Breaking News

ভালোবাসা দিন কতটা রঙিন । পর্ব - ০২



পরের দিন সকালে মিমি আর রাজকে দেখে প্রিয়ন্তির বাবা আকমল খা বললো

- তোমরা এসেছো খুব ভালো হয়েছে।
রাজ বললো
- আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
-জামাই যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে। আমি আসছি।
- না বাবা কথাটা গুরুত্বপূর্ণ।
- ঠিক আছে বলো।
- প্রিয়ন্তিকে দেখতে এসে আংটি পড়ায় গেছে।
- হ্যা। প্রিয়ন্তি ফোন দিয়ে বলছে তাই না।
- প্রিয়ন্তিকে এখন আর বিয়ে দিতে হবে না। ওর পড়াশোনা শেষ হোক তারপর বিয়ে দিয়েন।
আকমল খা উঠে দাঁড়িয়ে
- তুমি কি বলছো নিজে জানো।
-হ্যা জানি।
- মেয়েকে আমি ওখানে বিয়ে দিবো।
- আমার ছেলেকে পছন্দ না।
- তোমার পছন্দ দিয়ে কি যায় আসবে আমার।
তুমি জামাই জামাইয়ের মতো থাকো। আমি ভালো মন্দ বুঝি ওকে৷ ঐ ছেলের সাথে আমি মেয়েকে বিয়ে দিবো। এটাই ফাইনাল।
শশুরের মুখে এমন কথা শুনকে রাজ বাকরুদ্র হয়ে গেছে। মিমি অবাক হয়ে গেলো। রাজ আর না দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলো। প্রিয়ন্তি মন খারাপ করে বসে আছে।
মিমি বাবাকে বললো
- বাবা তোমার ওকে এভাবে বলা ঠিক হয়নি।
বাবা রাগি গলায়
- তোমার থেকে আমার শিখতে হবে। যাও এখান থেকে।
মিমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না। মায়ের কাছে চলে গেলো সোজা।
**
প্রিয়ন্তি রাজকে দেখে
- ভাইয়া আব্বুকে বলছেন।
-বলেছি কিন্তু সে নাছোড়বান্দা৷ সে যা বলেছে তাই করবে।
-একটু বোঝান না।
- বুঝিয়েছি। কিন্তু সে আমাকে যা বললো কিভাবে অধিকার দেখাবো।
-তাহলে কি?
রাজ প্রিয়ন্তির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে
-বোন রে আমার এখানে আর কিছু করার নেই। তুই রাজি হয়ে যা। যা বলে তাই শুনিস। তোর বিয়েতে আমি থাকতে পারবো না। পারলে তোর এই ভাইটাকে মাফ করে দিস। তোর জন্য কিছু করতে পারলাম না। আমি তো এই বাড়ির জামাই। ছেলে না কিভাবে অধিকার দেখাবো।
রাজের চোখের কোণায় পানি চলে আসলো। রাজ ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
**
মিমি মায়ের কাছে যেয়ে কান্না করে দিলো। মা জিঙ্গেস করতেই মিমি সবটা বললো। মা তো পুরো অবাক হয়ে গেলো। মিমি কান্না করে
- বাবা এতোটা বদলে গেলো কি করে? আগে তো এমনটা ছিলো না।
-তোর বাবার জানো কি হয়েছে? এই প্রস্তাব পাওয়ার পর থেকে তার মাথা কাজ করছে না। মেয়েকে বিয়ে দিবে।
- কেউ কি বাবার ব্রেন ওয়াশ করছে।
-আমার ও তো তাই মনে হয়। সে তো আমার অন্যের কথা লাফায় বেশি।
- রাজ কতোটা কষ্ট পেয়েছে বাবার এই কথায়।
- রাজ কে ডেকে আন ওকে সবটা বুঝিয়ে ফেলি।
-প্রিয়ন্তির কাছে গেছে ওর সাথে কথা বলতে।
**
আকমল খা এর মা আকমলকে বললো
-খোকা শোন
-হ্যা মা বলো
-দাদুকে এখন বিয়ে দিতে হবে না৷ আমার এই সম্বন্ধটা ভালো থেকছে না। ও আরো বড় হোক পড়াশোনা করুক
- মা তুই এই বয়সে এসব কি বলছো? ওর তো বিয়ের বয়স হয়েছে। আর ছেলের তো দেশে আসতে ৩ বছর লাগবে। সবকিছু করে রাখি সমস্যা কই।
- তুই ছেলের সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ নিয়েছিস নাকি অন্যের কথায় তোর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।
- মা তুমি এসব কি বলছো? আমার মেয়েকে আমি বিয়ে দিবো নিশ্চয়ই ভালো জায়গা। ছেলের ফ্যামিলির সবাই অনেক ভালো। আমার মেয়ে রাজরানি হয়ে থাকবে।
- বাবারে তুই এই বিয়েটা দিস না। আমার মন টানছে না।
- মা তোমার এতো চিন্তা করতে হবে না।
আকমল খাঁ চলে গেলো।
***
মিমি প্রিয়ন্তি রুমে এসে ওকে কান্না করতে দেখে বললো
- তোর ভাইয়া কই?
-ভাইয়া চলে গেছে।
- চলে গেছে মানে
মিমি ফোনটা বের করে রাজকে ফোন দিলো। কিন্তু রাজ ফোন তুললো না। মিমি প্রিয়ন্তিকে বললো
- আমাকে ডেকে বলবি না।
-ভাইয়া বাবার কথায় অনেক কষ্ট পেয়েছে।
মিমি প্রিয়ন্তিকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো। দু বোন জরিয়ে ধরে কান্না করলো।
**
বিকালে ছেলের বোন আসলো প্রিয়ন্তিকে আবার দেখতে। ছেলের বোনকে বসতে দেওয়া হলো৷ নাস্তা দিলো। প্রিয়ন্তির বাবাকে বললো
-আঙ্কেল প্রিয়ন্তি কই?
- আসছে। তুমি মামনি খেয়ে নাও।
-না আগে নিয়ে আসুন।
-আচ্ছা খেতে লাগো নিয়ে আসতাছি।
কিছুক্ষণ পর প্রিয়ন্তিকে নিয়ে আসলো। ছেলের বোন প্রিয়ন্তিকে হাত ধরে নিয়ে পাশে বসিয়ে
- ওর সাথে আমি একটু আলাদা কথা বলতে চাই।
ছেলের বোনের কথা শুনে সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ছেলের বোন বললো
- তুমি না কি বিয়েটা করতে চাচ্ছো না?
প্রিয়ন্তি পুরো অবাক হয়ে গেলো কথাটা শুনে। ছেলের বোনের দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলের বোন আবার বললো
-সমস্যা নেই বলো। ভয় পেয়ো না।
প্রিয়ন্তি মাথা নিচু করে
- হ্যা।
- তুমি কি কাউকে ভালোবাসো?
- না।
-তাহলে বিয়েতে অমত কিসের।
-আমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত না। আমার পড়াশোনাটা শেষ করে বিয়ে করবো।
-শোনো আমরা মেয়েরা কখনো বিয়ের জন্য প্রস্তুত থাকি না । সবকিছু হুট করে হয়ে যায়। আর তোমার পড়াশোনা তুমি চালিয়ে যেয়ো আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমার ভাই তো তিন বছর পর আসবে।
-বিয়ের পর মেয়েদের আর পড়ায় না। সবাই বিয়ের আগে বলে ঠিকি কিন্তু বিয়ের পর তার উল্টো হয় । সংসার সামলাবে না পড়াশোনা।
- সবকিছু নিজের ইচ্ছার কাছে। আর আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তুমি যতদূর পড়াশোনা করতে চাও আমি করাবো।
ছেলের বোনের মুখে এ কথা শুনে প্রিয়ন্তি স্বস্তি পেলো। ছেলের বোন বললো
- আর কোনো আপত্তি আছে তোমার।
-না কিন্তু
-কিন্তু কি আবার
- আপনার ভাইয়ের যোগ্য হতে পারবো।
- তোমার কোনো দিক দিয়ে কমতি নেই। অবশ্যই তুমি যোগ্য। আর কোনো সমস্যা আছে।
-না।
ছেলের বোন ফোন বের করে ভাইকে ফোন দিলো প্রিয়ন্তির কাছে ফোনটা ধরিয়ে দিলো। প্রিয়ন্তি কাঁপা কাঁপা গলায়
- আসসালামু আলাইকুম
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।
-কেমন আছেন?
-হ্যা ভালো তুমি
-আলহামদুলিল্লাহ।
প্রিয়ন্তির মুখ দিয়ে আর কোনো কথা আসলো না। ছেলের বোন বললো
-তোমার যদি কোনো কিছু জানার থাকে তাহলে জিঙ্গেস করো।
প্রিয়ন্তি বোকার মতো একটা প্রশ্ন করে বসলো।। ছেলের বোন প্রিয়ন্তির দিকে তাকিয়ে পড়লো..........
.
চলবে......

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com