Breaking News

গল্পঃ কিশোরী বউ । পর্ব -০১



-এই আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না বলে দিলাম

-মানে?
-হ্যা আমার উপরে কোনো অধিকার খাটাতে আসবেন না
-ওকে সেটা না হয় দেখা যাবে কিন্তু কি কারনে এসব বলা হচ্ছে?
-আমি এই বিয়েতে রাজি ছিলাম না
-তো বিয়ে করছো কেনো?
-মা-বাবা আমার কোনো কথাই শোনে নাই
-কি কারনে বিয়ে করতে রাজি হও নাই?
-অনেক কারন আছে
-প্রেম টেম করো নাকি?
-ঐ মিয়া বিয়াতে রাজি না হওয়ার কি এই একটা রিজন-ই থাকে?
-আমি তো জানি এই কারনেই অনেকেই বিয়েতে রাজি হতে চায় না
-আমি অন্য কারনে
-কি কারন?
-আমার বয়স কত জানেন?
-পরিবার থেকে জানতে পেরেছি এসএসসি দিয়েছো
-হ্যা এই বছর এসএসসি দিলাম আর তার মাঝেই আপনার ফেমিলি আর আমার ফেমিলি উঠেপড়ে লাগছে বিয়ের জন্য,আমি আমার মাকে কত করে বললাম মা আমি মিনিমাম ইন্টার পরীক্ষা টা দিয়ে নেই কিন্তু কে শুনে কার কথা? আমার কোনো কথার দাম না দিয়ে যতদ্রুত সম্ভব বিয়ে দিয়ে দিলো
-সমস্যা কি ইন্টার পরীক্ষা?
-হ্যা ততদিনে আমার বয়স ও ১৮ হতো, একটা মেয়ের বিয়ে করার পারফেক্ট টাইম বলা যেতে পারে
-ওহহ
-আচ্ছা আপনি তো পড়ালেখা করেছেন, আপনিই বলেন আমার মা-বাবার কাজটা কি ঠিক হয়ছে?
-মিফতাহ এর কথায় তাল মিলিয়ে, নাহ একদম ঠিক হয়নি
-হুহ
-তো এখন কি করবা বলে ভাবছো?
-আমি যে কোনো মূল্যে ইন্টার পরীক্ষা দিতে চাই
-আচ্ছা সেটা করা যাবে
-কিভাবে?
-আমরা যেখানে থাকবো সেখানকার ভালো কোনো কলেজে ভর্তি করিয়ে দিবো
-সত্যিই? বলে খুশিতে লাফিয়ে উঠে
-এখন চলো গল্প করি
-শুধু গল্পই করবো
-বাসরঘরে নাকি বিড়াল মারে সেটা কি মারা হবে না?
-না মারামারি করা ভালো না
-আয়াশ মন খারাপ করে চুপ হয়ে আছে
-হিহিহি ইন্টার শেষ হওয়ার পরে মাইরেন
-মানে?
-মানে হলো এই দুইবছর আমাদের মধ্যে কিছুই হবে না
-আচ্ছা ঘুমাও তুমি
-আপনি ঘুমাবেন না?
-নাহ পরে ঘুমাবো
-বুঝি তো আমি সবই বুঝি
-কি বুঝো?
-আমি ঘুমাবো আর এই সুযোগে আপনি ঘুমের মাঝে আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন
-আল্লাহ গো এত সন্দেহ?
-হুহ তা নয়তো কি? মা-বাবা ই তো কথা শুনেনাই আর আপনি শুনবেন এটার কি কোনো গ্যারান্টি আছে নাকি?
-আয়াশ বিছানায় শুতে শুতে মিফতার দিকে তাকিয়ে,বিশ্বাস করতে পারো।
মিফতাহ তখন কোলবালিশ টা টেনে দুজনের মাঝে রেখে আয়াশের দিকে তাকিয়ে
-আচ্ছা আপনি কি প্রেম করেন নাই কখনো?
-নাহ
-এটা মিথ্যা কথা
-মিথ্যা মনে হলো কেনো?
-ভার্সিটিতে পড়েছেন আর প্রেম করেন নাই এটা আমি কেনো কোনো পাগল ও বিশ্বাস করবে না
-বিয়ের পরে করবো বলে কখনো কোনো মেয়েদের পিছু লাগিনি
-ওহ
-ওকে ঘুমাও এখন
-ওকে গুড নাইট বলে অন্যপাশ হয়ে শুয়ে পড়ে।
হ্যা আল্লাহ কি পাপ করেছিলাম? যার কারনে তুমি আমার সাথে এমনটা করলে? মনে হয় পৃথিবীতে আমিই একমাত্র পুরুষ যে বাসর রাতে দুজনের মাঝে কোলবালিশ দিয়ে ঘুমাচ্ছি।
কত ইচ্ছা ছিলো দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে গল্প করবো কিন্তু কোনোকিছুই হলো না উল্টা আরো মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে এসব ভাবতে ভাবতে ঘন্টাখানেক পার হওয়ার পরে ক্লান্তিকর শরীরে ঘুম চলে আসে।
রাত গিয়ে ভোর হয়...
ভোরে লাইটের আলোয় আয়াশের ঘুম ভাঙ্গে, আয়াশ ঘুমঘুম চোখ নিয়ে তাকিয়ে দেখে মিফতাহ ঘোমটা দিয়ে নামাজের জায়নামাজে নামাজ পড়তেছে। আয়াশ হাত দিয়ে চোখ কচলে চোখের ঘোলাটে ভাব খানিকটা দূর করে।
মেয়েটাকে মনে হয় আল্লাহ নিজ হাতে পরম যত্নে বানিয়েছে,এত সুন্দর মেয়ে সত্যিই আমি এর আগে দেখিনি।
এসব ভাবতে ভাবতে মিফতাহ নামাজ শেষ করে খাটের উপড়ে পা উঠিয়ে বসে
-এমন হা করে কি দেখছেন?
-পরী দেখছি
-কিহহ? এখানে পরী আসলো কোথা থেকে বলে ফিক করে হেসে দেয়
-এই যে আমার সামনে এখন পরীটা হাসতেছে
-কে পরী
-আমার বউ
-আমি পরী?
-পরী কখনো দেখিনি কিন্তু আজকে মানবপরী দেখছি
-হয়ছে আর পাম্প দেওয়া লাগবে না
-পাম্প না আসলেই তুমি অনেক সুন্দর এসব বলতে বলতে দরজায় টোকা পরে
টোকা দেওয়ার সাথে সাথে আয়াশ টেবিল থেকে লিপস্টিক টা হাতে নিয়ে মিফতার হাত ধরে কাছে টেনে ঠোটের কাছে লিপস্টিক দিয়ে লেপ্টে দেয়
-এটা কি হলো?(রেগে)
-না হলে ওনারা সন্দেহ করবে
-এখানে সন্দেহ করার কি আছে?
-ভাববে আমাদের মাঝে কিছুই হয় নাই
-আসলেই তো হয় নাই
-তো এটাকে কি সবাই বুঝতে দেওয়া যাবে?
-না হ্যা না না না এটা বুঝে গেলে মা-বাবা আমাকে মেরেই ফেলবে
-কেউ যাতে বুঝতে না পাড়ে তাই সবার সামনে আমাদের একটু অন্যরকম ভাবে থাকা লাগবে।
এসব বলতে বলতে দরজায় আবার টোকা পড়ে।
মিফতাহ তখন দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজাটা খুলে দেখে
আয়াশের দাদীমা দরজায় দাড়িয়ে মুখ টিপে টিপে হাসতেছে।
মিফতাহ লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গি ধরে খাটের পাশে মাথানিচু করে দাড়িয়ে আছে
.
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com