেন।।
আর কি বলব দুপুরের মতোই আমাকে উনি খাইয়ে দিলেন আর উনাকেও আমায় খাইয়ে দিতে হলো চাকুর ভয়ে।। খাওয়া শেষ হলে প্লেটটা নিয়ে উনি আবার বাহিরে চলে গেলেন।। একা একা রুমে বসে আছি তখন আবার মিম আপু রুমে আসলেন।।
আমিঃ আমি ঘুমাব কোথায়..?
মিমঃ কেন এই রুমে।।
আমিঃ আর আপনি..?
মিমঃ তোমার সাথে।।
আমিঃ কিহহ!! অসম্ভব আমি আপনার সাথে এক বিছানায় ঘুমাতে পারব না।।
মিমঃ কি বললা পারবা না তাইনা..? (বিছানার কাছে এসে চাকুটা বের করে)
আমিঃ দেখেন সবসময় ভয় দেখাবেন না।। আর আমাদের কিন্তু এখনও বিয়ে হয়নি সো দুজন এক বিছানায় ঘুমানোর প্রশ্নই আসে না।।
মিমঃ চুপ আর একটা কথাও নয়, আমি যা বলেছি তাই হবে।। আমরা এক বিছানাতেই ঘুমাব।।
আমিঃ আচ্ছা, কিন্তু আমাদের মধ্যে কুল বালিশ থাকতে হবে নাহলে আমি ঘুমাব না (জানি না করলেও শুনবে না তাই এটাই বললাম দেখি কি বলে)
মিমঃ আচ্ছা ঠিক আছে।।
আমিঃ আচ্ছা তু এখন ঘুমিয়ে পরি অনেক তু রাত হলো।।
মিমঃ হুম তার আগে তোমার শাস্তিটা তু দিয়ে দেই।।
আমিঃ মামানে কিসের শাস্তি আমি কি করলাম..?
মিমঃ ওই যে পালানোর শাস্তি সেটা তু এখনও রয়েগেছে।।
আমিঃ এই মেয়ে তু দেখছি শাস্তি শাস্তি করে মাথাই খেয়ে নিবে, এখন কি করব..?
মিমঃ বিড়বিড় করে কি বলছ..?
আমিঃ না কিছু না, আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাতে গেলাম।।
মিমঃ তার আগে শাস্তিটা তু দিয়ে দেই।।
আমিঃ কি শাস্তি..?
মিমঃ উমম চোখ বন্ধ কর আমি শাস্তি দিয়ে দিব।।
আমিঃ শাস্তি দিতে হলে আবার চোখ বন্ধ করা লাগে নাকি..?
মিমঃ যা বলছি তাই কর এতো কথা বল কেন..?
আমিঃ আচ্ছা এই নেন করলাম (চোখ বন্ধ করে)।।
এদিকে আমি অনেক্ষণ ধরে চোখ বন্ধ করে আছি কিন্তু মিম আপুর কোনো সাড়াই পাচ্ছি না।। একটু পর হঠাৎ আমার মুখের উপর কারও গরম নিশ্বাস পরতে শুরু করল।। কি হচ্ছে বুঝার জন্য চোখ খুলতেই দেখি মিম আপু ধীরে ধীরে উনার মুখ আমার মুখের দিকে নিয়ে আসছেন।।
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই মিম আপু উনার ঠোঁট দিয়ে আমার ঠোঁট চেপে ধরলেন।। পরে কি হলো বুঝতেই তু পারছেন।। নিজেকে উনার থেকে ছাড়াতেই পারছি না।। অবশেষে ৫ মিনিট পর উনি নিজ থেকেই আমায় ছেড়ে দিলেন।।
ছেড়ে দিয়ে দুজনেই একসাথে হাপাচ্ছি।। মারডালা রে এটা মেয়ে নাকি কোনো রোবট..? আরেকটু হলে নিশ্চয় আমায় আর খুজে পেতেন না যেভাবে চেপে ধরেছিল।।
মিমঃ কি হলো এতো কি ভাবছ একটায় পেট ভরে নি বুঝি..? (দুষ্টু হাসি দিয়ে)
আমিঃ কি বলছেন এইসব লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই নাকি আপনার..? একটা ছোট নিষ্পাপ বাচ্চাকে যেকোনো সময় কিস করে বসেন।।
মিমঃ ওলে নিষ্পাপ বাচ্চালে।। কাল বিয়ে করলে মাস খানিক পরে বাচ্চার বাপ হবে আর নিজেকে নিষ্পাপ বাচ্চা বল।।
আমিঃ আমার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি সো আমি তু বাচ্চাই।।
মিমঃ আর বেশিদিন বাচ্চা থাকতে হবে না বিয়েটা হলেই বড় হয়ে যাবে।।
আমিঃ মানে কার বিয়ে..?
মিমঃ কারও নয়, অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পর যাউ।।
আমিঃ আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বিছানায় গিয়ে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে পরলাম।। এর আগে মাঝখানে একটা কুল বালিশ রেখে দিলাম।।
বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম খেয়ালই নেই।।
সকালবেলা
ঘুম ভাঙলে বুকে ভারি কিছু একটা অনুভব করলাম।। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি মিম আপু আমায় জড়িয়ে ধরে আমার বুকের উপর শুয়ে আছেন।। এটা দেখে সাথে সাথে আমি লাফ মেরে বিছানা থেকে উঠে বসলাম।। আমি উঠাতে মিম আপুরও ঘুম ভেঙে গেল।।
মিমঃ কি হলো এইভাবে উঠে পরলা কেন..? কতো সুন্দর একটা সপ্ন দেখছিলাম তোমায় নিয়ে (ঘুম ঘুম চোখে)।।
আমিঃ আরে রাখেন আপনার সপ্ন, আগে বলেন আপনি আমার বুকের উপর শুয়ে ছিলেন কেন..?
মিমঃ ওহ এই ব্যাপার আসলে বালিশে ঘুমাতে ভালো লাগছিল না তাই তোমার বুকের উপর শুয়ে ছিলাম।।
আমিঃ তাই বলে আপনি আমার বুকের উপর শুবেন..? গতকাল রাতে না বিছানার মাঝখানে কুল বালিশ রেখেছিলাম সেটা কই..?
মিমঃ আমাদের মাঝখানে ডিস্টার্ব করছিল তাই ফেলে দিয়েছি।।
আমিঃ কি আর বলব ভাই বলেন এই মেয়ে তু দেখছি কিছুই বুঝেনা।। শুধু মনে মনে উনাকে ইচ্ছামতো গালি দিচ্ছি কারণ সরাসরি বললে আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে।।
মিমঃ আচ্ছা এখন উঠেই যখন পরেছ তাহলে ফ্রেশ হয়ে নাউ আমি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।।
কথাটা বলে উনি উঠে চলে গেলেন।। আমি আর কি করব ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।। ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসে দেখি মিম আপু নাস্তা নিয়ে বিছানায় বসে আছেন।।
তারপর দুজন একসাথে বসে নাস্তা করে নিলাম।। নাস্তা শেষ হলে মিম আপু প্লেট নিয়ে বাহিরে চলে গেলেন।। দেখতে দেখতে কেটে গেল ২দিন।।
আজ দুপুরবেলা খাবার খেয়ে রুমে বসে আছি তখনই বিছানার বালিশের নিচে চোখ পরতেই দেখলাম একটা ফোন।। এটা আবার কার ফোন দেখি তু একটু।। বালিশের নিচ থেকে বের করে দেখি এটা মিম আপুর ফোন।।
আরে ফোনে তু দেখছি কোনো লক নেই মানে আনলক করা।। এই তু পেয়েছি দেখি এটা দিয়ে কাউকে ফোন করা যায় কি না।।
এরপর ফোনে শুভর নাম্বার তুলে দিলাম কল।। অনেক্ষণ ধরে রিং হচ্ছে কিন্তু ফোন ধরছেই না।। প্রথমবার কেটে গেল তারপর আবার দিলাম।। ২বার রিং হতেই অপাশ থেকে কে যেন কল রিছিভ করল।।
হেল কে বলছেন (অপাশ থেকে)
আমিঃ হেল কে শুভ আমি তামিম বলছি।।
কিহহ তামিম বন্ধু কোথায় তুই..? কেমন আছিস কোন অবস্থায় আছিস..? (অপাশ থেকে শুভ বলল কথাগুলো)
আমিঃ ভাই আমি ভালো না আমাকে মি (আর কিছু বলতে যাব তার আগেই কে যেন আমার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিল)।।
ফোনটা কে নিল দেখার জন্য সামনে তাকাতেই দেখি মিম আপু আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।। ওয়াল্লাহ খাইছে আমারে আমি শেষ।।
.
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com