Breaking News

গল্পঃ দেহ

 

নাম কি?

-বেশ্যা
-মানে কি? আসল নাম বলো
-দেহ
-এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি? কি বলতেছি আর কি বলতেছো?
-সত্যিই তো বললাম। জগতের সবাই বেশ্যা নামেই ডাকে,আপনিও তাই বলে ডাকতে পারেন, কোন সমস্যা নাই আমি কিছু মনে করবো না
-এখানে কি কারণে আসছো?
-শরীর বেচতে আইছি,কিনবেন? আজকে আমারে নিয়া নেন তাতে আপনারো লাভ আমারো লাভ
-লাভ?
-সারারাত যা চাইবেন তা-ই দিমু
-তুমি যা ভাবছো আমি এরকম না,যাও এখান থেকে দূর হও
-স্যর লইয়া যান আজকে,টাকার খুব দরকার
-কি জন্যে?
-কালকে ছোট ভাইটার পরীক্ষা, এখনো টাকা দিতে পারি নাই
-এসব ভণ্ডামি ছাড়ো
-এজন্যই তো কাউকে পার্সোনাল কথা না বলে ডাইরেক্ট কাম করার অফার দেই,এসব কইলে কেউ বিশ্বাস করে না
-যা এখান থেকে
-স্যার কালকে ১০ টার আগে টাকা পাঠাতেই হবে
-কত?
-সাড়ে চাইর হাজার
-ওয়েট, বলে অনিক ওয়ালেট টা বেড় করে পাঁচ হাজার টাকা মেয়েটির হাতে দেওয়ার পরে
-স্যার কাম কোনখানে করবেন? গাড়িতে নাকি বাড়িতে?
-তোমারে না বললাম আমি এমন না
-জগতের সব পুরুষ এক স্যার,বলেন কোনজায়গায় করবেন
-টাকা দরকার ছিলো না? যাও এখন,মনমেজাজ খারাপ
-স্যার এই শেফালি কারোর কাছ থেকে মাগ্না টাকা নেয় না, কন কোন জায়গায় করবেন?
-এই বেয়াদব তোরে বলি নাই আমি এরকম না, যা এখান থেকে।
অনিক ধমক দেওয়াতে শেফালি হচকচিয়ে উঠে।
-থাক তুই, আমিই গেলাম বলে অনিক গাড়ি ড্রাউভ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যায়।
অনিক!!! যে এতক্ষণ লেকের পাশে বসে শেফালি নামক মেয়েটির সাথে কথা বলল সে এই শহরের নামকরা ব্যবসায়ী আসাদ সাহেবের একমাত্র ছেলে অনিক। সবাই অনি নামে ডাকে। অনি বাসার সামনে গাড়ি পার্কিং করে রুমে ঢুকতে যাবে এমন সময়
-এতক্ষণ কোথায় ছিলি?(অনির মা)
-এইতো বন্ধুদের সাথে
-তোর মুখ থেকে এমন বাজে গন্ধ আসছে কেন?
-ও স্প্রে নিতে মন নাই
-স্প্রে নিতে মনে নাই মানে? এই কুত্তার বাচ্চা তুই এসব কি করতেছিস? তোরে কি জন্ম দিছি এসব দেখার জন্য?
-ধুরর কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান কইরো না তো, ভাল্লাগতাছে না বলে পাশ কাটিয়ে অনি তার রুমে গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পরে।
অনির এমন ব্যবহার দেখে তার মা কপালে হাত দিয়ে কান্না করতে থাকে।
-এই চলো ঘুমাবে(অনির বাবা)
-ও তো খায়নি
- মদ খেয়ে আসছে
-আমার অনি কি থেকে কি হয়ে গেলো বলে হুহু করে কান্না করে দেয়।
-আসো তো এখন বলে অনির বাবা অনির মাকে বেডরুমে নিয়ে যায়।
রাত গিয়ে সকাল হওয়ার পরে অনির মা অনির রুমে গিয়ে দেখে অনি চোখ বন্ধ করে খাটের সাথে হেলান দিয়ে সিগারেট টানছে আর গাল বেয়ে জল গড়াচ্ছে।
-বাপ আমার কি হইছে তোর?
মার কন্ঠ শুনে স্ট্রেতে সিগারেট গুঁজে হাত দিয়ে ভেজা চোখ মুছতে মুছতে "কিছু না"
-কিছু না হলে এসব করতেছিস কেন? বল না কি হইছে বাবা?
-কিছু না তো মা
-তাহলে কান্না করতেছিলি যে?
-এমনি
-রাতে এসব খেয়ে বাসায় আসলি কেন? জানিস না তোর বাবা এসব দেখলে রাগ করে
-আচ্ছা আমি এখন বেড় হব, সাইড দেও ফ্রেশ হওয়া লাগবে
-যা ফ্রেশ হয়ে আয়
অনি ফ্রেশ হয়ে আসার পরে নে এগুলি খেয়ে নে
-না খাবো না
-কেন?
-ক্ষিদা নাই
-নে হা কর আমি খাইয়ে দিচ্ছি
অনি ভালো করেই জানে এখন না খেলে তার রেহাই নেই তাই আর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খেয়ে বাসা থেকে বেড় হয়ে সানিকে নিয়ে চুপচাপ ড্রাইভ করতে থাকে।
-তোর মা আমাকে ফোন দিয়েছিলো(সানি)
-কি কারণে?
-তুই এসব করে বেড়াচ্ছিস কেন সেটা জানতে
-পাগলামি করে কে?
-দেখ দোস্ত যে মেয়ে তোর সাথে এমন করতে পারছে তার সাথে তোর পরিপূর্ণতা না পাওয়াটাই ভালো হয়েছে,একবার ভেবে দেখ হিয়া যদি বিয়ের পরও এসব করে বেড়াতো তখন কি হতো? কি করতি তুই?
-তাই বলে এমনটা কিভাবে করতে পারছে?
-এসব মেয়েরা টাকা আর ভালো কিছু মুহূর্তের জন্য সব করতে পারে
-আচ্ছা বাদ দে এসব
-হিয়া কিন্তু ওর মত করে ঠিকই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে শুধুশুধু তুই কষ্ট পাচ্ছিস
-আরে না পাগল,আমি ঠিক আছি
-ঠিক থাকলে প্রতিনিয়ত এমন করতিস না, নিজের ভিতরে পরিবর্তন আনার ট্রাই কর, তোর এসব কাজকারবারে আংকেল আন্টি কষ্ট পাচ্ছে।
-আচ্ছা বল এখানে এই এলাকায় কেন আসা?
-আরে আর বলিস না, বিয়ের জন্য মা-বাবা ভীষণ প্যাড়া দিচ্ছে
-তোর তো পছন্দের কেউ নাই,দেখাশোনা করে একটা বিয়ে করে নিলেই পারিস
-এত তারাতারি বিয়ে করব?
-বেটা ২৬ হয়ে গেছে,এখন না করলে আর কবে করবি?
-মানুষকে জ্ঞান না দিয়ে নিজের টা ভেবে দেখ
-আমাকে নিয়ে তোর ভাবা লাগবে না
-হ্যা ঠিক বলছিস, আমি না ভাবলেও আন্টি কিন্তু ভেবে ফেলেছে
-কি?
-সময়মত বুঝবি,ঐ রেস্টুরেন্টের সামনে থামা
-হু
এভাবে দিন গিয়ে সন্ধ্যা নামে।
ঢাকা শহরে দিন আর রাত বলতে পার্থক্য শুধু একটাই, দিনে সূর্যের আলো আর রাতে লাইটের আলো এছাড়া আর তেমন কোন পার্থক্য নাই।
রাতে লেকের পাশে বসে বসে সিগারেট পোড়াচ্ছে আর হিয়াকে নিয়ে ভাবছে এমন সময় হঠাৎ করে ধুপধাপ লাঠিপেটার শব্দ কানে ভেসে উঠল। ‘ওই পুলিশ’ বলেই সজোরে দৌড়ে পালাতে লাগলেন কয়েকজন যুবতী। দু-একজনের গায়ে লাঠির আঘাত যে লেগেছে, তা ‘মাগো বাবাগো’ চিৎকার শুনেই বোঝা গেল। অনি সিগারেটটা ফেলে দিয়ে সেদিকে ভালোভাবে খেয়াল করতে করতেই দেখে মুখোশ করা একটা মেয়ে হাত জড়িয়ে ধরে "স্যার আমাকে বাচান"
-এই আপনি কে? যান এখান থেকে
-স্যার স্যার আমি শেফালি, গতকাল যে পরিচিত হয়েছিলাম সেই শেফালি আমি
-ওহহ পুলিশ তাড়া করছে কেন?
-আমাদের আস্তানার খবর কে জানি লিক করে দিছে
-এসব বাজে কাজকারবার করো কেন?
-আগে বাচান আমাকে,তারপরে সব বলব
-গাড়ির ভিতরে চলো বলে দুজন গাড়িতে বসে গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে "হ্যা বলো কেন এসব করো?"
-স্যার পার্লারে কাজ করে মাসে দশ হাজার টাকা পাই,ঢাকা শহরে দশ হাজার টাকায় সংসার চলে? তার উপরে মার আবার ডায়াবেটিস, প্রতিদিন ইনসুলিন নেওয়া লাগে তার পাশাপাশি একটা ভাইকে পড়ালেখার পুরো খরচ দেওয়া লাগে তাই বাধ্য হয়ে এসব করতে হচ্ছে
-তাই বলে এই পথ বেছে নিয়েছো?
-এছাড়া আর কোন পথ ছিলো না
-কোন জায়গায় পার্টটাইম জব করলেও পারতে
-কম চেষ্টা করিনি
-ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবো না?
-এসব নিয়ে ভেবে মার মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করতে পারবো না
-ওহ
- সারাদিন কষ্ট করলে মালিকরা ৫০০ টাকা দিতে কষ্ট পায় আর দশ মিনিট খাটে শুইলে সেই পুরুষ-ই আবার ২০০০ টাকা দিয়া দেয়, তাতে কোন কষ্ট পায় না বরঞ্চ তৃপ্তিসহকারে টাকা হাতে দিয়ে দেয়।
-আচ্ছা এখন যাও আমার বাসা এসে পরছে
-এটা আপনাদের বাসা?
-হ্যা
-বাহ
-কোন রিক্সা কিংবা গাড়ি নিজের গন্তব্য স্থানে চলে যাও
-থ্যাংকইউ সো মাচ ফর ইউর এসিস্টেন্স
-অনি তখন হা করে তাকিয়ে থাকে
-আসি স্যার
-শুনো
-হ্যা বলেন
-আমার কার্ড, অফিসে আইসো
-কেন?
-আসলে কথা হবে
-হু বলে কার্ড টা হাতে নিয়ে ভেনিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে রাস্তায় রিক্সার খুঁজে দাঁড়িয়ে থাকে।
বাসায় যাওয়ার পরে
-ফ্রেশ হয়ে আয় খাবার খাবি(মা)
- খাবো না
... যদি নতুন নতুন গল্প পড়তে চাও friend request দিয়ে সাথে থাকুন,,,,,, বা message করেন।
-তোর বাবা তোর অপেক্ষায় বসে আছে
-আচ্ছা যাও আসতেছি।
অনি খাবার টেবিলে বসে খাবার খাওয়ার সময়
-সিমি কে কেমন লাগে রে তোর?(মা)
-ভালোই তো
-বলছিলাম না সিমিকে ওর ভালো লাগবে? ওর বাবার সাথে কথাবার্তা বলে তারাতারি সব ঠিক করে নাও
-কি ঠিক করতে বলছো?
-তোর সাথে সিমির বিয়ের..........
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com